রানা আব্বাস, ঢাকা
ঘরের মাঠে ১৯৯৮ মিনি বিশ্বকাপ আয়োজন করে প্রথমবারের মতো উচ্চকণ্ঠে ক্রিকেট বিশ্বকে নিজেদের সাংগঠনিক দক্ষতার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তখনো আর্থিকভাবে দুর্বল বিসিবির পুরোপুরি পেশাদার হয়ে ওঠা কিংবা করপোরেট ধাঁচে চলাটা শুরু হয়নি। এটির শুরু আসলে এই শতাব্দীর শুরুর দিকে।
এরই অংশ হিসেবে ১৫ বছর আগে দ্রুত বিপুল অঙ্কের আয়ের আশায় বিসিবি ছয় বছর মেয়াদি একটি চুক্তি করেছিল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান নিমবাস স্পোর্টস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সঙ্গে। ৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের সেই চুক্তিটা যে পরে এতটা ভোগাবে, বিসিবির নীতিনির্ধারকেরা হয়তো তখন কল্পনাও করতে পারেননি! গলদে ভরা চুক্তির খেসারত দিয়ে নিমবাসের কাছে পাওনা ২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার বা প্রায় ২২৫ কোটি (বর্তমান হিসাবে) টাকার আশা ক্রিকেট বোর্ড এখন ছেড়েই দিয়েছে।
নিমবাসের পাশাপাশি গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), বিভিন্ন স্পনসর ও অন্যান্য খাত থেকে বিসিবির অনাদায়ি পাওনা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এই টাকার আর আশা নেই বলে বিসিবি এই বিপুল অঙ্কের অনাদায়ি পাওনা অবলোপন বা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি গত ১৫ জুন পরিচালনা পরিষদের দশম সভায় পরিচালকদের সম্মতিতে অনুমোদনও হয়েছে।
নিমবাসের ২২৫ কোটি
বিসিবির নিমবাস-কাহিনিটা আসলে গত এক যুগ ধরেই চলছে। ২০০৬ সালের নভেম্বরে করা এই চুক্তিটা যথেষ্ট ভুগিয়েছে ক্রিকেট বোর্ডকে। ১১ বছর আগে বিসিবির তখনকার সভাপতি (বর্তমান বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী) আ হ ম মুস্তফা কামাল এই চুক্তির গলদ প্রকাশ্যে এনেছিলেন।
জানিয়েছিলেন, যেকোনো চুক্তিরই অন্যতম শর্ত ব্যাংক গ্যারান্টি। এই চুক্তিতে নাকি বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো ব্যাংক গ্যারান্টি নেওয়া হয়নি! যেটির সুযোগ নিয়েছে নিমবাস। বকেয়া টাকা আদায়ের লক্ষ্য সিঙ্গাপুর আদালতে মামলা করেছিল বিসিবি।
লম্বা আইনি লড়াইয়ের পর গত বছর সিঙ্গাপুর আদালত নিমবাসকে দেউলিয়া ঘোষণা করায় টাকা ফেরত পাওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যায় বিসিবির। আইনজীবীদের পরামর্শ ও মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবির বহির্নিরীক্ষক এই অর্থ অবলোপন করার সুপারিশ করেছেন। সেটিই গত ১৫ জুনের বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়েছে।
নিমবাসের টাকার আশা না থাকলেও বিসিবি দাবি থেকে সরে আসছে না। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকা না পেলেও সমস্যা নেই, তার মানে তো দাবি ছাড়তে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘শুরুতেই আমাদের সিদ্ধান্তে ভুল ছিল। তখন আসলে আমরা কেন, বিশ্বের দুই-একটা বোর্ড ছাড়া কেউ এতটা বুঝত না। যখন নিমবাস ব্যাংক গ্যারান্টি দিল না তখনই এটা থেকে সরে আসার দরকার ছিল। তাহলে লোকসান কম হতো।’
বিপিএলের ২৩ কোটি
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বিপিএল বিসিবির তহবিল সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করলেও এ খাতেও অনাদায়ি পাওনা কম নয়। বিপিএলের প্রথম (২০১১-১২) ও দ্বিতীয় (২০১২-১৩) পর্বেই ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছে ক্রিকেট বোর্ডের পাওনা ১৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪০ টাকা। এই দুই আসরের অপরিশোধিত টাকার কারণে দেশ-বিদেশে বিসিবির যথেষ্ট ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
পঞ্চম (২০১৭-১৮), ষষ্ঠ (২০১৮-১৯) ও সপ্তম (২০১৯-২০) আসরে পাওনা থেকে গেছে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ৫৩ হাজার ৪২৩ টাকা। সব মিলিয়ে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছে বিসিবির পাওনা ২৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে এই টাকা আদায়ের আর সম্ভাবনা না থাকায় গত বোর্ড সভায় এটিও অবলোপন করা হয়েছে।
পৃষ্ঠপোষকদের কাছে ১ কোটি
২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অর্থবছরে স্পনসর ও অন্যান্য খাত থেকে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা পাওনা আছে বিসিবির। লম্বা সময় এই টাকা আদায় না হওয়ায় এটিও অবলোপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
গত এক দশকে বিসিবি আর্থিকভাবে এতটাই শক্তিশালী হয়েছে, প্রায় ২৫০ কোটি টাকার আশা ছেড়ে দেওয়ার পরও সেটি তাদের আর্থিক কাঠামোয় কোনো প্রভাব ফেলছে না। অনাদায়ি পাওনা নিয়ে নিজাম উদ্দিন বললেন, ‘প্রভাব না পড়লেও আমরা দাবি ছাড়তে পারি না! আর ২৫০ কোটি টাকার মধ্যে নিমবাসেরই ২২৫ কোটি টাকা। এটার সঙ্গে বাকিগুলোর তুলনা করা যাবে না! আর তখন প্রোডাক্টের মূল্য (নিমবাসের সঙ্গে চুক্তি) এতটা ছিল না। মূল্য যখন এতটা ছিল না সেটির পুরোটা আশা করাও ঠিক না।’
আরও পড়ুন:
ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি
ঘরের মাঠে ১৯৯৮ মিনি বিশ্বকাপ আয়োজন করে প্রথমবারের মতো উচ্চকণ্ঠে ক্রিকেট বিশ্বকে নিজেদের সাংগঠনিক দক্ষতার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তখনো আর্থিকভাবে দুর্বল বিসিবির পুরোপুরি পেশাদার হয়ে ওঠা কিংবা করপোরেট ধাঁচে চলাটা শুরু হয়নি। এটির শুরু আসলে এই শতাব্দীর শুরুর দিকে।
এরই অংশ হিসেবে ১৫ বছর আগে দ্রুত বিপুল অঙ্কের আয়ের আশায় বিসিবি ছয় বছর মেয়াদি একটি চুক্তি করেছিল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান নিমবাস স্পোর্টস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সঙ্গে। ৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের সেই চুক্তিটা যে পরে এতটা ভোগাবে, বিসিবির নীতিনির্ধারকেরা হয়তো তখন কল্পনাও করতে পারেননি! গলদে ভরা চুক্তির খেসারত দিয়ে নিমবাসের কাছে পাওনা ২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার বা প্রায় ২২৫ কোটি (বর্তমান হিসাবে) টাকার আশা ক্রিকেট বোর্ড এখন ছেড়েই দিয়েছে।
নিমবাসের পাশাপাশি গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), বিভিন্ন স্পনসর ও অন্যান্য খাত থেকে বিসিবির অনাদায়ি পাওনা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এই টাকার আর আশা নেই বলে বিসিবি এই বিপুল অঙ্কের অনাদায়ি পাওনা অবলোপন বা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি গত ১৫ জুন পরিচালনা পরিষদের দশম সভায় পরিচালকদের সম্মতিতে অনুমোদনও হয়েছে।
নিমবাসের ২২৫ কোটি
বিসিবির নিমবাস-কাহিনিটা আসলে গত এক যুগ ধরেই চলছে। ২০০৬ সালের নভেম্বরে করা এই চুক্তিটা যথেষ্ট ভুগিয়েছে ক্রিকেট বোর্ডকে। ১১ বছর আগে বিসিবির তখনকার সভাপতি (বর্তমান বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী) আ হ ম মুস্তফা কামাল এই চুক্তির গলদ প্রকাশ্যে এনেছিলেন।
জানিয়েছিলেন, যেকোনো চুক্তিরই অন্যতম শর্ত ব্যাংক গ্যারান্টি। এই চুক্তিতে নাকি বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো ব্যাংক গ্যারান্টি নেওয়া হয়নি! যেটির সুযোগ নিয়েছে নিমবাস। বকেয়া টাকা আদায়ের লক্ষ্য সিঙ্গাপুর আদালতে মামলা করেছিল বিসিবি।
লম্বা আইনি লড়াইয়ের পর গত বছর সিঙ্গাপুর আদালত নিমবাসকে দেউলিয়া ঘোষণা করায় টাকা ফেরত পাওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যায় বিসিবির। আইনজীবীদের পরামর্শ ও মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবির বহির্নিরীক্ষক এই অর্থ অবলোপন করার সুপারিশ করেছেন। সেটিই গত ১৫ জুনের বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়েছে।
নিমবাসের টাকার আশা না থাকলেও বিসিবি দাবি থেকে সরে আসছে না। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকা না পেলেও সমস্যা নেই, তার মানে তো দাবি ছাড়তে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘শুরুতেই আমাদের সিদ্ধান্তে ভুল ছিল। তখন আসলে আমরা কেন, বিশ্বের দুই-একটা বোর্ড ছাড়া কেউ এতটা বুঝত না। যখন নিমবাস ব্যাংক গ্যারান্টি দিল না তখনই এটা থেকে সরে আসার দরকার ছিল। তাহলে লোকসান কম হতো।’
বিপিএলের ২৩ কোটি
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বিপিএল বিসিবির তহবিল সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করলেও এ খাতেও অনাদায়ি পাওনা কম নয়। বিপিএলের প্রথম (২০১১-১২) ও দ্বিতীয় (২০১২-১৩) পর্বেই ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছে ক্রিকেট বোর্ডের পাওনা ১৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪০ টাকা। এই দুই আসরের অপরিশোধিত টাকার কারণে দেশ-বিদেশে বিসিবির যথেষ্ট ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
পঞ্চম (২০১৭-১৮), ষষ্ঠ (২০১৮-১৯) ও সপ্তম (২০১৯-২০) আসরে পাওনা থেকে গেছে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ৫৩ হাজার ৪২৩ টাকা। সব মিলিয়ে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছে বিসিবির পাওনা ২৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে এই টাকা আদায়ের আর সম্ভাবনা না থাকায় গত বোর্ড সভায় এটিও অবলোপন করা হয়েছে।
পৃষ্ঠপোষকদের কাছে ১ কোটি
২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অর্থবছরে স্পনসর ও অন্যান্য খাত থেকে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা পাওনা আছে বিসিবির। লম্বা সময় এই টাকা আদায় না হওয়ায় এটিও অবলোপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
গত এক দশকে বিসিবি আর্থিকভাবে এতটাই শক্তিশালী হয়েছে, প্রায় ২৫০ কোটি টাকার আশা ছেড়ে দেওয়ার পরও সেটি তাদের আর্থিক কাঠামোয় কোনো প্রভাব ফেলছে না। অনাদায়ি পাওনা নিয়ে নিজাম উদ্দিন বললেন, ‘প্রভাব না পড়লেও আমরা দাবি ছাড়তে পারি না! আর ২৫০ কোটি টাকার মধ্যে নিমবাসেরই ২২৫ কোটি টাকা। এটার সঙ্গে বাকিগুলোর তুলনা করা যাবে না! আর তখন প্রোডাক্টের মূল্য (নিমবাসের সঙ্গে চুক্তি) এতটা ছিল না। মূল্য যখন এতটা ছিল না সেটির পুরোটা আশা করাও ঠিক না।’
আরও পড়ুন:
ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে সিরিজ আগেই নিজেদের করে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অজিরা ধবলধোলাই এড়াতে পারে কি না, সেটাই ছিল দেখার। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়া জ্বলে উঠল বারুদের মতো। ম্যাকের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অ্যারেনাতে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের কাছে পাত্তাই পায়নি প্রোটিয়া
১ ঘণ্টা আগে২০ আগস্ট বাংলাদেশ নারী দলকে ৮৭ রানে হারিয়েছিল ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ দল। সেই ম্যাচে ১৮২ রানের লক্ষ্য পেলেও নারী ক্রিকেট দল গুটিয়ে গিয়েছিল ১০০-এর আগেই। এক সপ্তাহ না যেতেই কিশোরদের কাছে ফের বাজেভাবে হেরেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতি-নাহিদা আক্তাররা।
১ ঘণ্টা আগেভারতের হয়ে ৫ ওয়ানডে খেললেও সবশেষ এই সংস্করণে চেতেশ্বর পূজারা খেলেছিলেন ২০১৪ সালে। খেলতেন শুধু টেস্ট। সেই সংস্করণেও গত দুই বছর ধরে ছিলেন তিনি ব্রাত্য। অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন পূজারা।
২ ঘণ্টা আগেপিছিয়ে থেকে ম্যাচ জয়ের ‘ওস্তাদ’ মনে করা হয় রিয়াল মাদ্রিদকে। যখনই ভক্ত-সমর্থকেরা নির্দিষ্ট এক অবস্থার পর ম্যাচের ফল অবশ্যম্ভাবী ধরে নেন, সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় রিয়াল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা গতকাল তেমন কিছুই করে দেখিয়েছে। বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক এখানে দারুণ ক্যারিশমা দেখিয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে