Ajker Patrika

বিসিবির কেন স্পনসর পাওয়া কঠিন হচ্ছে

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৩৭
বিসিবির কেন স্পনসর পাওয়া কঠিন হচ্ছে

যে দেশে ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের নিয়ে এত উন্মাদনা, সেখানে বাজারে ক্রিকেট পণ্য বিপণনে উঁচু দরই পাওয়ার কথা। তবু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জাতীয় দলের স্পনসরশিপের চুক্তি করতে হচ্ছে আগের চেয়ে কম অঙ্কে। অথচ এখন প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। স্বাভাবিকভাবেই বিসিবিকে প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে, ক্রিকেট নামক পণ্যের বিপণন কি তারা ঠিকঠাক করতে পারছে?

গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে একটু ব্যতিক্রম উপায়ে মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেডের সঙ্গে নতুন করে সাড়ে তিন বছরের চুক্তি ঘোষণা করেছে বিসিবি। আগেরবার (২০১৭-১৯) রবি যেখানে ৬১ কোটি টাকার চুক্তি করেছিল, এবার সেটি ৫০ কোটি। বিসিবির কর্মকর্তাদের তাই বলতে হয়েছে, দিনে দিনে সব পণ্যের দাম বাড়লেও বিসিবির সঙ্গে রবির চুক্তির অঙ্ক কেন কমে গেল?

উত্তরে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা আকর্ষণীয়ই মনে হয়েছে।’ বিসিবির মিডিয়া বিভাগের প্রধান তানভীর আহমেদ অবশ্য সবশেষ দারাজের সঙ্গে বিসিবির চুক্তির বিষয়টি সামনে এনেছেন, ‘সর্বশেষ ক্রিকেট দলের স্পনসর দারাজের সঙ্গে আড়াই বছরের চুক্তির অঙ্ক ছিল ৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা। এবার রবির সঙ্গে সাড়ে তিন বছরে ৫০ কোটি টাকা। দারাজের তুলনায় ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেড়েছে।’

দারাজের চেয়ে রবির অঙ্ক বেশি দেখালেও বছরপ্রতি গড়ে প্রায় সমান টাকাই (১৪-১৫ কোটি) পাচ্ছে বিসিবি। নিয়ম মেনে জাতীয় দলের স্পনসরশিপ পেতে গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করেছিল বিসিবি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোনো প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখায়নি। বাংলাদেশ জাতীয় দল টানা তিনটি সিরিজ খেলেছে স্পনসর ছাড়াই। এমনকি অনূর্ধ্ব-১৯ দল এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ খেলেছে স্পনসর ছাড়া।

বিসিবির কর্মকর্তারা স্বীকার করে নিচ্ছেন, স্পনসর পেতে যথেষ্ট কাঠখড় পোহাতে হচ্ছে তাঁদের। অথচ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিসিবি পুরো স্পনসরশিপ মানি থেকে সর্বোচ্চ ৪১ কোটি টাকা আয় করতে পেরেছিল। বিপণনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা আফসোসের সুরে বলছিলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ওই দিন আর নাই!’

 বিষয়টির ব্যাখ্যায় বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে আরও খোলাসা করলেন, ‘আমাদের দেশের বর্তমান যে প্রেক্ষাপট, আরব আমিরাত বা ভারতের বাজারের সঙ্গে তুলনা করব না। গত দুই-তিন বছরের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে অনেক বড় প্রতিষ্ঠান ক্রিকেট থেকে সরে গেছে। হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার তারা আসবে। এখন সবাই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর্যায়ে আছে। তবে আগের মতো ওভাবে (ফান্ড) ছাড়তে চাচ্ছে না।’

তবে স্পনসর স্বত্ব থেকে আগের মতো আয় না হলেও বিসিবি এটি নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নয়। তাদের আয়ের বড় উৎস হচ্ছে আইসিসি-এসিসির লভ্যাংশ ভাগাভাগি, আন্তর্জাতিক টিভি সম্প্রচার স্বত্ব আর বছরজুড়ে বিভিন্ন সিরিজ-টুর্নামেন্ট থেকে আয়। রাজস্বে যেন ভাটা না পড়ে, আইসিসি এখন প্রতিবছর একটি করে পুরুষ জাতীয় দলের টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। নিয়মিত আয়োজন করছে এসিসিও। আর দ্বিপক্ষীয় সিরিজের মধ্যে গড়ে প্রতিবছর একটা ভারত সিরিজ থাকলে বিসিবির কোষাগার যথেষ্ট টইটুম্বুর থাকে।

নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলছেন, ‘আমাদের বছরে বড় আর্থিক লক্ষ্য থাকে মিডিয়া রাইটস আর আইসিসি-এসিসির ইভেন্টস। ওসব ঠিক থাকলে আমাদের বার্ষিক আয়ে খুব একটা প্রভাব পড়ে না। আইসিসি প্রতিবছর একটা ইভেন্ট রাখছে, তাতে আর্থিক প্রবাহ ঠিক থাকছে।এতে টোটাল ইম্প্যাক্টও কম হয়।’

বড় উৎসগুলো থেকে আর্থিক প্রবাহ ঠিক থাকায় আয় নিয়ে বিসিবির খুব একটা চিন্তা না থাকলেও তাদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে আসলে ব্যয়ের দিকগুলো। দেশের বিদ্যমান ডলার-সংকট ও অর্থনৈতিক মন্দায় এখন বছরে বড় অঙ্কের নিট উদ্বৃত্ত রাখতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে বিসিবিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধের প্রস্তুতি

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত