Ajker Patrika

রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রথম বোঝাপড়া

সম্পাদকীয়
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রথম বোঝাপড়া

একটু বেশি বয়সেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বোঝাপড়া করেছিলেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। যখন তিনি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, তখন তাঁর বয়স পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৮০ সালে বাংলা একাডেমি ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছিল। প্রথম দিন বিকেলে ‘সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা’ বিষয়ে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।

দায়িত্ব তো পেয়েছেন, কিন্তু তখনো রবীন্দ্রনাথকে খুব বেশি নাড়াচাড়া করেননি। এ তো বিপদ! মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। রসজ্ঞ ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথের ‘কালান্তর’ বইটি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, ‘পড়ে দেখেন, কিছু আইডিয়া পান কি না।’

আগেও এই বইয়ের কিছু প্রবন্ধ পড়া ছিল। কিন্তু নতুন করে কালান্তর পড়তে গিয়েই ঠিক করলেন, সময় পেলেই রবীন্দ্রনাথের সব গদ্যরচনা পড়ে ফেলবেন। তখন থেকেই শুরু করলেন রবীন্দ্রনাথের নানা বই সংগ্রহ করার কাজ। বন্ধুদের মধ্যে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, আবু শামস নুরুন্নবী, বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনসহ অনেকেই বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত।

এরপর পড়াশোনা করে ‘মাতৃভাষার সপক্ষে রবীন্দ্রনাথ’ নামে একটি ছোট পাণ্ডুলিপি তৈরি করলেন। একজন প্রকাশককে পাণ্ডুলিপিটা দেওয়া হলো। ছয় মাস ফেলে রাখলেন তিনি। অনুরোধ করে সেটা ফিরিয়ে এনে দেখা গেল পাণ্ডুলিপির কোনো কোনো জায়গায় রবীন্দ্রনাথের উদ্ধৃতিতে গোল গোল দাগ দিয়ে রাখা হয়েছে, তাঁর ভাষা প্রকাশকের পছন্দ হয়নি।

এরপর বাংলা একাডেমির বশীর আল্হেলালকে ফোন করলে তিনি কবি মুহম্মদ নুরুল হুদাকে নিয়ে এলেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের বাড়ি। বয়ে আনলেন বাংলা একাডেমি প্রকাশিত কিছু বই। আর বললেন, তাঁরা বইটি ছাপতে চান। ১৯৮৩ সালের মে মাসে ছাপা হলো বইটি। 

সূত্র: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, আমার লেখালেখি, দৈনিক ইত্তেফাক, ঈদসংখ্যা ২০১১ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত