Ajker Patrika

শেষ সময়ে মার্তিনেজ-জাদু, আর্জেন্টিনার রেকর্ড কোপা জয়

অয়ন রায়, ঢাকা 
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৪, ১১: ৪৮
শেষ সময়ে মার্তিনেজ-জাদু, আর্জেন্টিনার রেকর্ড কোপা জয়

দর্শকদের উত্তেজনা, লিওনেল মেসির কান্না, খেলোয়াড়দের হাতাহাতি—মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ফাইনালে কী ছিল না আজ! সব ছাপিয়ে শেষ হাসি হাসে আর্জেন্টিনা। লাওতারো মার্তিনেজের শেষ সময়ের ম্যাজিকে কোপা আমেরিকায় রেকর্ড ১৬ বার শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়ে আকাশী-নীলরা। অন্যদিকে ২৩ বছর পর শিরোপার  কাছাকাছি এসেও ফিরে আসতে হয়েছে কলম্বিয়াকে।  

বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল কোপার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। তবে কলম্বিয়ার দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে দফায় দফায় পিছিয়ে যায় ম্যাচ শুরুর সময়। ৮০ মিনিটে দেরিতে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটে শুরু হয় আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ফাইনাল। ৯০ মিনিটের লড়াইয়েও কোনো দল গোলমুখ খুলতে পারেনি। সেখানে অতিরিক্ত সময়ে লাওতারো মার্তিনেজের দুর্দান্ত গোল করে আর্জেন্টিনাকে এনে দেন উদযাপনের উপলক্ষ্য। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা নিজেদের কাছে রাখার মিশনে সফল হলো লিওনেল স্কালোনির দল। ডাগআউটে বসে থাকা মেসির কান্না রূপ নিয়েছে হাসিতে। সুদূর ফ্লোরিডায় আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের আনন্দ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়।

ম্যাচের একেবারে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ১ মিনিটে গঞ্জালো মন্তিয়েলের ক্রস থেকে ডান পায়ে শট নিলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি হুলিয়ান আলভারেজ। শুরুতে আকাশী-নীলদের ব্যর্থতার পরপরই আর্জেন্টিনার ওপর পাল্টা আক্রমণ করে কলম্বিয়া। ৫ মিনিটে রিকার্ডো রিওসের অ্যাসিস্টে ডান পায়ে শট নেন কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড লুইস দিয়াজ। তবে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ তা প্রতিহত করেছেন। 

পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়া। ৭ মিনিটে সান্টিয়াগো আরিয়াসের হেড থেকে পাস রিভিস করে ডান পায়ে শটও নেন জন কর্ডোবা। তবে কর্ডোবার শট গোলপোস্টের বাঁ পাশে লেগে ফিরে যায়। কলম্বিয়ার সুযোগ মিসের মহড়ায় পাল্টা আক্রমণে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। ২০ মিনিটে দি মারিয়ার পাস রিসিভ করে মেসি শট নেন। তবে বক্সের মধ্যে আলভারেজের পা লেগে যাওয়ার পর খুব সহজেই সেটা প্রতিহত করেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ক্যামিলো ভার্গাস।

আর্জেন্টিনার সহজ সুযোগ হারানোর পর কলম্বিয়া লাগাতার আক্রমণ করেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। নিজেদের ফিনিশিং দুর্বলতা তো ছিলই, পাশাপাশি মার্তিনেজ গোলপোস্টের সামনে বরাবরের মতোই ‘চীনের মহাপ্রাচীর’ হিসেবে আগলে রেখেছেন। প্রথমার্ধের শেষে অবশ্য গোল পেতে পারত আর্জেন্টিনা। ৪৪ মিনিটের সময় সেটপিস থেকে মেসির ক্রসে নিকোলাস তাগলিয়াফিকো হেড দিলেও তা বক্সের অনেক ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ড্রয়ে।

কোপা আমেরিকায় রেকর্ড ১৬তম শিরোপা জয়ের পর আর্জেন্টিনার উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপিদ্বিতীয়ার্ধেও দুই দল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে। ৪৭ মিনিটে আরিয়াসের শট একটু এদিক-ওদিক হলেই গোল পেতে পারত কলম্বিয়া। তবে আর্জেন্টিনা গোলমুখ খোলার চেষ্টায় আর্জেন্টিনা বেশি প্রেসিং শুরু করে। দি মারিয়া কলম্বিয়ার রক্ষণদুর্গ কাঁপিয়ে দেন ক্ষণে ক্ষণে। তবে কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভারগাসের দৃঢ়তায় ৪৮ ও ৫৮ মিনিটে দুই বার গোল করতে পারেননি দি মারিয়া। উপরন্তু বিদায়ী ম্যাচে দি মারিয়াকে বাজে ট্যাকল করায় ডাগআউটে উত্তেজিত অবস্থায় দেখা গেছে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিকে।

একের পর এক সুযোগ মিসের মহড়ার মধ্যে আর্জেন্টিনা বড়সড় এক ধাক্কা খায়। ৬৫ মিনিটে গোঁড়ালির চোটের কাছে হার মেনে মাঠেই পড়ে যান মেসি। ফিজিও এসে সেবা শুশ্রূষা করার পর আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলারকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ডাগআউটে হতাশায় বুট ছুড়ে মারলেন, মুখ ঢেকে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন। সে কান্না ছুঁয়ে গেল সব আর্জেন্টাইন সমর্থকদের।

ডাগআউটে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর দুঃখ ভোলার উপলক্ষ প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন মেসি। ৭৫ মিনিটে আর্জেন্টিনার গোলের পর তাঁর মুখে হাসিও দেখা যায়। তবে সেটা সাময়িক সময়ের জন্য। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার নিকোলাস তাগলিয়াফিকো অফসাইডে থাকলে গোল বাতিল করা হয়। আবারও মেসির মুখে ফিরে আসে হতাশা। ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ হলেও কোনো দলই গোল করতে পারেনি।

নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তখন আরও জোর গতিতে প্রেসিং করে আর্জেন্টিনা। তবে কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস যে ‘ধনুক ভাঙা পণ’ করে নেমেছেন। অতন্দ্র প্রহরীর মতো গোলপোস্ট পাহারা দিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা দি মারিয়া একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারছিলেন না। ১১২ মিনিটে জিওভান্নি লো সেলসোর থ্রু বল থেকে ডান পায়ের শটে দারুণ এক লক্ষ্যভেদ করেন লাওতারো। শেষ পর্যন্ত ১৬তম কোপা আমেরিকা জয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

কোপা আমেরিকায় সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডের পাশাপাশি শিরোপা নিজেদের কাছে রেখে দিল আর্জেন্টিনা। ২০২১ কোপা জিতেই দীর্ঘ ২৮ বছরের শিরোপাখরা কাটিয়েছিল আকাশী-নীল জার্সিধারীরা। ক্লাব ফুটবলে একের পর এক শিরোপা জয়ী মেসিরও সেটা  আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথম শিরোপা। সেই ধারাবাহিকতায় আর্জেন্টিনা এরপর জিতল ২০২২ ফিনালিসিমা, ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ ও ২০২৪ কোপা আমেরিকা। আলবিসেলেস্তের ৩ বছরে সবশেষ ৪টি শিরোপা জয়ে জড়িয়ে আছেন মেসি। ফুটবল যে এমনই। কখনো কাঁদায়, কখনো হাসায়। ২০২১ কোপা জয়ের আগে হয়তো আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের কাছে স্বপ্নই মনে হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচ জিতে সিরিজে ফিরল নিউজিল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩০
৩ রানের জয় তুলে নিয়েছে কিউইরা। ছবি: এক্স
৩ রানের জয় তুলে নিয়েছে কিউইরা। ছবি: এক্স

ম্যাচের উত্তেজনা ছিল শেষ বল পর্যন্ত। জিততে পারতো যেকোনো দলই। এমন সমীকরণে শেষ হাসি হেসেছে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ রানে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল মিচেল সান্টনারের দল।

এর আগে ৫ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ৭ রানের জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আগামী ৯ নভেম্বর মাঠে নামবে দুই দল।

ইডেন পার্কে নিউজিল্যান্ডের করা ২০৭ রানের জবাবে ২০৪ রানে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ৩ ওভারে ৫২ রানের সমীকরণ ছিল সফরকারী দলের সামনে। রোভম্যান পাওয়েল ও ম্যাথু ফোর্ডের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে এই সমীকরণ প্রায় মিলিয়েই ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি তারা।

কাইল জেমিসনের করা ১৮তম ওভারে ২২ রান তোলেন পাওয়েল ও ফোর্ড। পরের ওভারে ১৪ রান দেন জ্যাকব ডাফি। শেষ ওভারে অতিথিদের করতে হতো ১৬ রান। জেমিসনের করা প্রথম বলে চার মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ফোর্ড। পরের বলে রান নিতে পারেননি। ওভারস্টেপিংয়ের কারণে তৃতীয় বলটি নো হয়। সেই সঙ্গে বাউন্ডারি মারেন ফোর্ড। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেন তিনি। পরের বলে উড়িয় মারতে গিয়ে আউট হন পাওয়েল। পঞ্চম বল থেকে এক রান নেন ক্রিজে আসা আকিল হুসাইন। শেষ বলে ৫ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে খুশি করতে পারেননি ফোর্ড।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৯৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ধাক্কা সামলে পাওয়েল, রোমারিও শেফার্ড, ফোর্ডদের ব্যাটে আমা বেঁচে ছিল তাদের। ক্যারিবীয়দের হয়ে ১৬ বলে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন পাওয়েল। সমান বলে ৩৪ রান এনে দেন রোমারিও শেফার্ড। ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন ফোর্ড। ১৩ বল খেলেন তিনি।

ম্যাচ হারলেও একটি রেকর্ড গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ৫ ওভারে ৮৭ রান করেছে তারা। টি–টোয়েন্টিতে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের মধ্যে রান তাড়ায় শেষ ৫ ওভারে এটা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

এর আগে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২৮ বলে ৭৮ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন মার্ক চাপম্যান। ৩৯ রান আসে টিম রবিনসনের ব্যাট থেকে। ২৮ রান করেন ড্যারেল মিচেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেসিকে মায়ামির ‘অন্য রকম’ সম্মাননা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩১
মেসির হাতে মায়ামি শহরের চাবি তুলে দেন মেয়র ফান্সিস সুয়ারেজ। ছবি: এক্স
মেসির হাতে মায়ামি শহরের চাবি তুলে দেন মেয়র ফান্সিস সুয়ারেজ। ছবি: এক্স

যোগ দেওয়ার পর থেকেই ইন্টার মায়ামির চিত্র বদলে দিয়েছেন লিওনেল মেসি। তারকা ফরোয়ার্ডকে পেয়ে ব্র্যান্ড ভেল্যু বেড়ে গেছে ফ্লোরিডার ক্লাবটির। বিজ্ঞাপনে আসছে একের পর এক চমক। যাঁর জন্য এত প্রাপ্তি সেই মেসিকে বরাবরই মাথার মুকুট করে রাখার চেষ্টা করেছে মায়ামি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার অন্য রকম এক সম্মাননা পেলেন মেসি।

মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আমেরিকা বিজনেস ফোরাম। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন মেসি। অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের হাতে মায়ামি শহরের প্রতীকী চাবি তুলে দেন মেয়র ফান্সিস সুয়ারেজ।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মেসি বলেন, ‘এই সম্মাননা দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। এই শহরে আমরা অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি। এখানে থাকতে পেরে আমি খুবই খুশি। এই স্বীকৃতি আমার জন্য সম্মানের। আবারও সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

অসংখ্য প্রাপ্তির ভীড়ে কেবল একটি বিশ্বকাপ জেতা বাকি ছিল মেসির। সে অপূর্ণতা প্রাপ্তিতে রূপ নিয়েছে ২০২২ বিশ্বকাপে। তাই ক্যারিয়ার থেকে আর কিছু চাওয়া সেই তাঁর, ‘আমার মনে হয় একজন ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার চেয়ে আর বড় কিছু হতে পারে না। তাই এটা জিতে গেলে আর কিছু চাওয়ার থাকে না।’

মেসির হাতে চাবি তুলে দেওয়ার পর মায়ামি শহরের মেয়র বলেন, ‘এই শহর, দেশ ও বিশ্ব ফুটবলের জন্য আপনি (মেসি) যা করেছেন, সেসবের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আপনাকে এই চাবি দেওয়ার ইচ্ছা ছিল আমার। সবকিছু জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

পিএসজি অধ্যায় শেষে ২০২৩ সালে মায়ামিতে নাম লেখান মেসি। নতুন চুক্তিতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত এই ক্লাবটিতে থাকবেন তিনি। মেসির হাত ধরেই নিজেদের ইতিহাসের প্রথম শিরোপা (লিগস কাপ) জেতে মায়ামি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ক্রিকেটে রাজনীতি পছন্দ করি না’ ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আকরাম

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান সংকট সমাধানের জন্য আইসিসির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ওয়াসিম আকরাম। ছবি: এক্স
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান সংকট সমাধানের জন্য আইসিসির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ওয়াসিম আকরাম। ছবি: এক্স

ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটেও। তাতে দুই দেশের মাঠের লড়াই থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে ভক্তরা। বিষয়টি নিয়ে নাখোশ পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম। সাফ জানিয়ে দিলেন, ক্রিকেটে রাজনীতি পছন্দ করেন না তিনি।

উইজডেন ক্রিকেটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আকরাম বলেন, ‘আমি দুঃখিত। ক্রিকেটে রাজনীতি আমার পছন্দ না। এক কথায় বলতে গেলে, খেলাধুলাকে সব সময়ই রাজনীতি মুক্ত রাখা উচিত। যেকোনো লিগেই সব দেশের ক্রিকেটারদের নেওয়া উচিত।’

রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে প্রথম আসরের পর থেকে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা খেলতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে অতীতেও কথা বলেছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। সবশেষ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলতে না পারা নিয়ে কথা বললেন আকরাম। সাবেক তারকা পেসারের কাছে এটা বাড়াবাড়িই মনে হচ্ছে।

আকরাম বলেন, ‘ক্রিকেটে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব সমাধানে আইসিসিকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে। সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। ফ্র্যাঞ্চাইজি বা টুর্নামেন্ট কার মালিকানায় তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল কথা হলো, সব দেশের খেলোয়াড়দেরই সুযোগ দেওয়া উচিত।’

ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই তিক্ত। সবশেষ এশিয়া কাপে বেশকিছু ইস্যুতে সে তিক্ততা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এর শুরুটা হয়েছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সূর্যকুমার যাদবদের হাত না মেলানো দিয়ে। শেষটা হয়েছে পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির হাত থেকে ভারতীয় দল ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানানোয়। এই কাণ্ডে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার এক মাসের বেশি সময় পরও ট্রফি বুঝে পায়নি ভারত।

সব মিলিয়ে পিসিবি ও বিসিসিআইয়ের মধ্যে সম্পর্ক এখন চরমে। রাজনৈতিক টানাপোড়েন লম্বা সময় ধরে দ্বিপাক্ষীক সিরিজ খেলে না পাকিস্তান ও ভারত। এশিয়া কাপ ইস্যুতে সামনের দিনগুলোতে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেও দুই দলের খেলা শঙ্কায় পড়ে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আর্জেন্টিনার ২০২৬ বিশ্বকাপ জার্সির দাম কত, কোথায় পাওয়া যাবে

ক্রীড়া ডেস্ক    
প্রকাশ্যে এল আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জার্সি। ছবি: এক্স
প্রকাশ্যে এল আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জার্সি। ছবি: এক্স

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আর্জেন্টিনাকে নিয়ে এমনিতেই ভক্তদের মাতামাতির শেষ নেই। ২০২৬ বিশ্বকাপেও ফেবারিট হিসেবেই খেলতে যাবে লিওনেল মেসির দল। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এল বিশ্ব ফুটবলের ২৩ তম আসরের জন্য লা আলবিসেলেস্তেদের জার্সি। তাতে ভক্তদের উন্মাদনা বেড়ে গেল দ্বিগুণ।

২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা। আগামী ১১ জুন বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে। তার সাত মাস আগেই ২২টি দেশের জার্সি উন্মোচন করেছে ক্রীড়া সরঞ্জামাদি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। যেখানে আছে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার জার্সি।

২০২২ সালের আগে ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। অনুমিতভাবেই ল্যাটিন আমেরিকানদের বিশ্বকাপ জার্সিতে আছে তিন তারকার উপস্থিতি। তিন তারকা করা হয়েছে সোনালী রঙে।

ঐতিহ্যকে ধারণ করতে বরাবরই মতো এবারও আর্জেন্টিনার জার্সিতে প্রাধান্য পেয়েছে সাদা ও আকাশি নীল। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) প্রতিষ্ঠা সালকে ইঙ্গিত করে জার্সির ঘাড়ের পেছনে খোদাই করে ‘১৮৯৩’ সাল লেখা হয়েছে। ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের প্রতীক হিসেবে বুকে সোনালি প্যাঁচ রাখা হয়েছে।

অ্যাডিডাস জানিয়েছে, আপাতত চুক্তিবদ্ধ থাকা দেশগুলোর জার্সি প্রকাশ করেছে তারা। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জার্সি উন্মোচনে উপস্থিত ছিলেন দলটির অধিনায়ক এবং ইতিহাসের সেরা ফুটবলারদের একজন মেসি। তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জার্সি পাওয়া যাবে অ্যাডিডাসের ওয়েবসাইট ও নির্দিষ্ট কিছু দোকানে। এই জার্সি কিনতে খরচ করতে হবে ১০০ থেকে ১৮০ ডলার। অর্থাৎ ১২ থেকে ২২ হাজার টাকার মতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত