Ajker Patrika

বৃষ্টি বৃষ্টি

সম্পাদকীয়
বৃষ্টি বৃষ্টি

১৯৫৬ সালে স্কুলের ছাত্র থাকাকালে শহীদ কাদরীর প্রথম কবিতা ছাপা হয়েছিল। কবিতা ছেপেছেন বুদ্ধদেব বসু। সেকালে বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকায় কারও কবিতা ছাপা হওয়া ছিল অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু সেই কবিতা ছাপা হওয়ার পর দুই বছর শহীদ কাদরী আর কোনো কবিতা লেখেননি। তিনি তখন খালেদ চৌধুরী, সুকুমার মজুমদারদের সঙ্গে মন দিয়েছেন দর্শনশাস্ত্রে। প্লেটো, কান্ট, হেগেল পড়ছেন। ভাবতে শুরু করেছেন, জীবনের অর্থ, সত্যের উদ্ঘাটন কেবল দর্শনেই সম্ভব। কবিতা তখন তাঁর কাছে ছেলেমানুষি।

একদিন ঢাকার প্রথম চায়নিজ রেস্টুরেন্ট চু চিং চাওয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। সেখানে হাজির হলেন সৈয়দ শামসুল হক। বললেন, ‘আমার প্রথম কবিতার বই “একদা একরাত্রি” বেরিয়েছে। কাল চিত্রালী অফিসে আসেন। আমি আপনাকে এক কপি দিতে চাই।’

পরদিন সিনেপত্রিকা চিত্রালীতে গেলেন শহীদ কাদরী। হক বললেন, ‘পারলে একটা রিভিউ করে দেন।’

শহীদ কাদরী বললেন, ‘ঠিক আছে, বইটা নিয়ে যাই বাসায়।’

হক বললেন, ‘আপনি একবার বাসায় গেলে রিভিউ আর পাওয়া যাবে না। এখানে বসেই লিখে দিন।’

অগত্যা! লিখতে হলো রিভিউ।

এ সময় সৈয়দ হক বললেন, ‘বইটার একটা প্রকাশনা উৎসব হয়েছিল, সেখানে শামসুর রাহমান বলেছিলেন, “আহ! আজকে শহীদ কোথায়? ও ছেলেটা লিখতে পারত! ও নিজেকে নষ্ট করল খামোখাই!”’

কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগল শহীদ কাদরীর। বাড়িতে এসে সেই সন্ধ্যায় লিখে ফেললেন ‘বৃষ্টি বৃষ্টি’ কবিতাটি। যার প্রথম কয়েক পঙ্‌ক্তি:
‘সহসা সন্ত্রাস ছুঁলো। ঘর-ফেরা রঙিন সন্ধ্যার ভীড়ে
যারা তন্দ্রালস দিগ্বিদিক ছুটলো, চৌদিকে
ঝাঁকে ঝাঁকে লাল আরশোলার মত যেন বা মড়কে
শহর উজাড় হবে,–বলে গেল কেউ–’।

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বলেছিলেন শহীদ কাদরীকে, ‘এত অল্প বয়সে বৃষ্টি বৃষ্টির মতো কবিতা লিখেছ, এটা একটা বিস্ময়কর ঘটনা!’

সূত্র: শামস আল মমীনের নেওয়া শহীদ কাদরীর সাক্ষাৎকার, শঙ্খচিল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

আইনে আ.লীগ নিষিদ্ধ, মানুষের অন্তরে না: কাদের সিদ্দিকী

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

যুদ্ধের সময় পাশে থাকায় ভারতকে ধন্যবাদ জানাল ইরান

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত