ফিচার ডেস্ক
উগান্ডার পূর্ব দিকের শহর জিনজার। এর প্রান্তে নামহীন এক সড়ক। সেই সড়ক ধরে এগিয়ে গেলে পাওয়া যাবে সবুজ পাহাড় আর আখখেতে ঘেরা একটি কম্পাউন্ড। বাইরে থেকে শোনা যাবে শিশুদের হাসি ও খেলার আওয়াজ। দারুণ এই পরিবেশ প্রথমে সবার ভালো লাগবে। কিন্তু এ এতিমখানার ৯৮টি শিশুর গল্প শুনলে মুহূর্তেই ভালো লাগা উবে যাবে। মনে হবে সেই সবুজ পাহাড় আর আখের খেত শিশুদের কঠিন বাস্তবতাকে আড়াল করে রেখেছে! বাড়িটির নাম হোম অব হোপ। যাঁর হাত ধরে এই বাড়ি তৈরি হয়েছিল, তাঁর নাম এডিথ লুকাবওয়ে। তিনিও প্রতিবন্ধী সন্তানের জননী। এই জননীর কোলেই বেড়ে উঠছে ৯৮টি শিশু!
প্রায় ৫ কোটি জনসংখ্যার দেশ উগান্ডায় ৬০ লাখের বেশি মানুষ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বাস করে। দেশটিতে অনেকে একে অভিশাপ বলে মনে করে। কিন্তু এডিথ বিশ্বাস করেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সচেতনতা বাড়ালে সমাজে প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে।
দেশটিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছে এমন প্রায় ৩১ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। সরকারি স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ১ শতাংশ এই পরিবারগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হয়। তবে দুই দশক ধরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দেখাশোনা ও অধিকার রক্ষার জন্য দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট অনুদাননির্ভর সংগঠন এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারকে সহায়তা করে চলেছে। এডিথ সেই মানুষগুলোর মধ্যে একজন।
হোম অব হোপের পথচলা শুরু হয় ২০০০ সালে, এডিথের প্রথম সন্তান ডেরিকের জন্মের পর। জন্মের পর ডেরিকের শারীরিক অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেতে শুরু করে। সামাজিক চাপে পড়ে এডিথ একসময় পুত্রকে ঝাড়ফুঁক করাতে বাধ্য হন। মেনিনজাইটিসের দীর্ঘদিনের চিকিৎসাহীন অবস্থার কারণে এক বছর পর ডেরিকের স্থায়ী প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত হয়।
সন্তানের প্রয়োজনেই স্থানীয় হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি বিভাগে যোগ দেন এডিথ। সেখানে তিনি তাঁর মতো আরও অনেক মায়ের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি একটি সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করেন। তাঁর ভাড়া বাসার বারান্দায় বসে ডেরিককে দেখাশোনা করতে করতে এক মাসের মধ্যে ছয়টি প্রতিবন্ধী শিশুর দায়িত্ব নেন তিনি।
২০০৭ সালে এডিথ নার্স হিসেবে নিবন্ধন নেন সরকারের কাছে। নিজের বাড়িকে তিনি কমিউনিটিভিত্তিক সংস্থা এবং অনাথ আশ্রম হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু করেন। নিজের বাড়ির বারান্দায় শুরু হওয়া সংস্থাটি ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক দাতাদের সহায়তায় স্থানান্তর করেন তিনি। এদিকে ২০১৪ সালে এডিথের ছেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর তিনি একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন ছেলের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। এই হাসপাতালের ৯৯ শতাংশ তহবিল আসে আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে। রক্ষণাবেক্ষণের সবকিছু তত্ত্বাবধান করেন এডিথের স্বামী রিচার্ড। এডিথ ও রিচার্ডের দুই ছেলের একজন ডেনিস এই হাসপাতালের অপারেশনস ডিরেক্টর। অন্য ছেলে ফ্রান্সিস একজন নার্স।
এডিথ হাসপাতাল এবং অনাথ আশ্রম মিলিয়ে যে কম্পাউন্ড তৈরি করেছেন, সেখানে ১৮ বছরের নিচের শিশুদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আর ১৮ বছরের বেশি বয়সের ছেলেমেয়েদের থাকার জন্য এডিথ আরেকটি লিভিং হোম তৈরি করেছেন।
মূল অনাথ আশ্রমে একসময়ের উজ্জ্বল রঙের দেয়ালগুলো এখন বিবর্ণ হয়ে গেছে। অর্থাৎ সেখানে সময়ের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু কাজ আর যত্ন সেখানে আজও উজ্জ্বল। এডিথের এই কাজ কেবল উঁচু ইটের দেয়ালেই সীমাবদ্ধ নয়, এর কার্যক্রম বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।
সূত্র: আল জাজিরা
উগান্ডার পূর্ব দিকের শহর জিনজার। এর প্রান্তে নামহীন এক সড়ক। সেই সড়ক ধরে এগিয়ে গেলে পাওয়া যাবে সবুজ পাহাড় আর আখখেতে ঘেরা একটি কম্পাউন্ড। বাইরে থেকে শোনা যাবে শিশুদের হাসি ও খেলার আওয়াজ। দারুণ এই পরিবেশ প্রথমে সবার ভালো লাগবে। কিন্তু এ এতিমখানার ৯৮টি শিশুর গল্প শুনলে মুহূর্তেই ভালো লাগা উবে যাবে। মনে হবে সেই সবুজ পাহাড় আর আখের খেত শিশুদের কঠিন বাস্তবতাকে আড়াল করে রেখেছে! বাড়িটির নাম হোম অব হোপ। যাঁর হাত ধরে এই বাড়ি তৈরি হয়েছিল, তাঁর নাম এডিথ লুকাবওয়ে। তিনিও প্রতিবন্ধী সন্তানের জননী। এই জননীর কোলেই বেড়ে উঠছে ৯৮টি শিশু!
প্রায় ৫ কোটি জনসংখ্যার দেশ উগান্ডায় ৬০ লাখের বেশি মানুষ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বাস করে। দেশটিতে অনেকে একে অভিশাপ বলে মনে করে। কিন্তু এডিথ বিশ্বাস করেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সচেতনতা বাড়ালে সমাজে প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে।
দেশটিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছে এমন প্রায় ৩১ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। সরকারি স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ১ শতাংশ এই পরিবারগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হয়। তবে দুই দশক ধরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দেখাশোনা ও অধিকার রক্ষার জন্য দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট অনুদাননির্ভর সংগঠন এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারকে সহায়তা করে চলেছে। এডিথ সেই মানুষগুলোর মধ্যে একজন।
হোম অব হোপের পথচলা শুরু হয় ২০০০ সালে, এডিথের প্রথম সন্তান ডেরিকের জন্মের পর। জন্মের পর ডেরিকের শারীরিক অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেতে শুরু করে। সামাজিক চাপে পড়ে এডিথ একসময় পুত্রকে ঝাড়ফুঁক করাতে বাধ্য হন। মেনিনজাইটিসের দীর্ঘদিনের চিকিৎসাহীন অবস্থার কারণে এক বছর পর ডেরিকের স্থায়ী প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত হয়।
সন্তানের প্রয়োজনেই স্থানীয় হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি বিভাগে যোগ দেন এডিথ। সেখানে তিনি তাঁর মতো আরও অনেক মায়ের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি একটি সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করেন। তাঁর ভাড়া বাসার বারান্দায় বসে ডেরিককে দেখাশোনা করতে করতে এক মাসের মধ্যে ছয়টি প্রতিবন্ধী শিশুর দায়িত্ব নেন তিনি।
২০০৭ সালে এডিথ নার্স হিসেবে নিবন্ধন নেন সরকারের কাছে। নিজের বাড়িকে তিনি কমিউনিটিভিত্তিক সংস্থা এবং অনাথ আশ্রম হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু করেন। নিজের বাড়ির বারান্দায় শুরু হওয়া সংস্থাটি ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক দাতাদের সহায়তায় স্থানান্তর করেন তিনি। এদিকে ২০১৪ সালে এডিথের ছেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর তিনি একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন ছেলের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। এই হাসপাতালের ৯৯ শতাংশ তহবিল আসে আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে। রক্ষণাবেক্ষণের সবকিছু তত্ত্বাবধান করেন এডিথের স্বামী রিচার্ড। এডিথ ও রিচার্ডের দুই ছেলের একজন ডেনিস এই হাসপাতালের অপারেশনস ডিরেক্টর। অন্য ছেলে ফ্রান্সিস একজন নার্স।
এডিথ হাসপাতাল এবং অনাথ আশ্রম মিলিয়ে যে কম্পাউন্ড তৈরি করেছেন, সেখানে ১৮ বছরের নিচের শিশুদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আর ১৮ বছরের বেশি বয়সের ছেলেমেয়েদের থাকার জন্য এডিথ আরেকটি লিভিং হোম তৈরি করেছেন।
মূল অনাথ আশ্রমে একসময়ের উজ্জ্বল রঙের দেয়ালগুলো এখন বিবর্ণ হয়ে গেছে। অর্থাৎ সেখানে সময়ের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু কাজ আর যত্ন সেখানে আজও উজ্জ্বল। এডিথের এই কাজ কেবল উঁচু ইটের দেয়ালেই সীমাবদ্ধ নয়, এর কার্যক্রম বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।
সূত্র: আল জাজিরা
আগামীকাল ২৬ জুন। জাতিসংঘ তারিখটিকে আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখছি, শুধু নারী বা শিশু নয়, পৃথিবীময় বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং এর বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠছে জটিল।
৬ ঘণ্টা আগেআমার বয়স প্রায় ১৯ বছর। আমার প্যানিক অ্যাটাক ডিসঅর্ডার ছিল। প্রতি রাতে বা দিনে ঘুমালে দুঃস্বপ্ন দেখি। আমার ওজন কমে যাচ্ছে। এ জন্য চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। দুই দিন ওষুধ খাওয়ার পর রাতে আরও ভয়ংকর স্বপ্ন দেখি! এরপর থেকে ভয় পাই, মৃত্যুভীতি। মনে হয়, আমার বড় কোনো রোগ হবে।
৬ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে বিভিন্ন দেশের বাহারি ফল চাষের একটি ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন থেকে। এগুলো কেউ করছেন শখের বশে; কেউবা বাণিজ্যিকভাবে। সাফল্য ও ব্যর্থতা—দু-ই আছে এই বিদেশি ফল চাষে। সম্প্রতি দীর্ঘ চেষ্টার পর বাড়ির আঙিনায় সৌদি খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন নুসরাত জাহান লিজা। তাঁর বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার..
৬ ঘণ্টা আগেজাপানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান চিকিৎসক কাজু তোগাসাকি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান পার্ল হারবারে বোমাবর্ষণ করলে আমেরিকায় বসবাসকারী প্রায়
৬ ঘণ্টা আগে