Ajker Patrika

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ মে ২০২৫, ১৮: ২৪
প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির দিক থেকে ভারত অনেক এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের কৌশল ভিন্ন। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির দিক থেকে ভারত অনেক এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের কৌশল ভিন্ন। ছবি: সংগৃহীত

ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে গড়াল। এরই মধ্যে পাকিস্তানে ২৬ এবং ভারতে ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) তুমুল গোলাগুলির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অন্তত তিনটি যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে সেগুলো কোন দেশের, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা তিনটি অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমানসহ ভারতের একটি সুখোই-৩০ ও একটি মিগ-২৯ ভূপাতিত করেছে। বেশ কয়েকটি ড্রোনও ধ্বংস করার দাবি পাকিস্তানের। সেই সঙ্গে ৫ ভারতীয় পাইলটকে আটক করার দাবিও করা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে ব্যবহৃত যুদ্ধাস্ত্রের আনুষ্ঠানিক বিবরণ মিলছে। তারা যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও বোমা ব্যবহার করেছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ ও হামলায় কী ব্যবহার করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। শুধু সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।

ভারতের বেসরকারি ইন্ডিয়ান ডিফেন্স রিসার্চ উইং ও ওয়াশিংটনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ন্যাশনাল ইন্টারেস্টের তথ্যের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি তুলনামূলক ধারণা পাওয়া যায়।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, দীর্ঘ পাল্লার সক্ষমতা ও বহুস্তরবিশিষ্ট কাঠামোর কারণে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাকিস্তানের চেয়ে উন্নত। তবে পাকিস্তানের কৌশলগত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভারতের জন্য কম হুমকি নয়; বিশেষ করে, দুই দেশের সামরিক কৌশল ও ভূরাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। এদিক বিবেচনায় আধুনিক প্রযুক্তি ও সক্ষমতায় পিছিয়ে থাকলেও কাছাকাছি দূরত্বে ভারতের যেকোনো আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে পাকিস্তান কার্যকর একটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে বলা যায়। নিচে দুই দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি সংক্ষিপ্ত তুলনামূলক বিবরণ তুলে ধরা হলো:

ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা

যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ আকাশ থেকে আসা যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ভারত একটি শক্তিশালী, বহুস্তরবিশিষ্ট আকাশ প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এর প্রধান কয়েকটি ব্যবস্থা হলো—

-এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ (৪০০ কিলোমিটার পাল্লা) : রাশিয়া থেকে ২০২১ সালে পাওয়া এস-৪০০ বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এটি মাল্টি-এএসএ রাডার ব্যবহার করে, একসঙ্গে ১০০টি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে এবং একই সঙ্গে ৩৬টিতে আঘাত হানতে পারে। এই রাডারব্যবস্থার শত্রুপক্ষের লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকরণের পাল্লা ৬০০ কিলোমিটার। এটি শত্রুর আকাশসীমার গভীরে থাকা স্টিলথ বিমান (রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম আকাশযান), ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ যেকোনো হুমকিকে ঠেকিয়ে দিতে পারে। পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সীমান্তে এই ইউনিট মোতায়েন করেছে ভারত।

-বারাক-৮ (৭০-১০০ কিলোমিটার পাল্লা) : ভারত ও ইসরায়েলের যৌথভাবে তৈরি মাঝারি পাল্লার এই ব্যবস্থা মাল্টি-টার্গেট এনগেজমেন্টের জন্য এএসএ রাডার ব্যবহার করে এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান প্রতিরোধে কার্যকর। এটি নৌ ও স্থল উভয় প্ল্যাটফর্মে মোতায়েন করা হয়েছে।

-আকাশ ও আকাশ-এনজি (৩০-৭০ কিলোমিটার পাল্লা) : দেশীয়ভাবে তৈরি এই ব্যবস্থাগুলোতে এএসএ রাডার রয়েছে এবং এটি একসঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আকাশ-এনজি-এর পাল্লা পরে বাড়ানো হয়েছে এবং এর নির্ভুলতাও উন্নত করা হয়েছে।

-কিউআরএসএএম (২৫-৩০ কিলোমিটার পাল্লা) : দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম, স্বল্পপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ৩৬০-ডিগ্রি এএসএ রাডার কভারেজযুক্ত। এটি দ্রুতগতির লক্ষ্যবস্তু এবং সম্মুখ অবস্থানে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

-স্পাইডার (১৫-৩৫ কিলোমিটার পাল্লা) : ইসরায়েলের তৈরি এই স্বল্পপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা অনেক নিচ দিয়ে উড়ে আসা হুমকির বিরুদ্ধে কার্যকর।

-পৃথ্বী এয়ার ডিফেন্স (পিএডি) ও অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স (এএডি) : ভারতের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা (বিএমডি) ব্যবস্থার অংশ এটি। এটি ৫ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্রকেও বাধা দিতে সক্ষম।

-এসআরএসএএম (২৫ কিলোমিটার পাল্লা) : নৌবাহিনীর স্বল্পপাল্লার এই ব্যবস্থা আইএনএস বিক্রান্তের মতো সামরিক স্থাপনা ও সম্পদ রক্ষায় ব্যবহার করা হয়।

ভারতের শক্তির দিক

-বেশির ভাগ সিস্টেমে উন্নত এএসএ রাডার প্রযুক্তি রয়েছে। এই প্রযুক্তি উন্নত ট্র্যাকিং, জ্যামিং প্রতিরোধ ও মাল্টি-টার্গেট এনগেজমেন্ট দিতে সক্ষম।

-দীর্ঘপাল্লার এস-৪০০ অপ্রতিদ্বন্দ্বী কৌশলগত প্রতিরক্ষা দেয়। এটি ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে লাহোর বা ইসলামাবাদ পর্যন্ত হুমকির মোকাবিলা করতে সক্ষম।

-আকাশ ও কিউআরএসএএম-এর মতো দেশীয় ব্যবস্থা বিদেশি সরবরাহকারীর ওপর নির্ভরতা কমিয়েছে। এটি সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে।

-বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা কাঠামো পাকিস্তান ও চীন উভয়কে মোকাবিলা করতে সক্ষম। পাশাপাশি বিএমডি সক্ষমতা ব্যালিস্টিক হুমকি প্রতিহত করতে পারে।

পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা

পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। তবে এখনো সীমিত এবং চীনের প্রযুক্তির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এর প্রধান কয়েকটি ব্যবস্থা হলো:

-এইচকিউ-৯ পি/৯ বিই (১০০-২৬০ কিলোমিটার পাল্লা) : সবচেয়ে উন্নত এই ব্যবস্থা ২০২১ সালে পায় পাকিস্তান। এটি চীনের এইচকিউ-৯-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি, আবার রাশিয়ার এস-৩০০-এর কিছু উপাদানও রয়েছে। এইচকিউ-৯ বিই ২৬০ কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এবং এর সীমিত অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা রয়েছে। এটি জেএসজি-৪০০ ও জেপিজি-৬০০ রাডার ব্যবহার করে। তবে এটি এস-৪০০-এর চেয়ে কম আধুনিক।

-এফডি-২০০০ (১২৫ কিলোমিটার পাল্লা) : এইচকিউ-৯ এ-এর রপ্তানি সংস্করণ এটি। এটি এইচটি-২৩৩ রাডার ব্যবহার করে বিমান ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করতে পারে। এটি মার্কিন প্যাট্রিয়ট পিএসি-৩-এর চেয়ে বৃহত্তর পরিসরে কভারেজ দিতে পারে। তবে ব্যালিস্টিক হুমকির বিরুদ্ধে কম কার্যকর।

