Ajker Patrika

আসামিরা ফিরছেন একে একে

মারুফ কিবরিয়া ও রফিকুল ইসলাম খান, বরিশাল থেকে
আসামিরা ফিরছেন একে একে

বরিশালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা-সংঘর্ষের পরদিনই দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পুলিশ-প্রশাসন। এক কাউন্সিলরসহ ১৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর সময় না নিয়ে আসামিরা বরিশাল ছেড়েছিলেন পরদিনই। এখন দুই পক্ষের সমঝোতার খবরে আসামিরাও আবার বরিশালে ফিরতে শুরু করেছেন। ওই দিনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার পাশাপাশি আরও অনেক অভিযোগ আছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ উঠেছে, নগরীতে ফিরেই তৎপর হয়ে উঠেছেন এসব আসামি। শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত মহড়া দিচ্ছেন মোটরসাইকেলে হর্ন বাজিয়ে। চিহ্নিত কয়েকজন আসামিকে সোমবার রাতে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে ছবি তুলতে দেখা গেছে। যদিও সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নীরব থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।

ফিরে আসা আসামিদের একজন জেলা ছাত্রলীগের নেতা আতিকুল্লাহ মুনিম। ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। মামলা হওয়ার পরপরই বরিশাল ছেড়ে গেলেও সোমবার রাতে ফিরে এসেছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিএম কলেজে উপাধ্যক্ষ এস এম কাইউম উদ্দিনকে যোগদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার সমঝোতায় তিনি ওই কলেজে যোগ দিতে পেরেছেন।

সোমবার রাতেই নগরীতে ফিরেছেন ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় আসামি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাজীব হোসেন। নগরীর বিভিন্ন দপ্তরে টেন্ডারবাজি, অভিজাত শপিং মল টপটেনে হামলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ফিরে মেয়রের সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি।

রইস আহমেদ মান্না। বরিশাল নগরীতে ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও তিনিই অঘোষিত নেতা। চলতি বছর দেশের অন্যতম জুতা শিল্পজাত প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ কোম্পানির কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপর কোম্পানির মালিক মামলা করলে তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে গ্রেপ্তারের দাবিতে দুই ঘণ্টার জন্য পুরো বরিশাল অচল করে দেন রইস আহমেদ মান্না ও তাঁর অনুসারীরা। সম্প্রতি ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় তিনিও আসামি। সেদিনই পালিয়ে যান বরিশাল ছেড়ে। অবশ্য সোমবার রাতেই তিনি বরিশাল ফিরে আসেন। এসময় নগরীর কাউনিয়া এলাকায় অনুসারীদের নিয়ে মহড়া দেন বলে অভিযোগ ওঠে। 

জেলা ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত। ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনার আসামি তিনিও। কয়দিন পালিয়ে থাকলেও তিনি গতকাল বরিশাল নগরীতে ফিরে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিমানবন্দর থানায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তাৎক্ষণিক থানা ঘেরাও করেন তিনি। এ সময় পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

মামলার আসামিদের ফিরে আসা এবং প্রকাশ্যে ঘোরাফেরার বিষয়ে জানতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলামকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মেয়রের ঘনিষ্ঠ নেতা আফজালুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পলাতক আসামিদের ফেরার বিষয়ে তিনি অবগত নন। মেয়রের সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

অবশ্য আফজালুল করিম বলেন, ‘মেয়রের মতো আমাদেরও নির্দেশনা রয়েছে যে, নগরীতে আর অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটানো যাবে না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে ট্রাকসহ দুই মাদক কারবারি আটক, ২৩৭ গ্রাম হেরোইন জব্দ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আটক করা দুই মাদক কারবারি। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা দুই মাদক কারবারি। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ট্রাকসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে র‌্যাব-১২। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২৩৭ গ্রাম হেরোইন, একটি ট্রাক, দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪ হাজার ৭০০ টাকা জব্দ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে র‌্যাব-১২-এর কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল (৫ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে সলঙ্গা এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাবের একটি দল। অভিযানে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার কাঁঠালবাড়ীয়া এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল ইসলাম (৫৫) এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার মাদারীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের বাবুল শাহ (৬০) নামের দুজনকে আটক করা হয়।

