Ajker Patrika

বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেয়েছেন নাসরিন

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ৩৩
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেয়েছেন নাসরিন

বাড়িতে জৈব সার তৈরি করে নিজের পড়ালেখার খরচ মেটাতেন নাসরিন। সঙ্গে কিছু টাকা দিতেন পরিবারকেও। সেই নাসরিন সুলতানার হাত ধরে এলাকাজুড়ে এখন সবাই উদ্যোক্তা! তিনি এখন এলাকায় নারী কর্মসংস্থানের প্রতীক।

নাসরিন সুলতানা এখন কাজ করছেন নারীর ক্ষমতায়ন, সুবিধাভোগী নারীদের সমস্যার সমাধান, বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও নারী পাচার রোধে। যশোরের ঝিকরগাছার বারবাকপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে তিনি। কাজের পরিধির কারণে এখন তিনি উপজেলা নারী সামাজিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং দেশসেরা যুব সংগঠন ঝিকরগাছার জাগরণী সংসদের সদস্য।

নাসরিন সুলতানা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্বে পড়ার পাশাপাশি ডিপ্লোমা করেছেন কৃষির ওপর। সেখান থেকে তাঁর কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরির হাতেখড়ি। তাঁর কারখানায় এখন প্রতি মাসে অন্তত ৩০ মণ কেঁচো সার তৈরি হয়। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে দুটি নান্দায় (সার তৈরির পাত্র) ১৫০ টাকা দিয়ে ১০০ গ্রাম কেঁচো কিনে শুরু করলেও, বর্তমানে এই কারখানা থেকে প্রতি মাসে তাঁর আয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।

নাসরিন সুলতানার জৈব সারের এই কারখানা দেখে শুধু বারবাকপুর নয়, আশপাশের গ্রামগুলোতেও গৃহিণী ও যুবক-যুবতীরা কেঁচো কম্পোস্ট সার কারখানা করেছেন। বারবাকপুর গ্রামের মাজেদা বেগম জানিয়েছেন, নাসরিনের কাছ থেকে কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে জৈব সার কারখানা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। এখন নিজেদের খেতে এই সার ব্যবহার করে যা থাকে, তা বিক্রি করে সংসারের অন্যান্য খরচ মিটে যায়। একই কথা বলেছেন বারবাকপুরের বীথি বেগম, সাকিনা খাতুন ও পদ্মপুকুর গ্রামের সেলিনা বেগম।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, নাসরিনের কেঁচো দিয়ে জৈব সার তৈরি দেখে বারবাকপুর গ্রামটি এখন জৈব সারের কারখানায় পরিণত হয়েছে। তিনি কৃষিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেয়েছেন।

উপজেলার ১ হাজার ৯২০টি পরিবারের সঙ্গে সরাসরি কাজ করছেন নাসরিন সুলতানা। এসব কাজের মধ্যে আছে হাঁস-মুরগির ভ্যাকসিন দেওয়া, পিছিয়ে পড়া নারীদের বিভিন্নভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করা, ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি, বসতবাড়িতে সবজির চাষ করে পারিবারিক চাহিদা মেটাতে উদ্বুদ্ধ করা এবং রাসায়নিকমুক্ত সবজি উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দেওয়া। এ ছাড়া উপজেলা নারী সামাজিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ৬৪টি গ্রুপ নিয়ে তিনি বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও নারী নির্যাতন রোধে সচেতনতামূলক কাজ করেন।

উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা অনিতা মল্লিক জানিয়েছেন, নাসরিন সুলতানা স্বাবলম্বী ক্যাটাগরিতে ২০২১ সালে উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা পুরস্কার পেয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত