রফী হক
বহু ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রথম দিকে চাননি তাঁর পুত্র মুর্তজা বশীর চিত্রশিল্পী হোক, চারুকলায় ভর্তি হোক। মুর্তজা বশীর তাঁর বাবাকে যখন আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, ‘আমি প্যারিসে ছিলাম, সেখানে আর্টিস্টদের দেখেছি খুব অভাব-অনটনে থাকে। তুমি আমার ছেলে, তুমি অভাব-অনটনে পড়ো, এটা আমি চাই না। অতএব তুমি আলিগড়ে যাও, সেখানে পড়াশোনা করো।’
মুর্তজা বশীর আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য অটল ছিলেন, শেষ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছিলেন। এ ঘটনার পরে কিছুদিন পিতা-পুত্রের মনোমালিন্য ছিল, একে-অপরের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ ছিল। তারপর অবশ্য ছেলের ইচ্ছা প্রাধান্য দিয়েছিলেন পিতা।
কেউ কেউ বলেন, সংগীতচর্চা, ছবি আঁকার বিষয়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র অনীহা ছিল। তবে তা ঠিক নয়। তৎকালীন সময়ে চিত্রশিল্পীদের আয়-রোজগার খুবই কম ছিল, চাকরি-বাকরির বাজারও ছোট ছিল। মূলত ভবিষ্যতের কথা ভেবেই পিতা তাঁর সন্তানকে চিত্রশিল্পী হওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। প্রথম দিকে শিল্পী হওয়াকে ভালোভাবে না নিলেও পরে মুতর্জা বশীরকে তাঁর পিতা উৎসাহ দিয়েছিলেন।
একটা দুর্লভ চিঠিতে দেখা যায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর পুত্রকে শিল্পী হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ১৯৬১ সালে লেখা এই চিঠিটি তৎকালীন চিত্রকলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তাতে শিল্পী আমিনুল ইসলামের প্রদর্শনীর কথা রয়েছে, প্রদর্শনী করে অর্থপ্রাপ্তিরও উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া পুত্র বশীরের শিল্পী হওয়াকে খুব আনন্দের সঙ্গে দেখেছেন, পুত্রকে ‘শিল্পী’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন। জন্মভূমিতে বশীরের শিল্প প্রতিভা বিকাশ ও প্রসারের কথা ভেবেছেন।
কয়েক বছর আগে মুর্তজা বশীর স্যারের বাসায় গেলে তিনি এই দুর্লভ চিঠিটি আমাকে দেখিয়েছিলেন, আনন্দের সঙ্গে তা পড়েও শুনিয়েছিলেন। আমি তাঁকে অনুরোধ করি চিঠিটির একটি কপি আমাকে দিতে। তিনি আগ্রহভরে তা আমাকে দেন।
চিঠিটি দিতে দিতে স্যার বলেছিলেন, ‘অনেক বছর চিঠিটি কোনো একটা পুরোনো ফাইলের ভেতর ছিল। কোনোভাবেই তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। একসময় চিঠিটির কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। দীর্ঘ বছর পর তা খুঁজে পেয়েছি।’
79 Begum Bazar Road, Dacca
21.3.61
Murtaza Bashir, Artist
Pakistan Art Council, Lahore
প্রাণাধিকেষু,
অসংখ্য দো’আ এবং ঈদের মুবারকবাদ জানিবে। তোমার ঈদকার্ড পাইয়া তোমার মা এবং আমি সন্তুষ্ট হইয়াছি। ঢাকায় কিছুদিন পূর্বে আমিনুল ইসলাম ছবি প্রদর্শনী করিয়া ১৫০০ /- টাকা পাইয়াছে। তুমিও এখানে আসিয়া প্রদর্শনী কর। সফীর মুখে তোমার সংবাদ শুনিলাম। লাহোরে যখন যত্র আয় তত্র ব্যয়, তখন ঢাকায় আসাই উচিত। এখানে Institute of Art এ হয়ত পদ পাইতে পার। আমরা তোমাকে দেখেতেছি না, কিন্তু আল্লাহ দেখিতেছেন।
শুভাকাঙ্ক্ষী—মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
বহু ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রথম দিকে চাননি তাঁর পুত্র মুর্তজা বশীর চিত্রশিল্পী হোক, চারুকলায় ভর্তি হোক। মুর্তজা বশীর তাঁর বাবাকে যখন আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, ‘আমি প্যারিসে ছিলাম, সেখানে আর্টিস্টদের দেখেছি খুব অভাব-অনটনে থাকে। তুমি আমার ছেলে, তুমি অভাব-অনটনে পড়ো, এটা আমি চাই না। অতএব তুমি আলিগড়ে যাও, সেখানে পড়াশোনা করো।’
মুর্তজা বশীর আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য অটল ছিলেন, শেষ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছিলেন। এ ঘটনার পরে কিছুদিন পিতা-পুত্রের মনোমালিন্য ছিল, একে-অপরের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ ছিল। তারপর অবশ্য ছেলের ইচ্ছা প্রাধান্য দিয়েছিলেন পিতা।
কেউ কেউ বলেন, সংগীতচর্চা, ছবি আঁকার বিষয়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র অনীহা ছিল। তবে তা ঠিক নয়। তৎকালীন সময়ে চিত্রশিল্পীদের আয়-রোজগার খুবই কম ছিল, চাকরি-বাকরির বাজারও ছোট ছিল। মূলত ভবিষ্যতের কথা ভেবেই পিতা তাঁর সন্তানকে চিত্রশিল্পী হওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। প্রথম দিকে শিল্পী হওয়াকে ভালোভাবে না নিলেও পরে মুতর্জা বশীরকে তাঁর পিতা উৎসাহ দিয়েছিলেন।
একটা দুর্লভ চিঠিতে দেখা যায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর পুত্রকে শিল্পী হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ১৯৬১ সালে লেখা এই চিঠিটি তৎকালীন চিত্রকলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তাতে শিল্পী আমিনুল ইসলামের প্রদর্শনীর কথা রয়েছে, প্রদর্শনী করে অর্থপ্রাপ্তিরও উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া পুত্র বশীরের শিল্পী হওয়াকে খুব আনন্দের সঙ্গে দেখেছেন, পুত্রকে ‘শিল্পী’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন। জন্মভূমিতে বশীরের শিল্প প্রতিভা বিকাশ ও প্রসারের কথা ভেবেছেন।
কয়েক বছর আগে মুর্তজা বশীর স্যারের বাসায় গেলে তিনি এই দুর্লভ চিঠিটি আমাকে দেখিয়েছিলেন, আনন্দের সঙ্গে তা পড়েও শুনিয়েছিলেন। আমি তাঁকে অনুরোধ করি চিঠিটির একটি কপি আমাকে দিতে। তিনি আগ্রহভরে তা আমাকে দেন।
চিঠিটি দিতে দিতে স্যার বলেছিলেন, ‘অনেক বছর চিঠিটি কোনো একটা পুরোনো ফাইলের ভেতর ছিল। কোনোভাবেই তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। একসময় চিঠিটির কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। দীর্ঘ বছর পর তা খুঁজে পেয়েছি।’
79 Begum Bazar Road, Dacca
21.3.61
Murtaza Bashir, Artist
Pakistan Art Council, Lahore
প্রাণাধিকেষু,
অসংখ্য দো’আ এবং ঈদের মুবারকবাদ জানিবে। তোমার ঈদকার্ড পাইয়া তোমার মা এবং আমি সন্তুষ্ট হইয়াছি। ঢাকায় কিছুদিন পূর্বে আমিনুল ইসলাম ছবি প্রদর্শনী করিয়া ১৫০০ /- টাকা পাইয়াছে। তুমিও এখানে আসিয়া প্রদর্শনী কর। সফীর মুখে তোমার সংবাদ শুনিলাম। লাহোরে যখন যত্র আয় তত্র ব্যয়, তখন ঢাকায় আসাই উচিত। এখানে Institute of Art এ হয়ত পদ পাইতে পার। আমরা তোমাকে দেখেতেছি না, কিন্তু আল্লাহ দেখিতেছেন।
শুভাকাঙ্ক্ষী—মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
একজন শিল্পী সারা জীবন কেবল পালিয়েই বেড়ালেন। খ্যাতি, যশ, অর্থ এমনকি সংসারজীবন থেকে পালিয়ে হয়ে উঠলেন বোহিমিয়ান। শিল্প সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় এক অদ্ভুত আধ্যাত্মিক চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন শিল্পী এস এম সুলতান। বেঁচে থাকলে তিনি হতেন শতবর্ষী।
১ দিন আগেরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নামগুলোর একটি হলেও কেন বাঙালি মুসলমানদের একটি বৃহৎ অংশের কাছে অগ্রহণযোগ্য? কেন দেড় শ বছর আগের এক কবির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের রয়ে গেছে একটা দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক? এই দ্বন্দ্বের শুরুটা কোথায়?
৫ দিন আগেবাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও অনুবাদক মশিউল আলম ইতালির চিভিতেলা রানিয়েরি ফেলোশিপে ভূষিত হয়েছেন। এই আন্তর্জাতিক সম্মাননা প্রতিবছর বিশ্বের খ্যাতিমান ভিজ্যুয়াল শিল্পী, লেখক ও সংগীতজ্ঞদের দেওয়া হয়। মশিউল আলম এই ফেলোশিপপ্রাপ্ত প্রথম বাংলাদেশি লেখক।
৯ দিন আগেরাউলিং বলেন, ‘হ্যারি পটার আর হগওয়ার্টস হঠাই আমার মাথায় চলে আসে। প্লট আর চরিত্র মাথায় আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঠিক করে ফেলি এটা লিখতেই হবে। অসাধারণ এক রোমাঞ্চ অনুভব করছিলাম।’
১১ দিন আগে