জব্দ করা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হেরোইন কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে মোটরসাইকেলচালকের লাশ উদ্ধার

পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা নিহত ব্যক্তির মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা নিহত ব্যক্তির মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের কুমিরা চারাবটতলা থেকে আজ ভোরের দিকে ভাড়ায় চালিত এক মোটরসাইকেলচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম অহিদ মোড়ল (৩৮)। তিনি পাটকেলঘাটা থানার খলিষখালী ইউনিয়নের হাজরাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ মোড়লের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আজ বৃহস্পতিবার ভোরে অহিদ মোড়ল বাড়ি থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয় লোকজন তাঁকে মহাসড়কের ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পাটকেলঘাটা থানা-পুলিশকে খবর দেয়। এ সময় রাস্তার পাশে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা একটি মরদেহ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর এটি দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনো ঘটনা, তা জানা যাবে। এর আগে কিছু বলা সম্ভব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকার জেরে ছুরিকাঘাতে নিহত ১

­­­নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁ সদর উপজেলায় জমি নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে অনুষ্ঠিত সালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকায় প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে গোলাম হোসেন (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের সুনলিয়া মালঞ্চি গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত গোলাম হোসেন মালঞ্চি গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে।

নিহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই নয়ন ইসলাম জানান, মালঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশিদ ও আজাদ নামের দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। কিছুদিন আগে দুই পক্ষ একজন আইনজীবীর কাছে সালিস বৈঠকে বসে। সেখানে গোলাম হোসেন (নিহত) উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি আজাদের পক্ষে বক্তব্য দেন।

নয়ন ইসলাম বলেন, ওই ঘটনার জেরে বুধবার রাতে হারুনুর রশিদের সঙ্গে গোলাম হোসেনের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হারুনের ছেলে অন্তর এসে গোলাম হোসেনকে ছুরিকাঘাত করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মরদেহ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নুরে আলম সিদ্দিকী আরও বলেন, এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়ের হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘বিগত সময়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পুলিশকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে’

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৩
আজ সকালে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজি (ডেভেলপমেন্ট) সরদার নূরুল আমিন বিপিএম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজি (ডেভেলপমেন্ট) সরদার নূরুল আমিন বিপিএম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজি (ডেভেলপমেন্ট) সরদার নূরুল আমিন বিপিএম বলেছেন, ‘যেকোনো রাষ্ট্রব্যবস্থায় পুলিশ বাহিনী একটি অপরিহার্য অঙ্গ। এটি সর্বদা সরকারের দৃশ্যমান প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত। আমরা অতীতে দেখেছি, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ উদ্ধারে পুলিশকে অনৈতিক ও অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। এর ফলস্বরূপ পুলিশের কার্যক্রমের প্রতি মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল। যার প্রতিচ্ছবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দৃশ্যমান হয়েছে। এ অভ্যুত্থান এটাই প্রমাণ করে যে জনমতের বিপক্ষে গিয়ে কখনো টিকে থাকা যায় না।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে ৫২তম টিআরসি ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নোয়াখালীর কমান্ড্যান্ট ডিআইজি মো. হায়দার আলী খান বিপিএম-সেবা।

সরদার নূরুল আমিন আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক। স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার অভাবে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বোপরি জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। তাই বর্তমান সরকার পুলিশকে একটি জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। যার জন্য পুলিশে ব্যাপক সংস্কারে কাজ করছে সরকার। আমরা আমাদের অতীতের ত্রুটিগুলো নিরূপণের চেষ্টা করছি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা কুচকাওয়াজ, প্যারেডসহ বিভিন্ন ডিসপ্লে পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত