Ajker Patrika

বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুককে পদত্যাগের চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, ১৪: ২৭
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের ওপর পদত্যাগের চাপ রয়েছে। ছবি: বিসিবি
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের ওপর পদত্যাগের চাপ রয়েছে। ছবি: বিসিবি

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই মাত্র ৯ মাসের মাথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদে ফের পরিবর্তনের আলোচনা হঠাৎ করেই তুঙ্গে। গুঞ্জন এতটাই প্রবল যে একে আর নিছক গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদকে সরে যেতে বলা হয়েছে।

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিসিবি সভাপতি পদে আসা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। এখন তিনি পারিবারিক কারণে ঢাকায় অবস্থান করছেন। আজকের পত্রিকা'কে তিনি বলেন, ‘কোনো পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ হয়নি। এটা নিয়ে কিছু বলতেও চাইছি না।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ঢাকায় এসেছেন মূলত জরুরি কিছু পারিবারিক কাজে। তাঁর দেশে আসার পরিকল্পনা হুট করে নয়, বরং বেশ আগে থেকেই।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে বিসিবিতে নতুন নেতৃত্ব আসে। ফারুক তখন এনএসসির কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবির পরিচালক হন এবং ২১ আগস্ট পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু যেহেতু তিনি এনএসসি কোটায় এসেছেন, সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ এখানে থাকছেই।

অন্যদিকে যদি ফারুক আগে থেকেই বিসিবির নির্বাচিত পরিচালক হতেন এবং সেখান থেকে সভাপতির চেয়ারে বসতেন, তাহলে তাঁর মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে সরিয়ে দেওয়া এতটা সহজ হতো না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সম্প্রতি বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়ে পড়া এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির কারণেই তাঁর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সফল আয়োজন না করতে পারা, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ, জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়েছেন ফারুক। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বিসিবিকে জানিয়ে দিয়েছে যে ফারুককে আর সভাপতি হিসেবে চায় না তারা।

ফারুক যদি নিজে থেকে পদ ছাড়েন, তাহলে পরিবর্তনটা হবে অনেক সহজে। আর না হলে যেহেতু তিনি এনএসসি মনোনীত, সে ক্ষেত্রে তাঁর কাউন্সিলরশিপ বাতিল করে তাঁকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়ার নজির অতীতে আছে—যেমনটা হয়েছিল আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববির ক্ষেত্রে।

ফারুকের জায়গায় যদি বুলবুলকে আনা হয়, তাহলে তিনিও এনএসসি থেকে মনোনীত হয়ে পরিচালক হবেন। যদি সরকারের সমর্থন থাকে, পরে পরিচালকদের সভায় সভাপতির পদে নির্বাচিত হওয়াটা হয়ে যাবে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। প্রথমে বিসিবির সম্ভাব্য দায়িত্ব নেওয়ার কথা ফারুক অস্বীকার করলেও পরে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এখানে একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, বুলবুল যদি সভাপতি হন, তাহলে কি আইসিসির চাকরি ছেড়ে আসবেন, নাকি সাময়িক ছুটিতে থাকবেন? এটা নিয়েও অনেক জল্পনা-কল্পনা চলছে। তিনি আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। সূত্রে জানা গেছে, ফারুক ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন না করার শর্তে মেয়াদ শেষ পর্যন্ত সভাপতি থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে ৩১ মে বিসিবির জরুরি সভার আগেই এই জট খুলে যেতে পারে। ঈদের আগেই বিসিবিতে আরেক দফা পালাবদল এখন খুব একটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।

আবারও এমন পরিবর্তন হলে ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) দৃষ্টি বিসিবির ওপর পড়তেই পারে। এর আগে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে এ ধরনের হস্তক্ষেপের কারণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রশাসনিক কৌশল আর নিয়মের ফাঁক গলে সে রকম পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া এখনো সম্ভব। যেমনটা হয়েছিল গত বছরের আগস্টে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার বোর্ড সভা হওয়ার কথা বিসিবির। এ সভায়ও অনেক কিছু নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন নতুন কাউকে সভাপতি করার নিয়ম বিসিবির গঠনতন্ত্রে নেই।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

নূরুল হুদাকে হেনস্তা: বিচারের দাবিতে ৩৪ বীর মুক্তিযোদ্ধার বিবৃতি

মার্কিন ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হামলার আগে কাতারকে জানায় ইরান: সিএনএন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত