Ajker Patrika

মূল্যস্ফীতির ঘা: শহর ছাড়ছে মানুষ, গ্রামেও নাভিশ্বাস

খালিদ হাসান, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ০২
মূল্যস্ফীতির ঘা: শহর ছাড়ছে মানুষ, গ্রামেও নাভিশ্বাস

শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আপেল মাহমুদ। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকার বাইপাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি কারখানায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি গ্রামে ফিরেছেন। আপেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকায় সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় সংসারের খরচ অনেক বেড়ে যায়। বাসা ভাড়ার পাশাপাশি পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে কয়েক দফায়। নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে পোষাতে না পেরে বাধ্য হয়ে গ্রামে এসে মুদি দোকান দিয়েছি। এখানে পরিবার নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি।’

মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, কিচকের আঞ্জুয়ারা, পিরবের আব্দুল মমিন ও দেউলীর আব্দুল বারীর মতো আরও অনেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন লাগামহীন, তাল মিলিয়ে যানবাহন ও বাসাভাড়াও বাড়ছে, তখন শহুরে জীবনকে বিদায় জানাতে হয়েছে তাদের। 

গ্রামে ফিরলেই কি আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলে? তেলের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির আঘাত কি গ্রামে পড়েনি? তাহলে ঠরু মোল্লার মতো গ্রামীণ প্রান্তিক মানুষের গল্প শুনতে হবে। জানতে হবে, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে কেমন হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকে আজ অবধি পরিবারকে মাছ-মাংস খাওয়াতে পারেননি।

বগুড়ার শিবগঞ্জের চলনাকাথী গ্রামের দিনমজুর এই ঠরু অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে দিনে ৩৫০ টাকা আয় করেন। ৩ কেজি চাল, তেল, কাঁচাবাজার বাবদ এবং চার সন্তান ও অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ছয়জনের সংসারে দিনে তাঁর ব্যয় হয় ৪০০ টাকা। এই ঘাটতি তিনি মেটান মাঝে মাঝে ঋণ করে।

তাই গ্রামে ফিরেও জীবনযাত্রায় স্বস্তি নেই শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের। স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনার পর ঢাকায় বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তাল মেলাতে গ্রামে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখন সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। দিনে ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া পাই, গ্যাস খরচ বাদ দিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা হাতে থাকে। এই টাকা দিয়ে দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর।’

এদিকে গ্রামের শিক্ষিত প্রায় মধ্যবিত্ত লোকেরা একটু বেশিই সংকটে আছেন। অভাবে জর্জরিত হলেও তাঁরা লজ্জায় প্রকাশ করতে পারেন না। মোকামতলা বন্দর এলাকার এমনই একজন কনক দেব। তিনি শিক্ষকতা করেন একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কেমন আছেন জানতে চাইলে কনক দেব বলেন, ‘দুই সন্তানের পড়াশোনা, নিজের চিকিৎসা, অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন চলছে আমার। পরিবারের খরচ মেটাতে একটি এনজিও থেকে ঋণ করেছি। কারও কাছে মুখ ফুটে অভাবের কথা বলতেও পারি না, সইতেও পারি না। দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টানলে মধ্যবিত্তদের বাঁচা মুশকিল।’

অক্টোবর মাসের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, মাছ-মাংস খাওয়া বাদ দিলে ঢাকা মহানগরে চারজনের এক পরিবারের শুধু খাবারের জন্য ব্যয় হয় গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। আর মাছ-মাংস যুক্ত হলে তা ২২ হাজার ৪২১ টাকা হবে।

সরকারের হিসাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে আগস্টে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। এটা ৫ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ। কিন্তু বাজারে অনেক পণ্যের মূল্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। সংস্থাটি বলছে, সরকারের গড় মূল্যস্ফীতির তথ্য বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না। জরুরি ভিত্তিতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে সিপিডি।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে মোটা চালের দাম প্রায় ১১ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫৫ টাকায় উঠেছে। আটার দাম বেড়েছে ব্যাপক। ৬৮ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত। চিনির দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। গরুর মাংসের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতির এমন চাপে শহরের পাশাপাশি দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার, বিশেষ করে ৯ জেলার দরিদ্র মানুষ এখন অনেক খারাপ সময় পার করছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব দেশের কৃষি খাতকেও আক্রান্ত করে। কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রাকেও সংকুচিত করে ফেলেছে।

বুড়িগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল বাসেদ বলেন, ‘আমার চার বিঘা ফসলি জমি আছে। গেল দুই বছর যাবৎ সার আর কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের টাকা দিয়ে আবার নতুন ফসল লাগাতে হয়। আলু, ফুলকপি, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে কোনো কোনো সময় লোকসানও গুনতে হচ্ছে। জমি থেকে কোনো বাড়তি আয়েরও সুযোগ নেই আমার।’

এমন পরিস্থিতিতে পরিবারে একটু বাড়তি আয় জোগাতে গিয়ে শৈশবেই পড়ালেখা থেকে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু। ভ্যান চালানোসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হচ্ছে তারা। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা টু জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে দেখা মেলে যাত্রীবাহী ভ্যানচালক আবু মুসার সঙ্গে। বয়স আনুমানিক ১২ বছর।

পড়ালেখা বাদ দিয়ে এই বয়সে ভ্যান চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, ‘বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন আর আমি ভ্যান চালাই। বড় বোনের বিয়ের পর সংসারে অভাব দেখা গেছে। আমার ছোট একটা ভাই আর মা আছে।’

ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য খাবার কিনতে সম্পদ বিক্রি ও ঋণ করছে ৬৪ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া খাবার কিনতে গিয়ে ১০ শতাংশ পরিবার তাদের গত ১২ মাসের সব সঞ্চয় ভেঙে ফেলেছে।

চড়া মূল্যের বাজারে প্রান্তিক পর্যায়ের নিম্নবিত্ত মানুষদের বাঁচাতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. হাসানাত। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। কৃষি উপকরণের ওপর ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজার-৪ আসন: বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত সমর্থকদের প্রতীকী কলাগাছ রোপণ করে প্রতিবাদ

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারে মনোনয়ন না পাওয়ায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সমর্থকেরা সড়ক অবরোধ ও কলাগাছ রোপণ করে প্রতীকী প্রতিবাদ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজারে মনোনয়ন না পাওয়ায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সমর্থকেরা সড়ক অবরোধ ও কলাগাছ রোপণ করে প্রতীকী প্রতিবাদ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সমর্থকেরা। টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তাঁরা সড়কের পাশে কলাগাছ রোপণ করেন।

গতকাল সোমবার বিএনপি ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। এতে কক্সবাজার-৪ আসনে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর নাম না থাকায় তাঁর সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এরপর দিবাগত রাত ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত টেকনাফ পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘অবৈধ মনোনয়ন মানি না, মানব না’—এমন স্লোগান দেন। টেকনাফের পুরাতন বাজার, হোয়াইক্যং মোড় ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকটি স্থানে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে কলাগাছ রোপণ করেন তাঁরা।

কক্সবাজারে মনোনয়ন না পাওয়ায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সমর্থকেরা সড়ক অবরোধ ও কলাগাছ রোপণ করে প্রতীকী প্রতিবাদ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজারে মনোনয়ন না পাওয়ায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সমর্থকেরা সড়ক অবরোধ ও কলাগাছ রোপণ করে প্রতীকী প্রতিবাদ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্যদিকে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছোট ভাই ও টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সবাইকে ধৈর্য ধরে দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গহিন পাহাড়ে অভিযানে দুই মানব পাচারকারী আটক, নারী-শিশুসহ ২৫ জন উদ্ধার

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ২৫ ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী। এ সময় দুই মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক।

সিয়াম-উল-হক জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও আগে আটক করা পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য নারী-শিশুসহ বেশ কয়েকজনকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া-সংলগ্ন গহিন পাহাড়ি এলাকায় বন্দী করে রাখা হয়েছে।

ওই তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দী থাকা নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার এবং দুই মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়।

কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র বিদেশে উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন, উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন ও অল্প খরচে বিদেশ যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর পরিকল্পনা করছিল।

পাচারকারীরা তাদের পাহাড়ে বন্দী রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করছিল বলে জানা গেছে। আটক দুই পাচারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

একই আসনে মুখোমুখি দুই ভাই, লড়বেন বিএনপি-জামায়াত থেকে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
বিএনপি মনোনীত আজিজুর রহমান ও জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি মনোনীত আজিজুর রহমান ও জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাই প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান। তাঁরা আপন দুই ভাই। আজিজুর রহমান বড়। তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

গতকাল সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত মনোনীত প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়।

তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। তবে দুই দল থেকে আপন দুই ভাইয়ের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি এখন সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

জানতে চাইলে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিনি আমার বড় ভাই। তাঁর প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। কিন্তু রাজনীতির মাঠে তাঁকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। জামায়াত একটি আদর্শিক দল। এখানে দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, সবাই তাঁর জন্য কাজ করবে। আর আমার ভাইয়ের দলে সবাই নেতা হতে চায়। একে অন্যের বিরোধিতা করে। ভোটাররা সব জানে, বোঝে। জামায়াতের পক্ষে যে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। ইনশা আল্লাহ জয় আমাদের হবে।’

বিএনপি থেকে মনোনীত প্রার্থী আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার ছোট ভাই একসময় আমার কর্মী ছিল। এখন সে জামায়াতের প্রার্থী। আমাদের পারিবারিক সম্পর্কে ফাটল ধরানোর জন্য তারা এমন করেছে। কিন্তু এতে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। দল আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করায় তাদের (জামায়াতের) পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। ছোট ভাইয়ের প্রতি পরিবার ও গ্রামবাসীর সমর্থন নেই। ভোটাররা আমার প্রতি আস্থাশীল। তারা বিএনপিকে জয়ী করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরসিংদীর রায়পুরা: দেড় বছর অনুপস্থিত শিক্ষক, নেন বেতন

  • অভিযোগ বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
  • প্রশাসনিক কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীদের পাঠদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে
  • ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে না এলেও উপজেলা অফিসে যান প্রায়ই
হারুনূর রশিদ, রায়পুরা (নরসিংদী)
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২১
তাহমিনা সরকার। ছবি: সংগৃহীত
তাহমিনা সরকার। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর রায়পুরায় তাহমিনা সরকার নামের এক প্রধান শিক্ষক প্রায় দেড় বছর বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

তাহমিনা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। গতকাল সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এদিনও তিনি বিদ্যালয়ে ছিলেন না। তবে সেখানে কথা হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সঙ্গে।

বিদ্যালয় সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১২ জন। শিক্ষক রয়েছেন ১২ জন। তাহমিনা সরকার ২০১৬ সালের মার্চ মাসে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে কয়েক দফায় অগ্নিসংযোগ ও টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে অফিসকক্ষের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও মালপত্র পুড়ে যায়। পরে প্রধান শিক্ষকের করা মামলায় অফিস সহকারী কাম নৈশপ্রহরী মামুনসহ স্থানীয় তিনজন জেলও খাটেন। এরপর থেকেই তিনি নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ে আসছেন না। তবে উপজেলা অফিসে যান প্রায়ই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিহার সুলতানাসহ কয়েকজন বলেন, আগুন লাগানো ও টিউবওয়েলে বিষ দেওয়ার ঘটনার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আর আসছেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকায় নানা সংকট দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীদের পাঠদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে হতাশ। তারা বলে, ‘প্রধান শিক্ষক প্রায় এক বছর বিদ্যালয়ে আসেন না। এতে আমাদের পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই তিনি দ্রুত স্কুলে ফিরে আসুন।’

বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি খন্দকার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘যদি তিনি স্কুলে আসতে না চান, তবে তাঁর পরিবর্তে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। আমরা চাই স্কুল ভালো চলুক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক তাহমিনা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন স্কুলে যাচ্ছি না সেটা আপনাকে কেন বলব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয় তারা জানে।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোহরাফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক তাহমিনা সরকারের ভাষ্যমতে, তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। আগের ডিপিও স্যারের কাছ থেকে শুরুতে তিন মাসের ছুটি নিয়েছিলেন, পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতিতে অফিসে আসতেন; কিন্তু স্কুলে যেতেন না। তিনি বলেন, ‘আমি সম্প্রতি তাঁকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি যদি না যান, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত