Ajker Patrika

সম্পত্তির জন্য বৃদ্ধকে হাত-পা বেঁধে ১৩ দিন ধরে নির্যাতন স্ত্রী–সন্তানদের

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
১৩ দিন ধরে নির্যাতনের শিকার চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং সোসাইটির সত্তরোর্ধ্ব ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়া সওদাগর। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ দিন ধরে নির্যাতনের শিকার চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং সোসাইটির সত্তরোর্ধ্ব ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়া সওদাগর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিছানায় দুই হাত-দুই পা চারটি মোটা নাইলনের দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা। হাতে-পায়ে যে অংশে বাঁধা সেখানে কালচে দাগ পড়ে গেছে। যখন নির্যাতন চলে, তখন মাঝেমধ্যে বাইরে থেকেও আর্তনাদ শোনা যায়। এমন মুমূর্ষু অবস্থায়ও ছাড় পাননি চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং সোসাইটির সত্তরোর্ধ্ব ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়া সওদাগর। ১৩ দিন ধরে তাঁকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সম্পত্তি লিখে নিতে তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাই এই নির্যাতন চালিয়েছেন।

নিজ মালিকানাধীন ভবনের একটি কক্ষে খুইল্লা মিয়াকে দিনের পর দিন এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এত দিন কেউ টের পায়নি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে খুইল্লা মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। একই সময় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির দুই সন্তান আব্দুল আউয়াল ও আব্দুল রহিমকে ধরে বাকলিয়া থানা-পুলিশে সোপর্দ করেছেন। তাঁদের মধ্যে আব্দুল আউয়াল পরিবারের বড় সন্তান।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়ার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছেন। তিনি জানান, নির্যাতনের ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বাকলিয়া থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সম্পত্তিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সন্তানদের হাতে লোকটি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ৫৪ ধারায় অভিযোগ এনে আটকে রাখার আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

স্থানীয়দের ভাষ্য, ব্যবসায়ী খুইল্লা মিয়া পশ্চিম বাকলিয়া শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিংয়ের দুটি ভবনের মালিক। নগরীর বৃহত্তম বাজার রেয়াজউদ্দিন বাজারে রয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

খুইল্লা মিয়াকে উদ্ধারে যাওয়া স্থানীয় বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাদের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক কান-দুই কান হওয়ার পর ওনাকে বাসায় আটকে নির্যাতন করার বিষয়টি আমরা জানতে পারি। প্রথমে দু-একজন বিষয়টা জেনে স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন দেন। পরে কাউন্সিলর আমাদের বিষয়টি জানালে আমরা পুলিশ নিয়ে ওনাকে বাসা থেকে উদ্ধার করি। তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন। এত রাতে সেখানে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় পরে ওনাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে তিনি আইসিইউতে আছেন। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, সম্পত্তি লিখে নিতে তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা মিলে তাঁকে ১৩ দিন ধরে বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত