Ajker Patrika

গ্রেপ্তারের সংখ্যার সঙ্গে বেড়েছে তাঁর মাদক ব্যবসার পরিসর

আরিফুর রহমান মিঠু, শাজাহানপুর (বগুড়া)
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২১, ২২: ১৮
গ্রেপ্তারের সংখ্যার সঙ্গে বেড়েছে তাঁর মাদক ব্যবসার পরিসর

রবিউল ইসলাম ভোট (৬৫)। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খোট্রাপাড়া ইউনিয়নের জোঁকা গ্রামের তাঁর বসবাস। তিনি মৃত রমজান আলীর বড় ছেলে।  গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইয়াবাসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে এ নিয়ে রবিউল অর্ধশতাধিকবার গ্রেপ্তার হলেন। তিনি আন্তজেলা মাদক চোরা চালানের অন্যতম হোতা হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এখনও কোন মামলায় তিনি শাস্তি পাননি। 

চোপিনগর এবং খোট্রাপাড়া ইউনিয়নের এলাকাবাসি আজকের পত্রিকাকে জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন রবিউল ইসলাম ভোট। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথমে খুচরা গাঁজা বিক্রি করতেন। সময়ের সঙ্গে গাঁজা এবং ফেনসিডিল বিক্রি শুরু করেন ভোট। পরবর্তিতে হেরোইন বিক্রি শুরু করেন। খুচরা বিক্রির সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেরোইন এবং নেশা জাতীয় এ্যাম্পুলের পাচার শুরু করেন তিনি।

ঢাকায় পাচার করার সময় রবিউল ইসলাম ভোটের এ্যাম্পুলের অনেক বড় চালান আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সময় ভোট গ্রেপ্তারও হন। বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ভোটের গ্রেপ্তারের খবর শোনা যায়। তবে কবে আবার জামিনে মুক্ত হয়ে বের হলেন তা আর জানা যায় না। বর্তমানে রবিউল ইসলাম ভোট অনেক সম্পদের মালিক।  

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং গ্রাম পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, রবিউল ইসলাম ভোটের পুরো পরিবার মাদক বিক্রি করেন। এই পরিবারের প্রত্যেক সদস্য অনেকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেউ গ্রেপ্তার হলেও এত দিন মাদক বিক্রি থেমে থাকেনি। জোঁকা, ঘাসিড়া, দুরুলিয়া, সাহনগর এলাকায় তাদের অনেক লোক রাখা থাকে। যারা মাদক সেবিদের কাছে মাদক পৌঁছে দেন। রবিউল ইসলাম ভোটকে প্রায় একশত বারের কাছাকাছি গ্রেপ্তারের খবর তারা শুনেছেন। তবে কোনও মামলায় তার বিচার শেষে সাজা হয়েছে এমনটা শোনেননি। 

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসের নথি সূত্রে জানাযায়, ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্ব পালন করেন মো. শাফিউল ইসলাম। রবিউল ইসলাম ভোটকে সে সময় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে মো. শাফিউল ইসলামের ভ্রাম্যমাণ আদালতে তোলা হয়। ভোট আদালতে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত সে সময় ভোটকে দুই বছরের জেল দিয়েছিলেন। শাজাহানপুর থানার সেই সময়কার পরিদর্শক (সার্বিক) আব্দুল্লাহ আল মাসউদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তখন জানিয়েছিলেন রবিউল ইসলাম ভোটের বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত ৪৪টি মামলার সন্ধান পেয়েছেন। এর মধ্যে কিছু মামলা তখনও চলমান ছিল। কিন্তু সেই শাস্তিও তাঁকে ভোগ করতে হয়নি।

একই রাতে আরেকটি অভিযানে উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের মারিয়া গ্রামের হেরোইন ও ইয়াবা বিক্রেতা মোহাম্মদ মণ্ডল (৩৬) গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশের একই অভিযানকারী দল। সে ওই এলাকার গোলাম মণ্ডলের ছেলে। তাঁর কাছে ১৫ পিছ ইয়াবা পেয়েছে পুলিশ।

উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের ডেমাজানি এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অনেকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে মোহাম্মদের শুরুটা ছিল হেরোইন বিক্রি দিয়ে। পরে ফেনসিডিল বিক্রি করেন। বর্তমানে ইয়াবা এবং হেরোইন বিক্রি করেন। এর আগেও নিজ বাড়ি থেকে ফেনসিডিলসহ মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করেছিলেন থানা-পুলিশ। প্রত্যেকবার গ্রেপ্তারের পর অল্প সময়েই জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও মাদক বিক্রি শুরু করে মোহাম্মদ মণ্ডল। 

শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নান্নু খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পৃথক অভিযানে রবিউল ইসলাম ভোট এবং মোহাম্মদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগেও ভোট অনেকবার মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন। ভোটকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর ছেলে সবুজ পালিয়ে যায়। এই মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে। মোহাম্মদ মণ্ডল এর আগেও মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে উদ্বেগ শশী থারুরের, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

শুক্রবার দুপুরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা সম্ভব: জাকসু নির্বাচন কমিশন

‘বেয়াদবি ছুটায় দেব’: সরি বলতে অসুবিধা নেই, বললেন সেই জামায়াত নেতা

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির হোতা মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু গ্রেপ্তার

নতুন ট্রেন্ড ন্যানো ব্যানানা, নিজের থ্রিডি ফিগারিন বানাবেন যেভাবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত