Ajker Patrika

টেস্টে সাকিবের আগ্রহ, মোস্তাফিজের অনীহা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টেস্টে সাকিবের আগ্রহ, মোস্তাফিজের অনীহা

ক্রিকেটারদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সাধারণত ঘোষণা করে বছরের শুরুতেই। মহামারিতে এলোমেলো পৃথিবীতে অনেক নতুন বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে হচ্ছে। বিসিবির চুক্তিও তাই জানুয়ারিতে না হয়ে সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত হচ্ছে। পরশু রাতে প্রকাশিত সেই চুক্তিতে সংস্করণ ভেদে রয়েছেন ২৪ ক্রিকেটার। চুক্তি হয় সাধারণত এক বছরের। এবার সেটি হচ্ছে সাত মাসের জন্য। সংক্ষিপ্ত সময়ের এ চুক্তি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বার্তাও দিচ্ছে।

সাকিব টেস্টই খেলতে চান
সাকিব আল হাসান টেস্ট খেলতে চান না—এমন একটা প্রচার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে। বাঁহাতি অলরাউন্ডার এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ না খেলে আইপিএল খেলতে চাওয়ায় কথাটা ছড়িয়েছিল বেশ। অবশ্য বিসিবির শীর্ষ কর্তারাও নানা সময়ে বলেছেন, টেস্টের প্রতি সাকিবের নাকি আগ্রহ কম! যদিও সাকিব নিজে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। বরং তাঁর লক্ষ্য, সবার শেষে টেস্ট ছাড়বেন। ভবিষ্যতের কথা ভবিষ্যতেই দেখা যাবে। বর্তমান বলছে, সাকিব টেস্টই খেলতে চান। গত জুন মাসে বিসিবি যে চুক্তিপত্র দিয়েছিল ক্রিকেটারদের, সেখানে সাকিব তিন সংস্করণেই স্বাক্ষর করেছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য গতকাল বললেন, ‘সাকিব কখনোই বলেনি সে টেস্ট খেলবে না। সে জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কা সফরে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। পরে সিরিজটা না হওয়ায় সফরে যায়নি, এতটুকুই।’

টি-টোয়েন্টির সঙ্গে তামিমের দূরত্ব
গত পরশু দেশের ক্রিকেট আলোড়িত হয়েছে তামিম ইকবালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না খেলার ঘোষণায়। বাঁহাতি ওপেনার নিজেকে আরও কিছু সময় সরিয়ে রাখছেন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ থেকে। বিসিবিও তামিমকে রাখেনি টি-টোয়েন্টির চুক্তিতে। আগে কখনো কেন্দ্রীয় চুক্তির কোনো অংশ থেকে বাইরে ছিলেন কি না, তামিমের পক্ষেও মনে করা কঠিন হবে নিশ্চিত। বিসিবি সূত্রই জানিয়েছে, বাঁহাতি ওপেনার অনেক দিন ধরেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খুব একটা উপভোগ করছেন না। এই সংস্করণ ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা তাঁর আগে থেকেই। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে তামিমের দূরত্ব নিয়ে এক নির্বাচক বললেন, ‘ক্রিকেটাররা সাধারণত কঠিন সংস্করণ মানে টেস্ট আগে ছাড়ে। সবার শেষে টি-টোয়েন্টি। তামিম কিন্তু তা করছে না। সে বরং কঠিন পথটা বেছে নিতে চাইছে। এই যুগে টি-টোয়েন্টি থেকে দূরে থাকা সহজ নয়!’

ফিজের সঙ্গে লাল বলের আড়ি!
ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই মোস্তাফিজুর রহমানের আবির্ভাব আলোড়ন তুলে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির সঙ্গে দারুণ ‘বন্ধুত্ব’ হলেও টেস্টে ফিজের পরিসংখ্যান মলিনই। লাল বলের ক্রিকেটকে আপন করতে না পারার পেছনে বিভিন্ন সময়ে আড্ডাচ্ছলে দেশের দুর্বল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের কাঠামোকে সামনে এনেছেন ফিজ। কখনো নিজের ফিটনেসের কথা বলেছেন। আগে সরাসরি না বললেও এবার তিন সংস্করণ বাছাইয়ের সুযোগ থাকায় মোস্তাফিজ বিসিবিকে জানিয়েছেন, জৈব সুরক্ষা বলয়ের হ্যাপা সইয়ে তিনি আপাতত লাল বলের ক্রিকেট খেলবেন না। গতকাল বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানও সাংবাদিকদের সেটিই জানিয়েছেন, ‘মোস্তাফিজ এখন টেস্ট খেলতে চাচ্ছে না। সে বলেছে যত দিন কোয়ারেন্টিন ও বায়ো-বাবল আছে, এর মধ্যে টেস্টে মনোযোগ দেওয়া তার জন্য কঠিন। আমরা এটা ইতিবাচকভাবে নিয়েছি। যেহেতু সে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।’

টেস্টের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ‘বিচ্ছেদ’
মোস্তাফিজের মতো টেস্ট চুক্তিতে নেই মাহমুদউল্লাহও। তবে দুজনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরের মাঝপথে আকস্মিকভাবে মাহমুদউল্লাহ দলকে জানান, তিনি আর টেস্ট খেলবেন না। বিষয়টা অবশ্য স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গত পরশুও তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) তিন সংস্করণের মধ্যে টেস্টেই সবচেয়ে উপযুক্ত।’ মজাটা হচ্ছে, টেস্টে এখন ‘উপযুক্ত’ মনে হলেও গত বছর মাহমুদউল্লাহকে কিন্তু লাল বলের চুক্তিতে রাখেনি বিসিবি। এমনকি মাঝে টানা ১৬ মাস টেস্ট দলেই বিবেচিত হননি তিনি। গত জুনে জিম্বাবুয়ে সফরের টেস্ট দলেও তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে শেষ মুহূর্তে। এবং সেটিও নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত