Ajker Patrika

কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫: দেশীয় চিকিৎসার ওপর আস্থা তৈরির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার ৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন ‘কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫’। চট্টগ্রাম সোসাইটি অব ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির (সিএসআইসি) উদ্যোগে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর নগরের রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হৃদ্‌রোগ চিকিৎসার আধুনিক প্রযুক্তি, গবেষণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

‘শ্রেষ্ঠত্বের দিকে পদক্ষেপ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ১০০টির বেশি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। কর্মসূচিতে ছিল স্টেট অব দ্য আর্ট লেকচার, প্লেনারি সেশন, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি ওয়ার্কশপ, ফেলোস কোর্স, ইসিজি সিম্পোজিয়াম, পোস্টার ও কেস ডিসকাশন (সিডি) উপস্থাপন।

সম্মেলনের সমাপনী ও গালা সেশনে সভাপতিত্ব করেন সিএসআইসি সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা না থাকায় প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতি বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি, স্টেন্টিং, পেসমেকারসহ জটিল হৃদ্‌রোগ চিকিৎসা সফলভাবে হচ্ছে। মৃত্যুর হারও উল্লেখযোগ্য নয়। তারপরও রোগীরা ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশে যাচ্ছেন, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, রোগীর বিদেশমুখী প্রবণতা বন্ধ করা গেলে দেশে আধুনিক যন্ত্রপাতি, এমআরআই, কালার ডপলার, ক্যাথল্যাবসহ আরও উন্নত চিকিৎসা অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।

সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও পর্তুগাল, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, নেপাল ও ভারত—এই ৯টি দেশের খ্যাতনামা হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। আন্তর্জাতিক বক্তাদের মধ্যে ছিলেন পর্তুগালের অধ্যাপক ফুয়াস্তু জে পিন্টো, ইতালির অধ্যাপক অ্যান্থোনিও কলোম্বো, যুক্তরাষ্ট্রের ডা. রফিক আহমেদ ও অধ্যাপক চৌধুরী এইচ আহসান, মালয়েশিয়ার অধ্যাপক সাজলি সাহলান বিন কাসিম, ভিয়েতনামের ডা. ফেম নাত মিনহ, পাকিস্তানের ডা. গোলাম হুসাইন সোমরু, নেপালের ডা. অরুণ মাসকেই এবং ভারতের অধ্যাপক অশোক শেঠসহ আরও অনেকে।

পাশাপাশি দেশের শীর্ষ হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কনসালট্যান্ট এন এ এম মোমেনুজ্জামান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেছা মালিক, ইউনাইটেড হাসপাতালের অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের অধ্যাপক আতাহার আলী, এনআইসিভিডির সাবেক পরিচালক মীর জামাল উদ্দিন ও বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসাইন, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউদ্দিন, মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক এ এফ খবির উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আসাদুজ্জামানসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবদল নেতার মৃত্যু

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
দুর্ঘটনায় আরেক যুবদল নেতা গুরুতর আহত হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় আরেক যুবদল নেতা গুরুতর আহত হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠিতে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে চলন্ত বাসের নিচে পড়ে প্রাণ হারালেন এক যুবদল নেতা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরেক যুবদল নেতা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝালকাঠি সদর উপজেলার মানপাশা টেম্পো স্ট্যান্ড-সংলগ্ন বাপ্পি ভিলার সামনে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর মিরুখালী ইউনিয়নের মৃত মোতাহার হোসেন খানের ছেলে মিজান (৪০)। তিনি মঠবাড়িয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বাদল (৫০)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মিজান ও বাদল মোটরসাইকেলযোগে বরিশাল থেকে পিরোজপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি কাভার্ড ভ্যান তাঁদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে তাঁরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বরিশালগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের নিচে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই মিজান নিহত এবং বাদল গুরুতর আহত হন।

মঠবাড়িয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাবুল জোমাদ্দার জানান, তাঁরা কয়েকজন যুবদল নেতা মোটরসাইকেলযোগে বরিশালে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে একসঙ্গে পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা মোটরসাইকেলে রাজাপুর পৌঁছালেও মিজান ও বাদলকে দেখতে না পেয়ে তাঁদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পরে একজন ফোন রিসিভ করে জানান, তাঁরা দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন।

আহত বাদলকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্ঘটনায় জড়িত বাস, বাসচালক ও কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়েছে। লাশ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয়নগরে হোটেল থেকে জাতীয় পার্টির নেতার মরদেহ উদ্ধার

ঢামেক প্রতিবেদক
বিজয়নগরে হোটেল থেকে জাতীয় পার্টির নেতার মরদেহ উদ্ধার

রাজধানীর বিজয়নগরে একটি আবাসিক হোটেল থেকে জাতীয় পার্টির বাগেরহাট জেলার সাধারণ সম্পাদক হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবার বলছে, হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে পল্টন থানার পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য সন্ধ্যায় এটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান জানান, গতকাল বুধবার সকালে হোটেল বিজয়নগরের তৃতীয় তলার ৩২৪ নম্বর কক্ষে উঠেছিলেন হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলু (৬৮)। আজ দুপুরে ওই কক্ষের বাথরুমে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন তিনি। সে সময় হোটেল কর্তৃপক্ষ ও তাঁর পরিচিত একজন সেখান থেকে তাঁকে বের করে। পরে ৯৯৯-এ খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এসআই আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে মৃত ব্যক্তির স্বজনেরা জানিয়েছেন, তিনি হার্টের রোগী ছিলেন। এর আগেও তিনি হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন। তবে বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মৃত ব্যক্তির ভাগনি জামাই মো. শাহিন উদ্দিন জানান, শহিদুল ইসলামের বাড়ি বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায়। গ্রামেই থাকেন তিনি। গতকাল মনোনয়নপত্র নিতে ও দলের মিটিংয়ে অংশ নিতে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতিসহ আরও কয়েকজন। ঢাকায় এলে তিনি বরাবরই জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে হোটেল বিজয়নগরেই ওঠেন। তিনি হার্টের রোগী।

ঘটনা সম্পর্কে শাহিন উদ্দিন জানান, গতকাল দুপুরে পার্টি অফিসে মিটিং শেষে হোটেলে ফিরে খাবার খান শহিদুল ইসলাম ও জেলা সভাপতি। এরপর জেলা সভাপতি চলে গেলে তিনি একাই ছিলেন রুমে। রাত ৮টার পর তাঁর পরিবারের কেউ ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। আজ সকালেও না পেয়ে একপর্যায়ে তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের ফোনে জানালে তাঁদের একজন হোটেলে গিয়ে ৩২৪ নম্বর কক্ষের দরজায় ধাক্কা দেন। সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সাহায্যে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে তিনি দেখেন, বাথরুমের দরজা বন্ধ। এরপর বাথরুমের দরজা ভাঙা হলে শহিদুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

স্বজনেরা জানান, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন শহিদুল ইসলাম। তবে জয় পাননি। রাজনীতির পাশাপাশি মাছ ধরার ট্রলারের ব্যবসা রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া সুপারির ব্যবসাও করতেন। এ বছর রমজান মাসে তিনি মিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। এর পর থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাথরঘাটায় জামায়াতের কর্মিসভায় হামলার অভিযোগ, ১৫ জন আহত হওয়ার দাবি

পাথরঘাটা(বরগুনা) প্রতিনিধি  
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনার পাথরঘাটায় জামায়াতের কর্মিসভায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জামায়াতের দাবি, হামলায় ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মোশারফ হোসেন মোল্লার বাড়িতে জামায়াতের কর্মী বৈঠকে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় নেতারা দাবি করেন, খুলনা শ্রমিক লীগের নেতা সোলায়মান সাদিক তাঁদের কর্মীদের ওপর এ হামলা করেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোলায়মান সাদিক।

জামায়াতের ভাষ্যমতে, আহতরা হলেন পাথরঘাটা পৌর যুব বিভাগের সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম, পাথরঘাটা পৌর প্রচার সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম, জামায়াত কর্মী ওয়ালিদ পহলান, ফুলমিয়া, ইলিয়াস, মোহাম্মদ হানিফ, ফিরোজ হোসেন, মাহবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, ইউনুছ হাওলাদারের নাম জানা গেছে। এঁদের মধ্যে আব্দুল কাইয়ুম ও তাওহিদুল ইসলামকে চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।

পথসভায় পাথরঘাটা উপজেলা জামায়াতের আমির মাসুদুল আলম বলেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমরা নাচনাপাড়া ইউনিয়নের জামায়াত কর্মীর বাড়িতে দলের কর্মসূচি পালন করি। এরপর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথে খুলনা পরিবহন শ্রমিক লীগের নেতা সোলাইমান সাদিক তার বাহিনী নিয়ে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। আমরা এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচার চাই।’

ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি এস এম সোলায়মান বাদশা বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরগুনা-২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম মনির ভাইয়ের ছেলে সুলাইমান সাদিক একসময়ে খুলনাতে শ্রমিক লীগের নেতৃত্ব দিতেন। জুলাই-আগস্টের পর তিনি তাঁর নিজ বাড়িতে এসে বিশেষ বিএনপির নব্য নেতা হিসেবে সমাজকর্মী দাবি করে সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছেন। এর পর থেকে পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল, সালিসের নামে অন্যের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে।

এস এম সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে এই সন্ত্রাসীর বিচার দাবি করছি। তা না হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সোলায়মান বাহিনী প্রভাব ফেলতে পারে।’ তিনি এই বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের সবাইকে লাঠি হাতে প্রস্তুত থাকতে বলেন।

জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলের পরপরই তাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এনামুল হোসেন।

এরপর তাঁরাও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে শহরে উত্তপ্ত ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযোগের বিষয়ে সোলায়মান সাদিক বলেন, ‘আমি পাঁচ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করতেছি। জামায়াত নেতারা নির্বাচনী ফায়দা নেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করতেছেন। আমি বিএনপি পরিবারের সদস্য। আমাকে জোর করে শ্রমিক লীগের নেতা বানানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার চাচা ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী। তাঁর জনপ্রিয়তা দেখে জামায়াত নেতারা নানা রকমের মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।’

পাথরঘাটা থানার ওসি মাংচেনলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামায়াতের কর্মিসভা শেষে স্থানীয় কিছু লোকদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে—এমনটাই জানা গেছে। থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনে অভিযোগ আসেনি।’

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম-১৫ আসন

বিএনপির প্রার্থীকে জামায়াত মনোনীত উল্লেখ নির্বাচন কর্মকর্তার ছকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
বিএনপির প্রার্থীকে জামায়াত মনোনীত উল্লেখ নির্বাচন কর্মকর্তার ছকে

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। এ ঘটনায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নাজমুল মোস্তাফা আমীন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও পরে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো তথ্যে তাঁকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

জেলা রিটার্নিং অফিসারের তথ্যমতে, বুধবার চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসন থেকে মোট ১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ৭ জন, জামায়াতে ইসলামীর ১ জন, এলডিপির ১ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১ জন এবং স্বতন্ত্র ২ জন রয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাঠানো তথ্যে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে দুজন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের এবং নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে দেখানো হয়।

তবে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা থেকে নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেই রিটার্নিং অফিসারের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তাফা আমীন বলেন, যথাযথভাবে মনোনয়ন ফরম পূরণ ও জমা দেওয়ার পরও তাঁকে অন্য দলের প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা দুঃখজনক ও মানহানিকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত