Ajker Patrika

‘আমতলীতে প্রধানমন্ত্রী প্রোগ্রাম করলে মেয়রের অনুমতি নেন’ 

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩, ১১: ০৩
‘আমতলীতে প্রধানমন্ত্রী প্রোগ্রাম করলে মেয়রের অনুমতি নেন’ 

‘একটা জিনিস মনে রাখবেন, সারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমতলীতে আসেন, একটা প্রোগ্রাম করেন, তাহলে আমতলীর যিনি মেয়র, ওই মেয়রের কাছ থেকে তিনি পারমিশন নেন ওই তারিখের। এটা আপনারা জানেন কি না, জানি না। ওই তারিখে প্রধানমন্ত্রীর সভা হবে, তাঁর (মেয়র) কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। তারপরে প্রোগ্রাম সিলেক্ট হয়।’

আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পুনর্নির্বাচনে আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে নৌকা প্রতীকের এক সভায় গত মঙ্গলবার এসব কথা বলেছেন আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুস সালাম সোহেল মোল্লা। তাঁর এমন বক্তব্যের ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে এবং এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

এলাকার সববার অভিযোগ, পৌর মেয়র পদ এতই বড় যে প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রাম করতে হলে মেয়রের অনুমিত নিতে হয়। এই ভিডিও ভাইরাল হলে আমতলী উপজেলার তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সোহেল মোল্লার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। 

এ বিষয়ে আব্দুস সালাম সোহেল মোল্লার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে এমন মন্তব্যের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। আপনার সঙ্গে পরে যোগাযোগ করব।’ 

আওয়ামী লীগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা-কর্মী বলেন, পৌর মেয়র পদ কি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বড়? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমতলীতে আসতে হলে পৌর মেয়রের অনুমতি লাগবে। এমন জঘন্য বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা আব্দুস সালাম সোহেল মোল্লার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। 

আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রিপন হাওলাদার সভায় উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের সভায় আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বক্তব্যে দলের চেইন অব কমান্ড বোঝাতে চেয়েছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রোগ্রাম করতে হলে পৌর মেয়রের অনুমিত লাগবে—এটা কেমন কথা? তবে পুরো ভিডিও শুনলে হয়তো বোঝা যেত তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন।’

আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম ওসমানী হাসান বলেন, ‘ভিডিওটি আমি দেখেছি। এত বড় ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য কেন তিনি দিয়েছেন তা আমার জানা নেই। এ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে আমার কাছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফোন দিয়ে নিন্দা জানাচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই ভিডিওর বিষয়টি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগকে জানাব। তারা যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন, সেই অনুসারে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

ওই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রিপন হাওলাদার, সাবেক চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ, ইউপি সদস্য মো. নাশির মোল্লা, মতিয়ার রহমান হাওলাদারসহ আওয়ামী লীগের শতাধিক নেত-কর্মী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত