Ajker Patrika

শুকিয়ে গেছে একমাত্র পানির উৎস, বোরোখেত ফেটে চৌচির

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৩, ২০: ১২
শুকিয়ে গেছে একমাত্র পানির উৎস, বোরোখেত ফেটে চৌচির

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় চিরিংগা ইউনিয়নের মাছঘাট খালের পানি শুকিয়ে গেছে। একমাত্র পানির উৎস মাতামুহুরী শাখা খালটি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকের জমির বোরো ফসলের খেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। প্রায় ১৫ দিন ধরে সেচ সুবিধা অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও সেচ প্রকল্পের (স্কিম) মালিক ও কৃষি বিভাগ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।

আজ শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, মাছঘাট খালের পানি শুকিয়ে গেছে। জমিতে বীজতলা তৈরি করে চারা রোপণের পর ইতিমধ্যে বোরোখেতে ধানের শিষ বের হওয়ার সময় হয়েছে। একমাত্র পানির উৎস মাতামুহুরী শাখা খালটি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকের জমিতে ফসলের খেত ফেটে গেছে।

চিরিংগা ইউপির পালাকাটা মাছঘাট এলাকার মোহাম্মদ আলমগীর, কবির আহামদ, রহমত আলী, জয়নাল আবেদীন ও মিজানুর রহমান নামের কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, খালে পানি না থাকার অজুহাত দেখিয়ে স্কিম মালিক কে এম মঈন উদ্দিন প্রতি কৃষক থেকে চার হাজার টাকা বাড়তি সেচ খরচ নেওয়ার পর জমিতে সেচব্যবস্থা করেনি। কৃষকেরা বোরোখেতের ফলন নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।

স্কিম মালিক কে এম মঈন উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সেচ মূলত মাছঘাট খাল থেকেই ব্যবস্থা করা হতো। খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ডিপ বসায়ে সেচের ব্যবস্থা কার হচ্ছে। এ জন্য কয়েকজন কৃষক কিছু টাকা দিয়েছেন, তবে চার হাজার টাকা কারও কাছ থেকেই নেওয়া হয়নি।’

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় চিরিংগা ইউনিয়নের মাছঘাট খালের পানি শুকিয়ে গেছেচিরিংগা ইউনিয়নের পালাকাটা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা কৃষি বর্গাচাষি সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন পুতু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে মাতামুহুরী নদীর পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। নদীর মোহনায় চিরিংগা ইউনিয়নের মাছঘাট শাখা খালটি এখন শুকিয়ে গেছে। এতে সেচের পানি সংকটে পড়েছে কৃষকেরা। মাছঘাট খালে পানি সংকটের কারণে স্কিম মালিকেরা কৃষকদের সেচের পানিও সরবরাহ করতে পারছেন না। ওই এলাকার অধিকাংশ কৃষকের বোরো ফসলের খেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জামাল হোছাইন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাছঘাট শাখা খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে কৃষকেরা বোরো চাষে চরম বিপদে পড়েছে। বোরো ধান চাষ নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন বলেন, ‘মাছঘাট শাখা খালটি চিরিংগার কৃষকদের সুবিধার অন্যতম মাধ্যম। কী কারণে খালটি শুকিয়ে গেছে, তা সরেজমিন দেখে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। যদিও খালের পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হয়, তাহলে বিকল্প উপায়ে কৃষকের বোরোখেতে পানি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাল শুকিয়ে গেলেও বিকল্প উপায়ে কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত