অনলাইন ডেস্ক
ভারতের মিজোরামকে মিয়ানমারের চিন রাজ্য থেকে আলাদা করেছে তিয়াউ নদী। এই নদীর দুই ধার দুই দেশের মানুষেরই সাধারণ বিনোদনের একটি কেন্দ্র। মিজোরামে মাদক বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতের লোকজন শুকনো মৌসুমে প্রায়ই নদী পাড়ি দিয়ে গাড়িতে গান বাজাতে বাজাতে মিয়ানমারে অ্যালকোহল কিনতে যায়। কেবল মিজোরাম নয়, নাগাল্যান্ডের লংওয়া গ্রামের প্রধানের বাড়িটি দুই দেশের সীমান্তের মাঝ বরাবর।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাদের যুক্তি, এই বেড়া চোরাচালান, বিদ্রোহ এবং অবৈধ অভিবাসন সমস্যা কমাবে। একই অজুহাতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্তের বেশির ভাগ অংশেই বেড়া দিয়েছে।
তবে এই সীমান্ত বেড়ার সমস্যা কেবল ভারতেরই নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে শুরু করে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে বেড়া তৈরির ক্রমবর্ধমান প্রবণতারই প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে বিশ্বে সীমান্ত প্রাচীরের বৃহত্তম অংশ এশিয়ায়। বিশ্বের মোট সীমান্ত বেড়ার ৫৬ শতাংশই এই অঞ্চলে। স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর থেকে বিশ্বব্যাপী সীমান্ত প্রাচীর ও বেড়ার সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে যেখানে মাত্র এক ডজন সীমান্ত প্রাচীর ছিল, সেখানে বর্তমানে এটি অন্তত ৭৪ টিতে দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সীমান্ত বেড়ার মোট দৈর্ঘ্য ২০১৪ সালে ছিল ১৯৫ মাইল। সেখান থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ মাইলের বেশি। বর্তমানে বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন এমন দেশে বাস করে, যেখানে তাদের সীমান্তে প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ, অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ এবং ৯ / ১১ পরবর্তী সময়ে সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রবণতাই এই বেড়া বৃদ্ধির কারণ। পাশাপাশি এটি এখন অর্থ উপার্জনেরও একটি পথ তৈরি করেছে। নজরদারি প্রযুক্তি, নির্মাণ চুক্তি এবং বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পকেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢুকে যাচ্ছে স্রেফ সীমান্ত সংক্রান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশগুলোর ব্যয়ের কারণে।
২০২৫ সালের বৈশ্বিক সীমান্ত নিরাপত্তা বাজারের মূল্য ৪৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২৯ সালের মধ্যে এটি ৬৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের বেড়া দেওয়ার উদ্যোগ বৈশ্বিক সীমান্ত অবকাঠামো বৃদ্ধির একটি অংশ। এটি সীমান্ত ব্যবস্থাপনার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে সরাসরি প্রতিরোধ ও অপরপক্ষকে আলাদা করে রাখার দিকে বৃহত্তর নীতিগত পরিবর্তের প্রতিফলন।
কিন্তু সীমান্ত বেড়া কি আসলেই কার্যকর? বিশ্বজুড়ে চোরাচালান এবং বেড়া নির্মাণের ওপর গবেষণা, পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারী চোরাকারবারি, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে—এই বেড়ার আসলে নেতিবাচক দিকই বেশি। এগুলো অপরাধের গতিপথ পরিবর্তন করে, সীমান্ত সংলগ্ন জনপদকে অস্থিতিশীল করে তোলে এমনকি আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্পর্কের ওপরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।
ভারত সরকারের মতে, বেড়া নির্মাণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার, অবৈধ কার্যকলাপ দমন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। এর মাধ্যমে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অস্ত্র, মাদক এবং নকল পণ্যের চলাচলও কমবে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে সেখানকার মানুষ সহিংসতা থেকে বাঁচতে মিজোরামে চলে আসছে। এই জন-চলাচলের সঙ্গে মিজোরাম-মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালানের অর্থনীতিও ফুলেফেঁপে উঠেছে।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত দুই বছরে একটি মাত্র সীমান্ত পারাপারে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি মাদক জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগই হেরোইন ও মেথামফেটামিন। তবে তাদের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্ত পারাপারে এই মাদক পাচারের মাত্র ৫ শতাংশ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্য জাতিগত সংঘাতের কবলে থাকায় এবং মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে জর্জরিত হওয়ায় অস্ত্র চোরাচালানও বাড়ছে।
অবৈধ পণ্য, মাদক এবং অস্ত্রের এই ব্যাপক প্রবাহের কারণে অনেকেই মনে করেন কাঁটাতারের বেড়া কার্যকর সমাধান। বিশেষ করে, ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা এই পাহাড়ি, অরক্ষিত সীমান্তে টহল দিতে ক্লান্ত। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনী বিদ্রোহ দমনের মূল দায়িত্ব পালনের কারণে এমনিতেই চাপে থাকে। চোরাচালান দমনের দায়িত্বকে তারা প্রায়শই বাড়তি বোঝা মনে করে। তবে অনেকেই স্বীকার করেছেন, শুধু অরক্ষিত সীমান্তই নয়, বরং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে দুর্নীতির ব্যাপকতাও এই অবৈধ ব্যবসাকে আরও সহজ করে তুলেছে।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে রাষ্ট্র বনাম চোরাকারবারির সাধারণ ধারণার বাইরেও একটি জটিল ও প্রায়শই সহজীবী সম্পর্ক বিদ্যমান। এটি বৈধ ও অবৈধ উভয় পণ্যের চাহিদার দ্বারা চালিত। অনেকেই এই পণ্য চলাচলের সুবিধা নিয়ে অর্থোপার্জন করে থাকে। এমনকি কেউ কেউ ঘুষ সংগ্রহের সুবিধার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে সরকারি পদও কিনে থাকে। ফলে, সীমান্তে বেড়া দিলেই এই দুর্নীতি দূর হবে না। বরং এর ফলে কারা সুবিধা পাবে আর কারা পাবে না, কেবল সেই সমীকরণ পরিবর্তিত হবে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে চোরাচালান নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, মাদক ও অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান প্রায়শই রাষ্ট্রীয় হর্তাকর্তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দেশভেদে এর আনুষ্ঠানিকতা ও প্রয়োগের মাত্রাও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কিছু চোরাচালান পথকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মৌন অনুমোদন দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চোরাচালানকারীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক চুক্তির ওপর নির্ভর করে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আয় বাড়াতে ও অস্থির অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায়।
একইভাবে, উত্তর আফ্রিকায় রাষ্ট্রগুলো প্রায়শই নির্দিষ্ট কিছু চোরাচালান কার্যকলাপ মেনে নিচ্ছে। তারা বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বৃহৎ চোরাচালান অর্থনীতিকে তাদের বৃহত্তর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, বেড়ার মতো সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোকে ব্যাহত করে না, বরং সেগুলো পুনর্বিন্যাস করে। এর ফলে, আরও সংগঠিত ও সুসংযুক্ত ‘খেলোয়াড়দের’ ক্ষমতা সুসংহত হতে পারে। অন্যদিকে, ছোট ও কম সম্পদশালী অংশগ্রহণকারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
আর হয়তো সে কারণেই (সাক্ষাৎকারে) ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক সুপ্রতিষ্ঠিত চোরাকারবারিকে বেড়া তাদের বিভিন্ন বড় আকারের কার্যক্রমে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন বলে মনে হয়নি। সীমান্ত এলাকায় অভিযান তদারককারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য, ‘কোটি কোটি টাকা উপার্জনকারী বড় চোরাকারবারিদের ক্ষেত্রে কাঁটাতারের বেড়ার মতো তুচ্ছ জিনিস কোনো বাধাই তৈরি করতে পারবে না।’
তবে ছোটখাটো অনানুষ্ঠানিক ব্যবসায়ীদের জন্য এটি ভিন্ন ব্যাপার হতে পারে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক ছোট চোরাকারবারি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য, বেড়া না থাকা সব সময়ই ভালো।’ অন্য এক স্থানীয় ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা করেছেন, ‘স্থানীয়রা সব সময় তাদের ব্যবসা অনানুষ্ঠানিকভাবেই করবে।’ সীমান্ত অঞ্চলে গভীর সাংস্কৃতিক এবং আত্মীয়তার বন্ধনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, একটি বেড়ার কারণে ‘সামাজিক বন্ধন ভেঙে যাবে। তারপর, অর্থনৈতিকভাবেও।’ ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা বেশি আশাবাদী, তারা সরকারের কাছ থেকে কিছুটা বাস্তববাদিতা আশা করেন। এক সীমান্ত ব্যবসায়ী বলেন, ‘তারা (সরকার) বোঝে যে ছোট ব্যবসায়ীদের টিকে থাকতে হবে’, যা থেকে বোঝা যায় যে, প্রস্তাবিত বেড়া সত্ত্বেও তিনি কিছুটা অস্পষ্টতা, আলোচনা এবং বোঝাপড়া অব্যাহত থাকার আশা করছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে সীমান্ত অবকাঠামো বাড়ছে। বিভিন্ন দেশ ও সীমান্তের গবেষণা থেকে জানা গেছে, কাঁটাতারের বেড়ার মতো অবকাঠামো চোরাচালানের খরচ বাড়িয়ে দেয়। এই খরচ হয়—পণ্য সামগ্রী বেড়ার ওপার থেকে আনার প্রযুক্তিগত ব্যয়, অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের মাধ্যমে এটি পারাপার করার ব্যয়ে।
অস্ত্র বা মাদক ব্যবসায় জড়িত উচ্চ পুঁজির চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোর জন্য এই ব্যয় সামলানো তুলনামূলকভাবে সহজ। এটি তাদের বিশেষীকরণ বা একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। অন্যদিকে, সীমান্ত অঞ্চলের ছোটখাটো চোরাচালানিরা—যারা সাধারণত বৈধ পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা করে—তাদের জন্য এই কাঁটাতারের বেড়া এক অসাধ্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মধ্যে পণ্য, মানুষ এবং ধারণা—যার মধ্যে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের মতো ধর্মও অন্তর্ভুক্ত—আদান-প্রদান প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান। এখন, নরেন্দ্র মোদির সরকারের শুরু করা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে, কৌশলগত অংশীদারত্ব বাড়াতে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করতে চাইছে। এই প্রেক্ষাপটে, কাঁটাতারের বেড়ার ধারণা যা স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে নানা মাত্রিকভাবে বিভক্ত করে এবং আঞ্চলিক সংহতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা বেশ বিভ্রান্তিকর। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, বেড়া সীমান্তকে নিরাপদ করবে এবং এর ফলে আরও আনুষ্ঠানিক বা বৈধ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
সীমান্তে বৈধ পণ্যের ব্যবসা করা কিছু ব্যবসায়ী এর সঙ্গে একমত। এক ব্যবসায়ী আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হব, কিন্তু দিন শেষে বেড়া বৈধ ব্যবসাকে উৎসাহিত করবে।’ তিনি বিশ্বাস করেন, ‘এই বেড়া মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে এবং একই সঙ্গে বৈধ ব্যবসাকে চলতে দেবে।’ কিন্তু ইতিহাস ও বাস্তবতা তা বলে না।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
ভারতের মিজোরামকে মিয়ানমারের চিন রাজ্য থেকে আলাদা করেছে তিয়াউ নদী। এই নদীর দুই ধার দুই দেশের মানুষেরই সাধারণ বিনোদনের একটি কেন্দ্র। মিজোরামে মাদক বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতের লোকজন শুকনো মৌসুমে প্রায়ই নদী পাড়ি দিয়ে গাড়িতে গান বাজাতে বাজাতে মিয়ানমারে অ্যালকোহল কিনতে যায়। কেবল মিজোরাম নয়, নাগাল্যান্ডের লংওয়া গ্রামের প্রধানের বাড়িটি দুই দেশের সীমান্তের মাঝ বরাবর।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাদের যুক্তি, এই বেড়া চোরাচালান, বিদ্রোহ এবং অবৈধ অভিবাসন সমস্যা কমাবে। একই অজুহাতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্তের বেশির ভাগ অংশেই বেড়া দিয়েছে।
তবে এই সীমান্ত বেড়ার সমস্যা কেবল ভারতেরই নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে শুরু করে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে বেড়া তৈরির ক্রমবর্ধমান প্রবণতারই প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে বিশ্বে সীমান্ত প্রাচীরের বৃহত্তম অংশ এশিয়ায়। বিশ্বের মোট সীমান্ত বেড়ার ৫৬ শতাংশই এই অঞ্চলে। স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর থেকে বিশ্বব্যাপী সীমান্ত প্রাচীর ও বেড়ার সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে যেখানে মাত্র এক ডজন সীমান্ত প্রাচীর ছিল, সেখানে বর্তমানে এটি অন্তত ৭৪ টিতে দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সীমান্ত বেড়ার মোট দৈর্ঘ্য ২০১৪ সালে ছিল ১৯৫ মাইল। সেখান থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ মাইলের বেশি। বর্তমানে বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন এমন দেশে বাস করে, যেখানে তাদের সীমান্তে প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ, অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ এবং ৯ / ১১ পরবর্তী সময়ে সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রবণতাই এই বেড়া বৃদ্ধির কারণ। পাশাপাশি এটি এখন অর্থ উপার্জনেরও একটি পথ তৈরি করেছে। নজরদারি প্রযুক্তি, নির্মাণ চুক্তি এবং বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পকেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢুকে যাচ্ছে স্রেফ সীমান্ত সংক্রান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশগুলোর ব্যয়ের কারণে।
২০২৫ সালের বৈশ্বিক সীমান্ত নিরাপত্তা বাজারের মূল্য ৪৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২৯ সালের মধ্যে এটি ৬৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের বেড়া দেওয়ার উদ্যোগ বৈশ্বিক সীমান্ত অবকাঠামো বৃদ্ধির একটি অংশ। এটি সীমান্ত ব্যবস্থাপনার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে সরাসরি প্রতিরোধ ও অপরপক্ষকে আলাদা করে রাখার দিকে বৃহত্তর নীতিগত পরিবর্তের প্রতিফলন।
কিন্তু সীমান্ত বেড়া কি আসলেই কার্যকর? বিশ্বজুড়ে চোরাচালান এবং বেড়া নির্মাণের ওপর গবেষণা, পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারী চোরাকারবারি, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে—এই বেড়ার আসলে নেতিবাচক দিকই বেশি। এগুলো অপরাধের গতিপথ পরিবর্তন করে, সীমান্ত সংলগ্ন জনপদকে অস্থিতিশীল করে তোলে এমনকি আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্পর্কের ওপরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।
ভারত সরকারের মতে, বেড়া নির্মাণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার, অবৈধ কার্যকলাপ দমন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। এর মাধ্যমে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অস্ত্র, মাদক এবং নকল পণ্যের চলাচলও কমবে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে সেখানকার মানুষ সহিংসতা থেকে বাঁচতে মিজোরামে চলে আসছে। এই জন-চলাচলের সঙ্গে মিজোরাম-মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালানের অর্থনীতিও ফুলেফেঁপে উঠেছে।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত দুই বছরে একটি মাত্র সীমান্ত পারাপারে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি মাদক জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগই হেরোইন ও মেথামফেটামিন। তবে তাদের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্ত পারাপারে এই মাদক পাচারের মাত্র ৫ শতাংশ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্য জাতিগত সংঘাতের কবলে থাকায় এবং মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে জর্জরিত হওয়ায় অস্ত্র চোরাচালানও বাড়ছে।
অবৈধ পণ্য, মাদক এবং অস্ত্রের এই ব্যাপক প্রবাহের কারণে অনেকেই মনে করেন কাঁটাতারের বেড়া কার্যকর সমাধান। বিশেষ করে, ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা এই পাহাড়ি, অরক্ষিত সীমান্তে টহল দিতে ক্লান্ত। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনী বিদ্রোহ দমনের মূল দায়িত্ব পালনের কারণে এমনিতেই চাপে থাকে। চোরাচালান দমনের দায়িত্বকে তারা প্রায়শই বাড়তি বোঝা মনে করে। তবে অনেকেই স্বীকার করেছেন, শুধু অরক্ষিত সীমান্তই নয়, বরং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে দুর্নীতির ব্যাপকতাও এই অবৈধ ব্যবসাকে আরও সহজ করে তুলেছে।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে রাষ্ট্র বনাম চোরাকারবারির সাধারণ ধারণার বাইরেও একটি জটিল ও প্রায়শই সহজীবী সম্পর্ক বিদ্যমান। এটি বৈধ ও অবৈধ উভয় পণ্যের চাহিদার দ্বারা চালিত। অনেকেই এই পণ্য চলাচলের সুবিধা নিয়ে অর্থোপার্জন করে থাকে। এমনকি কেউ কেউ ঘুষ সংগ্রহের সুবিধার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে সরকারি পদও কিনে থাকে। ফলে, সীমান্তে বেড়া দিলেই এই দুর্নীতি দূর হবে না। বরং এর ফলে কারা সুবিধা পাবে আর কারা পাবে না, কেবল সেই সমীকরণ পরিবর্তিত হবে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে চোরাচালান নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, মাদক ও অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান প্রায়শই রাষ্ট্রীয় হর্তাকর্তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দেশভেদে এর আনুষ্ঠানিকতা ও প্রয়োগের মাত্রাও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কিছু চোরাচালান পথকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মৌন অনুমোদন দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চোরাচালানকারীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক চুক্তির ওপর নির্ভর করে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আয় বাড়াতে ও অস্থির অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায়।
একইভাবে, উত্তর আফ্রিকায় রাষ্ট্রগুলো প্রায়শই নির্দিষ্ট কিছু চোরাচালান কার্যকলাপ মেনে নিচ্ছে। তারা বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বৃহৎ চোরাচালান অর্থনীতিকে তাদের বৃহত্তর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, বেড়ার মতো সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোকে ব্যাহত করে না, বরং সেগুলো পুনর্বিন্যাস করে। এর ফলে, আরও সংগঠিত ও সুসংযুক্ত ‘খেলোয়াড়দের’ ক্ষমতা সুসংহত হতে পারে। অন্যদিকে, ছোট ও কম সম্পদশালী অংশগ্রহণকারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
আর হয়তো সে কারণেই (সাক্ষাৎকারে) ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক সুপ্রতিষ্ঠিত চোরাকারবারিকে বেড়া তাদের বিভিন্ন বড় আকারের কার্যক্রমে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন বলে মনে হয়নি। সীমান্ত এলাকায় অভিযান তদারককারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য, ‘কোটি কোটি টাকা উপার্জনকারী বড় চোরাকারবারিদের ক্ষেত্রে কাঁটাতারের বেড়ার মতো তুচ্ছ জিনিস কোনো বাধাই তৈরি করতে পারবে না।’
তবে ছোটখাটো অনানুষ্ঠানিক ব্যবসায়ীদের জন্য এটি ভিন্ন ব্যাপার হতে পারে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক ছোট চোরাকারবারি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য, বেড়া না থাকা সব সময়ই ভালো।’ অন্য এক স্থানীয় ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা করেছেন, ‘স্থানীয়রা সব সময় তাদের ব্যবসা অনানুষ্ঠানিকভাবেই করবে।’ সীমান্ত অঞ্চলে গভীর সাংস্কৃতিক এবং আত্মীয়তার বন্ধনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, একটি বেড়ার কারণে ‘সামাজিক বন্ধন ভেঙে যাবে। তারপর, অর্থনৈতিকভাবেও।’ ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা বেশি আশাবাদী, তারা সরকারের কাছ থেকে কিছুটা বাস্তববাদিতা আশা করেন। এক সীমান্ত ব্যবসায়ী বলেন, ‘তারা (সরকার) বোঝে যে ছোট ব্যবসায়ীদের টিকে থাকতে হবে’, যা থেকে বোঝা যায় যে, প্রস্তাবিত বেড়া সত্ত্বেও তিনি কিছুটা অস্পষ্টতা, আলোচনা এবং বোঝাপড়া অব্যাহত থাকার আশা করছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে সীমান্ত অবকাঠামো বাড়ছে। বিভিন্ন দেশ ও সীমান্তের গবেষণা থেকে জানা গেছে, কাঁটাতারের বেড়ার মতো অবকাঠামো চোরাচালানের খরচ বাড়িয়ে দেয়। এই খরচ হয়—পণ্য সামগ্রী বেড়ার ওপার থেকে আনার প্রযুক্তিগত ব্যয়, অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের মাধ্যমে এটি পারাপার করার ব্যয়ে।
অস্ত্র বা মাদক ব্যবসায় জড়িত উচ্চ পুঁজির চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোর জন্য এই ব্যয় সামলানো তুলনামূলকভাবে সহজ। এটি তাদের বিশেষীকরণ বা একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। অন্যদিকে, সীমান্ত অঞ্চলের ছোটখাটো চোরাচালানিরা—যারা সাধারণত বৈধ পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা করে—তাদের জন্য এই কাঁটাতারের বেড়া এক অসাধ্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মধ্যে পণ্য, মানুষ এবং ধারণা—যার মধ্যে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের মতো ধর্মও অন্তর্ভুক্ত—আদান-প্রদান প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান। এখন, নরেন্দ্র মোদির সরকারের শুরু করা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে, কৌশলগত অংশীদারত্ব বাড়াতে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করতে চাইছে। এই প্রেক্ষাপটে, কাঁটাতারের বেড়ার ধারণা যা স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে নানা মাত্রিকভাবে বিভক্ত করে এবং আঞ্চলিক সংহতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা বেশ বিভ্রান্তিকর। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, বেড়া সীমান্তকে নিরাপদ করবে এবং এর ফলে আরও আনুষ্ঠানিক বা বৈধ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
সীমান্তে বৈধ পণ্যের ব্যবসা করা কিছু ব্যবসায়ী এর সঙ্গে একমত। এক ব্যবসায়ী আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হব, কিন্তু দিন শেষে বেড়া বৈধ ব্যবসাকে উৎসাহিত করবে।’ তিনি বিশ্বাস করেন, ‘এই বেড়া মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে এবং একই সঙ্গে বৈধ ব্যবসাকে চলতে দেবে।’ কিন্তু ইতিহাস ও বাস্তবতা তা বলে না।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
ডিজিটাল যুগে আমরা কেবল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি না—আমরা প্রযুক্তির কাছে নিজেদের মনোযোগ, অনুভূতি, এমনকি চিন্তার স্বাধীনতাও তুলে দিচ্ছি। অ্যালগরিদম এখন আমাদের সিদ্ধান্ত, সম্পর্ক ও চেতনার গভীর স্তরে হস্তক্ষেপ করছে। শোষণ আজ আর কেবল শ্রমের ওপর নির্ভরশীল নয়—এখন তা মন ও মনোযোগের বাণিজ্যে রূপ নিয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগেপুতিন যখন যুদ্ধে জয় নিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী মনোভাব দেখাচ্ছেন, ঠিক তখনই রাশিয়ার ভেতরে ড্রোন হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০টি বোমারু বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেন। এগুলোর মধ্যে কিছু পারমাণবিক অস্ত্রবাহী যুদ্ধবিমানও ছিল।
২ দিন আগেবিশ্বের ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও ‘রুশ আগ্রাসনের নতুন যুগে’ প্রতিরক্ষা খাতে বড় পরিসরে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। গত সোমবার (২ জুন) প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের কৌশলগত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় (এসডিআর) উঠে এসেছে পারমাণবিক অস্ত্র, সাবমেরিন ও গোলাবারুদ তৈরির নতুন কারখানায় বিনিয়োগের পরিকল্পনা।
২ দিন আগেসত্য কী? অধিকাংশ মানুষের কাছে সত্য মানে হলো, যা বাস্তব তথ্যের সঙ্গে মিলে। অবশ্য আজকাল ‘বিকল্প সত্য’ নামে নতুন এক ধারণা অনেকে হাজির করছেন। সে যাই হোক, অভিজ্ঞতা বলে, সত্য শুধু বস্তুনিষ্ঠ হওয়াটাই যথেষ্ট নয়, সত্য প্রকাশের উপযুক্ত লগ্ন, সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য খুবই জরুরি।
২ দিন আগে