কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
কী খেতে চান? নানি-দাদির হাতের সেই ভুলে যাওয়া রান্না, নাকি ঋতু অনুসারে মজার খাবার? নাকি দেশের কোনো এক এলাকার বিশেষ খাবার? কিংবা নদীর পাকা রুই মাছের ঝোল আলু দিয়ে? অথবা ধরুন, ঝুম বৃষ্টিতে আপনার খিচুড়ি আর ভুনা মাংস খেতে ইচ্ছা করল। কী করবেন? এসব ক্ষেত্রে ঢাকা শহরের অনেকেই ফাতেমা আবেদীন নাজলার ফেসবুকে নক করেন। তিনি ব্যবস্থা করে দেন। অনলাইনে এখন ভীষণ জনপ্রিয় তাঁর খাদ্য বিপণন প্রতিষ্ঠান ‘এন’স কিচেন’।
ছিলেন শিক্ষক। তা ছেড়ে দিয়ে করেছেন সাংবাদিকতা। এরপর সেখান থেকেও বিদায় নিয়ে তিনি এখন অনলাইনে খাবারের ব্যবসা করছেন। পাড়ায় এখন তাঁকে এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানকে সবাই একনামে চেনেন।
সেই সব দিন
শুরুটা একটু এলোমেলো হয় না? কী করব, সে ভাবনাটা থাকে না। কিন্তু ভেতর থেকে কেউ একজন বলতে থাকে এটা করো, সেটা করো। শিক্ষকতাই করছিলেন তখন। কিন্তু ভেতরের সে কথা শুনে নাজলাও একদিন বন্ধুর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার করে জামালপুরে চলে যান হাতের কাজের দেশীয় পণ্য কিনতে। তারপর একসময় শুরু করেন শাড়ি ও পাঞ্জাবির নকশা করতে। সেসব বিক্রিও হতো বেশ। এ সবকিছুই তিনি শুরু করেছিলেন এখনকার অনলাইন পেজগুলোর রমরমা শুরুর বেশ আগে।
তত দিনে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে শুরু করেছিলেন সাংবাদিকতার চাকরি। কিন্তু তিনি খেয়াল করেন, যে লেখালেখির জন্য শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতায় এসেছিলেন, সেই লেখালেখিটাই আর হয়ে উঠছে না। এদিকে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর সময় পরিচিত চার-পাঁচটি শিশুর মৃত্যু তাঁকে বিষণ্ন করে তোলে। ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে যায় ব্যবসা।
এরপর নাজলা সাংবাদিকতাতেই মনোযোগ দেন। প্রতিদিন নিউজ ডেস্কে কাজ করে বাড়ি ফেরেন, রান্না করেন, খান। পৌনঃপুনিক রুটিনের এ অভ্যস্ত জীবনে একদিন তিনি আবিষ্কার করেন, সারা দিনের সব অবসাদ থেকে মুক্তি দিচ্ছে রান্না। অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে সেটাকেই বেছে নিলেন তিনি। বন্ধু মহল থেকে উৎসাহ পেতেন খাবার নিয়ে কাজ করা কিংবা রেস্তোরাঁ খোলার জন্য। অবশেষে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ঘোষণা দিয়ে শুরু করেন তাঁর নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘এন’স কিচেন’। শুরু হয় নতুন পথচলা। তবে প্রতিষ্ঠানটি চালু করার ৮৭ দিনের মাথায় শুরু হয় করোনা ও লকডাউন। ফলে সীমিত করতে হয় অনেক কিছু। তবে এখন তাঁর ব্যবসার পরিধি ছাড়িয়ে গেছে ঢাকা শহরের গণ্ডি।
এবং করোনাকাল
লকডাউনময় করোনাকালে তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল ক্রেতাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া। সাইকেল রাইডার, পাঠাও-উবার বাইক রাইড চালু হওয়ার পর বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছানো কিছুটা সহজ হয়। এ ক্ষেত্রে লকডাউনে তিনি সহযোগিতা পেয়েছেন সহকর্মীদের। এ জন্যই হয়তো নাজলা মনে করেন, বন্ধুবান্ধব ও স্বজনেরা পাশে থাকায় যেগুলো চ্যালেঞ্জ হওয়ার কথা ছিল, সেগুলোকে সহজেই কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। আর তাই একটি জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টালের সেন্ট্রাল ডেস্কের প্রধানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর ‘ভাতওয়ালী’ হয়ে উঠতে পেরেছেন ফাতেমা আবেদীন নাজলা।
জ্যাম বড় সমস্যা
বাজারমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে খাবারের দাম বাড়ানো সহজ। কিন্তু ঢাকার মতো জ্যামের শহরে ঠিক সময়ে ক্রেতার বাড়িতে খাবার পৌঁছানো বেশ কঠিন। খাবার রান্না, প্যাকেট করা, রাইডার কল করা, রাইডার খাবার নিয়ে জ্যাম ঠেলে ঠিক সময়ে পৌঁছাল কি না, এসবের খবর রাখতে হয় কঠিনভাবে। তার ওপর আছে ক্লায়েন্টের ক্রমাগত ফোনকল। সব মোটামুটি এক হাতে সামলে কাজ করে চলেছেন নাজলা।
বৈচিত্র্যময় খাবার
নাজলা বৈচিত্র্য আনেন প্রতিদিনের খাবারে। আবহাওয়াসহ বিভিন্ন অবস্থা মিলিয়ে তৈরি করেন প্রতিদিনের খাবারের মেন্যু। তাতে থাকে বিভিন্ন নিরীক্ষামূলক খাবার, থাকে দেশীয় ও আঞ্চলিক খাবার। এ ছাড়া ক্রেতারা আগে থেকেই নিজেদের পছন্দের খাবারের কথা বলে রাখতে পারেন নির্দিষ্ট পরিমাণে। খাবার নিয়ে এই নিরবচ্ছিন্ন গবেষণার কারণে ঢাকার খাদ্যপ্রেমীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় ফাতেমা আবেদীন নাজলা।
ব্যক্তিগত
লেখক ও অনুবাদক বাবা জয়নুল আবেদীন আবদুল্লাহ ও মা আলেয়া বেগম লিলির মেয়ে ফাতেমা আবেদীন নাজলার জন্ম শেরপুরে। তবে রাজধানীর বাসাবো এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে বেড়ে ওঠেন তিনি। বাড়ির ছাদ থেকে দেখতে পেতেন আদমজী জুটমিল। উচ্চমাধ্যমিক শেষে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে।
কী খেতে চান? নানি-দাদির হাতের সেই ভুলে যাওয়া রান্না, নাকি ঋতু অনুসারে মজার খাবার? নাকি দেশের কোনো এক এলাকার বিশেষ খাবার? কিংবা নদীর পাকা রুই মাছের ঝোল আলু দিয়ে? অথবা ধরুন, ঝুম বৃষ্টিতে আপনার খিচুড়ি আর ভুনা মাংস খেতে ইচ্ছা করল। কী করবেন? এসব ক্ষেত্রে ঢাকা শহরের অনেকেই ফাতেমা আবেদীন নাজলার ফেসবুকে নক করেন। তিনি ব্যবস্থা করে দেন। অনলাইনে এখন ভীষণ জনপ্রিয় তাঁর খাদ্য বিপণন প্রতিষ্ঠান ‘এন’স কিচেন’।
ছিলেন শিক্ষক। তা ছেড়ে দিয়ে করেছেন সাংবাদিকতা। এরপর সেখান থেকেও বিদায় নিয়ে তিনি এখন অনলাইনে খাবারের ব্যবসা করছেন। পাড়ায় এখন তাঁকে এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানকে সবাই একনামে চেনেন।
সেই সব দিন
শুরুটা একটু এলোমেলো হয় না? কী করব, সে ভাবনাটা থাকে না। কিন্তু ভেতর থেকে কেউ একজন বলতে থাকে এটা করো, সেটা করো। শিক্ষকতাই করছিলেন তখন। কিন্তু ভেতরের সে কথা শুনে নাজলাও একদিন বন্ধুর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার করে জামালপুরে চলে যান হাতের কাজের দেশীয় পণ্য কিনতে। তারপর একসময় শুরু করেন শাড়ি ও পাঞ্জাবির নকশা করতে। সেসব বিক্রিও হতো বেশ। এ সবকিছুই তিনি শুরু করেছিলেন এখনকার অনলাইন পেজগুলোর রমরমা শুরুর বেশ আগে।
তত দিনে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে শুরু করেছিলেন সাংবাদিকতার চাকরি। কিন্তু তিনি খেয়াল করেন, যে লেখালেখির জন্য শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতায় এসেছিলেন, সেই লেখালেখিটাই আর হয়ে উঠছে না। এদিকে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর সময় পরিচিত চার-পাঁচটি শিশুর মৃত্যু তাঁকে বিষণ্ন করে তোলে। ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে যায় ব্যবসা।
এরপর নাজলা সাংবাদিকতাতেই মনোযোগ দেন। প্রতিদিন নিউজ ডেস্কে কাজ করে বাড়ি ফেরেন, রান্না করেন, খান। পৌনঃপুনিক রুটিনের এ অভ্যস্ত জীবনে একদিন তিনি আবিষ্কার করেন, সারা দিনের সব অবসাদ থেকে মুক্তি দিচ্ছে রান্না। অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে সেটাকেই বেছে নিলেন তিনি। বন্ধু মহল থেকে উৎসাহ পেতেন খাবার নিয়ে কাজ করা কিংবা রেস্তোরাঁ খোলার জন্য। অবশেষে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ঘোষণা দিয়ে শুরু করেন তাঁর নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘এন’স কিচেন’। শুরু হয় নতুন পথচলা। তবে প্রতিষ্ঠানটি চালু করার ৮৭ দিনের মাথায় শুরু হয় করোনা ও লকডাউন। ফলে সীমিত করতে হয় অনেক কিছু। তবে এখন তাঁর ব্যবসার পরিধি ছাড়িয়ে গেছে ঢাকা শহরের গণ্ডি।
এবং করোনাকাল
লকডাউনময় করোনাকালে তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল ক্রেতাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া। সাইকেল রাইডার, পাঠাও-উবার বাইক রাইড চালু হওয়ার পর বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছানো কিছুটা সহজ হয়। এ ক্ষেত্রে লকডাউনে তিনি সহযোগিতা পেয়েছেন সহকর্মীদের। এ জন্যই হয়তো নাজলা মনে করেন, বন্ধুবান্ধব ও স্বজনেরা পাশে থাকায় যেগুলো চ্যালেঞ্জ হওয়ার কথা ছিল, সেগুলোকে সহজেই কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। আর তাই একটি জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টালের সেন্ট্রাল ডেস্কের প্রধানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর ‘ভাতওয়ালী’ হয়ে উঠতে পেরেছেন ফাতেমা আবেদীন নাজলা।
জ্যাম বড় সমস্যা
বাজারমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে খাবারের দাম বাড়ানো সহজ। কিন্তু ঢাকার মতো জ্যামের শহরে ঠিক সময়ে ক্রেতার বাড়িতে খাবার পৌঁছানো বেশ কঠিন। খাবার রান্না, প্যাকেট করা, রাইডার কল করা, রাইডার খাবার নিয়ে জ্যাম ঠেলে ঠিক সময়ে পৌঁছাল কি না, এসবের খবর রাখতে হয় কঠিনভাবে। তার ওপর আছে ক্লায়েন্টের ক্রমাগত ফোনকল। সব মোটামুটি এক হাতে সামলে কাজ করে চলেছেন নাজলা।
বৈচিত্র্যময় খাবার
নাজলা বৈচিত্র্য আনেন প্রতিদিনের খাবারে। আবহাওয়াসহ বিভিন্ন অবস্থা মিলিয়ে তৈরি করেন প্রতিদিনের খাবারের মেন্যু। তাতে থাকে বিভিন্ন নিরীক্ষামূলক খাবার, থাকে দেশীয় ও আঞ্চলিক খাবার। এ ছাড়া ক্রেতারা আগে থেকেই নিজেদের পছন্দের খাবারের কথা বলে রাখতে পারেন নির্দিষ্ট পরিমাণে। খাবার নিয়ে এই নিরবচ্ছিন্ন গবেষণার কারণে ঢাকার খাদ্যপ্রেমীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় ফাতেমা আবেদীন নাজলা।
ব্যক্তিগত
লেখক ও অনুবাদক বাবা জয়নুল আবেদীন আবদুল্লাহ ও মা আলেয়া বেগম লিলির মেয়ে ফাতেমা আবেদীন নাজলার জন্ম শেরপুরে। তবে রাজধানীর বাসাবো এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে বেড়ে ওঠেন তিনি। বাড়ির ছাদ থেকে দেখতে পেতেন আদমজী জুটমিল। উচ্চমাধ্যমিক শেষে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে।
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
২ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৪ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৪ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৪ দিন আগে