তাঁদের একসময় জাতির নায়ক হিসেবে দেখা হতো। তাঁরা অনেকটা পৌরাণিক যোদ্ধাদের মতো শ্রীলঙ্কার রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ থামিয়েছিলেন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরাজিত করেছিলেন। সেই রাজাপক্ষে রাজাদের শেষ দিনগুলোর গল্প এমন ‘ট্র্যাজিক’ হবে কে ভেবেছিল!
শ্রীলঙ্কার বিক্ষুব্ধ জনতা গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি প্রাসাদে ঢুকে পড়ে সুইমিংপুলে সাঁতার কেটেছে, ছবি তুলেছে, ডাইনিং রুমে বসে গান গেয়েছে। যা খুশি তাই করেছে।
অবস্থা বেগতিক দেখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন মালদ্বীপে। এর মাধ্যমে কি পতন হলো রাজাপক্ষে বংশের শ্রীলঙ্কা শাসনের?
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওডিআই গ্লোবালের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী গণেশান উইগনারাজা বলেছেন, ‘গোতাবায়ার পালিয়ে যাওয়া দৃশ্যত এই পরিবারের পতনেরই প্রতিনিধিত্ব করে।’
যেভাবে উত্থান রাজাপক্ষের
গোতাবায়া রাজাপক্ষেই কি প্রথম ব্যক্তি, যিনি রাজাপক্ষে পরিবার থেকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন? না, ঘটনা এমন নয়। তাঁর ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষে এর আগে ২০০৫ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন ‘যুদ্ধের নায়ক’। ২৭ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে তামিল টাইগার্সদের পরাজিত করে কিংবদন্তির মর্যাদা লাভ করেছিলেন।
এসব কারণে মাহিন্দা শ্রীলঙ্কার একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন। প্রায় ১০ বছর ক্ষমতা উপভোগ করেছেন। তাঁকে শ্রীলঙ্কার জনগণ ভালোবেসে ‘আপ্পাচ্চি’ উপাধি দিয়েছিল, যার অর্থ জাতির পিতা।
মাহিন্দা তাঁর শাসনামলের বেশির ভাগ সময়ই শ্রীলঙ্কার প্রশাসনকে একটি পারিবারিক ব্যবসার মতো পরিচালনা করেছিলেন। তাঁর ভাইদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। গোতাবায়াকে প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ভাই বাসিল রাজাপক্ষেকে এবং সংসদের স্পিকার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন চামাল রাজাপক্ষেকে।
মাহিন্দার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ থাকলেও তাঁর ভাইয়েরা শ্রীলঙ্কায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁদের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করছিল। তবে বেশির ভাগ অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে বিদেশি ঋণের কারণে। কিন্তু সেই সুদিন বেশি দিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না।
সংক্ষিপ্ত বিরতি এবং প্রত্যাবর্তন
গৃহযুদ্ধ থামানোর মধ্য দিয়ে কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তবে এর মধ্যেই তাঁর পতনের বীজও লুক্কায়িত ছিল। ২০১১ সালে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে বলেছে, রাজাপক্ষের সরকারি সৈন্যরা বেসামরিক ব্যক্তিদের নির্বিচারে গুলি করে মেরে ফেলেছে, মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে। সে সময় অন্তত ৪০ হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে রাজাপক্ষের বাহিনীর হাতে।
তবে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাতে অবশ্য সমস্যার অবসান হয়নি বরং ঘনীভূত হয়েছে। ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক সংকট বেড়েছে এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে।
২০১৫ সাল নাগাদ শুধু চীনের কাছেই শ্রীলঙ্কার ঋণের পরিমাণ ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। সরকারি কর্মকর্তারা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, জমে থাকা বিদেশি ঋণ শ্রীলঙ্কার জিডিপির ৯৪ শতাংশ খেয়ে ফেলবে।
ওই বছরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহিন্দা রাজাপক্ষে হেরে যান। তখনই বোঝা গিয়েছিল, জনগণ রাজাপক্ষে পরিবারের ওপর ক্ষুব্ধ।
কিন্তু ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে একের পর এক বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে অন্তত ২৯০ জন নিহত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আতঙ্কিত জনগণ নিরাপত্তার আশায় আবার রাজাপক্ষে পরিবারের কাছে ফিরে আসে। ওই বছরের নভেম্বরে গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে জনগণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে।
ক্ষমতায় আরোহণের পর গোতাবায়াও তাঁর ভাইদের মতো প্রশাসনকে পারিবারিক বিষয় হিসেবে দেখা শুরু করেন। অল্প কয়েক দিন পরই তিনি মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
এবং পতন
গোতাবায়া রাজাপক্ষের শাসনামলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে তাঁর ক্ষমতার চেয়ার নড়বড়ে হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য সম্পূর্ণভাবে শ্রীলঙ্কার সরকার দায়ী নয়। অবস্থা এতটা শোচনীয় হয়েছে মূলত ধারাবাহিকভাবে খারাপ সিদ্ধান্তের কারণে।
কলম্বোভিত্তিক থিংকট্যাংক অ্যাডভোকাটা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান মুর্তজা জাফরজি বলেছেন, শ্রীলঙ্কা একটি মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়ের মধ্যে আছে। এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। বিশাল অর্থনৈতিক ঘাটতির মধ্যে থাকা রাজাপক্ষে সরকার কর কমিয়ে দিয়েছিলেন। এটি ছিল আরও ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত।
এই সিদ্ধান্তের ফলে যা হয়েছে, দেশটি বিদেশি বাজারে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে। তখন ঋণ পরিশোধের জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করতে হয়েছে। এটি জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিকে প্রভাবিত করেছে। ফলে সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।
রাজাপক্ষের অনুগত জনগণ একসময় দেখতে পেল, তারা তাদের পরিবারকে খাওয়াতে পারছে না। গাড়ি চালানোর জন্য জ্বালানি পাচ্ছে না। জ্বালানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। অপেক্ষা করতে করতে একসময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে। বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নেই। ওষুধের দোকানে ওষুধ নেই।
এই অবস্থা আর কত দিন মেনে নেওয়া যায়? বিক্ষুব্ধ জনতা একসময় রাস্তায় নামতে শুরু করে। তারা এই বিপর্যয়ের জন্য রাজাপক্ষে পরিবারকে দায়ী করতে শুরু করে।
জনতার বিশাল বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও মে মাসের দিকে সহিংস রূপ নেয়। একসময় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তাতেও বিক্ষোভ থামে না। গোতাবায়া প্রেসিডেন্টের পদ আঁকড়ে ধরে থেকেই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেন।
গোতাবায়া কার্যত তাঁদের রাজবংশের পতন ঠেকানোর শেষ চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলেন না। অবশেষে তাঁকে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হলো।
তথ্যসূত্র: সিএনএন
তাঁদের একসময় জাতির নায়ক হিসেবে দেখা হতো। তাঁরা অনেকটা পৌরাণিক যোদ্ধাদের মতো শ্রীলঙ্কার রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ থামিয়েছিলেন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরাজিত করেছিলেন। সেই রাজাপক্ষে রাজাদের শেষ দিনগুলোর গল্প এমন ‘ট্র্যাজিক’ হবে কে ভেবেছিল!
শ্রীলঙ্কার বিক্ষুব্ধ জনতা গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি প্রাসাদে ঢুকে পড়ে সুইমিংপুলে সাঁতার কেটেছে, ছবি তুলেছে, ডাইনিং রুমে বসে গান গেয়েছে। যা খুশি তাই করেছে।
অবস্থা বেগতিক দেখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন মালদ্বীপে। এর মাধ্যমে কি পতন হলো রাজাপক্ষে বংশের শ্রীলঙ্কা শাসনের?
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওডিআই গ্লোবালের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী গণেশান উইগনারাজা বলেছেন, ‘গোতাবায়ার পালিয়ে যাওয়া দৃশ্যত এই পরিবারের পতনেরই প্রতিনিধিত্ব করে।’
যেভাবে উত্থান রাজাপক্ষের
গোতাবায়া রাজাপক্ষেই কি প্রথম ব্যক্তি, যিনি রাজাপক্ষে পরিবার থেকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন? না, ঘটনা এমন নয়। তাঁর ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষে এর আগে ২০০৫ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন ‘যুদ্ধের নায়ক’। ২৭ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে তামিল টাইগার্সদের পরাজিত করে কিংবদন্তির মর্যাদা লাভ করেছিলেন।
এসব কারণে মাহিন্দা শ্রীলঙ্কার একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন। প্রায় ১০ বছর ক্ষমতা উপভোগ করেছেন। তাঁকে শ্রীলঙ্কার জনগণ ভালোবেসে ‘আপ্পাচ্চি’ উপাধি দিয়েছিল, যার অর্থ জাতির পিতা।
মাহিন্দা তাঁর শাসনামলের বেশির ভাগ সময়ই শ্রীলঙ্কার প্রশাসনকে একটি পারিবারিক ব্যবসার মতো পরিচালনা করেছিলেন। তাঁর ভাইদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। গোতাবায়াকে প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ভাই বাসিল রাজাপক্ষেকে এবং সংসদের স্পিকার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন চামাল রাজাপক্ষেকে।
মাহিন্দার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ থাকলেও তাঁর ভাইয়েরা শ্রীলঙ্কায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁদের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করছিল। তবে বেশির ভাগ অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে বিদেশি ঋণের কারণে। কিন্তু সেই সুদিন বেশি দিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না।
সংক্ষিপ্ত বিরতি এবং প্রত্যাবর্তন
গৃহযুদ্ধ থামানোর মধ্য দিয়ে কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তবে এর মধ্যেই তাঁর পতনের বীজও লুক্কায়িত ছিল। ২০১১ সালে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে বলেছে, রাজাপক্ষের সরকারি সৈন্যরা বেসামরিক ব্যক্তিদের নির্বিচারে গুলি করে মেরে ফেলেছে, মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে। সে সময় অন্তত ৪০ হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে রাজাপক্ষের বাহিনীর হাতে।
তবে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাতে অবশ্য সমস্যার অবসান হয়নি বরং ঘনীভূত হয়েছে। ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক সংকট বেড়েছে এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে।
২০১৫ সাল নাগাদ শুধু চীনের কাছেই শ্রীলঙ্কার ঋণের পরিমাণ ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। সরকারি কর্মকর্তারা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, জমে থাকা বিদেশি ঋণ শ্রীলঙ্কার জিডিপির ৯৪ শতাংশ খেয়ে ফেলবে।
ওই বছরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহিন্দা রাজাপক্ষে হেরে যান। তখনই বোঝা গিয়েছিল, জনগণ রাজাপক্ষে পরিবারের ওপর ক্ষুব্ধ।
কিন্তু ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে একের পর এক বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে অন্তত ২৯০ জন নিহত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আতঙ্কিত জনগণ নিরাপত্তার আশায় আবার রাজাপক্ষে পরিবারের কাছে ফিরে আসে। ওই বছরের নভেম্বরে গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে জনগণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে।
ক্ষমতায় আরোহণের পর গোতাবায়াও তাঁর ভাইদের মতো প্রশাসনকে পারিবারিক বিষয় হিসেবে দেখা শুরু করেন। অল্প কয়েক দিন পরই তিনি মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
এবং পতন
গোতাবায়া রাজাপক্ষের শাসনামলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে তাঁর ক্ষমতার চেয়ার নড়বড়ে হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য সম্পূর্ণভাবে শ্রীলঙ্কার সরকার দায়ী নয়। অবস্থা এতটা শোচনীয় হয়েছে মূলত ধারাবাহিকভাবে খারাপ সিদ্ধান্তের কারণে।
কলম্বোভিত্তিক থিংকট্যাংক অ্যাডভোকাটা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান মুর্তজা জাফরজি বলেছেন, শ্রীলঙ্কা একটি মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়ের মধ্যে আছে। এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। বিশাল অর্থনৈতিক ঘাটতির মধ্যে থাকা রাজাপক্ষে সরকার কর কমিয়ে দিয়েছিলেন। এটি ছিল আরও ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত।
এই সিদ্ধান্তের ফলে যা হয়েছে, দেশটি বিদেশি বাজারে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে। তখন ঋণ পরিশোধের জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করতে হয়েছে। এটি জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিকে প্রভাবিত করেছে। ফলে সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।
রাজাপক্ষের অনুগত জনগণ একসময় দেখতে পেল, তারা তাদের পরিবারকে খাওয়াতে পারছে না। গাড়ি চালানোর জন্য জ্বালানি পাচ্ছে না। জ্বালানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। অপেক্ষা করতে করতে একসময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে। বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নেই। ওষুধের দোকানে ওষুধ নেই।
এই অবস্থা আর কত দিন মেনে নেওয়া যায়? বিক্ষুব্ধ জনতা একসময় রাস্তায় নামতে শুরু করে। তারা এই বিপর্যয়ের জন্য রাজাপক্ষে পরিবারকে দায়ী করতে শুরু করে।
জনতার বিশাল বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও মে মাসের দিকে সহিংস রূপ নেয়। একসময় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তাতেও বিক্ষোভ থামে না। গোতাবায়া প্রেসিডেন্টের পদ আঁকড়ে ধরে থেকেই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেন।
গোতাবায়া কার্যত তাঁদের রাজবংশের পতন ঠেকানোর শেষ চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলেন না। অবশেষে তাঁকে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হলো।
তথ্যসূত্র: সিএনএন
ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, তিনিই বিশ্ব চালাচ্ছেন। তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা সীমাহীন। কিন্তু এটি বিপজ্জনক ঔদ্ধত্যেরও ইঙ্গিত দেয় এবং একটি গুরুতর প্রশ্ন তোলে—এই বিশৃঙ্খল ও প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে পৃথিবী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? দ্য আটলান্টিককে দেওয়া নতুন এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী আধিপত্য...
১৫ ঘণ্টা আগেবড় প্রশ্ন হলো, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেবে কি না? ২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ ভারতীয় পুলিশ নিহত হয়। এরপর পেহেলগামের হামলাই ছিল কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এমনকি এটি ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানকার
১ দিন আগেবিশ্লেষকদের মতে, ভারত হয়তো কিছুটা সংযত আচরণই করবে। কারণ, দেশটির সামরিক বাহিনী এখনো পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে, তাদের প্রকাশ্যে এনে যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মধ্যে ঝুঁকি আছে। ২০১৮ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে দেশের ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জামকে ‘পুরোনো মডেলের’, ২৪ শতাংশকে...
২ দিন আগেসংবাদ বা তথ্যের সংলাপমূলক উপস্থাপন চর্চার উত্থানের পাশাপাশি, পাঠকেরা এখন চ্যাটবটকে ফলোআপ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন, চাহিদামতো সারসংক্ষেপের জন্য অনুরোধ করেন, এমনকি বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ব্যাখ্যাও এআই–এর কাছে চাওয়া হয়। ফলে পাঠকেরা সংবাদ পাঠে চিরাচরিত নিষ্ক্রিয় গ্রহীতা থেকে সক্রিয় অংশগ্রহণকারীতে রূপান্তরিত হচ্ছে
৩ দিন আগে