-এইচকিউ-১৬ এফই/এলওয়াই-৮০ (৪০-৭০ কিলোমিটার পাল্লা) : রাশিয়ার বুক-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি মাঝারি পাল্লার এই ব্যবস্থা বিমান ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর। এইচকিউ-১৬ এফই স্বল্প ও দীর্ঘপাল্লার প্রতিরক্ষার মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করে।

-এফএম-৯০ (১৫ কিলোমিটার পাল্লা) : স্বল্পপাল্লার এই ব্যবস্থা পয়েন্ট ডিফেন্সের জন্য তৈরি, যা ভারতের স্পাইডারের সঙ্গে তুলনীয়। তবে এর ব্যবহার ততটা বহুমাত্রিক নয়।

-ম্যানপ্যাডস (যেমন, আরবিএস-৭০ এনজি) : বহনযোগ্য এই স্বল্পপাল্লার ব্যবস্থাগুলো নিচ দিয়ে উড়ে আসা হুমকির জন্য কার্যকর। তবে এর পরিধি সীমিত।

পাকিস্তানের শক্তির দিক

-এইচকিউ-৯ পি/৯ বিই একটি বিশ্বাসযোগ্য দীর্ঘপাল্লার প্রতিরোধব্যবস্থা। এটি ভারতীয় বিমানের জন্য বড় হুমকি।

-সমন্বিত প্রতিরক্ষার জন্য ব্যাপক স্তরযুক্ত সমন্বিত আকাশ প্রতিরক্ষা (সিএলআইএডি) কাঠামো একাধিক ব্যবস্থাকে একত্রিত করে। ফলে প্রতিরক্ষা জাল তৈরি করতে পারে।

-সাশ্রয়ী চীনা ব্যবস্থা হওয়ায় বাজেট সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বৃহত্তর পরিসরে মোতায়েনের সুযোগ পেয়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের দুর্বলতা

-রাডার প্রযুক্তি (যেমন, এইচকিউ-৯-এর জেএসজি-৪০০) ভারতের এএসএ-ভিত্তিক সিস্টেমের চেয়ে কম উন্নত। ফলে মাল্টি-টার্গেট এনগেজমেন্ট এবং জ্যামিং প্রতিরোধ সক্ষমতা সীমিত।

-কম এনগেজমেন্ট পাল্লা (এইচকিউ-৯-এর ২৬০ কিলোমিটার বনাম এস-৪০০-এর ৪০০ কিলোমিটার) কৌশলগত গভীরতা সীমিত করে।

-ভারতের বিএমডি সিস্টেমের তুলনায় সীমিত অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা।

-দেশীয় কর্মসূচির (যেমন, লোএমএডিএস, এফএএজেড-এসএল) প্রাথমিক পর্যায়ে থাকার কারণে চীনা আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

সক্ষমতায় কে এগিয়ে

১. পাল্লা ও বিস্তার

-ভারতের এস-৪০০ (৪০০ কিলোমিটার) পাকিস্তানের এইচকিউ-৯ বিই (২৬০ কিলোমিটার)-এর চেয়ে অনেক বেশি পাল্লার, যা ভারতকে পাকিস্তানের আকাশসীমার গভীরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম করে তুলেছে।

-ভারতের মাঝারি ও স্বল্পপাল্লার সিস্টেমগুলোও (বারাক-৮, আকাশ, কিউআরএসএএম) পাকিস্তানের এলওয়াই-৮০ ও এফএম-৯০-এর চেয়ে প্রযুক্তিগত দিক থেকে এগিয়ে।

২. রাডার প্রযুক্তি

-ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এএসএ রাডার (এস-৪০০, বারাক-৮, কিউআরএসএএম) পাকিস্তানের কম উন্নত রাডার সিস্টেমের তুলনায় উন্নত ট্র্যাকিং, জ্যামিং প্রতিরোধ ও মাল্টি-টার্গেট এনগেজমেন্ট দিতে পারে।

৩. বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা

-দীর্ঘ, মাঝারি ও স্বল্পপাল্লার সিস্টেম, বিএমডিসহ ভারতের বহুস্তরবিশিষ্ট কাঠামোটি আরও ব্যাপক ও বহুমুখী। এটি পাকিস্তান ও চীন উভয় থেকে আসা বিভিন্ন হুমকি মোকাবিলা করতে পারে। পাকিস্তানের সিএলআইএডি এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর হলেও এটি মূলত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলোর প্রতিরক্ষামূলক সুরক্ষার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

৪. ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা

-ভারতের পিএডি ও এএডি সিস্টেম শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা দেয়, যেখানে পাকিস্তানের এইচকিউ-৯ বিই-এর ব্যালিস্টিক হুমকির বিরুদ্ধে সীমিত কার্যকারিতা রয়েছে।

৫. দেশীয় সক্ষমতা

-ভারতের দেশীয় সিস্টেম (আকাশ, কিউআরএসএএম) এবং বিএমডি উন্নয়ন বিদেশি নির্ভরতা কমিয়েছে। যেখানে পাকিস্তানের চীনা আমদানির ওপর নির্ভরতার কারণে বাজেট ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নমনীয়তাকে সীমিত করেছে।

৬. কৌশলগত প্রভাব

-এস-৪০০ ভারতকে উল্লেখযোগ্য সুবিধা দেয়। এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থার কারণে পাকিস্তানকে এফ-১৬ ও জেএফ-১৭-এর মতো যুদ্ধবিমান ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয়। ভারতের ব্যবস্থাগুলো বারাক-৮ ও আকাশের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (যেমন, বাবর) প্রতিরোধ করতে পারে। পাকিস্তানের এইচকিউ-৯পি একটি কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা। তবে এটি যুদ্ধের সময় এস-৪০০-এর মতো আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম নয়।

পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

এস-৪০০-এর অপ্রতিদ্বন্দ্বী পাল্লা ও রাডার সক্ষমতা, উন্নত এএসএ প্রযুক্তি, একটি বহুস্তরযুক্ত প্রতিরক্ষা এবং শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার কারণে আকাশ প্রতিরক্ষায় ভারতের সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এইচকিউ-৯পি ও সিএলআইএডি-এর মাধ্যমে উন্নত হলেও কম পাল্লা, কম উন্নত রাডার এবং সীমিত অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক সক্ষমতার কারণে সীমাবদ্ধ।

এ ছাড়া ভারতের বিপরীতে পাকিস্তানের কোনো আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) নেই। ইসলামাবাদ আইসিবিএম ব্যবস্থা মোতায়েনে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির বিকাশে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক নয়, অথবা আপাতত সক্ষমতা নেই। পাকিস্তানের সতর্কতামূলক কৌশল অগ্রাধিকার পায়।

ভারতের চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও হুমকি বোধ করে। এর পাশাপাশি ভারতের আঞ্চলিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের কেবল একটি প্রধান শত্রু রয়েছে, সেটি হলো ভারত। ফলে প্রতিবেশীর সঙ্গে কোনো সংঘাতে আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) অপ্রাসঙ্গিক। পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মজুত তাদের আঞ্চলিক লক্ষ্য পূরণ করে। অর্থাৎ ভারতকে প্রতিরোধ করার মতো যথেষ্ট বলেই মনে করে তারা।

চীনের সঙ্গে সহযোগিতায় তৈরি শাহিন ক্ষেপণাস্ত্র সিরিজের জন্য অনেকটা নির্ভার থাকে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘপাল্লার সক্ষমতা নিয়ে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। দেশটি ভারতের হামলা প্রতিহত করার জন্য একটি অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা তৈরি ও মোতায়েন করার কাজ করছে। ভারতের সবচেয়ে উন্নত অস্ত্র, যেমন ব্রহ্মোস, ঠেকাতে নতুন প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েনে বিনিয়োগ করছে পাকিস্তান।

লেখক: জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত