Ajker Patrika

নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে ধরা পড়ছে ইলিশ, দাম চড়া

বরগুনা ও পাথরঘাটা প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৩, ১৭: ৩৩
নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে ধরা পড়ছে ইলিশ, দাম চড়া

৬৫ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে জেলের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ট্রলারবোঝাই মাছ নিয়ে মৎস্য ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। তবে, এসব ইলিশ সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। 

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার পরপরই সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় দারুণ খুশি তাঁরা। আর অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশ দেখে স্বস্তি ফিরেছে মৎস্য ব্যবসায়ীদের। 

বিএফডিসি পাথরঘাটা অবতরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে পরবর্তী এক সপ্তাহে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ১০০ টন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৭০ টনই ইলিশ। 

আজ মঙ্গলবার পাথরঘাটা ঘাটে দেখা যায়, একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে ঘাটে। ট্রলারের খোন্দল (ইলিশ সংরক্ষণের কোটর) থেকে ঝাঁপি বোঝাই করে ইলিশ বিক্রির জন্য অবতরণ কেন্দ্রের পন্টুনে স্তূপ করে রাখছেন ঘাটশ্রমিকেরা। 

ঘাটে মাছ কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম জানান, ‘নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বেশ ভালোই মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে কিনতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম চায় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম নিচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, একটু ছোট ইলিশের দাম চায় কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। কীভাবে ইলিশ কিনব।’ 

এফবি আল্লাহর দান ট্রলারের মাঝি মনির হোসেন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার মধ্যরাতে সাগরে মাছ শিকারে যাই। কিন্তু গভীর সাগরে না গিয়ে মাত্র চার ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে জাল ফেলতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়েছে ইলিশ। তাও আবার আকারে অনেক বড়। কয়েক ঘণ্টা মাছ শিকারের পর পাঁচ হাজার ইলিশ নিয়ে দ্রুত ঘাটে ফিরেছি।’ 

পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে ফিরছেন জেলেরাআরেক জেলে আবু হানিফ বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে পানিও বেড়েছে। তাই জালে বড় বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। রাতে গিয়ে জাল ফেলে তা ট্রলার ভর্তি করে বেলা ১১টার দিকে অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে ফিরলাম। ইলিশের ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে।’ 

মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুর ফারুক হোসেন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা যাওয়ার পর রোববার প্রথম দিন। তাই জেলেরা অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন। কিন্তু নিরুপায় হয়ে বেশি দামে ইলিশ কিনতে হচ্ছে। এক কেজির বেশি ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায়, মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়।’ 

আরেক ব্যবসায়ী শুক্কুর বলেন, ‘ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় ইলিশের চাহিদা রয়েছে। তাই বাড়তি দামে ইলিশ কিনে দ্রুত তা প্যাকেটজাত করে গাড়িতে তুলে দিচ্ছে। আশা করি, ভালো একটা দাম পাব।’ 

মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পর জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে অবতরণ কেন্দ্রে ফিরছেন। ইলিশগুলো অনেক বড় আকারের। এটা মূলত সরকারের ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার সুফল বলে মনে করছি।’ 

ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কষ্ট করে নিষেধাজ্ঞা পালন করলেও এখন সুফল ভোগ করছি সবাই মিলে। এ রকম ইলিশ পেলে আমরা লস (ক্ষতি) কাটাতে সমর্থ হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত