Ajker Patrika

আড়াই শ টাকা!

অশোক কুমার
আড়াই শ টাকা!

অশোক কুমার কী করে চলচ্চিত্রাভিনেতা হলেন, সে গল্পটি খুবই মজার। একটি ছবির নায়ক ছিলেন নাজমুল হাসান। নায়িকা দেবিকা রানী। শুটিং শুরু হতেই নায়ক নায়িকাকে নিয়ে আক্ষরিক অর্থেই হাওয়া হয়ে গেলেন। ছবির তো বারোটা বাজল। দেবিকা ছিলেন বোম্বে টকিজের স্বত্বাধিকারী হিমাংশু রায়ের স্ত্রী।

তবে কিছুদিনের মধ্যেই দেবিকা রানীর বোধোদয় হলো, তিনি ফিরে এলেন। হিমাংশু বাবুও তাঁকে ফিরিয়ে নিলেন। এবার প্রশ্ন হলো, নায়কের চরিত্রে অভিনয় করবে কে? সে সময় বিএসসি পাস করে এক বছর কলকাতায় ওকালতি পড়ে অশোক কুমারের জায়গা হয়েছিল বোম্বে টকিজের ল্যাবরেটরিতে। তিনি কাজ শিখছিলেন বিনা পয়সায়। অল্প-স্বল্প গান-বাজনাও ছিল রক্তে।

অশোকের আত্মীয় এস মুখার্জি ছিলেন বোম্বে টকিজের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারের সহকারী। তিনিই একদিন নায়ক হিসেবে অশোকের নাম প্রস্তাব করলেন। হিমাংশু রায় রাজি হলেন, বললেন ক্যামেরা টেস্ট করাতে।

জার্মান ক্যামেরার সামনে টেস্ট হলো। জার্মান পরিচালক ক্লান্স অস্টন অবশ্য অশোকের স্ক্রিন টেস্টে খুশি হলেন না। কিন্তু হিমাংশু রায় তাঁর কথাকে পাত্তা দিলেন না। তিনি নিলেন অশোককে। বেশ কয়েকটি ছবি করে ফেললেন অশোক। বয়স তখন বাইশ। অশোক কুমারের ভক্তসংখ্যা বেড়ে গেল। অশোক কিন্তু এই তারকাখ্যাতি উপভোগ করতেন না। তিনি ভক্তদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন না। খেপে যেতেন।

ল্যাবরেটরির বহির্বিভাগে কাজ করার সময় অশোক পেতেন পঁচাত্তর টাকা। তাতেই দিব্যি রাজার হালে থাকতেন। এরপর বেতন বেড়ে দেড় শ টাকা হলো। অশোক খুশি। তারপর যখন আড়াই শ টাকা হলো, অশোক হতবাক! অশোক একদিন সাদত হাসান মান্টোকে বলেছিলেন, ‘বাই গড মান্টো! আমার অবস্থা তখন এমন হয়েছিল, তোমাকে আর কী বলব। ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে যখন আড়াই শ টাকা হাতে নিচ্ছিলাম, তখন উত্তেজনায় রীতিমতো হাত কাঁপছিল।

সূত্র: সাদত হাসান মান্টো, গাঞ্জে ফেরেশতে, পৃষ্ঠা: ১৯-২১

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত