Ajker Patrika

কিছু বুঝে উঠার আগেই দেয়ালটি এসে পড়ে পথচারীর ওপর

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
কিছু বুঝে উঠার আগেই দেয়ালটি এসে পড়ে পথচারীর ওপর

চট্টগ্রামের বালুচরা এলাকায় তিনতলা ভবনটি কাশেম ভবন নামে পরিচিত। ওই ভবনের পাশ দিয়ে ছোট একটি গলি। সেই পথেই নাশতার জন্য যাচ্ছিলেন মো. ফারুক (২৩)। হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেয়ালের কিছু অংশে পথচারীর ওপর গিয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। 
 
ফারুক পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তিনি চকবাজার এলাকার চন্দনপুরার তাঁর নানার বাসায় থাকতেন। তুফানি সড়কের যে বাসায় বিস্ফোরিত হয় ওই ভবনের পাশের ভবনে তাঁর বাবা বদিউল আলম থাকতেন। গত বৃহস্পতিবার ফারুক সেখানে বেড়াতে যান। 

ফারুকের ফুপাতো ভাই মো. ইমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাশতার জন্য যাওয়ার পথে বিস্ফোরিত দেয়ালের কিছু অংশ পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। 

চমেক হাসপাতালের ছেলের জন্য বিলাপ করছিলেন নিহতের বাবা বদিউল আলম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নাশতার জন্য সকালে দোকানে যায়। কিছুক্ষণ পর শুনি নিথর দেহ পড়ে আছে সড়কে। সেখান থেকে উদ্ধার করে চমেকে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহতের বাবা বলেন, ‘কালও ছেলেটিকে খুব হাসিখুশি বের হতে দেখেছি। কিছুক্ষণ পর মৃত্যু হবে এটি ভাবা যায়? আমার ছেলেকে এনে দাও।’ 

এই ঘটনায় আহত হওয়া ফোরকান উল্যাহ (৬০) ও কালাম (৩০) অবস্থাও আশঙ্কাজনক। যে ভবনের নিচতলায় বিস্ফোরিত হয় ওই কক্ষে থাকতেন তারা। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন বলেন, আহত ওই দুজনের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে। তাই তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

সরেজমিন দেখা যায়, বালুচরা এলাকায় তিনতলা ভবনের যে নিচতলায় বিস্ফোরণ ঘটে ওই কক্ষটি ছিল ১০ / ১২ ফুটের। ওইখানে একটি খাট ছিল। সব মিলিয়ে তিনজন থাকা যায় ওই কক্ষে। সেখানে যারা ছিলেন, তাঁরা দিনমজুরের কাজ করতেন। ওই কক্ষের সামনের ও পেছনের দুটি দেয়াল বিস্ফোরণে উড়ে গিয়ে পাশের ছোট গলিতে গিয়ে পড়ে। 

বিস্ফোরণের উৎস অজানা! 

চট্টগ্রামের বালুচরা এলাকায় তিনতলা ভবনের নিচতলায় ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত জানাতে পারেনি সরকারি তিন সংস্থা। 
 
বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত মো. ফারুক (২৩)কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিব) প্রকৌ. রওনাকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরেজমিন এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি। এখানকার গ্যাসের লাইনে কোনো ত্রুটি নেই, রাইজারও ঠিক আছে। গ্যাস সংক্রান্ত কোনো ত্রুটির কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। 
 
তবে তিনি ধারণা করছেন গ্যাসের চুলা হয়তো চালু ছিল, ওই জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণটি হতে পারে। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁদের দ্রুত সময়ে মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

তবে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের সদস্য ও বায়েজিদ ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার কবির হোসেন জানান, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান তাঁরা। গিয়ে জমে থাকা গ্যাসের কোনো গন্ধ তাঁরা পাননি। যে কক্ষে বিস্ফোরণ হয়েছে ওই কক্ষের চুলাটি কর্ণফুলী গ্যাসের লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত। আশেপাশে কোনো গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারও নেই। 

এ দিকে এই দুই সংস্থা যখন বিস্ফোরণের উৎস খুঁজে পাচ্ছে না, তখন সাহায্য নেওয়া হয় চট্টগ্রামের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের। তাঁরা প্রায় দুই ঘণ্টা ঘটনাস্থলের বিভিন্ন বস্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান বলেন, বোম ডিসপোজাল ইউনিট কোনো বিস্ফোরক দ্রবের আলামত খুঁজে পায়নি। তাই আমরা নিশ্চিত যে, কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য থেকে বিস্ফোরণ হয়নি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি অধ্যাপক কার্জনসহ ডিবি হেফাজতে ১৫ জন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

পুলিশের ওপর ৪ দফা হামলা, গাজীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ছিনিয়ে নিল দুর্বৃত্তরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত