Ajker Patrika

স্বাগতিক হলেই শিরোপা জেতা যায় না

আরমান হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৭
স্বাগতিক হলেই শিরোপা জেতা যায় না

ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না! ঢাকাইয়া চলচ্চিত্রের এ নামের আদলে বলা যায়, স্বাগতিক হলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা যায় না! স্বাগতিক হিসেবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার ইতিহাস কম নয়। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ? একটাও পাবেন না।

ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণেই নিজেদের মাঠে খেলা দল সাধারণত বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে। দলের শক্তি, কৌশল আর সমন্বয় বিবেচনায় নিয়ে নিজেদের মতো করে উইকেট বানিয়ে ফায়দা নেয় দলগুলো। বাংলাদেশের সর্বশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় যেটার বড় উদাহরণ।

তবে আইসিসির টুর্নামেন্টে আয়োজক দেশের এই সুযোগটা পুরোপুরি নেওয়ার সুযোগ কম। উইকেট তৈরি করতে হয় আইসিসির নির্দেশনা মেনেই। আয়োজক দেশের তাই বাড়তি সুবিধা নেওয়ার খুব বেশি সুযোগ থাকে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক দেশগুলোর ফলের পরিসংখ্যানও সেটিই বলে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বৈশ্বিক মঞ্চে এখন পর্যন্ত একবারও আয়োজক দেশ শিরোপা জিততে পারেনি। এমনকি ছয়টি বিশ্বকাপে একবার শুধু আয়োজক দল ফাইনালে উঠতে পেরেছে।

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবার অবশ্য প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। বিশ্বকাপে নেই স্বাগতিক আরব আমিরাত। এই টুর্নামেন্ট হওয়ার কথাও ছিল না মরুর দেশে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পড়েছিল ভারতের ওপর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে একরকম বাধ্য হয়েই আইসিসিকে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারত থেকে টুর্নামেন্ট চলে গেছে আমিরাতে। মরুর দেশেই বাজবে ব্যাট-বলের ঝংকার। তবে খেলা সেখানে হলেও বিশ্বকাপের পুরো তত্ত্বাবধান করবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।

 সর্বশেষ ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও আয়োজন করেছিল ভারত। নিজেদের দেশে বিশ্বকাপ খেলেও ভারত ফাইনালে উঠতে পারেনি। মাহেন্দ্র সিং ধোনির দলের বিশ্বকাপ অভিযান থেমেছিল সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে। ভারত তবু সেমিফাইনাল খেলেছে। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক বাংলাদেশ তো গ্রুপ পর্বেই ছিটকে পড়েছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে সবচেয়ে সফল শ্রীলঙ্কা। একমাত্র দেশ হিসেবে তারাই বিশ্বকাপ আয়োজন করে ফাইনালে উঠতে পেরেছিল। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ১৩৭ রানের লক্ষ্য আর পেরোতে পারেনি মাহেলা জয়াবর্ধনের দল।

প্রথম তিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক দেশের ফল সবচেয়ে শোচনীয়। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। নিজেদের দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপে ঘরের দর্শকদের হতাশ করেছিল প্রোটিয়ারা। বিশ্বকাপের শেষ আটেই থামতে হয়েছে তাদের। দুই বছর পর টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। প্রোটিয়াদের মতো ইংলিশরাও ঘরের মাঠে ব্যর্থ হয়েছিল সেবার। নকআউট পর্বের আগেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছিল ইংল্যান্ড। ছবিটা বদলায়নি ২০১০ টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। আগের দুবারের মতো আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজও বাদ সুপার এইটেই।

সর্বশেষ ছয় বিশ্বকাপের আয়োজক দেশের ফলের পরিসংখ্যান এবার তাই আশা জাগাতে পারে সব দলকেই। প্রথমত, ‘আয়োজক (আরব আমিরাত)’ দেশ বিশ্বকাপেই নেই। কাগজ-কলমে আয়োজক ভারত হলেও তারা তো আর নিজের দেশে খেলছে না। এটি ভারতকে আরেকভাবে সহায়তাও করতে পারে। নিজেদের মাঠে খেলা না হওয়ায় প্রথাগত ‘স্বাগতিক হওয়ার চাপ’ নিয়ে খেলতে হবে না বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের। সব মিলিয়ে একটু অন্য রকমই হতে যাচ্ছে মরুর বুকে প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া বিশ্বকাপটা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত