রিমন রহমান, রাজশাহী

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
ওবায়েদ পাঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এলাকার লোকজন কেউ তাঁকে ওয়াহেদ পাঠান, কেউ ওবায়দুল পাঠান নামেও চেনেন। ফোনকল রেকর্ডে এ দুটি নামই বারবার এসেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ওবায়েদ পাঠান যাঁকে অস্ত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই যুবক ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ওই যুবকের নাম রিশান আলী (২৪)। তিনি সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া সৈনিক। তাঁর বাবার নাম জিয়াউর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিও তিনি। রিশান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হোতা হিসেবে পরিচিত। রিশানকে গ্রেপ্তারের পর এক দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এলাকার একটি বালুমহাল নিয়ে সংঘর্ষের সময় গত জুলাইয়ে এই রিশান প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন। এই অস্ত্রের উৎস কী, তা নিয়ে পরদিন রিশানের সহযোগী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ইসলামপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন ও তাঁর চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের কথা হয়। ওই ফোনকল রেকর্ড সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে রিশানের সহযোগী ইকবালের সঙ্গে কথা বলেন জসিম। তিনি অস্ত্রের ব্যাপারে জানতে চান, ‘উ (রিশান) কি টাকা দিয়ে (অস্ত্র) কিনেছে জি?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘না, ওকে এমনি দিয়েছে। ভ্যাজালের সমাতে। হামি ধরেন যদি ই করতুং, তো হামিই প্যায় যাতুং।’ জসিম বলেন, ‘ওয়াহেদেরা তো ইন্ডিয়া থাইকা, আনা তো ব্যাপার লয়।’ ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশেই অভাব নাই। হাঁর কাছেই ছিল আগে।’
জসিম জানতে চান, ‘তাহলে তিনটা গুলি আর একখানডা ই (পিস্তল) দিয়েছে?। ইকবাল বলেন, ‘হু, নিজের সেফটির জন্য।’ জসিম জানতে চান, ‘ওয়াহেদ নিজেই দিয়েছে ডাইরেট?’ ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ ধরে লেন যে ইয়ে করেছিল। কিন্তু ল্যাওয়ার দিন হামি যাইনি। ল্যাওয়ার দিন আমরুল (রিশানের আরও এক সহযোগী) আর ওই (রিশান) গেছিল খালি। হাঁকে ডেকেছিল, হামি যাইতে পারিনি।’
জসিম বলেন, ‘পিস্তল থাকাতে কত বড় সেফটি দেখেছেন?’ ইকবাল বলেন, ‘সেফটিও আছে, ভয়ও আছে। কেহু যুতি ধরায় দ্যায়।’ জসিম বলেন, ‘ধরাছে কে ওদেরকে? ওরা এখন পাওয়ারে আছে। আর কি দিয়েছিল, নাকি ওইখানডাই?’ ইকবাল বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে খবর লিব। আমরুলকে হামি কহাবো, কি রে কাকা মাল কি একখানডাই দিয়েছে? হাঁরা পাব না? তাহিলেই বুসতে পারব, একখানডা নাকি আরও দিয়েছে।’
জসিম এবার জানতে চান, ‘দেয়ার তো কথা ছিল তিনখানডা?’ ইকবাল বলেন, ‘হ্যাঁ, দেয়ার কথা ছিল তিনখানডা। লাইসেনধারীডা দিতে চাহেনি।’ জসিম জানতে চান, ‘তাহিলে ওয়াহেদের কাছে ব্যাপার না মাল আইন্যা দেয়া?’ কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করে ইকবাল বলেন, ‘তুমি কি লিব্যা নাকি মাল? লিলে কহো, আমি আইন্যা দিছি। এইডা ব্যাপার না। তুমি ভাবছ ম্যালা কিছু। ম্যালা কিছু লয়। শিবগঞ্জ থাইকাই আনা যায়। শুধু আনাডা একটু ইয়ে তাই।’ জসিম প্রশ্ন করেন, ‘ওয়াহেদ কি বেরেন কইরে ছোট ছোট ছেইলের হাতে দিল?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ পাঠান কিন্তু আমরুলকে খুবই ভালোবাসে। উ যুদি কহে, এ মুহূর্তে আসা লাগবে, ওয়াহেদ পাঠান এক ফোঁটাও ভুল কইরাও ই করবে না। হামি ভালো কইর্যা দেখেছি।’
এ পর্যায়ে ‘মিম্বার কী কহিছে শুনো তো’ বলে জসিম তাঁর চাচাতো ভাই নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ইকবালকে কথা বলতে দেন। নাসির বলেন, ‘কী অবস্থারে কেমন আছিস? চিন্তাও লাগছে একটা পিস্তুল...।’ ইকবাল বলেন, ‘এটা দাদা চার মাস আগে যখুন গন্ডগোল হয়েছিল না, তখনই দিয়েছে। দেয়ার কথা তিনট্যা, দিয়েছে ধরেন একটা।’ ইউপি সদস্য জানতে চান, ‘এর দাম কত পড়ছে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এ্যার দাম মুনে করেন ৩০ হাজার। আর একাডডা গুলি আঠারো শ-উনিশ শ।’ নাসির বলেন, ‘তাহিলে ছোট গ্যালা। বড় গেলা হলে ৬০,৭০, ৮০ হয়্যা যাইত।’ ইকবাল বলেন, ‘হু, সাইলেন্সারসহ যুতি ল্যাও, কোনো আওয়াজ করবে না। গুলি মাইরব্যা কোনো আউয়াজ করবে না। হাঁর কাছেই ছিল, সালেন্সারসহ।’
নাসির প্রশ্ন করেন, ‘ওরাকে দিল কে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এটা ধরেন যে ওবায়দুল পাঠান, ওই সংগ্রহ করে দিয়েছে। এইডা থাকার কথা আমরুলের কাছে।’ ইকবাল বর্ণনা দিতে থাকেন, ‘রাজরামপুরের সামনে পোখরের ওখানে ওবায় পাঠানের জমি আছে ১১ বিঘা। ওই জমির লাইগ্যা বোলে, “ভাই আপনি শুধু হামরাকে ব্যবহার করছেন।” তখুন বলে, “কী লাগবে তোর?” তখন বোলে, “ঠিক আছে তোরা তিনজনাকে তিনখ্যান ব্যবস্থা করে দিছি।” জিনিসগ্যালার অর্ডার হয়েছিল তিনঝোনার লাইগ্যা তিনটা। আমরুল ট্রেনিংও দিয়েছে ১০ দিন।’
এই আমরুল অস্ত্রটি রিশানকে দিয়েছেন বলে কথোপথনে উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইকবাল, জসিম কিংবা আমরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে যোগাযোগ করা হলে ফোনকল রেকর্ডটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন। ফোনকল রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়ার কথা শুনেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কথাটা কিছুদিন আগের। রিশান, আমরুল, ইকবাল—তারা সব একই গ্রুপে চলাফেরা করে। বালু নিয়ে একটা ঘটনা ঘটে, সেখানে রিশান অস্ত্র দেখায়। বিষয়টা জানতে আমি রিশানের ঘনিষ্ঠ ইকবালের সঙ্গে কথা বলি। তার আগে আমার চাচাতো ভাই জসিম কথা বলে।’ তিনি জানান, রাজারামপুরে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠানের একটি জমি রয়েছে। এ জমিকে কেন্দ্র করে ওবায়েদ অস্ত্রটি আমরুলকে দিয়েছেন বলে তিনি ইকবালের কাছ থেকে শুনেছেন।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলেন, ‘আমার সঙ্গে রিশানের কখনো দেখা হয়নি। আমি তাকে চিনি না। আমি ফোনকলের ব্যাপারে প্রথম শুনছি। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বহু দিনের। নিজে হাতে নেড়েও দেখিনি কখনো। আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রও নেই।’ অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলে হাসিনার সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে, তাহলে আমি কী করব? রিশান কি আমাদের দল-পার্টির ছেলে? আমাদের সঙ্গে কী সম্পর্ক? আমাদের সঙ্গে তো কোনো মিছিল-মিটিং করে না। দলীয় পদ নাই। তাহলে আমার সঙ্গে কী সম্পর্ক? কেউ যদি আমার নাম ব্যবহার করে কিংবা রেকর্ড করে, সেটার জন্য তো আমি দায়ী না। আমার সঙ্গে তো ডিরেক্ট তাদের কথা হয়নি। কে কী বলল, না বলল—এগুলোতে কিছু যায় আসে না। কার কাছে কী আছে, আমি কিছুই জানি না।’
রিশান গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার হয়নি
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিরের খৈলান এলাকায় একটি সমাবেশ ছিল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির আরও এক মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা হারুন-অর-রশিদ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে রিশানের বাড়ির সামনে ইসমাইল হক কিনু নামের একজনের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার সময় রিশানের বাবা জিয়াউর রহমানও ছিলেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই মো. তুফানি ১২ আগস্ট জিয়াউর রহমান, তাঁর ছেলে রিশানসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারের দুটি কপি পাওয়া গেছে। খসড়া কপিতে লেখা হয়েছিল, হামলার সময় ককটেল বিস্ফোরণ হয় এবং রিশান পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করেন। পরে থানায় মামলা হিসেবে যে এজাহার রেকর্ড হয়, সেখানে পিস্তলের প্রসঙ্গটি নেই। পুলিশ পিস্তলের প্রসঙ্গটি বাদ দিতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে মামলার পরদিন গত বুধবার রাতে রিশানকে গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাঁকে এক দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাই তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন। ছড়িয়ে পড়া ফোনকলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, তিনি ফোনকলের বিষয়টি জানেন। রিমান্ডে থাকাকালে অস্ত্রের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি তিনি নিজেও রিশানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে রিশান মুখ খোলেননি। কোনো অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
ওবায়েদ পাঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এলাকার লোকজন কেউ তাঁকে ওয়াহেদ পাঠান, কেউ ওবায়দুল পাঠান নামেও চেনেন। ফোনকল রেকর্ডে এ দুটি নামই বারবার এসেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ওবায়েদ পাঠান যাঁকে অস্ত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই যুবক ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ওই যুবকের নাম রিশান আলী (২৪)। তিনি সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া সৈনিক। তাঁর বাবার নাম জিয়াউর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিও তিনি। রিশান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হোতা হিসেবে পরিচিত। রিশানকে গ্রেপ্তারের পর এক দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এলাকার একটি বালুমহাল নিয়ে সংঘর্ষের সময় গত জুলাইয়ে এই রিশান প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন। এই অস্ত্রের উৎস কী, তা নিয়ে পরদিন রিশানের সহযোগী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ইসলামপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন ও তাঁর চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের কথা হয়। ওই ফোনকল রেকর্ড সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে রিশানের সহযোগী ইকবালের সঙ্গে কথা বলেন জসিম। তিনি অস্ত্রের ব্যাপারে জানতে চান, ‘উ (রিশান) কি টাকা দিয়ে (অস্ত্র) কিনেছে জি?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘না, ওকে এমনি দিয়েছে। ভ্যাজালের সমাতে। হামি ধরেন যদি ই করতুং, তো হামিই প্যায় যাতুং।’ জসিম বলেন, ‘ওয়াহেদেরা তো ইন্ডিয়া থাইকা, আনা তো ব্যাপার লয়।’ ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশেই অভাব নাই। হাঁর কাছেই ছিল আগে।’
জসিম জানতে চান, ‘তাহলে তিনটা গুলি আর একখানডা ই (পিস্তল) দিয়েছে?। ইকবাল বলেন, ‘হু, নিজের সেফটির জন্য।’ জসিম জানতে চান, ‘ওয়াহেদ নিজেই দিয়েছে ডাইরেট?’ ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ ধরে লেন যে ইয়ে করেছিল। কিন্তু ল্যাওয়ার দিন হামি যাইনি। ল্যাওয়ার দিন আমরুল (রিশানের আরও এক সহযোগী) আর ওই (রিশান) গেছিল খালি। হাঁকে ডেকেছিল, হামি যাইতে পারিনি।’
জসিম বলেন, ‘পিস্তল থাকাতে কত বড় সেফটি দেখেছেন?’ ইকবাল বলেন, ‘সেফটিও আছে, ভয়ও আছে। কেহু যুতি ধরায় দ্যায়।’ জসিম বলেন, ‘ধরাছে কে ওদেরকে? ওরা এখন পাওয়ারে আছে। আর কি দিয়েছিল, নাকি ওইখানডাই?’ ইকবাল বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে খবর লিব। আমরুলকে হামি কহাবো, কি রে কাকা মাল কি একখানডাই দিয়েছে? হাঁরা পাব না? তাহিলেই বুসতে পারব, একখানডা নাকি আরও দিয়েছে।’
জসিম এবার জানতে চান, ‘দেয়ার তো কথা ছিল তিনখানডা?’ ইকবাল বলেন, ‘হ্যাঁ, দেয়ার কথা ছিল তিনখানডা। লাইসেনধারীডা দিতে চাহেনি।’ জসিম জানতে চান, ‘তাহিলে ওয়াহেদের কাছে ব্যাপার না মাল আইন্যা দেয়া?’ কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করে ইকবাল বলেন, ‘তুমি কি লিব্যা নাকি মাল? লিলে কহো, আমি আইন্যা দিছি। এইডা ব্যাপার না। তুমি ভাবছ ম্যালা কিছু। ম্যালা কিছু লয়। শিবগঞ্জ থাইকাই আনা যায়। শুধু আনাডা একটু ইয়ে তাই।’ জসিম প্রশ্ন করেন, ‘ওয়াহেদ কি বেরেন কইরে ছোট ছোট ছেইলের হাতে দিল?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ পাঠান কিন্তু আমরুলকে খুবই ভালোবাসে। উ যুদি কহে, এ মুহূর্তে আসা লাগবে, ওয়াহেদ পাঠান এক ফোঁটাও ভুল কইরাও ই করবে না। হামি ভালো কইর্যা দেখেছি।’
এ পর্যায়ে ‘মিম্বার কী কহিছে শুনো তো’ বলে জসিম তাঁর চাচাতো ভাই নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ইকবালকে কথা বলতে দেন। নাসির বলেন, ‘কী অবস্থারে কেমন আছিস? চিন্তাও লাগছে একটা পিস্তুল...।’ ইকবাল বলেন, ‘এটা দাদা চার মাস আগে যখুন গন্ডগোল হয়েছিল না, তখনই দিয়েছে। দেয়ার কথা তিনট্যা, দিয়েছে ধরেন একটা।’ ইউপি সদস্য জানতে চান, ‘এর দাম কত পড়ছে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এ্যার দাম মুনে করেন ৩০ হাজার। আর একাডডা গুলি আঠারো শ-উনিশ শ।’ নাসির বলেন, ‘তাহিলে ছোট গ্যালা। বড় গেলা হলে ৬০,৭০, ৮০ হয়্যা যাইত।’ ইকবাল বলেন, ‘হু, সাইলেন্সারসহ যুতি ল্যাও, কোনো আওয়াজ করবে না। গুলি মাইরব্যা কোনো আউয়াজ করবে না। হাঁর কাছেই ছিল, সালেন্সারসহ।’
নাসির প্রশ্ন করেন, ‘ওরাকে দিল কে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এটা ধরেন যে ওবায়দুল পাঠান, ওই সংগ্রহ করে দিয়েছে। এইডা থাকার কথা আমরুলের কাছে।’ ইকবাল বর্ণনা দিতে থাকেন, ‘রাজরামপুরের সামনে পোখরের ওখানে ওবায় পাঠানের জমি আছে ১১ বিঘা। ওই জমির লাইগ্যা বোলে, “ভাই আপনি শুধু হামরাকে ব্যবহার করছেন।” তখুন বলে, “কী লাগবে তোর?” তখন বোলে, “ঠিক আছে তোরা তিনজনাকে তিনখ্যান ব্যবস্থা করে দিছি।” জিনিসগ্যালার অর্ডার হয়েছিল তিনঝোনার লাইগ্যা তিনটা। আমরুল ট্রেনিংও দিয়েছে ১০ দিন।’
এই আমরুল অস্ত্রটি রিশানকে দিয়েছেন বলে কথোপথনে উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইকবাল, জসিম কিংবা আমরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে যোগাযোগ করা হলে ফোনকল রেকর্ডটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন। ফোনকল রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়ার কথা শুনেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কথাটা কিছুদিন আগের। রিশান, আমরুল, ইকবাল—তারা সব একই গ্রুপে চলাফেরা করে। বালু নিয়ে একটা ঘটনা ঘটে, সেখানে রিশান অস্ত্র দেখায়। বিষয়টা জানতে আমি রিশানের ঘনিষ্ঠ ইকবালের সঙ্গে কথা বলি। তার আগে আমার চাচাতো ভাই জসিম কথা বলে।’ তিনি জানান, রাজারামপুরে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠানের একটি জমি রয়েছে। এ জমিকে কেন্দ্র করে ওবায়েদ অস্ত্রটি আমরুলকে দিয়েছেন বলে তিনি ইকবালের কাছ থেকে শুনেছেন।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলেন, ‘আমার সঙ্গে রিশানের কখনো দেখা হয়নি। আমি তাকে চিনি না। আমি ফোনকলের ব্যাপারে প্রথম শুনছি। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বহু দিনের। নিজে হাতে নেড়েও দেখিনি কখনো। আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রও নেই।’ অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলে হাসিনার সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে, তাহলে আমি কী করব? রিশান কি আমাদের দল-পার্টির ছেলে? আমাদের সঙ্গে কী সম্পর্ক? আমাদের সঙ্গে তো কোনো মিছিল-মিটিং করে না। দলীয় পদ নাই। তাহলে আমার সঙ্গে কী সম্পর্ক? কেউ যদি আমার নাম ব্যবহার করে কিংবা রেকর্ড করে, সেটার জন্য তো আমি দায়ী না। আমার সঙ্গে তো ডিরেক্ট তাদের কথা হয়নি। কে কী বলল, না বলল—এগুলোতে কিছু যায় আসে না। কার কাছে কী আছে, আমি কিছুই জানি না।’
রিশান গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার হয়নি
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিরের খৈলান এলাকায় একটি সমাবেশ ছিল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির আরও এক মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা হারুন-অর-রশিদ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে রিশানের বাড়ির সামনে ইসমাইল হক কিনু নামের একজনের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার সময় রিশানের বাবা জিয়াউর রহমানও ছিলেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই মো. তুফানি ১২ আগস্ট জিয়াউর রহমান, তাঁর ছেলে রিশানসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারের দুটি কপি পাওয়া গেছে। খসড়া কপিতে লেখা হয়েছিল, হামলার সময় ককটেল বিস্ফোরণ হয় এবং রিশান পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করেন। পরে থানায় মামলা হিসেবে যে এজাহার রেকর্ড হয়, সেখানে পিস্তলের প্রসঙ্গটি নেই। পুলিশ পিস্তলের প্রসঙ্গটি বাদ দিতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে মামলার পরদিন গত বুধবার রাতে রিশানকে গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাঁকে এক দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাই তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন। ছড়িয়ে পড়া ফোনকলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, তিনি ফোনকলের বিষয়টি জানেন। রিমান্ডে থাকাকালে অস্ত্রের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি তিনি নিজেও রিশানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে রিশান মুখ খোলেননি। কোনো অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
রিমন রহমান, রাজশাহী

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
ওবায়েদ পাঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এলাকার লোকজন কেউ তাঁকে ওয়াহেদ পাঠান, কেউ ওবায়দুল পাঠান নামেও চেনেন। ফোনকল রেকর্ডে এ দুটি নামই বারবার এসেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ওবায়েদ পাঠান যাঁকে অস্ত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই যুবক ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ওই যুবকের নাম রিশান আলী (২৪)। তিনি সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া সৈনিক। তাঁর বাবার নাম জিয়াউর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিও তিনি। রিশান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হোতা হিসেবে পরিচিত। রিশানকে গ্রেপ্তারের পর এক দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এলাকার একটি বালুমহাল নিয়ে সংঘর্ষের সময় গত জুলাইয়ে এই রিশান প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন। এই অস্ত্রের উৎস কী, তা নিয়ে পরদিন রিশানের সহযোগী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ইসলামপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন ও তাঁর চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের কথা হয়। ওই ফোনকল রেকর্ড সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে রিশানের সহযোগী ইকবালের সঙ্গে কথা বলেন জসিম। তিনি অস্ত্রের ব্যাপারে জানতে চান, ‘উ (রিশান) কি টাকা দিয়ে (অস্ত্র) কিনেছে জি?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘না, ওকে এমনি দিয়েছে। ভ্যাজালের সমাতে। হামি ধরেন যদি ই করতুং, তো হামিই প্যায় যাতুং।’ জসিম বলেন, ‘ওয়াহেদেরা তো ইন্ডিয়া থাইকা, আনা তো ব্যাপার লয়।’ ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশেই অভাব নাই। হাঁর কাছেই ছিল আগে।’
জসিম জানতে চান, ‘তাহলে তিনটা গুলি আর একখানডা ই (পিস্তল) দিয়েছে?। ইকবাল বলেন, ‘হু, নিজের সেফটির জন্য।’ জসিম জানতে চান, ‘ওয়াহেদ নিজেই দিয়েছে ডাইরেট?’ ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ ধরে লেন যে ইয়ে করেছিল। কিন্তু ল্যাওয়ার দিন হামি যাইনি। ল্যাওয়ার দিন আমরুল (রিশানের আরও এক সহযোগী) আর ওই (রিশান) গেছিল খালি। হাঁকে ডেকেছিল, হামি যাইতে পারিনি।’
জসিম বলেন, ‘পিস্তল থাকাতে কত বড় সেফটি দেখেছেন?’ ইকবাল বলেন, ‘সেফটিও আছে, ভয়ও আছে। কেহু যুতি ধরায় দ্যায়।’ জসিম বলেন, ‘ধরাছে কে ওদেরকে? ওরা এখন পাওয়ারে আছে। আর কি দিয়েছিল, নাকি ওইখানডাই?’ ইকবাল বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে খবর লিব। আমরুলকে হামি কহাবো, কি রে কাকা মাল কি একখানডাই দিয়েছে? হাঁরা পাব না? তাহিলেই বুসতে পারব, একখানডা নাকি আরও দিয়েছে।’
জসিম এবার জানতে চান, ‘দেয়ার তো কথা ছিল তিনখানডা?’ ইকবাল বলেন, ‘হ্যাঁ, দেয়ার কথা ছিল তিনখানডা। লাইসেনধারীডা দিতে চাহেনি।’ জসিম জানতে চান, ‘তাহিলে ওয়াহেদের কাছে ব্যাপার না মাল আইন্যা দেয়া?’ কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করে ইকবাল বলেন, ‘তুমি কি লিব্যা নাকি মাল? লিলে কহো, আমি আইন্যা দিছি। এইডা ব্যাপার না। তুমি ভাবছ ম্যালা কিছু। ম্যালা কিছু লয়। শিবগঞ্জ থাইকাই আনা যায়। শুধু আনাডা একটু ইয়ে তাই।’ জসিম প্রশ্ন করেন, ‘ওয়াহেদ কি বেরেন কইরে ছোট ছোট ছেইলের হাতে দিল?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ পাঠান কিন্তু আমরুলকে খুবই ভালোবাসে। উ যুদি কহে, এ মুহূর্তে আসা লাগবে, ওয়াহেদ পাঠান এক ফোঁটাও ভুল কইরাও ই করবে না। হামি ভালো কইর্যা দেখেছি।’
এ পর্যায়ে ‘মিম্বার কী কহিছে শুনো তো’ বলে জসিম তাঁর চাচাতো ভাই নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ইকবালকে কথা বলতে দেন। নাসির বলেন, ‘কী অবস্থারে কেমন আছিস? চিন্তাও লাগছে একটা পিস্তুল...।’ ইকবাল বলেন, ‘এটা দাদা চার মাস আগে যখুন গন্ডগোল হয়েছিল না, তখনই দিয়েছে। দেয়ার কথা তিনট্যা, দিয়েছে ধরেন একটা।’ ইউপি সদস্য জানতে চান, ‘এর দাম কত পড়ছে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এ্যার দাম মুনে করেন ৩০ হাজার। আর একাডডা গুলি আঠারো শ-উনিশ শ।’ নাসির বলেন, ‘তাহিলে ছোট গ্যালা। বড় গেলা হলে ৬০,৭০, ৮০ হয়্যা যাইত।’ ইকবাল বলেন, ‘হু, সাইলেন্সারসহ যুতি ল্যাও, কোনো আওয়াজ করবে না। গুলি মাইরব্যা কোনো আউয়াজ করবে না। হাঁর কাছেই ছিল, সালেন্সারসহ।’
নাসির প্রশ্ন করেন, ‘ওরাকে দিল কে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এটা ধরেন যে ওবায়দুল পাঠান, ওই সংগ্রহ করে দিয়েছে। এইডা থাকার কথা আমরুলের কাছে।’ ইকবাল বর্ণনা দিতে থাকেন, ‘রাজরামপুরের সামনে পোখরের ওখানে ওবায় পাঠানের জমি আছে ১১ বিঘা। ওই জমির লাইগ্যা বোলে, “ভাই আপনি শুধু হামরাকে ব্যবহার করছেন।” তখুন বলে, “কী লাগবে তোর?” তখন বোলে, “ঠিক আছে তোরা তিনজনাকে তিনখ্যান ব্যবস্থা করে দিছি।” জিনিসগ্যালার অর্ডার হয়েছিল তিনঝোনার লাইগ্যা তিনটা। আমরুল ট্রেনিংও দিয়েছে ১০ দিন।’
এই আমরুল অস্ত্রটি রিশানকে দিয়েছেন বলে কথোপথনে উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইকবাল, জসিম কিংবা আমরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে যোগাযোগ করা হলে ফোনকল রেকর্ডটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন। ফোনকল রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়ার কথা শুনেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কথাটা কিছুদিন আগের। রিশান, আমরুল, ইকবাল—তারা সব একই গ্রুপে চলাফেরা করে। বালু নিয়ে একটা ঘটনা ঘটে, সেখানে রিশান অস্ত্র দেখায়। বিষয়টা জানতে আমি রিশানের ঘনিষ্ঠ ইকবালের সঙ্গে কথা বলি। তার আগে আমার চাচাতো ভাই জসিম কথা বলে।’ তিনি জানান, রাজারামপুরে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠানের একটি জমি রয়েছে। এ জমিকে কেন্দ্র করে ওবায়েদ অস্ত্রটি আমরুলকে দিয়েছেন বলে তিনি ইকবালের কাছ থেকে শুনেছেন।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলেন, ‘আমার সঙ্গে রিশানের কখনো দেখা হয়নি। আমি তাকে চিনি না। আমি ফোনকলের ব্যাপারে প্রথম শুনছি। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বহু দিনের। নিজে হাতে নেড়েও দেখিনি কখনো। আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রও নেই।’ অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলে হাসিনার সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে, তাহলে আমি কী করব? রিশান কি আমাদের দল-পার্টির ছেলে? আমাদের সঙ্গে কী সম্পর্ক? আমাদের সঙ্গে তো কোনো মিছিল-মিটিং করে না। দলীয় পদ নাই। তাহলে আমার সঙ্গে কী সম্পর্ক? কেউ যদি আমার নাম ব্যবহার করে কিংবা রেকর্ড করে, সেটার জন্য তো আমি দায়ী না। আমার সঙ্গে তো ডিরেক্ট তাদের কথা হয়নি। কে কী বলল, না বলল—এগুলোতে কিছু যায় আসে না। কার কাছে কী আছে, আমি কিছুই জানি না।’
রিশান গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার হয়নি
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিরের খৈলান এলাকায় একটি সমাবেশ ছিল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির আরও এক মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা হারুন-অর-রশিদ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে রিশানের বাড়ির সামনে ইসমাইল হক কিনু নামের একজনের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার সময় রিশানের বাবা জিয়াউর রহমানও ছিলেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই মো. তুফানি ১২ আগস্ট জিয়াউর রহমান, তাঁর ছেলে রিশানসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারের দুটি কপি পাওয়া গেছে। খসড়া কপিতে লেখা হয়েছিল, হামলার সময় ককটেল বিস্ফোরণ হয় এবং রিশান পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করেন। পরে থানায় মামলা হিসেবে যে এজাহার রেকর্ড হয়, সেখানে পিস্তলের প্রসঙ্গটি নেই। পুলিশ পিস্তলের প্রসঙ্গটি বাদ দিতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে মামলার পরদিন গত বুধবার রাতে রিশানকে গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাঁকে এক দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাই তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন। ছড়িয়ে পড়া ফোনকলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, তিনি ফোনকলের বিষয়টি জানেন। রিমান্ডে থাকাকালে অস্ত্রের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি তিনি নিজেও রিশানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে রিশান মুখ খোলেননি। কোনো অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
ওবায়েদ পাঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এলাকার লোকজন কেউ তাঁকে ওয়াহেদ পাঠান, কেউ ওবায়দুল পাঠান নামেও চেনেন। ফোনকল রেকর্ডে এ দুটি নামই বারবার এসেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ওবায়েদ পাঠান যাঁকে অস্ত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই যুবক ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ওই যুবকের নাম রিশান আলী (২৪)। তিনি সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া সৈনিক। তাঁর বাবার নাম জিয়াউর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিও তিনি। রিশান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হোতা হিসেবে পরিচিত। রিশানকে গ্রেপ্তারের পর এক দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এলাকার একটি বালুমহাল নিয়ে সংঘর্ষের সময় গত জুলাইয়ে এই রিশান প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন। এই অস্ত্রের উৎস কী, তা নিয়ে পরদিন রিশানের সহযোগী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ইসলামপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন ও তাঁর চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের কথা হয়। ওই ফোনকল রেকর্ড সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে রিশানের সহযোগী ইকবালের সঙ্গে কথা বলেন জসিম। তিনি অস্ত্রের ব্যাপারে জানতে চান, ‘উ (রিশান) কি টাকা দিয়ে (অস্ত্র) কিনেছে জি?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘না, ওকে এমনি দিয়েছে। ভ্যাজালের সমাতে। হামি ধরেন যদি ই করতুং, তো হামিই প্যায় যাতুং।’ জসিম বলেন, ‘ওয়াহেদেরা তো ইন্ডিয়া থাইকা, আনা তো ব্যাপার লয়।’ ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশেই অভাব নাই। হাঁর কাছেই ছিল আগে।’
জসিম জানতে চান, ‘তাহলে তিনটা গুলি আর একখানডা ই (পিস্তল) দিয়েছে?। ইকবাল বলেন, ‘হু, নিজের সেফটির জন্য।’ জসিম জানতে চান, ‘ওয়াহেদ নিজেই দিয়েছে ডাইরেট?’ ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ ধরে লেন যে ইয়ে করেছিল। কিন্তু ল্যাওয়ার দিন হামি যাইনি। ল্যাওয়ার দিন আমরুল (রিশানের আরও এক সহযোগী) আর ওই (রিশান) গেছিল খালি। হাঁকে ডেকেছিল, হামি যাইতে পারিনি।’
জসিম বলেন, ‘পিস্তল থাকাতে কত বড় সেফটি দেখেছেন?’ ইকবাল বলেন, ‘সেফটিও আছে, ভয়ও আছে। কেহু যুতি ধরায় দ্যায়।’ জসিম বলেন, ‘ধরাছে কে ওদেরকে? ওরা এখন পাওয়ারে আছে। আর কি দিয়েছিল, নাকি ওইখানডাই?’ ইকবাল বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে খবর লিব। আমরুলকে হামি কহাবো, কি রে কাকা মাল কি একখানডাই দিয়েছে? হাঁরা পাব না? তাহিলেই বুসতে পারব, একখানডা নাকি আরও দিয়েছে।’
জসিম এবার জানতে চান, ‘দেয়ার তো কথা ছিল তিনখানডা?’ ইকবাল বলেন, ‘হ্যাঁ, দেয়ার কথা ছিল তিনখানডা। লাইসেনধারীডা দিতে চাহেনি।’ জসিম জানতে চান, ‘তাহিলে ওয়াহেদের কাছে ব্যাপার না মাল আইন্যা দেয়া?’ কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করে ইকবাল বলেন, ‘তুমি কি লিব্যা নাকি মাল? লিলে কহো, আমি আইন্যা দিছি। এইডা ব্যাপার না। তুমি ভাবছ ম্যালা কিছু। ম্যালা কিছু লয়। শিবগঞ্জ থাইকাই আনা যায়। শুধু আনাডা একটু ইয়ে তাই।’ জসিম প্রশ্ন করেন, ‘ওয়াহেদ কি বেরেন কইরে ছোট ছোট ছেইলের হাতে দিল?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘ওয়াহেদ পাঠান কিন্তু আমরুলকে খুবই ভালোবাসে। উ যুদি কহে, এ মুহূর্তে আসা লাগবে, ওয়াহেদ পাঠান এক ফোঁটাও ভুল কইরাও ই করবে না। হামি ভালো কইর্যা দেখেছি।’
এ পর্যায়ে ‘মিম্বার কী কহিছে শুনো তো’ বলে জসিম তাঁর চাচাতো ভাই নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ইকবালকে কথা বলতে দেন। নাসির বলেন, ‘কী অবস্থারে কেমন আছিস? চিন্তাও লাগছে একটা পিস্তুল...।’ ইকবাল বলেন, ‘এটা দাদা চার মাস আগে যখুন গন্ডগোল হয়েছিল না, তখনই দিয়েছে। দেয়ার কথা তিনট্যা, দিয়েছে ধরেন একটা।’ ইউপি সদস্য জানতে চান, ‘এর দাম কত পড়ছে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এ্যার দাম মুনে করেন ৩০ হাজার। আর একাডডা গুলি আঠারো শ-উনিশ শ।’ নাসির বলেন, ‘তাহিলে ছোট গ্যালা। বড় গেলা হলে ৬০,৭০, ৮০ হয়্যা যাইত।’ ইকবাল বলেন, ‘হু, সাইলেন্সারসহ যুতি ল্যাও, কোনো আওয়াজ করবে না। গুলি মাইরব্যা কোনো আউয়াজ করবে না। হাঁর কাছেই ছিল, সালেন্সারসহ।’
নাসির প্রশ্ন করেন, ‘ওরাকে দিল কে?’ জবাবে ইকবাল বলেন, ‘এটা ধরেন যে ওবায়দুল পাঠান, ওই সংগ্রহ করে দিয়েছে। এইডা থাকার কথা আমরুলের কাছে।’ ইকবাল বর্ণনা দিতে থাকেন, ‘রাজরামপুরের সামনে পোখরের ওখানে ওবায় পাঠানের জমি আছে ১১ বিঘা। ওই জমির লাইগ্যা বোলে, “ভাই আপনি শুধু হামরাকে ব্যবহার করছেন।” তখুন বলে, “কী লাগবে তোর?” তখন বোলে, “ঠিক আছে তোরা তিনজনাকে তিনখ্যান ব্যবস্থা করে দিছি।” জিনিসগ্যালার অর্ডার হয়েছিল তিনঝোনার লাইগ্যা তিনটা। আমরুল ট্রেনিংও দিয়েছে ১০ দিন।’
এই আমরুল অস্ত্রটি রিশানকে দিয়েছেন বলে কথোপথনে উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইকবাল, জসিম কিংবা আমরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে যোগাযোগ করা হলে ফোনকল রেকর্ডটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন। ফোনকল রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়ার কথা শুনেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কথাটা কিছুদিন আগের। রিশান, আমরুল, ইকবাল—তারা সব একই গ্রুপে চলাফেরা করে। বালু নিয়ে একটা ঘটনা ঘটে, সেখানে রিশান অস্ত্র দেখায়। বিষয়টা জানতে আমি রিশানের ঘনিষ্ঠ ইকবালের সঙ্গে কথা বলি। তার আগে আমার চাচাতো ভাই জসিম কথা বলে।’ তিনি জানান, রাজারামপুরে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠানের একটি জমি রয়েছে। এ জমিকে কেন্দ্র করে ওবায়েদ অস্ত্রটি আমরুলকে দিয়েছেন বলে তিনি ইকবালের কাছ থেকে শুনেছেন।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলেন, ‘আমার সঙ্গে রিশানের কখনো দেখা হয়নি। আমি তাকে চিনি না। আমি ফোনকলের ব্যাপারে প্রথম শুনছি। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বহু দিনের। নিজে হাতে নেড়েও দেখিনি কখনো। আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রও নেই।’ অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলে হাসিনার সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে, তাহলে আমি কী করব? রিশান কি আমাদের দল-পার্টির ছেলে? আমাদের সঙ্গে কী সম্পর্ক? আমাদের সঙ্গে তো কোনো মিছিল-মিটিং করে না। দলীয় পদ নাই। তাহলে আমার সঙ্গে কী সম্পর্ক? কেউ যদি আমার নাম ব্যবহার করে কিংবা রেকর্ড করে, সেটার জন্য তো আমি দায়ী না। আমার সঙ্গে তো ডিরেক্ট তাদের কথা হয়নি। কে কী বলল, না বলল—এগুলোতে কিছু যায় আসে না। কার কাছে কী আছে, আমি কিছুই জানি না।’
রিশান গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার হয়নি
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিরের খৈলান এলাকায় একটি সমাবেশ ছিল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির আরও এক মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা হারুন-অর-রশিদ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে রিশানের বাড়ির সামনে ইসমাইল হক কিনু নামের একজনের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার সময় রিশানের বাবা জিয়াউর রহমানও ছিলেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই মো. তুফানি ১২ আগস্ট জিয়াউর রহমান, তাঁর ছেলে রিশানসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারের দুটি কপি পাওয়া গেছে। খসড়া কপিতে লেখা হয়েছিল, হামলার সময় ককটেল বিস্ফোরণ হয় এবং রিশান পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করেন। পরে থানায় মামলা হিসেবে যে এজাহার রেকর্ড হয়, সেখানে পিস্তলের প্রসঙ্গটি নেই। পুলিশ পিস্তলের প্রসঙ্গটি বাদ দিতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে মামলার পরদিন গত বুধবার রাতে রিশানকে গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাঁকে এক দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাই তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন। ছড়িয়ে পড়া ফোনকলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, তিনি ফোনকলের বিষয়টি জানেন। রিমান্ডে থাকাকালে অস্ত্রের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি তিনি নিজেও রিশানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে রিশান মুখ খোলেননি। কোনো অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
১ ঘণ্টা আগে
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
১ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৩ ঘণ্টা আগেফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।
স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।
ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।
স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।
ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
১৫ আগস্ট ২০২৫
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
১ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৩ ঘণ্টা আগেমো. হোসাইন আলী কাজী

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।
বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’
আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।
জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।
বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’
আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।
জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
১৫ আগস্ট ২০২৫
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
১ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ফারুকের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদরের চাঁনপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মসলেম সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের সিএনজি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হলেও পরে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। এক পুরিয়া গাঁজার জন্য ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। পরে ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখে যায় বাগমারা থানা-পুলিশ। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরদিন সকালে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
গত বুধবার উপজেলা সদরে গেলে ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে ওমর ফারুককে আটকে রাখেন সিএনজি সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সমিতির ২০-২৫ জন সদস্য মব সৃষ্টি করে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। চুরির কথা স্বীকার করাতে চার হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নগ্ন করে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পানি খেতে চাইলে পাশের নদীতে চুবানো হয়। পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মরিচের গুঁড়া। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে এক পুরিয়া গাঁজা এনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা দেখে পুলিশ সদস্যরা আর তাঁকে নিয়ে যেতে চাননি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মুমূর্ষু ভ্যানচালক ফারুককে সাত দিন কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, ওই রাতেই পুলিশ ওমর ফারুককে আহত অবস্থায় কারাগারে দিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে পরদিন সকালে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ফারুক মারা যান। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফারুকের বাবা মসলেম সরদারও ভ্যানচালক। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। চুরি না করলেও স্বীকার করাতে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
ফারুকের মা পারুল বেগম বলেন, ‘গরিব বলে আমার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা না করিয়ে প্রশাসন তাকে কারাগারে পাঠায়। সিএনজির লোকজন দেখায়, তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে। কিন্তু সে মাদক সেবন করত না। প্রশাসন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার মৃতপ্রায় ছেলেকে জেলে দিয়ে খুব খারাপ কাজ করেছে। তখনো সঠিক চিকিৎসা হলে বেঁচে যেত। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। সামনাসামনি না গেলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন না বলে জানান।
মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি না। আদেশ হলে আমাদের কাজ কারাগারে পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।’ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুমূর্ষু ব্যক্তির চিকিৎসা না করিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। সভা শেষে ফোন করবেন। পরে আর ফোন করেননি। আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিভাগীয় কমিশনার ড. আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ফারুকের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদরের চাঁনপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মসলেম সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের সিএনজি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হলেও পরে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। এক পুরিয়া গাঁজার জন্য ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। পরে ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখে যায় বাগমারা থানা-পুলিশ। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরদিন সকালে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
গত বুধবার উপজেলা সদরে গেলে ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে ওমর ফারুককে আটকে রাখেন সিএনজি সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সমিতির ২০-২৫ জন সদস্য মব সৃষ্টি করে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। চুরির কথা স্বীকার করাতে চার হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নগ্ন করে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পানি খেতে চাইলে পাশের নদীতে চুবানো হয়। পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মরিচের গুঁড়া। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে এক পুরিয়া গাঁজা এনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা দেখে পুলিশ সদস্যরা আর তাঁকে নিয়ে যেতে চাননি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মুমূর্ষু ভ্যানচালক ফারুককে সাত দিন কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, ওই রাতেই পুলিশ ওমর ফারুককে আহত অবস্থায় কারাগারে দিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে পরদিন সকালে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ফারুক মারা যান। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফারুকের বাবা মসলেম সরদারও ভ্যানচালক। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। চুরি না করলেও স্বীকার করাতে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
ফারুকের মা পারুল বেগম বলেন, ‘গরিব বলে আমার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা না করিয়ে প্রশাসন তাকে কারাগারে পাঠায়। সিএনজির লোকজন দেখায়, তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে। কিন্তু সে মাদক সেবন করত না। প্রশাসন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার মৃতপ্রায় ছেলেকে জেলে দিয়ে খুব খারাপ কাজ করেছে। তখনো সঠিক চিকিৎসা হলে বেঁচে যেত। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। সামনাসামনি না গেলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন না বলে জানান।
মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি না। আদেশ হলে আমাদের কাজ কারাগারে পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।’ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুমূর্ষু ব্যক্তির চিকিৎসা না করিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। সভা শেষে ফোন করবেন। পরে আর ফোন করেননি। আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিভাগীয় কমিশনার ড. আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
১৫ আগস্ট ২০২৫
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
১ ঘণ্টা আগে
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
১ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৩ ঘণ্টা আগেখুলনা প্রতিনিধি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে মহানগরীর টুটপাড়া থেকে তন্বীকে আটক করা হয়। খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি তৈমুর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মহানগরীর সোনাডাঙ্গার আল আকসা মসজিদ রোডে অবস্থিত ১০৯ মুক্তা হাউসের নিচতলার তন্বীর বাসায় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি খুলনাসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।
এ ঘটনায় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
এর আগে মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানিয়েছিলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী গত ১ ডিসেম্বর নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাঁর কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তাঁর অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে চলতি মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বাড়ির ছাড়ার আগেই গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে মহানগরীর টুটপাড়া থেকে তন্বীকে আটক করা হয়। খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি তৈমুর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মহানগরীর সোনাডাঙ্গার আল আকসা মসজিদ রোডে অবস্থিত ১০৯ মুক্তা হাউসের নিচতলার তন্বীর বাসায় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি খুলনাসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।
এ ঘটনায় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
এর আগে মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানিয়েছিলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী গত ১ ডিসেম্বর নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাঁর কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তাঁর অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে চলতি মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বাড়ির ছাড়ার আগেই গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিএনপি নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-সংক্রান্ত তিনজনের একটি ফোনকল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফোনকল রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়েদ পাঠান বলছেন, তিনি কখনো অস্ত্র ছুঁয়েও দেখেননি।
১৫ আগস্ট ২০২৫
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
১ ঘণ্টা আগে
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
১ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে