Ajker Patrika

কিম-পুতিন দুই কার্ড হাতে, ট্রাম্প কি পারবেন সির সঙ্গে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ৩৮
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। ছবি: বিবিসি
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। ছবি: বিবিসি

আগামী ৩ সেপ্টেম্বর চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের কেন্দ্রস্থলে অনুষ্ঠিত হবে বড় ধরনের সামরিক কুচকাওয়াজ। এই অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের একসঙ্গে উপস্থিতি নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বার্তা দিতে যাচ্ছে। এই সম্মিলনের মাধ্যমে সি চিনপিংয়ের একটি বড় কূটনৈতিক জয় হতে যাচ্ছে বলে মত দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সি চিনপিং দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ব মঞ্চে চীনের প্রভাব বাড়াতে চাইছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার পাশাপাশি তিনি চীনকে একটি স্থিতিশীল বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে তুলে ধরতে চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে টালমাটাল করে দিয়েছে। এ অবস্থায় ট্রাম্প যখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছেন না, তখন বেইজিংয়ে পুতিনকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সি।

সবচেয়ে বড় চমক হতে যাচ্ছে একই অনুষ্ঠানে কিম জং উনের অংশগ্রহণ। কিমের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শেষবার ব্যর্থ হয়েছিল। দুই দফা বৈঠক হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। ট্রাম্প সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি আবার কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। কিন্তু এর মধ্যেই কিম বেইজিংয়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, যা সি চিনপিংয়ের প্রভাবকেই স্পষ্ট করেছে।

৩ সেপ্টেম্বরের কুচকাওয়াজের মূল উদ্দেশ্য হলো—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি স্মরণ করা। কিন্তু সি এটিকে পরিণত করেছেন এক রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনীতে। সময়টাও অত্যন্ত কৌশলগত। অক্টোবরের শেষে ট্রাম্প এশিয়া সফরে গেলে সি-এর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে আলোচ্য বিষয় হতে পারে শুল্কনীতি, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক বিক্রির প্রশ্ন কিংবা ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান।

তবে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠকের আগেই কিম ও পুতিন উভয়ের সঙ্গেই সরাসরি বোঝাপড়ার সুযোগ পেয়ে গেলেন সি চিনপিং। এর ফলে ট্রাম্পের সঙ্গে বসার আগে তিনি নিজেকে আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবেন। এমনকি তাঁর হাতে এমন কিছু তথ্যও থাকতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্র এখনো জানে না।

রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরে ‘একঘরে’ করে রেখেছে। কিমের পারমাণবিক কর্মসূচি ও ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসন পশ্চিমা বিরূপ মনোভাবকে আরও জোরদার করেছে। ফলে চীনে কিমের উপস্থিতি একটি বড় পদক্ষেপ হতে যাচ্ছে। ১৯৫৯ সালের পর এই প্রথম কোনো উত্তর কোরীয় নেতা চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিতে যাচ্ছেন।

বিশ্লেষকেরা ভেবেছিলেন, কিম ও পুতিনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় হয়তো বেইজিংয়ের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক শিথিল হয়েছে। কিন্তু কিমের এই সফর প্রমাণ করতে যাচ্ছে, চীন এখনো উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। কিমের দেশের অর্থনীতির প্রায় ৯০ ভাগ নির্ভর করে চীনা আমদানির ওপর।

সি-এর জন্য তাই এটি শুধু রাজনৈতিক শোডাউন নয়, বরং এটি তাঁর কূটনৈতিক হাতিয়ার হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় তিনি এখন অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থানে। আরও বড় প্রশ্ন হলো—ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে সি চিনপিং কী ভূমিকা রাখতে পারেন?

এখন বিশ্বের দৃষ্টি বেইজিংয়ের দিকে। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে সি চিনপিং কি নিজের এই কূটনৈতিক পুঁজি কাজে লাগাতে পারবেন? নাকি দেখা মিলবে আরেক অপ্রত্যাশিত দৃশ্যের—সি, পুতিন, কিম ও ট্রাম্প একই টেবিলে বসে আছেন!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি অধ্যাপক কার্জনসহ ডিবি হেফাজতে ১৫ জন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

পুলিশের ওপর ৪ দফা হামলা, গাজীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ছিনিয়ে নিল দুর্বৃত্তরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত