ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান ঈশিতা বাল্মীকি দাস। চা-শ্রমিক মায়ের প্রচেষ্টায় চালিয়ে যান পড়ালেখা। ক্যানসারে আক্রান্ত বাবা মারা গেলে সংসারে শুরু হয় অর্থনৈতিক সংকট। মায়ের সঙ্গে সংসারের হাল ধরেন ঈশিতার বড় বোন উষা রানী বাল্মীকি দাস। তখন তিনি পড়তেন দশম শ্রেণিতে। পড়ালেখার পাশাপাশি এফআইভিডিবির প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। সঙ্গে কয়েকটি টিউশনিও করতেন। সেখান থেকে যে টাকা পেতেন, তা দিয়ে নিজেদের পড়ালেখার ব্যয় সামলে সংসারেও সহায়তা করতেন।
এক সেট বই দিয়ে চলত দুই বোনের পড়াশোনা। উষার বই ও নোট দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যান ঈশিতা। পাশাপাশি নাচের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। সাহস করে বড় বোন তাঁকে নাচের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আর্থিক সংকট ও সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মোকাবিলা করে দুই বোনই আজ সফল। স্নাতকোত্তর পাস করে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন তাঁরা। উষা ও ঈশিতা সিলেটের দলদলি চা-বাগানের শ্রমিক বাসু বাল্মীকি দাস ও উজ্জ্বলী বাল্মীকি দাসের মেয়ে।
উষা ও ঈশিতা, দুই বোনই বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। এখন উষা দলদলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। সঙ্গে মহিলা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে জেন্ডার প্রমোটর হিসেবে কাজ করেন। আর ঈশিতা জৈন্তাপুরের ইমরান আহমেদ সরকারি মহিলা কলেজে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি ছাতকের কনকচাঁপা খেলাঘরে নাচ শেখান সপ্তাহে এক দিন। এ ছাড়া নাচের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোরিওগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেন ঈশিতা। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কত্থক নাচে দক্ষতার জন্য জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন তিনি।
নাচই হয়তো ঈশিতাকে যুদ্ধ করতে শিখিয়েছে বেশ খানিক। নাচ শেখার সময় বেতন দিতে পারতেন না, মেকআপ বা কস্টিউম কেনারও সামর্থ্য ছিল না। নাচের গুরু বিপুল শর্মার সহায়তায় এসব বাধা পেরিয়েছেন ঈশিতা। কিন্তু চা-বাগানের প্রতিবেশীদের এড়িয়ে যেতে পারেননি। তারা নাচ বিষয়টাকে ভালো চোখে দেখত না। ক্লাস থেকে ফিরতে দেরি হলে রাস্তায় শুরু হতো নেতিবাচক কথা আর আচরণের পালা। মাঝেমধ্যে অসহ্য হলে কেঁদে ফেলতেন ঈশিতা। সেগুলো যে এখনো বন্ধ হয়েছে, তা নয়। অবশ্য একটা সময় পর সেগুলোকে আর পাত্তা দেননি ঈশিতা। মা আর ছোট্ট ভাগনির ভবিষ্যতের কথা ভেবে অবিচল থেকেছন নিজের লক্ষ্যে। এখন চাকরি করছেন। পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।
ঈশিতাদের পরিবারের এ যুদ্ধের আরেক কান্ডারি উষাও এখন অনেকটাই নির্ভার। নেতিবাচক কথা, অযাচিত খারাপ ব্যবহার ইত্যাদি পেরিয়ে এখন তিনি ভাবেন, ‘আমরা দুই বোন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি।’
ঈশিতার বাবা বাসু বাল্মীকি দাস তিনটি বিয়ে করেছিলেন, তার মধ্যে তাঁর মেজ স্ত্রী মারা গেছেন। জীবিত আছেন দুজন। প্রথম স্ত্রীর এক কন্যাসন্তান ছিল। বিয়ের পর এক মেয়ের জন্ম দিয়ে তিনি মারা যান। ঈশিতার সে সৎবোনের মেয়ে এখন তাঁর সঙ্গেই থাকে। নিজের অসুস্থ মা, সৎমা ও ভাগনির ভরণপোষণ চালিয়ে যাচ্ছেন ঈশিতা। তাঁর এক ভাই আছেন, তিনি নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আর উষা এখন বিয়ে করে সন্তানসহ স্বামীর বাড়িতে আছেন।
জীবন আর পথচলা কখনো মসৃণ ছিল না উষা ও ঈশিতাদের পরিবারের। এখনো যে খুব মসৃণ, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু চা-বাগানের পশ্চাৎপদ সমাজে উষা আর ঈশিতা ছিলেন উজ্জ্বল চাঁদের মতো। চা-বাগানের পিছিয়ে পড়া সমাজ ও জীবনের বিপুল টানাপোড়েনের মধ্যেও দূর থেকেও যাঁদের চেনা যায়। অর্থনৈতিক সংকটের মেঘ তাঁদের পথচলায় কখনো কখনো বাধা তৈরি করেছে বটে, বন্ধ করতে পারেনি।
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান ঈশিতা বাল্মীকি দাস। চা-শ্রমিক মায়ের প্রচেষ্টায় চালিয়ে যান পড়ালেখা। ক্যানসারে আক্রান্ত বাবা মারা গেলে সংসারে শুরু হয় অর্থনৈতিক সংকট। মায়ের সঙ্গে সংসারের হাল ধরেন ঈশিতার বড় বোন উষা রানী বাল্মীকি দাস। তখন তিনি পড়তেন দশম শ্রেণিতে। পড়ালেখার পাশাপাশি এফআইভিডিবির প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। সঙ্গে কয়েকটি টিউশনিও করতেন। সেখান থেকে যে টাকা পেতেন, তা দিয়ে নিজেদের পড়ালেখার ব্যয় সামলে সংসারেও সহায়তা করতেন।
এক সেট বই দিয়ে চলত দুই বোনের পড়াশোনা। উষার বই ও নোট দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যান ঈশিতা। পাশাপাশি নাচের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। সাহস করে বড় বোন তাঁকে নাচের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আর্থিক সংকট ও সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মোকাবিলা করে দুই বোনই আজ সফল। স্নাতকোত্তর পাস করে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন তাঁরা। উষা ও ঈশিতা সিলেটের দলদলি চা-বাগানের শ্রমিক বাসু বাল্মীকি দাস ও উজ্জ্বলী বাল্মীকি দাসের মেয়ে।
উষা ও ঈশিতা, দুই বোনই বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। এখন উষা দলদলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। সঙ্গে মহিলা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে জেন্ডার প্রমোটর হিসেবে কাজ করেন। আর ঈশিতা জৈন্তাপুরের ইমরান আহমেদ সরকারি মহিলা কলেজে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি ছাতকের কনকচাঁপা খেলাঘরে নাচ শেখান সপ্তাহে এক দিন। এ ছাড়া নাচের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোরিওগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেন ঈশিতা। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কত্থক নাচে দক্ষতার জন্য জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন তিনি।
নাচই হয়তো ঈশিতাকে যুদ্ধ করতে শিখিয়েছে বেশ খানিক। নাচ শেখার সময় বেতন দিতে পারতেন না, মেকআপ বা কস্টিউম কেনারও সামর্থ্য ছিল না। নাচের গুরু বিপুল শর্মার সহায়তায় এসব বাধা পেরিয়েছেন ঈশিতা। কিন্তু চা-বাগানের প্রতিবেশীদের এড়িয়ে যেতে পারেননি। তারা নাচ বিষয়টাকে ভালো চোখে দেখত না। ক্লাস থেকে ফিরতে দেরি হলে রাস্তায় শুরু হতো নেতিবাচক কথা আর আচরণের পালা। মাঝেমধ্যে অসহ্য হলে কেঁদে ফেলতেন ঈশিতা। সেগুলো যে এখনো বন্ধ হয়েছে, তা নয়। অবশ্য একটা সময় পর সেগুলোকে আর পাত্তা দেননি ঈশিতা। মা আর ছোট্ট ভাগনির ভবিষ্যতের কথা ভেবে অবিচল থেকেছন নিজের লক্ষ্যে। এখন চাকরি করছেন। পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।
ঈশিতাদের পরিবারের এ যুদ্ধের আরেক কান্ডারি উষাও এখন অনেকটাই নির্ভার। নেতিবাচক কথা, অযাচিত খারাপ ব্যবহার ইত্যাদি পেরিয়ে এখন তিনি ভাবেন, ‘আমরা দুই বোন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি।’
ঈশিতার বাবা বাসু বাল্মীকি দাস তিনটি বিয়ে করেছিলেন, তার মধ্যে তাঁর মেজ স্ত্রী মারা গেছেন। জীবিত আছেন দুজন। প্রথম স্ত্রীর এক কন্যাসন্তান ছিল। বিয়ের পর এক মেয়ের জন্ম দিয়ে তিনি মারা যান। ঈশিতার সে সৎবোনের মেয়ে এখন তাঁর সঙ্গেই থাকে। নিজের অসুস্থ মা, সৎমা ও ভাগনির ভরণপোষণ চালিয়ে যাচ্ছেন ঈশিতা। তাঁর এক ভাই আছেন, তিনি নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আর উষা এখন বিয়ে করে সন্তানসহ স্বামীর বাড়িতে আছেন।
জীবন আর পথচলা কখনো মসৃণ ছিল না উষা ও ঈশিতাদের পরিবারের। এখনো যে খুব মসৃণ, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু চা-বাগানের পশ্চাৎপদ সমাজে উষা আর ঈশিতা ছিলেন উজ্জ্বল চাঁদের মতো। চা-বাগানের পিছিয়ে পড়া সমাজ ও জীবনের বিপুল টানাপোড়েনের মধ্যেও দূর থেকেও যাঁদের চেনা যায়। অর্থনৈতিক সংকটের মেঘ তাঁদের পথচলায় কখনো কখনো বাধা তৈরি করেছে বটে, বন্ধ করতে পারেনি।
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
৩ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৬ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৬ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৬ দিন আগে