Ajker Patrika

মানুষের কাছাকাছি

সম্পাদকীয়
মানুষের কাছাকাছি

নিউ থিয়েটার স্টুডিওতে শচীন দেববর্মনের একটা মিউজিক রুম ছিল। সেখানে বসেই তিনি গানের সুর করতেন। মুম্বাইয়ে স্টুডিওর মিউজিক রুমে একদিন অসময়ে ঢুকেছিলেন শচীন কত্তা। সে সময় যে তিনি আসবেন, সেটা একেবারেই ভাবতে পারেনি স্টুডিওর কাজের ছেলেটি। সে তখন আপন মনে গাইছিল নৌসাদের গান। শচীন কত্তাকে সামনে দেখে লজ্জায় লাল হয়ে গেল ছেলেটি।

ভয়ও পেল। গান গাওয়ার জন্য শচীন কত্তার পায়ে ধরে ক্ষমাও চাইল।

শচীন কত্তার কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই। তিনি তখন ভাবছেন, এই ঘরে এই লোকটির সামনেই একের পর এক গান তৈরি করেছেন তিনি। বিদগ্ধ মানুষেরা কত প্রশংসা করেছে সে গানের! স্তাবক, বাদ্যযন্ত্রীরাও তারিফে ভরে দিয়েছেন শচীন কত্তার হৃদয়। কিন্তু কাজের লোকটি যখন গাইছিল গান, তখন সে বেছে নিয়েছিল নৌসাদকে, শচীন দেববর্মণকে নয়। এই সত্যের মুখোমুখি হয়ে খুবই বিব্রত হলেন শচীন কত্তা। বুঝলেন, এত দিন যা করেছেন, তা কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের হৃদয়ে ঢোকেনি।

তিনি আর কারও কথা শুনলেন না। গান বানানোর জন্য নতুন রাস্তা ধরলেন। এরপরই ‘বাহার’ সিনেমার জন্য যে গানগুলো তৈরি করলেন, তা সুপার হিট হলো এবং তা সাধারণ মানুষের মন ছুঁয়ে গেল।

এই মিউজিক রুমেই আরেকটি ছেলে কাজ করত। ও নিজের মনে একদিন পিয়ানোর রিডে আঙুল বোলাচ্ছিল। আপন মনে পিয়ানোর রিড বেজে চলেছিল ওর হাতে। তা থেকে বের হচ্ছিল মিষ্টি সুর। শচীন কত্তাকে দেখে টুল থেকে নেমে একেবারে উপুড় হয়ে ছেলেটি পড়ল কত্তার পায়ে। শচীন কত্তা বললেন, ‘আরে! মাফ করে তো দিলামই, তুই যে আমাকে কী দিয়ে গেলি, তা তুই নিজেই জানিস না!’

ছেলেটির বাজানো সুরের ওপরই লতা মঙ্গেশকরের জন্য শচীন কত্তা তৈরি করলেন ‘ঠান্ডি হাওয়া’।

সূত্র: পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, কথায় কথায় যে রাত হয়ে যায়, পৃষ্ঠা ১৯৪-১৯৫

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

আইনে আ.লীগ নিষিদ্ধ, মানুষের অন্তরে না: কাদের সিদ্দিকী

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

যুদ্ধের সময় পাশে থাকায় ভারতকে ধন্যবাদ জানাল ইরান

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত