এক সময় লিঙ্গ সমতায় আরব বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ ছিল ইরাক। কিন্তু সেই দেশেই এখন পশ্চাদপসরণমূলক সাম্প্রদায়িক নীতির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে নারীদের অধিকার। গত ৪ আগস্ট ইরাকের সংসদে একটি খসড়া আইন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এই আইনে বিবাহ এবং শিশুর হেফাজত সহ অন্যান্য ব্যক্তিগত বিষয়গুলো পরিচালিত হবে ধর্মীয় মতবাদ দ্বারা।
ফরেন পলিসির এক নিবন্ধে বলা হয়েছে—এই পরিবর্তনটি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইরাকের পারিবারিক আইনকে ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় পারিবারিক ওই আইনটি একটি বিপ্লবী সিদ্ধান্ত ছিল। এটি নারীদের বিবাহের আইনগত বয়স ১৮ নির্ধারণ করেছিল, জোরপূর্বক বিবাহ নিষিদ্ধ করেছিল এবং বিবাহবিচ্ছেদ ও ভরণপোষণের জন্য সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছিল।
ঐতিহাসিকভাবেই ইরাক ছিল প্রগতিশীল। আরবের প্রথম দেশ হিসেবে এই দেশটিই প্রথম নারী বিচারক ও মন্ত্রী নিয়োগ করেছিল। তবে ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর থেকে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো এই অধিকারগুলোকে হ্রাস করার চেষ্টা করে আসছে। তাদের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো খুব অল্প বয়সে নারীদের বিবাহের অনুমতি দেয় এবং পিতাকেই সন্তানের হেফাজতের অধিকারী হিসেবে চিহ্নিত করে।
নিবন্ধে বলা হয়েছে—এই আইন প্রণয়ন শুধুমাত্র নারীর অধিকারকেই হুমকির মুখে ফেলে না বরং ইরাকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এই পরিবর্তন সম্ভবত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিচ্ছিন্ন করবে এবং অনেক পরিবারের জীবনকে বাধাগ্রস্ত করবে যারা নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাহ করে।
পারিবারিক আইন সংশোধন প্রচেষ্টার সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায়, এই আলোচনাগুলো নতুন নয়। পরিবর্তনের প্রস্তাবগুলো ২০০৪ সালের শুরুর দিকে প্রকাশিত হয়েছিল। তবে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি একটি রাজনৈতিক শ্রেণির দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল, যারা ইরাককে আরও পশ্চিমাকরণ করতে চাইছিল। তবে ধীরে ধীরে ধর্মীয় শক্তির প্রভাব বেড়েছে। এর ফলে ধর্মীয় মতবাদের মাধ্যমে সমাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার একটি বৃহত্তর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সমালোচকেরা যুক্তি দিচ্ছেন, এই ধরনের সংশোধনগুলোর নেপথ্যে কোনো প্রকৃত ধর্মীয় উদ্দেশ্য নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে। তাঁরা দাবি করেন, এই পরিবর্তনগুলোকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রণয়ন করার মানে হলো, ভিন্নমতকারীদের ভয় দেখানোর একটি কৌশল এবং বিরোধিতাকে ধর্মদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করা।
তবে আইন পরিবর্তনের এই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যে জনরোষের মুখে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ইরাকের সাধারণ মানুষ সম্ভাব্য এই আইন পরিবর্তনের বিরোধিতা করছেন, প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
ডয়েচভেলের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি আইনটির পরিবর্তনের বিরোধিতা করে রাজধানী বাগদাদে জড়ো হয়েছিলেন শত শত মানুষ। এই সমাবেশ সম্পর্কে ইরাকি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আলী আল-মিকদাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দেন। আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের ইরাকের রাজধানী কান্দাহার ছিল না এবং কখনো তা হবেও না!’
প্রতিবাদে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি ডয়েচভেলকে বলেছিলেন, ‘আমাদের একটি নাগরিক আইন আছে এবং এটি ভালোর জন্য পরিবর্তন করা উচিত, খারাপের জন্য নয়। আমাদের পিছিয়ে যাওয়া উচিত নয়।’
জনরোষের কারণেই সেপ্টেম্বরের শুরুতে বিলটির দ্বিতীয় পর্যালোচনা স্থগিত করা হয়েছিল। তবে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো এখনো টেবিলেই রয়ে গেছে। উন্নয়ন বলতে শুধু এটুকুই হয়েছে যে, মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ৯ এর বদলে ১৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইরাক তার রাজনৈতিক পরিচয়ের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। নারীর অধিকারের কেড়ে নেওয়ার পরিস্থিতি দেশটির একটি সমন্বিত সমাজের ভিত্তিকে দুর্বল করার হুমকি দিচ্ছে। এই ধরনের পদক্ষেপ ইরাকের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ফলে দেশটি আরও অস্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। সাম্প্রদায়িক শাসন শুধু নারীর অধিকারকেই বিপন্ন করে না বরং ইরাকের ঐক্য ও অখণ্ডতাকেও বিপন্ন করে।
এক সময় লিঙ্গ সমতায় আরব বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ ছিল ইরাক। কিন্তু সেই দেশেই এখন পশ্চাদপসরণমূলক সাম্প্রদায়িক নীতির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে নারীদের অধিকার। গত ৪ আগস্ট ইরাকের সংসদে একটি খসড়া আইন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এই আইনে বিবাহ এবং শিশুর হেফাজত সহ অন্যান্য ব্যক্তিগত বিষয়গুলো পরিচালিত হবে ধর্মীয় মতবাদ দ্বারা।
ফরেন পলিসির এক নিবন্ধে বলা হয়েছে—এই পরিবর্তনটি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইরাকের পারিবারিক আইনকে ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় পারিবারিক ওই আইনটি একটি বিপ্লবী সিদ্ধান্ত ছিল। এটি নারীদের বিবাহের আইনগত বয়স ১৮ নির্ধারণ করেছিল, জোরপূর্বক বিবাহ নিষিদ্ধ করেছিল এবং বিবাহবিচ্ছেদ ও ভরণপোষণের জন্য সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছিল।
ঐতিহাসিকভাবেই ইরাক ছিল প্রগতিশীল। আরবের প্রথম দেশ হিসেবে এই দেশটিই প্রথম নারী বিচারক ও মন্ত্রী নিয়োগ করেছিল। তবে ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর থেকে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো এই অধিকারগুলোকে হ্রাস করার চেষ্টা করে আসছে। তাদের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো খুব অল্প বয়সে নারীদের বিবাহের অনুমতি দেয় এবং পিতাকেই সন্তানের হেফাজতের অধিকারী হিসেবে চিহ্নিত করে।
নিবন্ধে বলা হয়েছে—এই আইন প্রণয়ন শুধুমাত্র নারীর অধিকারকেই হুমকির মুখে ফেলে না বরং ইরাকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এই পরিবর্তন সম্ভবত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিচ্ছিন্ন করবে এবং অনেক পরিবারের জীবনকে বাধাগ্রস্ত করবে যারা নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাহ করে।
পারিবারিক আইন সংশোধন প্রচেষ্টার সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায়, এই আলোচনাগুলো নতুন নয়। পরিবর্তনের প্রস্তাবগুলো ২০০৪ সালের শুরুর দিকে প্রকাশিত হয়েছিল। তবে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি একটি রাজনৈতিক শ্রেণির দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল, যারা ইরাককে আরও পশ্চিমাকরণ করতে চাইছিল। তবে ধীরে ধীরে ধর্মীয় শক্তির প্রভাব বেড়েছে। এর ফলে ধর্মীয় মতবাদের মাধ্যমে সমাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার একটি বৃহত্তর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সমালোচকেরা যুক্তি দিচ্ছেন, এই ধরনের সংশোধনগুলোর নেপথ্যে কোনো প্রকৃত ধর্মীয় উদ্দেশ্য নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে। তাঁরা দাবি করেন, এই পরিবর্তনগুলোকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রণয়ন করার মানে হলো, ভিন্নমতকারীদের ভয় দেখানোর একটি কৌশল এবং বিরোধিতাকে ধর্মদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করা।
তবে আইন পরিবর্তনের এই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যে জনরোষের মুখে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ইরাকের সাধারণ মানুষ সম্ভাব্য এই আইন পরিবর্তনের বিরোধিতা করছেন, প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
ডয়েচভেলের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি আইনটির পরিবর্তনের বিরোধিতা করে রাজধানী বাগদাদে জড়ো হয়েছিলেন শত শত মানুষ। এই সমাবেশ সম্পর্কে ইরাকি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আলী আল-মিকদাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দেন। আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের ইরাকের রাজধানী কান্দাহার ছিল না এবং কখনো তা হবেও না!’
প্রতিবাদে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি ডয়েচভেলকে বলেছিলেন, ‘আমাদের একটি নাগরিক আইন আছে এবং এটি ভালোর জন্য পরিবর্তন করা উচিত, খারাপের জন্য নয়। আমাদের পিছিয়ে যাওয়া উচিত নয়।’
জনরোষের কারণেই সেপ্টেম্বরের শুরুতে বিলটির দ্বিতীয় পর্যালোচনা স্থগিত করা হয়েছিল। তবে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো এখনো টেবিলেই রয়ে গেছে। উন্নয়ন বলতে শুধু এটুকুই হয়েছে যে, মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ৯ এর বদলে ১৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইরাক তার রাজনৈতিক পরিচয়ের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। নারীর অধিকারের কেড়ে নেওয়ার পরিস্থিতি দেশটির একটি সমন্বিত সমাজের ভিত্তিকে দুর্বল করার হুমকি দিচ্ছে। এই ধরনের পদক্ষেপ ইরাকের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ফলে দেশটি আরও অস্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। সাম্প্রদায়িক শাসন শুধু নারীর অধিকারকেই বিপন্ন করে না বরং ইরাকের ঐক্য ও অখণ্ডতাকেও বিপন্ন করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়াসংলগ্ন অঙ্গরাজ্য আলাস্কায় অবস্থিত যৌথ ঘাঁটি এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন। বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয়
১৭ ঘণ্টা আগেনিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, তিনি ইতিমধ্যে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন এবং নতুন কোনো শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না। একই সময়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও মার্কিন পণ্যে তাদের শুল্ক স্থগিতাদেশ একই মেয়াদে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পূর্বের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে।
২ দিন আগেবিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ...
৪ দিন আগেশেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও বাংলাদেশের এক নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির আশায় হাজারো মানুষ গত সপ্তাহে ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন। বর্ষাস্নাত দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা, অধিকারকর্মীদের উপস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ‘নয়া বাংলাদেশের’ ঘোষণাপত্র উন্মোচন করেছেন।
৫ দিন আগে