Ajker Patrika

ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে আফ্রিকানদের অন্য লড়াই

ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে আফ্রিকানদের অন্য লড়াই

ঢাকা: দুয়ারে কড়া নাড়ছে ইউরো ২০২০। চার বছর পরপর হওয়া ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের এ লড়াই হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির আঘাতে অন্য সব খাতের মতো ছাড়া পায়নি এই ফুটবল উৎসবও। এক বছর পিছিয়ে আগামী ১২ জুন থেকে মাঠে গড়াবে এমবাপ্পে-রোনালদোদের ইউরো অভিযান।

শুধু মহামারিই নয়, এমন এক সময়ে ইউরো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন ইউরোপের সামাজিক অবস্থা, অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত। ব্রেক্সিট, কোভিড-১৯, বর্ণবাদ এবং অভিবাসন সমস্যা ইউরোপকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে।

এর মাঝে খেলার মাঠে যে সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তা হলো বর্ণবাদ। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে খেলোয়াড়দের দেখা যাচ্ছে ম্যাচের আগে মাঠে হাঁটু গেড়ে প্রতিবাদ করতে। এরপরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়দের ওপর বর্ণবাদী মন্তব্য বন্ধ করা যায়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেড়েছে।
তবে এটাও সত্য যে, ইউরোপীয় দলগুলোতে বিভিন্ন বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণও আগের চেয়ে বেড়েছে। বিশেষ করে, আফ্রিকার অভিবাসীদের আধিপত্য অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষ্ণাঙ্গদের অংশগ্রহণে জয়ের ফলে তাঁদের মেনে নেওয়ার পথ সুগম হচ্ছে। পাশাপাশি হেরে গেলে আরও বাজেভাবে সমালোচিত হওয়ার পথও খোলা থাকছে।

জাতীয়তাবাদ ও জাতিগত অহংকার
ইউরোর মতো বড় আসরের আয়োজন এবং এতে অংশগ্রহণ করা দুটিই জাতিগত অহংকার–আত্মপরিচয় এবং জাতীয়তাবাদী ধারণাকে শক্তিশালী করবে। গবেষণা বলছে, অতীতেও এ ধরনের আসর আয়োজক দেশের জাতীয়তাবাদী ধারণাকে সুদৃঢ় করেছে। তবে ইউরোপের জাতীয় দলগুলোর মাঝে জাতীয়তাবাদের ধারণা কিছুটা গোলমেলে ব্যাপার। এই দলগুলো নানা জাতি ও বর্ণের মানুষের সমন্বয়ে গঠিত। নানা সময়ে মহাদেশের বাইরে থেকে আসা লোকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

এ পরিস্থিতিতে ১১টি দেশে হতে যাওয়া ইউরোর মতো ক্রীড়া আসর বাড়তে থাকা বর্ণবাদ ও জাতীয়তাবাদী আচরণের লাগাম টেনে ধরতে পারে। পাশাপাশি দর্শক ও খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তুলতে পারে। যা কিনা নানা জাতি ও বর্ণের মানুষকেও একই মঞ্চে তুলে আনবে। তবে এই সত্যও মেনে নিতে হবে যে, একজন সাধারণ নাগরিকের কাছে জাতীয় দল ও জাতির ধারণা যেমন, অভিবাসীদের কাছে তেমন নয়। এটি নানা বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য ও ক্রমাগত নেতিবাচক মনোভাব অভিবাসীদের জাতির ধারণাকে ভিন্ন পথে চালিত করতে পারে।

ইউরোপে আফ্রিকার খেলোয়াড়দের অভিবাসন
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী থেকে আসা খেলোয়াড়দের উপস্থিতিতে এবারও ইউরো সরগরম থাকবে। এই দলগুলোর গঠন প্রক্রিয়া এক দিনের নয়। অনেক বছর ধরে আফ্রিকার অভিবাসীদের নিয়ে ইউরোপের ফুটবল দলগুলো গড়ে উঠছে। পাশাপাশি ইউরোপের ক্লাব ও জাতীয় দলগুলো নিজেদের শক্তিশালী অর্থনীতিকে ব্যবহার করে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে ফুটবল–বাণিজ্যে খবরদারি করছে।

আফ্রিকার দেশ এবং ক্লাবগুলো অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে নির্ভর করে খেলোয়াড়–বাণিজ্যের ওপর। এতে দেশগুলো নিজেদের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের হাতছাড়া করে।

সুবিধা ও অসুবিধা
২০১৮ সালের বিশ্বকাপের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, সেখানে দাপট ছিল আফ্রিকার খেলোয়াড়দের (কৃষ্ণাঙ্গ এবং আরবদের)। সেমিফাইনালে খেলা দলগুলোর মাঝে শুধু ক্রোয়েশিয়া দলে শতভাগ শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়ের উপস্থিতি ছিল। চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স দলে শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড় ছিল ৬৩ শতাংশ, বেলজিয়ামে ৩১ শতাংশ এবং ইংল্যান্ডে ছিল ৩৭ শতাংশ। অভিবাসী নাগরিকদের এই উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

আফ্রিকার খেলোয়াড়দের আধিক্য ইতিবাচক ও নেতিবাচক–দুই ধরনের প্রভাবই রাখছে। জাতিগত ঐক্য ও বৈচিত্র্যের সম্ভাবনা যেমন উজ্জ্বল হচ্ছে, তেমনি দলের ব্যর্থতায় দায় নিয়ে বর্ণবাদী গালিও হজম করতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত