Ajker Patrika

কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে নতুন মাইলফলক, ৬১০০ কিউবিটের রেকর্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এই বিপ্লবী প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে সিজিয়াম পরমাণু। ছবি: ক্যালটেক
এই বিপ্লবী প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে সিজিয়াম পরমাণু। ছবি: ক্যালটেক

কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (ক্যালটেক) একদল পদার্থবিদ। রেকর্ড ভেঙে এবার তাঁরা তৈরি করেছেন ৬ হাজার ১০০ কিউবিটের বিশাল একটি অ্যারে। এ ধরনের কম্পিউটারের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত এটি সর্ববৃহৎ অ্যারে। আগের রেকর্ডটি ছিল এক হাজার কিউবিটের।

এই প্রযুক্তিতে কিউবিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সিজিয়াম পরমাণু। পরমাণুগুলোকে লেজারের ‘অপটিক্যাল টুইজার’ বা অত্যন্ত সূক্ষ্ম আলোকরশ্মির মাধ্যমে স্থির করে রাখা হয়। স্থিতিশীল পরমাণু কিউবিটের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কিউবিটগুলো প্রচলিত বৈদ্যুতিক কম্পিউটারের বিট থেকে আলাদা। পারমাণবিক কণার সুপারপজিশনকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কিউবিটকে কম্পিউটিংয়ের কাজে লাগানো হয়। এটি কেবল এক বা শূন্যর বাইনারি অবস্থা নয়, বরং একটি বিস্তৃত সম্ভাব্যতার হিসাব। এই সম্ভাব্যতা বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ অ্যালগরিদমের মাধ্যমে এমন সব সমস্যার সমাধান করা যায়, যা প্রচলিত কম্পিউটিং পদ্ধতিতে সম্ভব নয়।

তবে এই প্রযুক্তিকে বাস্তবে ব্যবহারযোগ্য করতে প্রয়োজনীয় অ্যালগরিদম উন্নয়নে বিপুলসংখ্যক কিউবিটের প্রয়োজন। মূলত নির্ভুল করার জন্যই বেশি কিউবিটের প্রয়োজন।

ক্যালটেকের পদার্থবিদ মানুয়েল আন্দ্রেস বলেন, ‘এটি নিউট্রাল-অ্যাটম কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এখন আমাদের সামনে বড় আকারের, ত্রুটিমুক্ত কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির একটি সুনির্দিষ্ট পথ স্পষ্ট হচ্ছে।’

একাধিক প্রকৌশলগত সাফল্যের মাধ্যমে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। যেমন—অপটিক্যাল টুইজার, অতি নিম্ন চাপের ভ্যাকুয়াম চেম্বার এবং আরও অনেক ক্ষেত্রেই সূক্ষ্ম অগ্রগতি ঘটেছে।

এই গবেষণায় আরও একটি বড় অর্জন হলো—কিউবিটগুলোকে প্রায় ১৩ সেকেন্ড পর্যন্ত সুপারপজিশন অবস্থায় রাখা সম্ভব হয়েছে। এ সময় আগের রেকর্ডের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। এ ছাড়া, প্রতিটি কিউবিট ৯৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ নির্ভুলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। এটি কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ব্যবহারযোগ্যতায় এক বিরাট মাইলফলক।

গবেষক গিওহেই নোমুরা বলেন, ‘কেবল কিউবিটের সংখ্যা বাড়ালেই হবে না, মান নিশ্চিত করাও জরুরি। এখন আমাদের হাতে দুটিই রয়েছে—সংখ্যা এবং গুণমান।’

এরপর, গবেষকদের ‘এনট্যাঙ্গলমেন্ট’ বা বিজড়ন অবস্থাকে কাজে লাগানোর ওপর কাজ করতে হবে। তবেই এ ব্যবস্থা তথ্য সংরক্ষণ থেকে বাস্তবে প্রসেসিংয়ের কাজে সক্ষম হবে। খুব বেশি দূরে নয়, যখন কোয়ান্টাম কম্পিউটার নতুন বস্তু, পদার্থ এবং পদার্থবিদ্যার মৌলিক সূত্র আবিষ্কার করতে সাহায্য করবে।

গবেষক হান্না মানেটসচ বলেন, ‘আমরা এমন যন্ত্র তৈরি করছি, যা আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে এমন সব জ্ঞান দিতে পারবে। আর এটি কেবল কোয়ান্টাম মেকানিক্স দিয়েই সম্ভব।’

গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ক্রিকেটে বিরল ঘটনা, ট্রফি ছাড়াই ভারতের উদ্‌যাপন

কারাবন্দী সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদের মৃত্যু

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে, অপবাদে কেঁদেছেন কর্মচারীও

মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছিলেন হান্নান মাসউদ, সেই রাব্বি ফের চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক‎

মিশিগানের গির্জায় হামলাকারী ইরাক যুদ্ধের সৈনিক, অর্থসংকটে হাতও পেতেছিলেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত