Ajker Patrika

ভারতীয় কিংবদন্তিদের পেছনে ফেলে পাকিস্তানি ক্রিকেটারের বিশ্ব রেকর্ড

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৫২
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড এখন পাকিস্তানের সালমান আলী আঘার। ছবি: ক্রিকইনফো
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড এখন পাকিস্তানের সালমান আলী আঘার। ছবি: ক্রিকইনফো

এশিয়া কাপে সালমান আলী আঘার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ফাইনালে উঠলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হেরে শিরোপা খোয়াতে হয়েছে। তাতে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে সব কিছুর জবাব দিচ্ছেন তিনি। দল পাকিস্তানও আছে দারুণ ছন্দে। এরই মধ্যে পাকিস্তানি এই ক্রিকেটার গড়ে ফেলেছেন বিশ্ব রেকর্ড।

সালমান বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়েকে নিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে চলমান ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে। পরশু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নেমেই এক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৫৪ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা নিজের করে নিলেন তিনি। সালমান তাতে ভারতীয় দুই ব্যাটিং কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রাহুল দ্রাবিড়কে টপকে গেছেন। ধোনি-দ্রাবিড় এক বছরে ৫৩টি করে ম্যাচ খেলেছিলেন। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তিদের সমান বছরে ৫৩ ম্যাচ খেলেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফ।

ধোনি-দ্রাবিড়-ইউসুফরা কেউ এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন না। এক বছরে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি তাঁরা গড়েছিলেন তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বছরে। দ্রাবিড় ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৩ ম্যাচ খেলেছিলেন। টি-টোয়েন্টি যেহেতু তখনো আসেনি, ওয়ানডে ও টেস্ট খেলেই তিনি এই রেকর্ড গড়েছিলেন। ইউসুফ ২০০০ সালে খেলেছিলেন ৫৩ ম্যাচ। তাঁর ব্যাপারটা দ্রাবিড়ের মতোই। ধোনি ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছিলেন ৫৩ ম্যাচ। তিনি ভারত ও এশিয়ার হয়ে এই রেকর্ডটি গড়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছরে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডে যৌথভাবে তিনে আছেন তিন ক্রিকেটার। ল্যান্স ক্লুজনার, পল কলিংউড, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসরা বছরে ৫২টি করে ম্যাচ খেলেছিলেন। ক্লুজনার-কলিংউড অনেক আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন। ম্যাথুস এ বছরের জুনে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলে টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছরে ৫০ বা তার বেশি ম্যাচ খেলার উদাহরণ ২২টি। যার মধ্যে কুমার সাঙ্গাকারাই এই কীর্তি গড়েছেন তিন বার। ২০০৬ ও ২০০৯ সালে ৫০টি করে ম্যাচ খেলেছিলেন সাঙ্গাকারা। ২০১২ সালে তিনি খেলেছের ৫১ ম্যাচ। শচীন টেন্ডুলকার, মার্ক ওয়াহ, স্টিভ ওয়াহর মতো কিংবদন্তিরাও আছেন এক বছরে ৫০ বা তাঁর বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডে।

এক বছরে সর্বোচ্চ ৭১ ম্যাচ খেলার রেকর্ড ভারতেরই। ২০২২ সালে তারা তিন সংস্করণ মিলে এত সংখ্যক ম্যাচ খেলেছে। পাকিস্তান এ বছর এখন পর্যন্ত খেলেছে ৫৪ ম্যাচ। ২০১৩ সালেও তারা ৫৪ ম্যাচ খেলেছিল। নিজেদের রেকর্ড ভাঙার আরও কাছে এখন পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতে পরশু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নামলে সেটা পাকিস্তানের এ বছরে ৫৫তম ম্যাচ হবে। ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তান তো এরই মধ্যে ফাইনালে উঠে গেছে। ২৯ নভেম্বর হবে ফাইনাল। তাতে ডিসেম্বরের আগে এ বছরে ৫৬ ম্যাচ খেলা হয়ে যাবে পাকিস্তানের।

এক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড

ম্যাচ দল সাল

সালমান আলী আঘা ৫৪ পাকিস্তান ২০২৫

রাহুল দ্রাবিড় ৫৩ ভারত ১৯৯৯

মহেন্দ্র সিং ধোনি ৫৩ ভারত/এশিয়া ২০০৭

মোহাম্মদ ইউসুফ ৫৩ পাকিস্তান ২০০০

ল্যান্স ক্লুজনার ৫২ দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০০

পল কলিংউড ৫২ ইংল্যান্ড ২০০৭

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ৫২ পাকিস্তান ২০১৪

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বকাপে প্রস্তুতি ম্যাচে প্রতিপক্ষ কারা, জানাল বিসিবি

ক্রীড়া ডেস্ক    
বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছবি: ক্রিকইনফো
বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছবি: ক্রিকইনফো

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে দুই মাসও বাকি নেই। ৭ ফেব্রুয়ারি ভারত-শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনে শুরু হচ্ছে দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) মূল ম্যাচের সূচি দিলেও প্রস্তুতি পর্বের সূচি ঘোষণা করেনি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানিয়ে দিয়েছে, কোন কোন দলের বিপক্ষে খেলে লিটন দাস-তানজিদ হাসান তামিমরা বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেবেন।

মিরপুরে আজ সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও শাহরিয়াল নাফীস।
মিরপুরে আজ সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও শাহরিয়াল নাফীস।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না থাকায় যে যাঁর মতো সময়টা উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন। নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসরা পরিবার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গেছেন। ২৬ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে তাঁদের ব্যস্ত সময়। সিলেট পর্বে ১২তম বিপিএল শুরু হয়ে শেষটা হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ২৩ জানুয়ারি হবে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল। বিপিএল শেষ না হতেই লিটন, তানজিদ, তাসকিন আহমেদদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বিশ্বকাপে। মূল পর্বে নামার আগে ঘরের মাঠে ক্যাম্প করবেন লিটনরা। আজ মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছেন, ‘‘বিপিএল শেষে দুই-তিন দিনের ছোট একটা ক্যাম্প হবে। এরপর ২৮ জানুয়ারি বেঙ্গালুরুতে যাবে দল। সেখানে নামিবিয়া ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলব আমরা।’

৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তার আগে বিপিএল থাকলেও মূলত বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফাহিম। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান বলেন, ‘প্রস্তুতিটা আমরা খুব হিসেব করে নিচ্ছি। বিপিএলে যেসব দলের ম্যাচ আগে শেষ হয়ে যাবে, তাদের নিয়ে আগেভাগেই কাজ শুরু হবে। যারা শেষ চারে উঠতে পারবে না, কিন্তু জাতীয় দলের সম্ভাব্য খেলোয়াড়—তাদের আগেভাগেই প্রস্তুতির আওতায় নিয়ে আনতে চাই আমরা।’

বিপিএল শেষেই যেহেতু বিশ্বকাপের জন্য লিটন-তানজিদদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, সেজন্য তাঁদের ধকল কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে বিসিবি। মিরপুরে আজ সাংবাদিকদের বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে একজন ট্রেনার পুরো বিপিএল দেখভাল করবেন। জাতীয় দলে নিয়মিত ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট হবে জিপিএসের মাধ্যমে। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে যদি কোনো ক্রিকেটার রেড জোনে থাকে, সেই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আম্পায়ারদের কাছে ব্যাখ্যা চাইছেন স্টেইন

ক্রীড়া ডেস্ক    
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডেল স্টেইন। ছবি: ক্রিকইনফো
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডেল স্টেইন। ছবি: ক্রিকইনফো

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত হওয়ার পর চলছে নানা আলাপ-আলোচনা। সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) ধুয়ে দিয়েছেন ভক্ত-সমর্থকেরা। নেটিজেনদের অনেকে টিকিটের টাকাও ফেরত চেয়েছেন। ডেল স্টেইন এই ম্যাচের দায়িত্বে থাকা আম্পায়ারদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বাংলাদেশ সময় গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে লক্ষ্ণৌর অটল বিহারি বাজপেয়ি স্টেডিয়ামে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ টি-টোয়েন্টি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে বারবার ম্যাচের পর্যবেক্ষণের সময় বদলানো হয়। ছয় দফা মাঠ পর্যবেক্ষণ করেও ইতিবাচক কিছু না পাওয়ায় রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

এই ম্যাচে মাঠের আম্পায়ার ছিলেন কেএন অনন্তপদ্মনবন, রোহান পন্ডিত এবং তৃতীয় ও চতুর্থ আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন বীরেন্দর শর্মা ও জয়ারামান মদনগোপাল। ম্যাচ শেষে জিওস্টারে ডেল স্টেইন বলেন, ‘কোনো এক আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে পারলে ভালো লাগত। মাঝেমধ্যে শোনা গেছে, তাঁরা রাত ৮টা ৩০ মিনিটে মাঠ পর্যবেক্ষণ করবেন। কিন্তু আমি জানি না কোন নিয়ম নিয়ে তাঁরা ভাবছিলেন। তারা কী ভাবছিলেন আর কী মূল্যায়ন করছিলেন, সেটা জানতে খুব ইচ্ছে করছে। যদি তাঁরা বারবার সামনে দিয়ে হেঁটে যান, তাহলে এই ব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা অবশ্যই জানতে চাইবেন।ক্রিকেটার হিসেবে আপনাকে শুধু খেলতে হবে। সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে খেলতে পারলে ভালো লাগত। কিন্তু কিছু নিয়মকানুন তো অবশ্যই আছে। এটা আমার জানা নেই।’

ম্যাচ কর্মকর্তারাও মাঠ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে খেলা চালানোর মতো অবস্থা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানসহ উপমহাদেশে এখন চলছে শীতকাল। ঘন কুয়াশা তাই বলে অপ্রত্যাশিত নয়। কিন্তু গতকাল লক্ষ্ণৌর বায়ুর গুণগত সূচক (একিউআই) ৪০০-এর বেশি ছিল বলে চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ি স্টেডিয়ামে হার্দিক পান্ডিয়াসহ অনেক ক্রিকেটারকেই মাস্ক পরে ঘুরতে দেখা গেছে। একটা পর্যায়ে ভারতীয় দল ড্রেসিংরুমের ভেতরেই নিজেদের আবদ্ধ করে রাখে। বাজে আবহাওয়ার মধ্যেও ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হচ্ছিল না দেখে অসন্তুষ্ট ছিলেন রবিন উথাপ্পা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের টস করাই সম্ভব হয়নি।

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে কোনো রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এখন ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ভারত। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে সিরিজের পঞ্চম টি-টোয়েন্টি। এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ভারত জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। টেস্টে স্বাগতিকদের ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে প্রোটিয়ারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তুষ্ট ইংল্যান্ড, আইসিসির কাছে করবে নালিশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আউট না হওয়ার পরও আম্পায়ার কেন আউট দিয়েছেন, বুঝতে পারছেন না জেমি স্মিথ (ডানে)। ছবি: ক্রিকইনফো
আউট না হওয়ার পরও আম্পায়ার কেন আউট দিয়েছেন, বুঝতে পারছেন না জেমি স্মিথ (ডানে)। ছবি: ক্রিকইনফো

অ্যাডিলেডে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের শুরুর দিন থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউর পর যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে, সেটা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া দুই দলের ক্রিকেটাররাই রীতিমতো অসন্তুষ্ট। ব্যাপারটিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা এখন ইংল্যান্ডের।

স্নিকোমিটার অপারেটরদের ভুলের সুযোগে গতকাল সেঞ্চুরি করেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। আজ দ্বিতীয় দিনে জেমি স্মিথের আউটের পর এই প্রযুক্তিগত সমস্যাটা আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়েছে। ইনিংসের ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে জেমি স্মিথের উইকেট নেওয়ার পর প্যাট কামিন্স উদযাপন শুরু করেন। অজি উইকেটরক্ষক ক্যারি ঠিকমতো ক্যাচ ধরেছেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে মাঠের আম্পায়ার নিতিন মেতন তৃতীয় আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানির শরণাপন্ন হয়েছেন। ব্যাট-বলে অনেক গ্যাপ থাকার পরও আল্ট্রাএজে স্পাইক ধরা পড়েছে। স্মিথ তৎক্ষণাৎ রিভিউ করতে চাইলেও পারেননি। উল্টো হতাশা প্রকাশ করেছেন। ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রযুক্তিগত সমস্যা এড়াতে আইসিসির কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।

কামিন্সের বলেই দুই ওভার আগে আউট হতে হতে বেঁচে গিয়েছেন জেমি স্মিথ। ইনিংসের ৪৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে প্রথম স্লিপে উসমান খাজা ক্যাচ ধরার পর দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। তৃতীয় আম্পায়ার গ্যাফানি সেটা আউট দেননি। তবে অস্ট্রেলিয়া দলের মনে হয়েছিল সেটা আউট। জেমি স্মিথ আউট না হওয়ায় মিচেল স্টার্ক তৎক্ষণাৎ ক্ষোভ ঝেড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার বলেছেন, ‘স্নিকোমিটার বাদ দেওয়া উচিত। সবচেয়ে বাজে প্রযুক্তি এটা। আগের দিনও তারা ভুল করেছে। আজ তারা আরেকটা ভুল করল।’ তাঁর এই কথা রেকর্ড হয়েছে স্টাম্প মাইকে।

ক্যারি গতকাল অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম দিনে ৭২ রানে আউট হতে পারতেন ক্যারি। ইনিংসের ৬৩তম ওভারের প্রথম বলে ক্যারির বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন ইংলিশ পেসার জশ টাঙ। আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। স্পাইক ধরা পড়ার পরও ক্যারিকে আউট ঘোষণা করা হয়নি। ৭২ রানে বেঁচে যাওয়া ক্যারি তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ১৪৩ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় অজি উইকেটরক্ষক ব্যাটার ১০৬ রান করেছেন। টানা পাঁচবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার পাওয়া সাইমন টফেল বলেন, ‘আম্পায়ারকে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে দেখতে চাই। প্রযুক্তি অবশ্যই পাশে থাকবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তো সবকিছু বদলে ফেলা যাবে না।’ টফেলের মতে দুই বছর আগে আম্পায়ারের ‘সফট সিগনাল’-এর নিয়ম উঠিয়ে দিয়েই আইসিসি ভুলটা করেছে।

পার্থ, ব্রিসবেন দুই টেস্টেই ইংল্যান্ড হেরেছে ৮ উইকেটে। অ্যাডিলেডে তৃতীয় টেস্টে সিরিজ বাঁচাতে নেমে তারা বড্ড বেকায়দায় পড়েছে। আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা ইংলিশরা শেষ করেছে ৮ উইকেটে ২১৩ রানে। নবম উইকেটে ৮৪ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন স্টোকস-আর্চার। ছয় নম্বরে নামা স্টোকস ১৫১ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত। আর্চার ৩০ রানে ব্যাটিং করছেন। এরই মধ্যে তিনি ৪৮ বল খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ৩৭১ রানে গুটিয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হঠাৎ কেন চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন ম্যাকগ্রা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১
নাথান লায়ন নতুন রেকর্ড গড়ার পর চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ছবি: সংগৃহীত
নাথান লায়ন নতুন রেকর্ড গড়ার পর চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ছবি: সংগৃহীত

অনেকের হয়তো মনে হতে পারে গ্লেন ম্যাকগ্রার হঠাৎ সহিংস হয়ে ওঠার কারণ কী। আসলে ব্যাপারটা তা নয়। রাগ থেকে নয় বরং মজা করেই চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন তিনি।

অ্যাডিলেডে চলমান অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে ধারাভাষ্যকারের কাজ করছেন ম্যাকগ্রা। আজ দ্বিতীয় দিনে নিজের চোখের সামনে দেখলেন কীভাবে তাঁর রেকর্ড ভেঙে গেল। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের দশম ওভারের খেলা চলছে। সেই ওভারের তৃতীয় বলে ওলি পোপকে ফিরিয়ে ম্যাকগ্রার পাশে বসেন লায়ন। ম্যাকগ্রাকে টপকে যাওয়া লায়নের জন্য ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। ম্যাকগ্রাও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁর রেকর্ডটা কখন ভেঙে যায়। সেই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকে বোল্ড করে লায়ন ছাড়িয়ে যান ম্যাকগ্রাকে। ধারাভাষ্যকক্ষে ম্যাকগ্রা এটা দেখার পর হো হো করে হাসতে থাকেন। আনন্দের আতিশয্যে একটা চেয়ার তুলে সেটা ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে গিয়ে কী মনে করে যেন থেমে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার এই বোলিং কিংবদন্তি।

লায়ন যে বলে ম্যাকগ্রার রেকর্ড ভেঙেছেন, সেটা অসাধারণ। দশম ওভারের শেষ বলটা মিডল স্টাম্প করিডরে করলেন লায়ন। ইংল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটার ডাকেট সেটা সামনের পায়ে ডিফেন্স করতে যান। লায়নের বল একটু টার্ন নিয়ে অফ স্টাম্পে আঘাত হানে। ৩০ বলে ৫ চারে ২৯ রান করেন ডাকেট। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকা ডাকেটকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৫৬৪তম উইকেট নিলেন লায়ন। টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী এখন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৭০৮ উইকেট নিয়েছেন। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ম্যাকগ্রা পেয়েছেন ৫৬৩ উইকেট।

লায়নের নতুন রেকর্ড গড়ার দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডিলেডে আজ তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা ইংল্যান্ড শেষ করেছে ৮ উইকেটে ২১৩ রানে। নবম উইকেটে ৮৪ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন স্টোকস-আর্চার। ছয় নম্বরে নামা স্টোকস ১৫১ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত। আর্চার ৩০ রানে ব্যাটিং করছেন। এরই মধ্যে তিনি ৪৮ বল খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ৩৭১ রানে গুটিয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত