Ajker Patrika

ডিপফেক পর্নোগ্রাফির শিকার যুক্তরাজ্যের নারী রাজনীতিবিদেরাও 

আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৪, ১৫: ৪৪
ডিপফেক পর্নোগ্রাফির শিকার যুক্তরাজ্যের নারী রাজনীতিবিদেরাও 

ডিপফেক পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছেন যুক্তরাজ্যের নারী রাজনীতিবিদেরাও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে নগ্ন ছবির সঙ্গে তাঁদের চেহারা জুড়ে দিয়ে এসব পর্নোগ্রাফি তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ৪ নিউজের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান এসব তথ্য তুলে ধরেছে।

ভুয়া পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটে যুক্তরাজ্যের নারী রাজনীতিবিদদের লক্ষ্য করে এসব ডিপফেক ছবি ও ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। এসব রাজনীতিবিদের মধ্যে রয়েছেন—লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার অ্যাঞ্জেলা রেনার, শিক্ষাসচিব গিলিয়ান কিগান, কমন্স নেতা পেনি মর্ডান্ট, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প্যাটেল ও লেবার পার্টির স্টেলা ক্রিসি। এর মধ্যে অনেকের ছবি বেশ কয়েক বছর ধরে অনলাইনে রয়েছে এবং এগুলোর কয়েক হাজার ভিউ হয়েছে।

কিছু ছবিতে ফটোশপ ব্যবহার করে রাজনীতিবিদদের চেহারা অন্য ব্যক্তির নগ্ন দেহের ওপর বসানো হয়েছে। অন্যান্য ছবি আরও জটিল ডিপফেক, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী কিছু রাজনীতিবিদ এখন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

সাবেক কনজারভেটিভ সাংসদ ডেহেনা ডেভিসনও এই ভুত্তভোগীদের একজন, যার ছবি এই সাইটে রাখা হয়েছে। তিনি চ্যানেল ৪ নিউজকে বলেন, এটি ‘সত্যিই অদ্ভুত’ যে, লোকেরা তাঁর মতো নারীদের টার্গেট করবে এবং এই ঘটনাকে ‘বেশ অসম্মানজনক’ বলে মনে করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো এআইয়ের জন্য একটি সঠিক নিয়ন্ত্রক কাঠামো স্থাপন না করলে এটি একটি ‘বড় সমস্যা’ হবে।

অসম্মতিমূলক ডিপফেক প্রযুক্তি, যা একজন ব্যক্তির ছবি থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কাপড় খুলে বা একটি নকল নগ্ন ছবি তৈরি করে। এআই প্রযুক্তি বিকাশের অংশ হিসেবে এটি একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বছরের শুরুতে গার্ডিয়ান ‘ক্লথঅব’ নামে একটি এআই অ্যাপ খুঁজে পায়। এটি ব্যবহারকারীদের এআই ব্যবহার করে যেকোনো ব্যক্তির নগ্ন ছবি তৈরি করতে দেয়। এটি লন্ডনে নিবন্ধিত একটি কোম্পানির মাধ্যমে লেনদেন করেছে এবং দেশটির কিছু স্কুলে এই নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।

হাজার হাজার নারী সেলিব্রিটি ইতিমধ্যে ভুয়া পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে। গার্ডিয়ান ক্ষতিকর সাইটটির নাম উল্লেখ করেনি। তবে সাইটটি দাবি করে, এটি ব্যবহারকারীদের তৈরি কনটেন্ট সাইটে দেখায় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের উপযোগী আইনসম্মত কনটেন্ট প্রদর্শন করে।

গত জানুয়ারিতে অনলাইন নিরাপত্তা আইন চালু হয় যুক্তরাজ্যে। আইনটি অনুযায়ী, সম্মতি ছাড়া এ ধরনের ছবি শেয়ার করা যাবে না। এর পরও গুগলের মতো বিভিন্ন জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে খুব সহজেই এসব সাইট সামনে চলে আসে।

যুক্তরাজ্যে এ ধরনের কনটেন্ট তৈরি করা বৈধ। গত এপ্রিলে এই ফাঁকফোকর বন্ধ এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ডিপফেক পর্নোগ্রাফি তৈরি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল দেশটির সরকার। কিন্তু ঋষি সুনাক নির্বাচন এগিয়ে নিলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় প্রস্তাবিত আইনটি বাদ পড়ে।

আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে এটি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কনজারভেটিভ, লেবার ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা। অর্থাৎ, এ ধরনের ছবি তৈরি করাও নিষিদ্ধ হবে যুক্তরাজ্যে। আইন কার্যকর হওয়ার আগেই কিছু সাইট ব্যবহারকারীদের তাদের সাইটে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে।

মার্কিন প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুরূপ আইনের জন্য চাপ দিচ্ছেন। তিনি বলেছিলেন, এ ধরনের ডিপফেক অতীতের মানসিক আঘাতকে পুনরুজ্জীবিত করেছিল এবং তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘কেউ কেউ এর জন্য আত্মহত্যা করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত