তুষার মিয়া
ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
আপনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা। পাটিগণিত বীজগণিতের অঙ্ক প্যাঁচ লাগাচ্ছে, বিজ্ঞানের সব সূত্র ভোরে উঠে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট টিউটরের বাসায়। রাত জেগে পড়াশোনার ওই সময়টা নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন?
তখন আমরা সবাই সেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। নিশ্চয়ই অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘এই তো আর কটা দিনের বৃত্তি পরীক্ষা। শেষ হলেই শান্তি আর শান্তি!’ জীবনের নানা আয়োজনে আপনি এমন কথা অবশ্যই শুনেছেন।
এরপর শোনা গেছে, ‘এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীন জীবন’ বা ‘একবার ভার্সিটিতে উঠতে পারলেই হবে জীবন আনন্দের।’ পড়াশোনার শেষ দিকে এসে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, ‘আহা, একবার পেশাজীবনে ঢুকলেই আরাম-আয়েশ!’
এসব ভাবনা এখন মেলাতে পারবেন কি? কখনো কি মনে হয়, ‘মিথ্যা’ এক মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি বা আমাদের ছোটানো হয়েছে?
ডেবিট-ক্রেডিট মেলাতে গেলে কখনো কখনো মনে হবে হিসাব মেলেনি। হিসাব না মিললে বুঝবেন, আপনি আছেন ইঁদুরদৌড়ে! মানুষের জীবনে এই শব্দের অর্থ কিন্তু সুদূরপ্রসারী। মাঝে মাঝে কি বোধ হয় না যে আমরা নেশাগ্রস্তের মতো অন্ধ হয়ে ছুটেছি সফলতার পেছনে?
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত পপগায়ক মাইকেল জ্যাকসনের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। ২০০৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান তিনি। তখন তাঁর ঋণ ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলার। ঋণ মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাসস্থান বিক্রির কথাও উঠেছিল তখন। বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য জ্যাকসনের প্রচুর ঋণ নেওয়ার দরকার হতো। অথচ মাইকেল জীবনে দুহাত ভরে অর্থ রোজগার করেছেন। তুমুল জনপ্রিয়তায় ভেসেছেন। কিন্তু সেই মানুষটিরই কিনা ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা! অবাক লাগছে?
মাইকেল ছিলেন মহাতারকা। তিনি দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন, কিন্তু পাল্লা দিয়ে লম্বা হয়েছে তাঁর খরচের তালিকা। মাইকেল উদয়াস্ত পরিশ্রম করে টাকা কামিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা রাখতে পারেননি; পকেটের ছিদ্র দিয়ে সেটা চলে গেছে বাহারি খরচের নোনা জলে ভেসে। আপনি-আমি কেউই মাইকেলের মতো টাকার সাগরে শুয়ে থাকা মানুষ নই। আমরা নিতান্তই ছা-পোষা; সংগ্রাম করে টাকা কামাই, জীবন যাপন করি।
এই যে আমরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করছি। ২০ হাজার, ৩০ হাজার কিংবা ৫০ হাজার; অঙ্কটা য-ই হোক না, কতটুকু নিজের কাছে রাখতে পারছি আমরা? চাকরিজীবী হিসেবে প্রতি মাসের বেতন যখন অ্যাকাউন্টে ঢোকে; মোবাইলের মেসেজটি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস কি পড়ে? নাকি আসছে মাস এই টাকায় কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে? প্রশ্নটার উত্তর ভাবা যেতে পারে। তা যে উত্তরই আসুক না কেন!
টানাটানির সংসারের কথা বাদ দিই। তাদের কথা কে আর জানতে চায়! একটু ভালো অঙ্কের টাকা আয় করেন বা চড়া বেতনে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদেরই উদাহরণ হিসেবে ধরি। কারও বেতন ৩০ হাজার টাকা হলে সে অনুযায়ী নিজের জীবন সাজান। দৈনন্দিন মাসের বাজার বা শখের কেনাকাটা—সবকিছুই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এখন হুট করে আয় যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যায়, ৩০ হাজার টাকার সেই জীবনমানে কিন্তু কেউ আর থাকতে চায় না। হয়তো ১২০ সিসির বাইক তখন আপনার পোষাবে না। একটি ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দিকে ঝুঁকতে চাইবে মন। গাড়ি কেনা হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির দিকেও নজর যাবে। এসব করতে করতে একদিন টুপ করে হয়তো চলে যাওয়া হবে চিরতরে। আর তার ঠিক আগে আবিষ্কার হবে, টাকা কামাই আর খরচ করা ছাড়া অন্য কিছুই করা হলো না জীবনে! তখন কি দুঃখবোধক প্রশ্ন জাগবে এই ভেবে যে, এমন জীবনই কি চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আকাঙ্ক্ষিত ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলবে শুধু টাকা আয় ও ব্যয়ের হিসাব। যেকোনো ধরনের সঞ্চয় (টাকা বা অন্য কিছুর) সেখানে অনুপস্থিত। বোধ হয়, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুরো জীবনটাই আমরা শুধু দৌড়াতেই শিখে গেছি। কেউ বলেনি, তিষ্ঠ ক্ষণকাল! থামতে কেউ শেখায়নি আসলে। তাই দিনের শেষে ক্লান্ত অবয়বে হিসাব কষতে বসে আমরা আয়নায় দেখতে পাচ্ছি ইঁদুরের অবয়বে অবিরাম ছুটে চলার দৃশ্য। তাতে ত্রস্ততা আছে, ব্যস্ততা আছে। কিন্তু হাঁফ ছেড়ে দম নেওয়া নেই।
এমন দমবন্ধ বোধ হলে বুঝবেন বন্ধু, আপনি পড়ে গেছেন অসুস্থ এক গোলকধাঁধায়। এখান থেকে বের হওয়ার পথ দুর্গম বটে। তবে বের হতে না পারলে কথিত ‘সুখ’ হয়তো মরুর মরীচিকাই থেকে যাবে চিরকাল!
ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
আপনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা। পাটিগণিত বীজগণিতের অঙ্ক প্যাঁচ লাগাচ্ছে, বিজ্ঞানের সব সূত্র ভোরে উঠে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট টিউটরের বাসায়। রাত জেগে পড়াশোনার ওই সময়টা নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন?
তখন আমরা সবাই সেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। নিশ্চয়ই অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘এই তো আর কটা দিনের বৃত্তি পরীক্ষা। শেষ হলেই শান্তি আর শান্তি!’ জীবনের নানা আয়োজনে আপনি এমন কথা অবশ্যই শুনেছেন।
এরপর শোনা গেছে, ‘এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীন জীবন’ বা ‘একবার ভার্সিটিতে উঠতে পারলেই হবে জীবন আনন্দের।’ পড়াশোনার শেষ দিকে এসে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, ‘আহা, একবার পেশাজীবনে ঢুকলেই আরাম-আয়েশ!’
এসব ভাবনা এখন মেলাতে পারবেন কি? কখনো কি মনে হয়, ‘মিথ্যা’ এক মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি বা আমাদের ছোটানো হয়েছে?
ডেবিট-ক্রেডিট মেলাতে গেলে কখনো কখনো মনে হবে হিসাব মেলেনি। হিসাব না মিললে বুঝবেন, আপনি আছেন ইঁদুরদৌড়ে! মানুষের জীবনে এই শব্দের অর্থ কিন্তু সুদূরপ্রসারী। মাঝে মাঝে কি বোধ হয় না যে আমরা নেশাগ্রস্তের মতো অন্ধ হয়ে ছুটেছি সফলতার পেছনে?
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত পপগায়ক মাইকেল জ্যাকসনের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। ২০০৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান তিনি। তখন তাঁর ঋণ ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলার। ঋণ মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাসস্থান বিক্রির কথাও উঠেছিল তখন। বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য জ্যাকসনের প্রচুর ঋণ নেওয়ার দরকার হতো। অথচ মাইকেল জীবনে দুহাত ভরে অর্থ রোজগার করেছেন। তুমুল জনপ্রিয়তায় ভেসেছেন। কিন্তু সেই মানুষটিরই কিনা ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা! অবাক লাগছে?
মাইকেল ছিলেন মহাতারকা। তিনি দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন, কিন্তু পাল্লা দিয়ে লম্বা হয়েছে তাঁর খরচের তালিকা। মাইকেল উদয়াস্ত পরিশ্রম করে টাকা কামিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা রাখতে পারেননি; পকেটের ছিদ্র দিয়ে সেটা চলে গেছে বাহারি খরচের নোনা জলে ভেসে। আপনি-আমি কেউই মাইকেলের মতো টাকার সাগরে শুয়ে থাকা মানুষ নই। আমরা নিতান্তই ছা-পোষা; সংগ্রাম করে টাকা কামাই, জীবন যাপন করি।
এই যে আমরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করছি। ২০ হাজার, ৩০ হাজার কিংবা ৫০ হাজার; অঙ্কটা য-ই হোক না, কতটুকু নিজের কাছে রাখতে পারছি আমরা? চাকরিজীবী হিসেবে প্রতি মাসের বেতন যখন অ্যাকাউন্টে ঢোকে; মোবাইলের মেসেজটি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস কি পড়ে? নাকি আসছে মাস এই টাকায় কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে? প্রশ্নটার উত্তর ভাবা যেতে পারে। তা যে উত্তরই আসুক না কেন!
টানাটানির সংসারের কথা বাদ দিই। তাদের কথা কে আর জানতে চায়! একটু ভালো অঙ্কের টাকা আয় করেন বা চড়া বেতনে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদেরই উদাহরণ হিসেবে ধরি। কারও বেতন ৩০ হাজার টাকা হলে সে অনুযায়ী নিজের জীবন সাজান। দৈনন্দিন মাসের বাজার বা শখের কেনাকাটা—সবকিছুই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এখন হুট করে আয় যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যায়, ৩০ হাজার টাকার সেই জীবনমানে কিন্তু কেউ আর থাকতে চায় না। হয়তো ১২০ সিসির বাইক তখন আপনার পোষাবে না। একটি ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দিকে ঝুঁকতে চাইবে মন। গাড়ি কেনা হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির দিকেও নজর যাবে। এসব করতে করতে একদিন টুপ করে হয়তো চলে যাওয়া হবে চিরতরে। আর তার ঠিক আগে আবিষ্কার হবে, টাকা কামাই আর খরচ করা ছাড়া অন্য কিছুই করা হলো না জীবনে! তখন কি দুঃখবোধক প্রশ্ন জাগবে এই ভেবে যে, এমন জীবনই কি চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আকাঙ্ক্ষিত ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলবে শুধু টাকা আয় ও ব্যয়ের হিসাব। যেকোনো ধরনের সঞ্চয় (টাকা বা অন্য কিছুর) সেখানে অনুপস্থিত। বোধ হয়, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুরো জীবনটাই আমরা শুধু দৌড়াতেই শিখে গেছি। কেউ বলেনি, তিষ্ঠ ক্ষণকাল! থামতে কেউ শেখায়নি আসলে। তাই দিনের শেষে ক্লান্ত অবয়বে হিসাব কষতে বসে আমরা আয়নায় দেখতে পাচ্ছি ইঁদুরের অবয়বে অবিরাম ছুটে চলার দৃশ্য। তাতে ত্রস্ততা আছে, ব্যস্ততা আছে। কিন্তু হাঁফ ছেড়ে দম নেওয়া নেই।
এমন দমবন্ধ বোধ হলে বুঝবেন বন্ধু, আপনি পড়ে গেছেন অসুস্থ এক গোলকধাঁধায়। এখান থেকে বের হওয়ার পথ দুর্গম বটে। তবে বের হতে না পারলে কথিত ‘সুখ’ হয়তো মরুর মরীচিকাই থেকে যাবে চিরকাল!
বাংলাদেশের অ্যাংলিংকান সম্প্রদায় উপাসনার জন্য নির্মাণ করেছিল সেন্ট থমাস ক্যাথেড্রাল চার্চ। ১৮১৯ সালে শেষ হয় এর নির্মাণকাজ। ঢাকা কারাগারের কয়েদিরা নাকি এটির নির্মাণে শ্রম দিয়েছিল। কলকাতার বিশপ রেজিনাল্ড হেবার ১৮২৪ সালের ১০ জুলাই ঢাকায় এসে উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত এই গির্জাটির।
১ ঘণ্টা আগেআজ বিশ্ব নৃত্য দিবস। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর সহযোগী সংস্থা আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট-আইটিআই ১৯৮২ সালে ২৯ এপ্রিলকে বিশ্ব নৃত্য দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। মূলত নৃত্যশিল্পের বিকাশ ও বিশ্বব্যাপী নৃত্যপ্রেমীদের একত্রিত করাই এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য। ২৯ এপ্রিল আধুনিক
১৬ ঘণ্টা আগেদুপুরের খাবারের বিরতির পর তাঁরা আবার কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা ৭টায় কাজ শেষ হলে সিপির চীনা ও আইরিশ শ্রমিকেরা এক দিনে ১০ মাইল ৫৬ ফুট (১৬.১১১ কিলোমিটার) রেলপথ বসানোর অনন্য রেকর্ড গড়েন।
২ দিন আগেআলীর এই সিদ্ধান্তে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। কেউ কেউ আলীর অবস্থানের প্রশংসা করেন, আবার কেউ কেউ তাঁকে আখ্যায়িত করেন বিশ্বাসঘাতক। তাঁকে বক্সিং রিংয়ে নিষিদ্ধ করা হয়, কেড়ে নেওয়া হয় অর্জিত শিরোপা। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনে ফেডারেল সরকারের বিচার বিভাগ।
২ দিন আগে