Ajker Patrika

সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, জেলেদের দুর্দিন

তারিকুল ইসলাম, পাথরঘাটা (বরগুনা) 
আপডেট : ২৮ জুন ২০২২, ১৫: ১৭
সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, জেলেদের দুর্দিন

একদিকে সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি। এতে বরগুনার পাথরঘাটার জেলেদের চরম দুর্দিন যাচ্ছে। সংসারের ব্যয়ভার বহন ও মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকা শোধ নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাজার হাজার জেলে। 

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ৬৫ দিনের অবরোধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বর্তমানে সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। তবে মৎস্য বিভাগ ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার আগ থেকেই ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলে ইলিশ শিকার বন্ধ ছিল। গত দুই বছর করোনার প্রভাবে দেশব্যাপী লকডাউনে বাজার মন্দা যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ায় অনেক জেলেই মাছ ধরতে যাননি। 

এদিকে গ্রামের খেত-খামারে কোনো কাজ নেই। বিগত বছরগুলোতে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে জেলেরা সমুদ্র থেকে উঠে এসে এলাকায় দিনমজুর বা অন্য কোনো কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু করোনায় শহরের অনেকে চাকরি হারিয়ে এলাকায় এসে দিনমজুরের কাজ ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালানোর কারণে এ কাজের সুযোগটিও হারিয়ে ফেলেছে জেলেরা। এ কারণে ঘরে বসেই বেকার সময় পার করতে হচ্ছে জেলেদের। সংসার চালানোর একমাত্র মাধ্যম ছিল জেলে পেশা। এখন বিকল্প কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। 

পাথরঘাটা জেলেপল্লির আবুল কালাম খাঁ, আলী হোসেন, সোবহান মিয়া বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যে সহায়তা প্রদান করে, তাতে আমাদের কিছুই হয় না। প্রায় এক মাস ধরে বেকার হয়ে আছি। এখনই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, বাকি দিনগুলো কী হবে জানি না।’ 

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, দেশীয় জেলেরা সরকারের দেওয়া আইন মেনে চলছে। কিন্তু ভারতীয় জেলেরা এই সুযোগে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে ইলিশ শিকার করে। ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ছাড়া নিবন্ধনের বাইরে অনেক জেলে রয়েছেন। এদের শিগগিরই নিবন্ধনের আওতায় আনা উচিত। 

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, জুন মাসের মধ্যে পাথরঘাটায় নিবন্ধিত ১১ হাজার ৪১১ জন জেলের মধ্যে প্রথম দফায় ৫৬ কেজি করে চাল জুন মাসের মধ্যেই বিতরণ করা হবে। পরবর্তী জুলাই মাসের শেষের দিকে বাকি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া নিবন্ধনের বাইরে থাকা জেলেদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে চাওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত