Ajker Patrika

চট্টগ্রাম বন্দরে এন্ট্রি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে ট্রাক-ট্রেইলার প্রবেশ বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) পক্ষ থেকে ভারী যানবাহনের প্রবেশ ফি চার গুণেরও বেশি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সব ধরনের কনটেইনার ও পণ্যবাহী যানবাহন প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন অপারেটররা। আজ শনিবার সকাল থেকে বন্দর এলাকায় ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

এতে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে পণ্য পরিবহন ও হ্যান্ডলিং কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বিভাগ ১৩ অক্টোবর একটি অফিস আদেশ (নং ২২৩/২৫) জারি করে। সেই আদেশ অনুযায়ী, প্রতিটি ভারী যানবাহনের জন্য নতুন এন্ট্রি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ টাকা। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) যুক্ত হয়ে মোট ফি দাঁড়িয়েছে ২৩০ টাকা। এই ফি আগে ছিল মাত্র ৫৭ দশমিক ৫০ টাকা।

পরিবহন সংগঠনগুলোর অভিযোগ, প্রধান অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়াই ‘জোরপূর্বক’ এই বর্ধিত ফি আরোপ করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক জরুরি সভার পর চট্টগ্রাম আন্তজেলা পণ্য পরিবহন সমিতি, চট্টগ্রাম ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এবং প্রাইম মুভার অ্যান্ড ফ্ল্যাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন—এই তিনটি প্রধান সংগঠন এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে।

বিবৃতিতে সংগঠনগুলো উল্লেখ করে, ‘আমরা বন্দরের প্রায় ৮৫ শতাংশ কার্গো পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনা করি। এমন গুরুত্বপূর্ণ ও বড় ধরনের পরিবর্তনের আগে প্রধান স্টেকহোল্ডার হিসেবে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা অত্যাবশ্যক ছিল। ফি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে আমরা আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবারের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে শনিবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের গাড়ির বন্দরে প্রবেশ ‘অস্থায়ীভাবে স্থগিত’ থাকবে। সংগঠনগুলোর নেতারা তাঁদের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে মেনে চলতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্ল্যাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন জানান, এটি কোনো আনুষ্ঠানিক ধর্মঘট বা কর্মবিরতি নয়, বরং প্রাইম মুভার মালিকেরা বর্ধিত ২৩০ টাকার পাস ফি নিয়ে দ্বিধায় থাকায় গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন। তিনি বলেন, এই বাড়তি টাকা শ্রমিকেরা দেবেন নাকি মালিকেরা দেবেন, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

মোহাম্মদ হোসেন বলেন, সাধারণত চট্টগ্রাম থেকে ভারী গাড়ি (প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, লং ভেহিকেল) যখন ঢাকা বা অন্য গন্তব্যে যায়, তখন তাদের লাইন খরচ (ফি, টোল, বকশিশ) নির্দিষ্ট করা থাকে, যা তেলের দাম বাড়লে নতুন করে নির্ধারিত হয়। তিনি জানান, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে বন্দরের পরিচালকের (নিরাপত্তা) সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বন্দর চেয়ারম্যান ঢাকা থেকে ফিরলে পুনরায় আলোচনার আশা করছেন।

মোহাম্মদ হোসেন নিশ্চিত করেন, ১৪ অক্টোবর রাত থেকেই তাঁদের ট্রেইলার চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বেসরকারি ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার জানান, শনিবার থেকে অপডকে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। প্রাইম মুভার মালিকদের গাড়ি চলাচল না করার কারণে ডিপোর ট্রেইলারের মাধ্যমে বন্দর থেকে কনটেইনার আনা-নেওয়ার কাজ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

এদিকে প্রাইম মুভার মালিকদের এই স্বেচ্ছায় কর্মবিরতির কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, এই অচলাবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেবে। তাই দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অংশীজনদের মধ্যে আলোচনা ও সমন্বয় প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...