প্রযুক্তি ডেস্ক
ঘটনাটি ২০১৯ সালের। নেদারল্যান্ডসের নিরাপত্তা রক্ষী প্যাট্রিক পৌমেন ওই সময় বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। দোকানে বা রেস্টুরেন্টে গিয়ে তিনি এমন কাণ্ড করেছিলেন যে সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছিল।
কারণ, ৩৭ বছর বয়সী ওই যুবক বিল দেওয়ার জন্য ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ফোনের পেমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতেন না। এর পরিবর্তে তিনি স্পর্শবিহীন কার্ডরিডারে তাঁর বাম হাতের কবজিটি এগিয়ে দিতেন। এতেই বিলে দেওয়া হয়ে যেত!
হঠাৎ কোনো ক্যাশিয়ার নিজের চোখের সামনে এমন কাণ্ড দেখলে তাঁর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা সহজেই অনুমেয়।
পৌমেন এভাবে পেমেন্ট দিতে পারতেন কারণ তাঁর হাতের ত্বকের নিচে ছিল বিশেষ ইলেকট্রনিক মাইক্রোচিপ।
অবশ্য ব্যাপারটা খুব আরামদায়ক যে ছিল না সেটি স্বীকার করেছেন পৌমেন। অবশ্য খুব কষ্টেরও নয়। তিনি বলেন, চামড়ায় কেউ চিমটি কাটলে যেমন লাগে চিপটি স্থাপনের সময় তেমন অনুভূতিই হয়েছে।
অবশ্য এমন ঘটনা নতুন নয়। জানা মতে, পৃথিবীতে মানুষের শরীরে প্রথম মাইক্রোচিপ স্থাপনের ঘটনাটি ১৯৯৮ সালের। তবে গত দশকে এই প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ার আগে পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসেনি।
ব্রিটিশ-পোলিশ কোম্পানি ওয়ালেটমোর দাবি করছে, তারাই প্রথম গত বছর এ ধরনের মাইক্রোচিপ বিক্রি শুরু করেছে। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা সিইও উজটেক প্যাপ্রোটা বলছেন, এই মাইক্রোচিপ একবার শরীরে স্থাপন করলে রিও সমুদ্র সৈকতে পানীয়র দাম থেকে শুরু করে নিউইয়র্কের কফি শপ বা প্যারিসের স্যালুনে চুল কাটার বিল পরিশোধ করা যাবে। এমনকি আপনার স্থানীয় মুদি দোকানেও কেনাকাটা করতে পারবেন। অর্থাৎ স্পর্শবিহীন পেমেন্ট ব্যবস্থা যেখানে আছে সেখানেই এই চিপ কাজে লাগবে।
ওয়ালেটমোরের চিপটির ওজন এক গ্রামেরও কম। আকার চালের চাইতে সামান্য বড়। এতে আছে একটি ক্ষুদ্র মাইক্রোচিপ এবং একটি এন্টেনা। প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি বাইপলিমারে পুরো চিপটি মোড়ানো।
ওয়ালেটমোরের সিইও দাবি করছেন, এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন দিয়েছে। এটি শরীরে স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারযোগ্য এবং শরীরে বেশ শক্তভাবেই বিঁধে থাকে।
এরই মধ্যে ৫০০-এর বেশি চিপ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়ালেটমোর।
ওয়ালেটমোর ব্যবহার করছে নিয়ার-ফিল্ড কমিউনিকেশন বা এনএফসি প্রযুক্তি। মূলত স্পর্শবিহীন পেমেন্ট সিস্টেম হিসেবে স্মার্টফোনে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য চিপ ইমপ্ল্যান্ট সিস্টেমে ব্যবহার করা হয় রেডিও-ফ্রিকুয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন (আরএফআইডি) প্রযুক্তি। স্পর্শবিহীন ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
এই প্রযুক্তি নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। বহু কল্পবিজ্ঞান সিনেমাতেও শরীরে চিপ বসানোর প্রযুক্তি দেখানো হয়। মানুষ এই নতুন প্রযুক্তিতে কতোটা আগ্রহী সেটি নিয়ে ২০২১ সালে একটি জরিপ করা হয়েছিল। তখন যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৪ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে জরিপ করে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ মানুষ শরীরে মাইক্রোচিপ নিতে আগ্রহী। তবে শরীরে ইলেকট্রনিক চিপ প্রবেশ করানো এবং এর নিরাপত্তা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই উদ্বেগ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা অবশ্য বলছেন, এ ধরনের চিপে তেমন উদ্বেগের কিছু নেই। এটি ব্যাংকের স্পর্শবিহীন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মতোই।
তাছাড়া পোষাপ্রাণীর পরিচয় শনাক্ত করার জন্য বহু আগে থেকেই শরীরে স্থাপনযোগ্য মাইক্রোচিপ ব্যবহার করা হয়।
এরপরও উদ্বেগের কারণ থাকছে। আগামীতে এ ধরনের চিপ নিঃসন্দেহে আরও উন্নত হবে, সেই সঙ্গে এতে থাকবে বিপুল পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্য। ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হলে এসব তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এড়ানো সম্ভব হবে না। এ কারণে এটিকে বলা হচ্ছে এক ধরনের ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত পড়ুন:
ঘটনাটি ২০১৯ সালের। নেদারল্যান্ডসের নিরাপত্তা রক্ষী প্যাট্রিক পৌমেন ওই সময় বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। দোকানে বা রেস্টুরেন্টে গিয়ে তিনি এমন কাণ্ড করেছিলেন যে সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছিল।
কারণ, ৩৭ বছর বয়সী ওই যুবক বিল দেওয়ার জন্য ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ফোনের পেমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতেন না। এর পরিবর্তে তিনি স্পর্শবিহীন কার্ডরিডারে তাঁর বাম হাতের কবজিটি এগিয়ে দিতেন। এতেই বিলে দেওয়া হয়ে যেত!
হঠাৎ কোনো ক্যাশিয়ার নিজের চোখের সামনে এমন কাণ্ড দেখলে তাঁর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা সহজেই অনুমেয়।
পৌমেন এভাবে পেমেন্ট দিতে পারতেন কারণ তাঁর হাতের ত্বকের নিচে ছিল বিশেষ ইলেকট্রনিক মাইক্রোচিপ।
অবশ্য ব্যাপারটা খুব আরামদায়ক যে ছিল না সেটি স্বীকার করেছেন পৌমেন। অবশ্য খুব কষ্টেরও নয়। তিনি বলেন, চামড়ায় কেউ চিমটি কাটলে যেমন লাগে চিপটি স্থাপনের সময় তেমন অনুভূতিই হয়েছে।
অবশ্য এমন ঘটনা নতুন নয়। জানা মতে, পৃথিবীতে মানুষের শরীরে প্রথম মাইক্রোচিপ স্থাপনের ঘটনাটি ১৯৯৮ সালের। তবে গত দশকে এই প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ার আগে পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসেনি।
ব্রিটিশ-পোলিশ কোম্পানি ওয়ালেটমোর দাবি করছে, তারাই প্রথম গত বছর এ ধরনের মাইক্রোচিপ বিক্রি শুরু করেছে। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা সিইও উজটেক প্যাপ্রোটা বলছেন, এই মাইক্রোচিপ একবার শরীরে স্থাপন করলে রিও সমুদ্র সৈকতে পানীয়র দাম থেকে শুরু করে নিউইয়র্কের কফি শপ বা প্যারিসের স্যালুনে চুল কাটার বিল পরিশোধ করা যাবে। এমনকি আপনার স্থানীয় মুদি দোকানেও কেনাকাটা করতে পারবেন। অর্থাৎ স্পর্শবিহীন পেমেন্ট ব্যবস্থা যেখানে আছে সেখানেই এই চিপ কাজে লাগবে।
ওয়ালেটমোরের চিপটির ওজন এক গ্রামেরও কম। আকার চালের চাইতে সামান্য বড়। এতে আছে একটি ক্ষুদ্র মাইক্রোচিপ এবং একটি এন্টেনা। প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি বাইপলিমারে পুরো চিপটি মোড়ানো।
ওয়ালেটমোরের সিইও দাবি করছেন, এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন দিয়েছে। এটি শরীরে স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারযোগ্য এবং শরীরে বেশ শক্তভাবেই বিঁধে থাকে।
এরই মধ্যে ৫০০-এর বেশি চিপ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়ালেটমোর।
ওয়ালেটমোর ব্যবহার করছে নিয়ার-ফিল্ড কমিউনিকেশন বা এনএফসি প্রযুক্তি। মূলত স্পর্শবিহীন পেমেন্ট সিস্টেম হিসেবে স্মার্টফোনে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য চিপ ইমপ্ল্যান্ট সিস্টেমে ব্যবহার করা হয় রেডিও-ফ্রিকুয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন (আরএফআইডি) প্রযুক্তি। স্পর্শবিহীন ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
এই প্রযুক্তি নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। বহু কল্পবিজ্ঞান সিনেমাতেও শরীরে চিপ বসানোর প্রযুক্তি দেখানো হয়। মানুষ এই নতুন প্রযুক্তিতে কতোটা আগ্রহী সেটি নিয়ে ২০২১ সালে একটি জরিপ করা হয়েছিল। তখন যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৪ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে জরিপ করে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ মানুষ শরীরে মাইক্রোচিপ নিতে আগ্রহী। তবে শরীরে ইলেকট্রনিক চিপ প্রবেশ করানো এবং এর নিরাপত্তা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই উদ্বেগ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা অবশ্য বলছেন, এ ধরনের চিপে তেমন উদ্বেগের কিছু নেই। এটি ব্যাংকের স্পর্শবিহীন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মতোই।
তাছাড়া পোষাপ্রাণীর পরিচয় শনাক্ত করার জন্য বহু আগে থেকেই শরীরে স্থাপনযোগ্য মাইক্রোচিপ ব্যবহার করা হয়।
এরপরও উদ্বেগের কারণ থাকছে। আগামীতে এ ধরনের চিপ নিঃসন্দেহে আরও উন্নত হবে, সেই সঙ্গে এতে থাকবে বিপুল পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্য। ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হলে এসব তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এড়ানো সম্ভব হবে না। এ কারণে এটিকে বলা হচ্ছে এক ধরনের ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত পড়ুন:
নতুন যুগের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে হাজির ইলন মাস্কের স্টারলিংক। তাদের সেবার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক না থাকার ভোগান্তি দূর হয়েছে। কোম্পানিটির ডাইরেক্ট-টু-সেল (ডি২সি) প্রযুক্তির মাধ্যমে চলন্ত অবস্থায় কিংবা একেবারে দুর্গম এলাকায় মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। এ জন্য কোনো রাউটার বা ওয়াইফাইয়ের
১৩ ঘণ্টা আগেচীনে চিপ বিক্রির মোট রাজস্বের ১৫ শতাংশ মার্কিন সরকারকে দিতে সম্মত হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ দুই সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া ও এএমডি। এই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান দুটি চীনা বাজারে চিপ বিক্রির লাইসেন্স পাবে। এক সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
১৭ ঘণ্টা আগেবর্তমান যুগের বেশির ভাগ ইলেকট্রনিক ডিভাইসেই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। আইফোনসহ স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, ল্যাপটপ—এমনকি বৈদ্যুতিক গাড়িতেও এই ব্যাটারিই ব্যবহার হয়। তবে এই প্রযুক্তি যতটা উন্নত, ততটাই জটিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যাটারির কর্মক্ষমতা কমে যায়।
২০ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার তৈরি এইচ২০ (H20) চিপের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্ট একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট। রোববার উইচ্যাটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, এই চিপগুলোতে ‘ব্যাক ডোর’ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই...
২১ ঘণ্টা আগে