জাহাঙ্গীর আলম
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা বিশ্বব্যাপীই দৃশ্যমান। তবে এর মধ্যে বিশেষ করে দক্ষিণ ককেশাসে এর প্রভাব তীব্র হয়েছে। নাগোরনো-কারাবাখে সর্বশেষ যুদ্ধের দুই বছর পর ২০২২ সালের শেষের দিকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান আরেকটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এই অঞ্চলের হিসাব-নিকাশ আরও জটিল করে তুলেছে।
একটি নতুন যুদ্ধ হয়তো সংক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু ২০২০ সালে ছয় সপ্তাহের সংঘাতের চেয়ে কম নাটকীয় হবে না। সেই যুদ্ধে ৭ হাজারের বেশি সৈন্যের প্রাণ গেছে। আজারবাইজানের বাহিনী নাগোরনো-কারাবাখ ছিটমহলের কিছু অংশ এবং আশপাশের এলাকায় আর্মেনীয়দের পরাজিত করেছে। এর সব কটিই ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে আর্মেনিয়া বাহিনীর দখলে ছিল। মস্কোর মধ্যস্থতায় অবশেষে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকার সময় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। এরপর কয়েক যুগ ধরেই লড়ছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। দীর্ঘ এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
সর্বশেষ রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পর থেকে ক্ষমতার পাল্লা আজারবাইজানের দিকেই বেশি হেলে গেছে। আর্মেনীয় সেনাবাহিনী পুনরায় সৈন্য বা অস্ত্র মোতায়েনের দিকে আর এগোয়নি। কারণ তাদের ঐতিহাসিক জোগানদাতা রাশিয়া নিজেই সরবরাহের সংকটে ভুগছে। বিপরীতে আজারবাইজান অস্ত্র ও সেনা দুটোই বাড়িয়েছে। সেনাবাহিনীর আকার এখন আর্মেনিয়ার কয়েক গুণ। ভারী অস্ত্রে সজ্জিত। প্রতিবেশী তুরস্কের প্রত্যক্ষ মদদপুষ্ট। ইউরোপে আজারবাইজানের গ্যাসের উচ্চ চাহিদাও বাকুকে উৎসাহিত করেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষতি অন্য দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে রাশিয়ার শান্তিরক্ষীদের নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। তারা এখনো আর্মেনিয়ায় রয়েছে। রাশিয়া আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্তের কিছু অংশে তার সীমান্তরক্ষী ও সামরিক কর্মীদের আরও শক্তিশালী করেছে। ফলে সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর এটি নতুন ফ্রন্ট লাইনে পরিণত হয়েছে। ধারণা ছিল, রুশ সেনারা বহিঃআক্রমণ কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করবে। কারণ মস্কোর ব্যাপারে বাকু সতর্ক অবস্থান নেওয়ার কথা।
কিন্তু রুশ বাহিনী গত বছর বেশ কয়েকটি সংঘাত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা থামাতে পারেনি। মার্চ ও আগস্টে আজারবাইজানীয় সৈন্যরা কৌশলগত পাহাড়ি এলাকাসহ নাগোরনো-কারাবাখের আরও কয়েকটি অঞ্চল দখল করে। সেপ্টেম্বরে আজারবাইজানীয় বাহিনী আর্মেনিয়ার ভেতরে প্রবেশ করে। প্রতিটি আক্রমণই ভয়ানক রক্তক্ষয়ী ছিল।
মস্কো ঐতিহাসিকভাবে নাগোরনো-কারাবাখে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেওয়ার প্রবণতা ধরে রেখেছে। ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতির পর এই অঞ্চলে বাণিজ্য উন্মুক্ত করার কথা ছিল। এর মধ্যে আজারবাইজান থেকে আর্মেনিয়া হয়ে ইরান সীমান্তে রুশ ভূখণ্ড নাখচিভান পর্যন্ত একটি সরাসরি রুট পুনঃস্থাপন করার কথা ছিল।
২০২১ সালের শেষের দিকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন নতুন মধ্যস্থতা মস্কো গ্রহণ করে। রাশিয়ার শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে এটি শক্তিশালী করবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। সামান্য অগ্রগতিও হয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকে মস্কোর প্রভাব ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে রাশিয়া।
ফলস্বরূপ, দুটি খসড়া চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এর একটি রাশিয়ার, অপরটি পশ্চিমা সমর্থিত আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের প্রস্তাবিত। এটিই আর্মেনীয়দের ভাগ্য নির্ধারণ করার কথা। বাণিজ্য বৃদ্ধিতেও বড় ভূমিকা রাখতে পারত।
কিন্তু আলোচনা স্থবির হয়ে গেছে। মস্কোর নেতৃত্বাধীন এবং পশ্চিমা সমর্থিত সব উদ্যোগই শেষ পর্যন্ত ডিপ ফ্রিজে চলে যাচ্ছে। এর সুবিধা নিতে পারে আজারবাইজান। ফলস্বরূপ সীমান্তে উত্তেজনা বাড়বে।
তথ্যসূত্র: ফরেন পলিসি, ক্রাইসিস গ্রুপ ও আল জাজিরা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা বিশ্বব্যাপীই দৃশ্যমান। তবে এর মধ্যে বিশেষ করে দক্ষিণ ককেশাসে এর প্রভাব তীব্র হয়েছে। নাগোরনো-কারাবাখে সর্বশেষ যুদ্ধের দুই বছর পর ২০২২ সালের শেষের দিকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান আরেকটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এই অঞ্চলের হিসাব-নিকাশ আরও জটিল করে তুলেছে।
একটি নতুন যুদ্ধ হয়তো সংক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু ২০২০ সালে ছয় সপ্তাহের সংঘাতের চেয়ে কম নাটকীয় হবে না। সেই যুদ্ধে ৭ হাজারের বেশি সৈন্যের প্রাণ গেছে। আজারবাইজানের বাহিনী নাগোরনো-কারাবাখ ছিটমহলের কিছু অংশ এবং আশপাশের এলাকায় আর্মেনীয়দের পরাজিত করেছে। এর সব কটিই ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে আর্মেনিয়া বাহিনীর দখলে ছিল। মস্কোর মধ্যস্থতায় অবশেষে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকার সময় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। এরপর কয়েক যুগ ধরেই লড়ছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। দীর্ঘ এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
সর্বশেষ রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পর থেকে ক্ষমতার পাল্লা আজারবাইজানের দিকেই বেশি হেলে গেছে। আর্মেনীয় সেনাবাহিনী পুনরায় সৈন্য বা অস্ত্র মোতায়েনের দিকে আর এগোয়নি। কারণ তাদের ঐতিহাসিক জোগানদাতা রাশিয়া নিজেই সরবরাহের সংকটে ভুগছে। বিপরীতে আজারবাইজান অস্ত্র ও সেনা দুটোই বাড়িয়েছে। সেনাবাহিনীর আকার এখন আর্মেনিয়ার কয়েক গুণ। ভারী অস্ত্রে সজ্জিত। প্রতিবেশী তুরস্কের প্রত্যক্ষ মদদপুষ্ট। ইউরোপে আজারবাইজানের গ্যাসের উচ্চ চাহিদাও বাকুকে উৎসাহিত করেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষতি অন্য দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে রাশিয়ার শান্তিরক্ষীদের নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। তারা এখনো আর্মেনিয়ায় রয়েছে। রাশিয়া আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্তের কিছু অংশে তার সীমান্তরক্ষী ও সামরিক কর্মীদের আরও শক্তিশালী করেছে। ফলে সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর এটি নতুন ফ্রন্ট লাইনে পরিণত হয়েছে। ধারণা ছিল, রুশ সেনারা বহিঃআক্রমণ কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করবে। কারণ মস্কোর ব্যাপারে বাকু সতর্ক অবস্থান নেওয়ার কথা।
কিন্তু রুশ বাহিনী গত বছর বেশ কয়েকটি সংঘাত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা থামাতে পারেনি। মার্চ ও আগস্টে আজারবাইজানীয় সৈন্যরা কৌশলগত পাহাড়ি এলাকাসহ নাগোরনো-কারাবাখের আরও কয়েকটি অঞ্চল দখল করে। সেপ্টেম্বরে আজারবাইজানীয় বাহিনী আর্মেনিয়ার ভেতরে প্রবেশ করে। প্রতিটি আক্রমণই ভয়ানক রক্তক্ষয়ী ছিল।
মস্কো ঐতিহাসিকভাবে নাগোরনো-কারাবাখে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেওয়ার প্রবণতা ধরে রেখেছে। ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতির পর এই অঞ্চলে বাণিজ্য উন্মুক্ত করার কথা ছিল। এর মধ্যে আজারবাইজান থেকে আর্মেনিয়া হয়ে ইরান সীমান্তে রুশ ভূখণ্ড নাখচিভান পর্যন্ত একটি সরাসরি রুট পুনঃস্থাপন করার কথা ছিল।
২০২১ সালের শেষের দিকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন নতুন মধ্যস্থতা মস্কো গ্রহণ করে। রাশিয়ার শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে এটি শক্তিশালী করবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। সামান্য অগ্রগতিও হয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকে মস্কোর প্রভাব ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে রাশিয়া।
ফলস্বরূপ, দুটি খসড়া চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এর একটি রাশিয়ার, অপরটি পশ্চিমা সমর্থিত আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের প্রস্তাবিত। এটিই আর্মেনীয়দের ভাগ্য নির্ধারণ করার কথা। বাণিজ্য বৃদ্ধিতেও বড় ভূমিকা রাখতে পারত।
কিন্তু আলোচনা স্থবির হয়ে গেছে। মস্কোর নেতৃত্বাধীন এবং পশ্চিমা সমর্থিত সব উদ্যোগই শেষ পর্যন্ত ডিপ ফ্রিজে চলে যাচ্ছে। এর সুবিধা নিতে পারে আজারবাইজান। ফলস্বরূপ সীমান্তে উত্তেজনা বাড়বে।
তথ্যসূত্র: ফরেন পলিসি, ক্রাইসিস গ্রুপ ও আল জাজিরা
ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, তিনিই বিশ্ব চালাচ্ছেন। তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা সীমাহীন। কিন্তু এটি বিপজ্জনক ঔদ্ধত্যেরও ইঙ্গিত দেয় এবং একটি গুরুতর প্রশ্ন তোলে—এই বিশৃঙ্খল ও প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে পৃথিবী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? দ্য আটলান্টিককে দেওয়া নতুন এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী আধিপত্য...
১৫ ঘণ্টা আগেবড় প্রশ্ন হলো, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেবে কি না? ২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ ভারতীয় পুলিশ নিহত হয়। এরপর পেহেলগামের হামলাই ছিল কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এমনকি এটি ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানকার
১ দিন আগেবিশ্লেষকদের মতে, ভারত হয়তো কিছুটা সংযত আচরণই করবে। কারণ, দেশটির সামরিক বাহিনী এখনো পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে, তাদের প্রকাশ্যে এনে যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মধ্যে ঝুঁকি আছে। ২০১৮ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে দেশের ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জামকে ‘পুরোনো মডেলের’, ২৪ শতাংশকে...
২ দিন আগেসংবাদ বা তথ্যের সংলাপমূলক উপস্থাপন চর্চার উত্থানের পাশাপাশি, পাঠকেরা এখন চ্যাটবটকে ফলোআপ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন, চাহিদামতো সারসংক্ষেপের জন্য অনুরোধ করেন, এমনকি বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ব্যাখ্যাও এআই–এর কাছে চাওয়া হয়। ফলে পাঠকেরা সংবাদ পাঠে চিরাচরিত নিষ্ক্রিয় গ্রহীতা থেকে সক্রিয় অংশগ্রহণকারীতে রূপান্তরিত হচ্ছে
৩ দিন আগে