Ajker Patrika

গণভোটের আদেশ চুপ্পুর কাছ থেকে নেওয়া হবে জুলাই বিপ্লবের কফিনে শেষ পেরেক: হাসনাত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল নগরীতে এনসিপির সমন্বয় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল নগরীতে এনসিপির সমন্বয় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণভোটের আদেশ জারি করতে হবে। অবশ্যই সেটি ড. ইউনূসকে করতে হবে। তিনি বলেন, ‘এই গণভোটের আদেশ যদি চুপ্পুর কাছ থেকে নিতে হয়, সেটা হবে জুলাই বিপ্লবের কফিনে শেষ পেরেক।

আজ রোববার বিকেলে বরিশাল নগরীতে এনসিপির বরিশাল জেলা ও মহাগর সমন্বয় সভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন হাসানাত।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যাঁরা গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাচ্ছেন, দীর্ঘদিন রাজপথে ফ্যাসিবাদী লড়াই করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, নেতা-কর্মীর জীবন উৎসর্গ করেছেন, অভ্যুত্থানের জায়গা থেকে ফ্যাসিস্টের রূপকার চুপ্পুর কাছ থেকে অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি নেওয়া কতটা যৌক্তিক ও কতটা প্রাসঙ্গিক—এটা তাঁরা বিবেচনা করবেন।’

হাসনাত আরও বলেন, ‘নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তুতি হিসেবে সারা দেশে সাংগঠনিক সফর করছেন। আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপির সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদ মুসা। প্রধান বক্তা ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা আলম মিতু, যুগ্ম সদস্যসচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনার সীমান্ত গ্রাম ভবানীপুর: পাকা রাস্তা-সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সাঁকোই ভবানীপুরের বাসিন্দাদের ভরসা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সাঁকোই ভবানীপুরের বাসিন্দাদের ভরসা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় ভারত সীমান্তঘেঁষা গ্রাম ভবানীপুর। স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে আজও এই জনপদ পিছিয়ে আছে অন্ধকারে। এখানকার কয়েক হাজার মানুষের জীবন যেন দুর্গম যাতায়াতে আটকা—নেই কোনো পাকা সড়ক, নেই স্থায়ী সেতু। ভাঙা মাটির রাস্তা আর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সাঁকোই তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। দুই চাকার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আনা থেকে শুরু করে গর্ভবতী নারী বা রোগীকে জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে নিতেও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

গ্রামের একমাত্র সেতুটি ২০১৪ সালের দিকে ভেঙে যাওয়ার পর কাঠ-বাঁশের সেতুই এখন একমাত্র ভরসা। উন্নয়ন যেন এখানকার মানুষের কাছে সোনার হরিণ। কবে মিলবে স্থায়ী সেতু ও পাকা রাস্তা জানেন না কেউই।

স্থানীয় বাসিন্দা সজীব মিয়া বলেন, ‘যুগের পর যুগ কেটে গেলেও আমরা উন্নয়নবঞ্চিত। স্বাধীনতার পর থেকে এ গ্রামে কোনো দিন পাকা রাস্তা বা স্থায়ী সেতু হয়নি। গ্রামের দুটি সেতুর মধ্যে একটি কাঠ-বাঁশের আর অন্যটি পাকা হলেও সেটিও সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমেই পথ মেরামত করে যাতায়াত করছি।’

দুই চাকার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুই চাকার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। ছবি: আজকের পত্রিকা

আরেক বাসিন্দা সামছু মিয়া জানান, গর্ভবতী নারী বা রোগীকে জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে নিতে নদীপথই ভরসা। কৃষিজাত পণ্যও বাজারে নেওয়া কষ্টসাধ্য।

স্কুলশিক্ষার্থী মুর্শিদা আক্তার বলে, ‘প্রতিদিন কাঁচা রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার হাঁটতে হয় স্কুলে যেতে। বর্ষায় কাদা-জলে ভিজে স্কুলে পৌঁছানোই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে পড়ালেখায় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। আমাদের দাবি পাকা রাস্তা ও সেতু নির্মাণ করা হোক।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা আফসানা বলেন, ‘গ্রামটি দেখেছি। মানুষ সত্যিই কষ্টে আছে। ভবানীপুরের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে। শিগগিরই যাতে গ্রামের মানুষ যাতায়াত সুবিধা ভোগ করতে পারে, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্ধত্বের আঁধার পেরিয়ে আলোর মশাল হয়ে ছুটে চলেছেন চুয়াডাঙ্গার মঙ্গল মিয়া

নিজের দোকানে বসে পাওয়ার টিলার মেরামত করছেন মঙ্গল মিয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজের দোকানে বসে পাওয়ার টিলার মেরামত করছেন মঙ্গল মিয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

যেখানে জীবনের ছোটখাটো প্রতিবন্ধকতাকেও অনেকে ব্যর্থতার অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেন, সেখানে কিছু মানুষ নিঃশব্দে এক মহাকাব্য রচনা করে চলেন। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার পুড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গল মিয়া সেই বিরল মানুষদের একজন—অন্ধত্বের বাধা ডিঙিয়ে যিনি দুর্বার গতিতে ছুটে চলেছেন জীবন সংসারে। দুই চোখ দৃষ্টিহীন হলেও, তাঁর কর্মস্পৃহা আর আত্মনির্ভরশীলতার গল্প আজ গোটা এলাকার মানুষের মুখে মুখে।

প্রায় ৩৫ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তি হারানো মঙ্গল মিয়ার বয়স বাড়লেও, তাঁর জীবনীশক্তি যেন কমেনি এতটুকু। তাঁর সঙ্গে কথা বলা, পথ চলা বা কাজ করার ধরন দেখলে সহজে বোঝার উপায় নেই যে তিনি জগতের রূপ দেখতে পান না। প্রতিদিনের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই হাতে লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। একাই খুলে বসেন তাঁর ছোট্ট মেকানিকের দোকানটি। আর এই দোকানটিই যেন তাঁর কর্মযজ্ঞের মন্দির।

বাইসাইকেল থেকে শুরু করে জরুরি কৃষি যন্ত্রপাতি—পানির পাম্প, শ্যালো মেশিন এবং বিস্ময়করভাবে জটিল পাওয়ার টিলার পর্যন্ত সবকিছুই তিনি মেরামত করেন। এলাকার মানুষ তাঁর এই অন্ধত্বের ওপর দৃষ্টি না রেখে, বরং তাঁর দক্ষতার ওপর চোখ বন্ধ করে নির্ভর করে। আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কৃষকেরা তাঁদের প্রাণের যন্ত্র—শ্যালো বা টিলার বিগড়ে গেলেই ছুটে আসেন মঙ্গল মিয়ার কাছে।

মঙ্গল মিয়ার দক্ষতাকে শুধু ‘মেকানিক’ শব্দটি দিয়ে প্রকাশ করা কঠিন। তাঁর হাত যেন এক জাদুকরের স্পর্শ পেয়েছে। তিনি শুধু হাতের স্পর্শেই নোটের আকার-প্রকৃতি বুঝে নির্ভুলভাবে টাকার পরিমাণ বলে দিতে পারেন। একবার শুনে নেওয়া যেকোনো ফোন নম্বর তিনি মুখস্থ রাখেন নিখুঁতভাবে। স্থানীয়রা তাঁকে শুধু একজন দক্ষ মেকানিক হিসেবে নয়, বরং একজন ‘দৃষ্টিমান হৃদয়’-এর মানুষ হিসেবে দেখেন। বহু দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ ছুটে আসে তাঁর কাছে, কারণ তারা জানেন—মঙ্গল মিয়ার হাতে কাজ দিলে নিশ্চিন্ত থাকা যায়।

বাইসাইকেলের খুঁটিনাটি জিনিসও তিনি অনায়াসেই সারাতে পারেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাইসাইকেলের খুঁটিনাটি জিনিসও তিনি অনায়াসেই সারাতে পারেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিজের দীর্ঘ লড়াইয়ের গল্প বলতে গিয়ে মঙ্গল মিয়া জানান এক আশ্চর্য পথচলার কথা। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৩৫ বছর হলো আমি চোখে দেখি না। ছোটবেলায় সাইকেল সারানোর কাজটা শিখেছিলাম। পরে নিজের চেষ্টায় শ্যালো মেশিন ও পাওয়ার টিলার মেরামতের কাজও রপ্ত করি। একটা সময় তো বিদ্যুতের কাজও করতাম।’ 

এই স্বশিক্ষিত কারিগর একা একাই জীবনের সমস্ত কাজ করে চলেন। মঙ্গল মিয়ার জীবন আমাদের এক চরম সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়—শারীরিক সীমাবদ্ধতা জীবনের বোঝা নয়, বরং ইচ্ছাশক্তির সামনে তা নতজানু হতে বাধ্য। চুয়াডাঙ্গার এই অদম্য মানুষটি তাঁর হাতের স্পর্শ, কঠোর পরিশ্রম আর অটুট মনোবল দিয়ে কেবল মেশিন নয়, মেরামত করে চলেছেন মানুষের জীবনবোধকেও। মঙ্গল মিয়া প্রমাণ করলেন—ইচ্ছা থাকলে অন্ধত্বও কোনো বাধা নয়, এটি বরং হাজারো মানুষের জন্য এক প্রেরণার উৎস হতে পারে। তিনি চোখে না দেখেও স্বনির্ভরতার যে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন, তা বাংলাদেশের হাজারো সংগ্রামীর পথকে আলোকিত করে তুলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেই রূপলালের মেয়ের বিয়ে: বাইরে আনন্দ, ভেতরে কষ্ট

শিপুল ইসলাম, রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৫
নিহত রূপলালের স্ত্রী ও সন্তানেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত রূপলালের স্ত্রী ও সন্তানেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন মাস আগে মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করার জন্য পথ ভুলে যাওয়া ভাগনি জামাইকে এগিয়ে আনতে গিয়ে মবের শিকার হয়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান রূপলাল রবিদাস। সেই শোক মনে নিয়েই বিয়ে হচ্ছে তাঁর বড় মেয়ের।

রংপুরের তারাগঞ্জের কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে রূপলালের বাড়িতে গতকাল সকাল থেকে চলছে ব্যস্ততা। সড়কে রঙিন গেট, উঠানে বাঁশের মাচা, মণ্ডপ, রঙিন কাপড়ের প্যান্ডেল, ধোঁয়া উঠছে রান্নার হাঁড়ি থেকে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, আনন্দঘন উৎসব, কিন্তু একটু কাছে গেলে বোঝা যায়—উৎসবের ভেতর পরিবারের সদস্যদের মনে লুকিয়ে রয়েছে রূপলালকে হারানোর গভীর ব্যথা।

রূপলালের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত ১০ আগস্ট রূপলালের বড় মেয়ে নুপুর রানীর বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে। এ জন্য ৯ আগস্ট মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে আত্মীয় রূপলাল দাসের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন ভাগনি জামাই প্রদীপ দাস। তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চোর সন্দেহে তাঁদের দুজনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে মব তৈরি করে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রূপলালের স্ত্রী হত্যা মামলা করলে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

বাবার মৃত্যুর পর নুপুর রানীর বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। রূপলালকে হারিয়ে পুরো পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। তবে রূপলালের পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের বিয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ, তারাগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ীরা ৭১ হাজার, উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭৫ হাজার, একটি সংগঠন থেকে এক লাখ টাকা টাকা পেয়েছে তারা। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন ব্যক্তি রূপলালের ছেলে জয় রবিদাস ও ছোট মেয়ে রুপার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন।

রূপলালের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরের ভেতরে কনে নুপুর রবিদাস বসে আছেন বিয়ের শাড়িতে। মুখে বিয়ের সাজ, কিন্তু চোখ দুটো লাল। পাশে মা ভারতী রানী নীরবে অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি সামলাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা: খাদ্যগুদামে বদলি-বাণিজ্য

  • দুই বছরের আগেই কর্মকর্তাদের বদলি; তাৎক্ষণিক নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ।
  • মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে অন্যদের পদায়নের অভিযোগ।
  • পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তার স্থলে উপপরিদর্শককে পদায়ন।
সাইফুল আরিফ জুয়েল, নেত্রকোনা 
ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা: খাদ্যগুদামে বদলি-বাণিজ্য

ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার সরকারি খাদ্যগুদামগুলোয় বদলি-বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ‘পারিবারিক সমস্যা’ দেখিয়ে প্রত্যাহারের আবেদন করিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে অন্যদের পদায়ন করা হচ্ছে।

সম্প্রতি অন্তত ছয়টি গুদামের কর্মকর্তাদের এভাবে বদলি ও পদায়নের তথ্য পাওয়া গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, ময়মনসিংহ আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে গঠিত একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এই বদলি-বাণিজ্যের মূল হোতা। পুরো প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করছেন খাদ্য পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম কামাল।

নেত্রকোনার কেন্দুয়া সদর খাদ্যগুদামে সম্প্রতি মেয়াদ শেষ না হতেই বিধিবহির্ভূতভাবে একজন উপপরিদর্শককে পদায়ন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী সেখানে পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকার কথা। অভিযোগ ওঠার পর ওই পদায়ন আদেশ পরে বাতিল করা হয়।

এদিকে নেত্রকোনা সদর, ঠাকুরাকোণা, ময়মনসিংহের গৌরীপুর, তারাকান্দা, ধলা ও শ্যামগঞ্জ গুদামে দেখা গেছে, দুই বছর পূর্ণের আগেই কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথ্য-উপাত্ত ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট ময়মনসিংহের তারাকান্দা গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলাল হোসেনকে দুই বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার ২৫ দিন আগেই পারিবারিক সমস্যার কারণে বদলি করা হয় ফুলবাড়িয়ায়। একই দিন তারাকান্দায় পদায়ন করা হয় শাকিল আহম্মেদকে। ২৭ দিন পর আলাল হোসেনকে গৌরীপুর খাদ্যগুদামে পদায়ন করা হয়। ৯ সেপ্টেম্বর শ্যামগঞ্জ গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ুমকে একই কারণ দেখিয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস ৫ দিন আগেই বদলি করে তাঁর স্থলে একই দিনে পদায়ন করা হয় সাজ্জাদ হোসেন খান পাঠানকে। ১৪ সেপ্টেম্বর গৌরীপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিনকে পারিবারিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার ২৮ দিন আগেই বদলি করে তাঁর স্থলে আলাল হোসেনকে পদায়ন করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর ত্রিশালের ধলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে একই কারণ দেখিয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগেই বদলি করে তাঁর স্থলে হিমেল চন্দ্র সরকারকে পদায়ন করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর নেত্রকোনার ঠাকুরাকোণা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম আহমেদকে একই কারণ (পারিবারিক সমস্যা) দেখিয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস ২০ দিন আগেই বদলি করে তাঁর স্থলে আব্দুল ওয়াহাবকে পদায়ন করা হয়। ৩০ অক্টোবর নেত্রকোনা সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাইয়ুম মোহাম্মদকে পারিবারিক সমস্যার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার ২২ দিন আগে বদলি করে তাঁর স্থলে রেজাউল ইসলামকে পদায়ন করা হয়েছে।

খাদ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস থেকে চাপ দিয়ে পারিবারিক সমস্যার আবেদন করতে বলা হয়েছে। ঊর্ধ্বতনের কথা না মানলে সমস্যায় পড়তে হবে। তাই সবাই বাধ্য হয়ে আবেদন করেছে। বদলি-বাণিজ্যে এখন প্রতি পদায়নে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। টাকা না দিলে গুদামের দায়িত্বও দেওয়া হচ্ছে না। অনেকের বদলি ও পদায়নের অফিস কপিও লুকিয়ে রাখা হয়েছে; যেটা অফিস ফাইলে থাকার কথা। ওই কর্মকর্তারা বলেন, একসঙ্গে এত কর্মকর্তাকে পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে প্রত্যাহার করা এবং ঘুষ নিয়ে নতুনদের বসানো হয়েছে। এর আগে কখনো এমন অনিয়ম দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে কথা বলতে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) আশরাফুল আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে কল দেখে তিনি এ বিষয়টি তাঁর অনিয়মের সহযোগী পরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম কামালকে জানিয়ে রাখেন।

খাদ্য পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্যারকে কল দিয়েছিলাম; সাংবাদিক কল দিয়েছিল, এটা তিনি আমাকে জানিয়েছেন। স্যার মূলত সচরাচর কারও কল ধরেন না। আমি নিজেই একসময় সাংবাদিক ছিলাম। অভিযোগের বিষয়টা মিথ্যা। ঠাকুরাকোণা গুদামের কর্মকর্তা শামীম তাঁর এক বন্ধুকে এখানে দিয়ে সময়কাল শেষ হওয়ার আগেই তিনি স্বেচ্ছায় আবেদন করে চলে গেছেন। অন্যগুলোও প্রায় একই রকম। কয়েকজন অহেতুক আমাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করে যাচ্ছে। সোর্স লাগিয়ে তাদের খুঁজে বের করতে সময় লাগবে না।’

এ বিষয়ে জানতে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীরের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

খাদ্যসচিব মাসুদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের খাদ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা দুই বছর একটি স্টেশনে থাকবেন। যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি না থাকে, তাহলে তাঁকে বদলি করার নিয়ম নেই। আর একসঙ্গে তো এত কর্মকর্তার পারিবারিক সমস্যা হতে পারে না। বিষয়টা তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত