Ajker Patrika

শেরপুরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, প্রধান শিক্ষক আটক

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেরপুরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, প্রধান শিক্ষক আটক

বগুড়ার শেরপুরে ক্লাস শেষে স্কুলে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন প্রধান শিক্ষক। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী (৯) বাথরুমে গেলে সেখানেই তাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন ওই প্রধান শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবারের এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে আজ রোববার সকালে প্রধান শিক্ষককে স্কুলেই অবরুদ্ধ করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকে আটক করে। বগুড়ার শেরপুরের সীমাবাড়ি ইউনিয়নের রোরোয়া গ্রামে আর্জিনা হামিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ররোয়া আর্জিনা হামিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলাম ক্লাস শেষে স্কুলেই কিছু শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ান। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তার কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী বাথরুমে যায়। প্রধান শিক্ষকও তার পিছু নিয়ে ছাত্রীটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তখন ছাত্রীটি চিৎকার করে বেড়িয়ে বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তার মাকে জানায়। এ সময় স্থানীয় কিছু লোক বিষয়টি দেখে ফেলেন। 

ছাত্রীটির মা বলেন, ‘ঘটনার পরে আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে বিস্তারিত জানায়। প্রধান শিক্ষক তার মুখচেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করে। তার কথা না শুনলে আমার ছেলেকে হত্যা করার হুমকি দেয়।’ 

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানতে পারি। আমি তৎক্ষণাৎ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ভাইয়ের কাছে জানাই। তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও নীরব থাকে। পরে শুক্রবার ওই শিক্ষক ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি তাতে রাজি হইনি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’ 

ররোয়া গ্রামের আবু সাইদ বলেন, ‘এই শিক্ষক এর আগেও চারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রতিবারই ম্যানেজিং কমিটির লোকজনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছে। তার কাছে আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ নয়। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ 

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’ 

শেরপুর থানার উপপরিদর্শক রবিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবরুদ্ধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থালে গিয়ে স্থানীয় জনগণকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।’ 

শেরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত