আন্তর্জাতিক নারী
ফিচার ডেস্ক
যুদ্ধের উত্তাপে জর্জরিত গাজায় প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুর ছায়া ঘোরে। তবু সেখানে নতুন প্রাণের আশা যেন এক অনন্য বিজয়। গাজার আসসাহাবা মেডিকেল কমপ্লেক্সের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স আর ইন্টার্নরা এই জীবন ও মৃত্যুর এক অপরিহার্য সম্পর্কের সাক্ষী হয়ে ওঠেন প্রতিনিয়ত। সেখানে অনিশ্চিত নিকষ কালো রাত নেমে আসে গর্ভবতীর প্রসববেদনার সঙ্গে। ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকা শহরটির নীরবতা ভেদ করে শোনা যায় নবজাতকের প্রথম চিৎকার!
বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া হাসপাতালকে সাক্ষী রেখে কখনো জীবিত আবার কখনো মৃত নবজাতকের দেহ নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বজনেরা। সন্তান হারানোর শোক তাঁদের যতটা বিমূঢ় করে দেয়, ততটাই উদ্বিগ্ন করে তোলে জীবিত সন্তানের ভবিষ্যৎ-চিন্তা। এর মাঝেও জীবনের অনুপ্রেরণা থেমে থাকে না। গাজার নারীরা যেভাবে বিপর্যয়ের মধ্যে থেকেও নতুন জীবন বরণ করেন, তা মানব হৃদয়ে নতুন সাহস ও বিশ্বাস জোগায়। হাসপাতালে দেখা যায় যুদ্ধের নৃশংসতার ভেতরেও অবিচল ভালোবাসা ও মায়ার গল্প।
কিন্তু সেই আলোও অনেক সময় অন্ধকারের সঙ্গে লড়াই করে। বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, ওষুধের সংকট এবং খাদ্যের অভাব মা ও শিশুর জীবন বিবর্ণ করে রেখেছে সেখানে। বিদ্যুৎ না থাকলে সেখানে সহায়ক মোবাইল ফোনের টর্চের মৃদু আলো। ব্যথানাশক আর মৌলিক চিকিৎসাসামগ্রীর অভাব সেখানে প্রকট। তার মধ্যেও চিকিৎসকেরা নিরন্তর চেষ্টা করেন নতুন মায়েদের শরীরের ক্ষত যতটা সম্ভব সংক্রমণমুক্ত রাখতে।
গাজায় মৃত্যু আর বেদনার মাঝে নতুন জীবন জন্ম নেয়। সেই নতুন জীবনের আলোই সেখানকার অন্ধকার হালকা করে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা গণহত্যামূলক হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। ১১ আগস্ট গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এর মধ্যে অন্তত ২১৭ জন অনাহার আর অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে শতাধিক শিশু। ক্রমবর্ধমান এই মৃত্যু মিছিলের সঙ্গে মানবিক সংকটও পৌঁছেছে চূড়ান্ত পর্যায়ে। যখন এই লেখা পড়ছেন, তখন সেখানে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছে হয়তো আরও কিছু মানুষ। ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
গাজার মাতৃসদনগুলোর গল্প শুধু সংকটে মানবিকতা দেখানোর নয়, নিরন্তর সংগ্রামেরও। হাসপাতালের সংকট, যুদ্ধের থমথমে পরিবেশ—সবকিছুর মাঝেও নারীদের দৃঢ়তা ও মাতৃত্বের প্রতি অবিচল ভালোবাসা নতুন জীবনের বার্তা দেয়।
সন্তান জন্ম দেওয়া সহজ নয়। এটা শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত ক্লান্তিকর। গাজার নারীরা প্রসবের তীব্র ব্যথা সহ্য করেন কোনো ব্যথানাশক ছাড়া। চিকিৎসকেরা তাঁদের অস্ত্রোপচার করার সময় অসহায় বোধ করেন। সেই মায়েদের অন্যমনস্ক করতে তাঁরা মায়েদের সঙ্গে কথা বলেন, সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে নানা কথা বলতে বলতে সেলাই দিতে থাকেন। সেখানে এখন নিরবচ্ছিন্ন ক্ষুধা। সে কারণে গর্ভবতী নারীরা আরও দুর্বল হয়ে পড়ছেন। ঠিকমতো মা ও সন্তানের ওজন বাড়ে না। ফলে প্রসবের সময় তাঁরা আগে থেকেই ক্লান্ত থাকেন। তাই প্রসব দীর্ঘায়িত হয়। বাড়ে ব্যথা। কিন্তু শিশুর প্রথম কান্না, মা ও তাঁর সন্তানকে আলিঙ্গন করার দৃশ্য যুদ্ধের ভয়াবহতা ভুলিয়ে দেয়।
গাজার আসসাহাবা মেডিকেল কমপ্লেক্সে আসা এক শিশু আল জাজিরাকে বলেছে, তার একটি ভাই চাই। কারণ, বোন হলে সে হারিয়ে যাবে। এই ছোট্ট মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা আশঙ্কা আর ভালোবাসা কেবল গাজার সংগ্রামেরই নয়, অস্তিত্বের লড়াইয়ের কথা বলে। গাজার মাতৃসদনে জীবন ও মৃত্যু একই সঙ্গে হাত ধরে চলে। সেখানে প্রতিটি নতুন শিশুর আগমন এক জীবন্ত প্রতিরোধ এবং এক নতুন আশার প্রতীক। এই কঠিন বাস্তবতার মাঝেও মানুষের অদম্য সাহস, মাতৃত্বের মায়া এবং জীবনের প্রতি অটল বিশ্বাস যেন বার্তা দেয়—
গাজা মুছে যায় না, বাঁচে।
সূত্র: আল জাজিরা
যুদ্ধের উত্তাপে জর্জরিত গাজায় প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুর ছায়া ঘোরে। তবু সেখানে নতুন প্রাণের আশা যেন এক অনন্য বিজয়। গাজার আসসাহাবা মেডিকেল কমপ্লেক্সের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স আর ইন্টার্নরা এই জীবন ও মৃত্যুর এক অপরিহার্য সম্পর্কের সাক্ষী হয়ে ওঠেন প্রতিনিয়ত। সেখানে অনিশ্চিত নিকষ কালো রাত নেমে আসে গর্ভবতীর প্রসববেদনার সঙ্গে। ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকা শহরটির নীরবতা ভেদ করে শোনা যায় নবজাতকের প্রথম চিৎকার!
বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া হাসপাতালকে সাক্ষী রেখে কখনো জীবিত আবার কখনো মৃত নবজাতকের দেহ নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বজনেরা। সন্তান হারানোর শোক তাঁদের যতটা বিমূঢ় করে দেয়, ততটাই উদ্বিগ্ন করে তোলে জীবিত সন্তানের ভবিষ্যৎ-চিন্তা। এর মাঝেও জীবনের অনুপ্রেরণা থেমে থাকে না। গাজার নারীরা যেভাবে বিপর্যয়ের মধ্যে থেকেও নতুন জীবন বরণ করেন, তা মানব হৃদয়ে নতুন সাহস ও বিশ্বাস জোগায়। হাসপাতালে দেখা যায় যুদ্ধের নৃশংসতার ভেতরেও অবিচল ভালোবাসা ও মায়ার গল্প।
কিন্তু সেই আলোও অনেক সময় অন্ধকারের সঙ্গে লড়াই করে। বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, ওষুধের সংকট এবং খাদ্যের অভাব মা ও শিশুর জীবন বিবর্ণ করে রেখেছে সেখানে। বিদ্যুৎ না থাকলে সেখানে সহায়ক মোবাইল ফোনের টর্চের মৃদু আলো। ব্যথানাশক আর মৌলিক চিকিৎসাসামগ্রীর অভাব সেখানে প্রকট। তার মধ্যেও চিকিৎসকেরা নিরন্তর চেষ্টা করেন নতুন মায়েদের শরীরের ক্ষত যতটা সম্ভব সংক্রমণমুক্ত রাখতে।
গাজায় মৃত্যু আর বেদনার মাঝে নতুন জীবন জন্ম নেয়। সেই নতুন জীবনের আলোই সেখানকার অন্ধকার হালকা করে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা গণহত্যামূলক হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। ১১ আগস্ট গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এর মধ্যে অন্তত ২১৭ জন অনাহার আর অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে শতাধিক শিশু। ক্রমবর্ধমান এই মৃত্যু মিছিলের সঙ্গে মানবিক সংকটও পৌঁছেছে চূড়ান্ত পর্যায়ে। যখন এই লেখা পড়ছেন, তখন সেখানে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছে হয়তো আরও কিছু মানুষ। ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
গাজার মাতৃসদনগুলোর গল্প শুধু সংকটে মানবিকতা দেখানোর নয়, নিরন্তর সংগ্রামেরও। হাসপাতালের সংকট, যুদ্ধের থমথমে পরিবেশ—সবকিছুর মাঝেও নারীদের দৃঢ়তা ও মাতৃত্বের প্রতি অবিচল ভালোবাসা নতুন জীবনের বার্তা দেয়।
সন্তান জন্ম দেওয়া সহজ নয়। এটা শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত ক্লান্তিকর। গাজার নারীরা প্রসবের তীব্র ব্যথা সহ্য করেন কোনো ব্যথানাশক ছাড়া। চিকিৎসকেরা তাঁদের অস্ত্রোপচার করার সময় অসহায় বোধ করেন। সেই মায়েদের অন্যমনস্ক করতে তাঁরা মায়েদের সঙ্গে কথা বলেন, সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে নানা কথা বলতে বলতে সেলাই দিতে থাকেন। সেখানে এখন নিরবচ্ছিন্ন ক্ষুধা। সে কারণে গর্ভবতী নারীরা আরও দুর্বল হয়ে পড়ছেন। ঠিকমতো মা ও সন্তানের ওজন বাড়ে না। ফলে প্রসবের সময় তাঁরা আগে থেকেই ক্লান্ত থাকেন। তাই প্রসব দীর্ঘায়িত হয়। বাড়ে ব্যথা। কিন্তু শিশুর প্রথম কান্না, মা ও তাঁর সন্তানকে আলিঙ্গন করার দৃশ্য যুদ্ধের ভয়াবহতা ভুলিয়ে দেয়।
গাজার আসসাহাবা মেডিকেল কমপ্লেক্সে আসা এক শিশু আল জাজিরাকে বলেছে, তার একটি ভাই চাই। কারণ, বোন হলে সে হারিয়ে যাবে। এই ছোট্ট মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা আশঙ্কা আর ভালোবাসা কেবল গাজার সংগ্রামেরই নয়, অস্তিত্বের লড়াইয়ের কথা বলে। গাজার মাতৃসদনে জীবন ও মৃত্যু একই সঙ্গে হাত ধরে চলে। সেখানে প্রতিটি নতুন শিশুর আগমন এক জীবন্ত প্রতিরোধ এবং এক নতুন আশার প্রতীক। এই কঠিন বাস্তবতার মাঝেও মানুষের অদম্য সাহস, মাতৃত্বের মায়া এবং জীবনের প্রতি অটল বিশ্বাস যেন বার্তা দেয়—
গাজা মুছে যায় না, বাঁচে।
সূত্র: আল জাজিরা
দেশে সবকিছু নিয়ে একটি পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নারীদের নিরাপত্তা, তাঁদের অধিকার, তাঁদের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো নিয়ে কতটুকু কথা হচ্ছে? নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে কথা হচ্ছে। এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী নেতৃত্বের...
১৫ ঘণ্টা আগে১২ আগস্ট মঙ্গলবার, সকালেই এক গভীর শূন্যতা নেমে এল চারপাশে। অধ্যাপক মাহফুজা খানম আর নেই! বুকের ভেতর যেন এক অপার শূন্যতার ঢেউ আছড়ে পড়ল। মানুষ চলে গেলে পৃথিবী তো থেমে যায় না, আকাশের রংও বদলায় না, রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় থাকে। কিন্তু আমাদের ভেতরের পৃথিবী থেমে যায়। আমার কাছে তিনি শুধু একজন খ্যাতিমান..
১৫ ঘণ্টা আগেআমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। একটি ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল কলেজজীবন থেকে। সে এখন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমাদের কথা বন্ধ হয়ে যায় এক বছর আগে তার ইচ্ছাতেই। এ ঘটনায় আমি খুবই বিষণ্ন হয়ে যাই। পরে তা কাটিয়ে উঠি। কিছুদিন আগে সে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে আনব্লক করে, স্টোরি দেখে...
১৭ ঘণ্টা আগেলুসি স্টোন ১৮৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওবারলিন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কলেজ থেকে ডিগ্রি নিয়ে বের হওয়া প্রথম মার্কিন নারী। তিনি ছিলেন নারীবাদী, সমাজসংস্কারক ও নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী। লুসি সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন নারীর ভোটের অধিকার, সমান অধিকার এবং দাসপ্রথা বিলুপ্তির পক্ষে। তিনি...
১৮ ঘণ্টা আগে