Ajker Patrika

চোখের জলে এভাবেই শেষ আর্জেন্টিনায় মেসি অধ্যায়

আনোয়ার সোহাগ, ঢাকা
আর্জেন্টিনায় শেষ ম্যাচে কাঁদলেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
আর্জেন্টিনায় শেষ ম্যাচে কাঁদলেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি

জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় ছলছল করছিল চোখ। মেজ ছেলে মাতেওর মাথার ওপর মুখ রেখে নিজেকে আড়াল করতে চাইলেন বেশ কয়েকবার। আবেগ ধরে রেখে খেলতে নামলেও খেলা শেষে আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি লিওনেল মেসি।

হাসি, কান্না, উল্লাস, করতালির মিশেলে জন্ম নেওয়া এই আবেগ যেন শেষের শুরুর বার্তা দিল। বার্তা দিল এক অনিবার্য সমাপ্তির, যা হয়তো আপনি দেখতে চান না। কিন্তু সময়ের কাছে সবাই অসহায়। মনে মনে মেসিকে এলিয়েন ভাবলেও, দিন শেষে তিনিও রক্ত-মাংসে গড়া এক মানুষ। আক্ষেপ বা আফসোসের বিলাপ করার চেয়ে তাই এই শেষ যাত্রা উপভোগ করাই শ্রেয়।

মেসি নিজেও তো উপভোগ করছেন। উপভোগ করছেন পূর্ণতা নিয়ে। অভিষেকের ২০ বছর পর আবারও সেই এস্তাদিও মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে উজ্জ্বল ছিলেন ১৯ বছর বয়সের মতোই। শৈল্পিক ভঙ্গিমায় শেষটা রাঙালেন জোড়া গোলে। ঘণ্টাখানেক আগেও যিনি ভাসছিলেন আবেগে। রেফারির বাঁশি বাজার পরই ঝেড়ে ফেলেন তা। ৯০ মিনিটে বলে তাঁর ছোঁয়া পড়েছে ১০৬ বার। নিখুঁত পাস দিয়েছেন ৬৮টি। যদিও বলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন ২৪ বার। তাতে কি, নামের পাশে দুই গোল থাকলেও সেই হিসাব গোনায় না ধরলেও চলে।

সতীর্থরাও যেন কায়মনে চাচ্ছিলেন ম্যাচটা মেসিময় হোক। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৩৯ মিনিটে নয়তো গোলটা করতে পারতেন হুলিয়ান আলভারেস নিজেই। লিয়ান্দ্রো পারদেসের চোখধাঁধানো পাসে ড্রিবল করে এগিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে যান তিনি। পাশেই ছিলেন মেসি। আলভারেস পাস দিলেন কোনো দ্বিধা ছাড়াই। মেসির সামনে তখন গোলরক্ষকসহ প্রতিপক্ষের ৪ ফুটবলার। কেউ যাতে বলটি জালে যাওয়া থেকে আটকাতে না পারেন, মেসিও তাই শটটি নিলেন বাঁ পায়ের আলতো ছোঁয়ায়। ধোঁকা খেয়ে ৪ ফুটবলারও তা থামানোর সুযোগ পেলেন না।

৮০ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার কাটব্যাক থেকে আরও একবার দেখা গেল বাঁ পায়ের জাদু। এল আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১১৪তম গোল। ঘরের মাঠে ৩৭তম এবং শেষবারের মতো। এই মাঠ কত কিছুই না দিয়েছে মেসিকে। শেষবেলায় এসে সবাইকে নিয়ে যে উদ্‌যাপন করতে পারছেন, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে, ‘এটা পরিষ্কার যে এখানে শেষবারের মতো দাঁড়িয়ে আছি। এই মাঠে অনেক কিছুর অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেখানে ভালো-খারাপ দুটোই রয়েছে। এভাবে শেষ করতে পারা, নিজের লোকদের সামনে উদ্‌যাপন করাটা আমার স্বপ্ন ছিল সব সময়। বহু বছর ধরে বার্সেলোনার ভালোবাসা পেয়েছি, স্বপ্ন ছিল নিজের দেশেও, নিজের মানুষের কাছ থেকেও সেই ভালোবাসা পাওয়ার।’

মেসি সেই ভালোবাসার পূর্ণতা পেয়েছিলেন ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ জিতে। কাঁধ থেকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় বোঝা নামিয়ে। দুয়ারে কড়া নাড়ছে আরেকটি বিশ্বকাপ খেলবেন কি, ‘বয়সের কথা বিচার করলে মনে হয় না অত দিন খেলতে পারব। তবে আমরা কাছাকাছি চলে এসেছি। তাই আমি এটা খেলতে রোমাঞ্চিত ও প্রেরণা বোধ করছি। সব সময় আমি যেমন বলি, দিন ধরে এগিয়ে যাব আমি, দেখব কেমন বোধ করি। তাই দেখা যাক, সামনে কী হয়। বিশ্বকাপ নিয়ে এখনো আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’

আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিও কোনো চাপে রাখছেন না মেসিকে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে তাই পাচ্ছেন বিশ্রাম। মেসি যদিও খেলতে চেয়েছিলেন। সেই চাওয়াটা বিশ্বকাপ পর্যন্ত টিকে থাকুক! বিশ্বের লাখ লাখ ফুটবলপ্রেমীর অন্তত এটিই কামনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৫০ সাল নাগাদ ইনফ্লুয়েন্সারদের চেহারা কেমন হবে, ধারণা দিলেন গবেষকেরা

২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও গণঅধিকারকে নিষিদ্ধ করতে হবে: শামীম পাটোয়ারী

গোয়ালন্দে পিরের আস্তানায় হামলায় ১ জন নিহত, আশঙ্কাজনক ৫

ভূমিকম্পে হতাহত নারীদের উদ্ধার করেনি তালেবান কর্মীরা

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই, সুবিধা কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত