Ajker Patrika

ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১১: ১৫
ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি

সত্তরের দশকে ক্রীড়া সংগঠকেরা গাঁটের পয়সা খরচ করে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা আজকের বিসিবি। তখন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের (ঢাকা স্টেডিয়াম) যে ছোট্ট কক্ষে এর কার্যালয় ছিল, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ পর্যন্ত ছিল না। রাতের বেলা সংগঠকেরা কাজ করতেন মোমবাতি জ্বালিয়ে। বিসিবির আজকের বৈভবের কাছে সে গল্প সত্যিই বেমানান। সেদিনের মোমবাতির আলো ছাপিয়ে বিসিবি এখন অর্থের পাহাড়ে। সে পরিমাণও চমকে ওঠার মতো।

করোনা মহামারিতে লোকসানে পড়েনি–সারা পৃথিবীতে এমন প্রতিষ্ঠান বোধহয় কমই আছে। ব্যতিক্রম যা আছে, তাদের তালিকায় বিসিবি। তাদের আর্থিক অগ্রগতি এ সময়েও বেড়ে চলেছে।

বিসিবির গত ১০ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়-ব্যয়, নিট উদ্বৃত্ত, নগদ ও ব্যাংক জমা, এফডিআর মিলে বিসিবির স্থায়ী মূলধন বা পুঞ্জিভূত তহবিলে আছে ৮৩২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে যা ছিল ৩৯৭ কোটি ৫২ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

করোনা মহামারিতে যেখানে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো ধনী ক্রিকেট বোর্ডগুলো কর্মী ছাঁটাই, বেতন কমানো কিংবা ব্যয় সংকোচনের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে, বিসিবিকে তার কোনো পথেই হাঁটতেই হয়নি। করোনাধাক্কায় কারও চাকরি যায়নি। দেশি-বিদেশি কোচসহ চার শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন ছিল নিয়মিত। এর বাইরে কোভিড মহামারিতে বিসিবি প্রধানমন্ত্রী তহবিল, ত্রাণ, আম্পায়ার্স সমিতি, সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়দের চিকিৎসা, সাংবাদিক, ক্রিকেট সরঞ্জামাদি ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদান দিয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে (ডব্লিউআইসিবি) ঋণও দিয়েছে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বিশ্বে বিসিবির অবস্থান
প্রশ্ন উঠতে পারে, মাত্র এক দশকে বিসিবি আর্থিকভাবে কী করে এত শক্তিশালী হলো? তার জবাব দিয়েছেন ক্রীড়া সংগঠকেরা। তাঁরা বলছেন, ক্রিকেট অর্থনীতিতে বিসিবি সবচেয়ে বড় লাফ দিয়েছে গত দশকের শুরুর দিকে। সাবেক বিসিবি সভাপতি (বর্তমানে অর্থমন্ত্রী) আ হ ম মুস্তফা কামালের (সেপ্টেম্বর ২০০৯ থেকে অক্টোবর ২০১২) সময়ে যে গতিটা পেয়েছিল, সেটা অব্যাহত রাখেন টানা নয় বছর বোর্ডের সভাপতির পদে থাকা নাজমুল হাসান পাপন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন ও টেস্টখেলুড়ে ক্রিকেট বোর্ডগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিসিবি এখন বিশ্বের পঞ্চম ধনী ক্রিকেট বোর্ড। অন্যান্য ক্রীড়া সংগঠনের তুলনায় দেশে তারা যে এক নম্বর, তা বলাই বাহুল্য। দেশের দ্বিতীয় বড় ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনের (বাফুফে) আয় গত পাঁচ বছরে গড়ে ৪০ কোটি টাকাও ছাড়ায়নি। উদ্বৃত্ত দূরে থাক, গত চার বছরে বাফুফের বাজেট ঘাটতি ছিল ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মতো।

ধনী ক্রিকেট বোর্ডের তালিকায় চার নম্বরে থাকা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে খুব বেশি দূরত্ব নেই বিসিবির। সবার ওপরে থাকা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) তহবিলে আছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। এই তালিকায় দুইয়ে থাকা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) আছে তিন হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি আর তৃতীয় ধনী ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। আর্থিক অবস্থানে বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে পেছনে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘আমরা তহবিল ব্যবস্থাপনা (ফান্ড ম্যানেজমেন্ট) ঠিকভাবে করার চেষ্টা করছি। যেন আয় ও ব্যয়ে ভারসাম্য থাকে। আইসিসি থেকে শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে টাকা পায়, আমরাও সেটাই পাই। ম্যানেজমেন্ট এখানে বড় বিষয়। এরপরও যে কিছু হয় না, সেটি বলব না।’

বিসিবির আয়ের উৎস
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি ও আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা এসিসি থেকে পাওয়া লভ্যাংশ, ফান্ড, স্পনসরশিপ মানি, টেলিভিশনের সম্প্রচারস্বত্ব, ব্যাংক সুদ ও দেশের মাঠে হওয়া বিভিন্ন সিরিজ-টুর্নামেন্ট থেকেই মূলত আয় করে বিসিবি।

গত এক দশকে বিসিবির আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে পাঁচটি বড় টুর্নামেন্ট। ২০১১ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হিসেবে বিসিবি আইসিসি থেকে পেয়েছে ১৮৬ কোটি ৩৫ লাখ আর ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করে পেয়েছে ১৩০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ২০১২ থেকে ২০১৬—টানা তিনটি এশিয়া কাপ আয়োজন করে বিসিবির অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৬৪ কোটির বেশি টাকা। গত এক দশকে এই পাঁচ টুর্নামেন্ট থেকেই বিসিবির আয় প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা।

নিজাম উদ্দিন বলেন, ঘরের মাঠে আয়োজিত আইসিসির টুর্নামেন্ট বিসিবির আর্থিক চেহারাটা বদলে দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, বিশেষ করে বিপিএল। তবে বড় অংশ এসেছে আইসিসি থেকেই।

গত চার বছরে বিসিবির বিপণন খাতেও আয় বেড়েছে। মিডিয়া, টিম স্পনসর ও অন্যান্য স্পনসর রাইটস ফি থেকে বোর্ডের আয় প্রায় ২.৯ কোটি ডলার বা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।

বিসিবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর)। নিয়মিত বিভিন্ন শিডিউল ব্যাংকে এফডিআর বিনিয়োগ করে গত তিন অর্থবছরে এসেছে ১৫২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। উল্লিখিত অর্থবছরে সুদ থেকে বিসিবির অর্জিত আয়ের ওপর কর রেয়াতি সুবিধা অনুমোদন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই সময়ে বিসিবি ব্যাংকে বিনিয়োগকৃত অর্থের সুদবাবদ প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর রেয়াতি বা ট্যাক্স এক্সাম্পশন সুবিধা বাবদ সাশ্রয় করেছে ১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। 
 
মহামারিতেও বেড়েছে আয়
করোনা মহামারিতে যেখানে দেশ-বিদেশে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান আর্থিক লোকসানে পড়েছে, বিসিবির সেটির আঁচ খুব একটা লাগেনি। উল্টো চলতি অর্থবছরে গত বছরের তুলনায় সম্ভাব্য আয় ৪১ কোটি টাকার বেশি আশা করছে বিসিবি।

করোনায় খেলা বন্ধ থাকায় বিসিবিকে গত মৌসুমে আয়োজন করতে হয়নি ছেলে, মেয়ে ও বয়সভিত্তিক নানা পর্যায়ের ১৫টির বেশি লিগ বা টুর্নামেন্ট। স্থগিত হয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সিরিজ। যেগুলোয় লাভের চেয়ে ব্যয়ই হতো বেশি। অন্যদিকে আইসিসির ফান্ড, স্পনসর মানি কিংবা এফডিআর থেকে আয় অব্যাহত থেকেছে। 
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বললেন, ‘গত দুই বছরে আইসিসির একটা ফান্ড বেড়ে গেছে। সে কারণে আমাদেরও বেড়েছে। এখন দেখা যাক আইসিসির টুর্নামেন্টগুলো হয় কি না! সামনে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে। আমরা কিন্তু খুবই ভেবেচিন্তে, নিশ্চিত হয়েই বাজেট করি।

কমছে বিসিবির উদ্বৃত্ত
চলতি অর্থবছরে বিসিবির আয়-ব্যয় প্রায় সমান হতে চলেছে। এতে কমতে শুরু করেছে উদ্বৃত্তের পরিমাণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়-ব্যয় শেষে বেঁচেছিল ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। পরের বছরে উদ্বৃত্ত প্রায় সমানই থাকে। গত অর্থবছরে এটি কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি। চলতি অর্থবছরে বিসিবির সম্ভাব্য উদ্বৃত্ত ধরা হচ্ছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। গত ১৫ জুন বিসিবির পরিচালনা পরিষদের দশম সভায় অনুমোদন হওয়া চলতি অর্থবছরে বিসিবির সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা আর ব্যয় ২৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

মহামারিতে ক্রিকেট আয়োজনে জৈব সুরক্ষাবলয় তৈরি করতে হয়, যেটি বেশ ব্যয়বহুল। অন্য সময়ের তুলনায় বিসিবির খরচ বেড়ে যাওয়ার এটিও একটি কারণ। ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে নিজাম উদ্দিনের ব্যাখ্যা, ‘আন্তর্জাতিক সিরিজের সংখ্যা বেড়েছে। খরচও অনেক বেড়ে গেছে। বেশির ভাগ খরচ বিদেশ সফরে হচ্ছে। আমাদের কিন্তু ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলো সেভাবে বাড়েনি। সুরক্ষাবলয়, ১৫ দিনের কোয়ারেন্টিন, যে দল বাংলাদেশে আসছে তাদের ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে গেছে। এতেই ব্যয় বাড়ছে।’

তবে খরচ বেড়ে যতই উদ্বৃত্ত কমুক, এটা অবশ্য বিসিবিকে ধাক্কা দেওয়ার মতো কিছইু নয়।

বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এসিসির সাবেক প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হকের প্রত্যাশা, বিপুল এই অর্থ বিসিবি আরও বেশি কাজে লাগাবে ক্রিকেটের উন্নয়নে, ‘এটা ব্যবহার করা দরকার ক্রিকেট উন্নয়নে। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে। ক্রিকেটের জন্যই তো হয়েছে এই ফান্ড। আমাদের মূল আয় আইসিসি থেকে। আমরা যদি পূর্ণ সদস্য না হতাম, তাহলে আমাদের হয়তো এত টাকা থাকত না। তখন সরকারি বাজেটের ওপর নির্ভর করতে হতো। ক্রিকেটে আরও উন্নতি করতে হলে ঠিক জায়গায় টাকাটা খরচ করতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হামজা থাকলে দ্বিতীয় গোল পাওয়া কঠিন হত, বলছেন নেপাল কোচ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জোড়া গোল করেও বাংলাদেশকে জেতাতে পারেননি হামজা। ছবি: বাফুফে
জোড়া গোল করেও বাংলাদেশকে জেতাতে পারেননি হামজা। ছবি: বাফুফে

জোড়া গোলের পর হামজা চৌধুরী যখন মাঠ থেকে উঠে যাচ্ছিলেন তখনো জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। চোট পাওয়া হামজাকে নিয়ে বড় ঝুঁকি আর নিতে চাননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। যেহেতু সামনেই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। কিন্তু এরপরই ঘটল বিপদ। যোগ করা সময়ের গোলে জাতীয় স্টেডিয়ামে ২-২ ব্যবধানের সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়ে নেপাল।

হামজা যদি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতেন, তাহলে ফল অন্যরকম হওয়ারও সম্ভাবনা ছিল। তা বলছেন খোদ নেপাল কোচ হরি খড়কা। দ্বিতীয়ার্ধের বাংলাদেশের গোল হজম করে রক্ষণের ভুলে। কর্নার থেকে আসা বল দারুণ এক ব্যাকফ্লিকে জালে পরিণত করেন অনন্ত তামাং। বাংলাদেশ ফুটবল লিগে ফর্টিস এফসিতে খেলা এই ফুটবলার নীরবতা বয়ে আনেন পুরো গ্যালারিতে।

ম্যাচ শেষে নেপাল কোচ বলেন, ‘এটা তো কোচের কৌশল (হামজাকে তুলে নেওয়া)। তবে আমি মনে করি, যদি হামজা খেলত, তাহলে আমাদের দ্বিতীয় গোল পাওয়াটা কঠিন হত।’

বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে। তা পেনাল্টি ছিল না বলে দাবি হরির। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না, কেননা, আমরা প্রেসিং জোন আটঁসাঁট রেখেছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধে ওরা গোল পেয়ে গেল, হামজা দারুণ গোল করেছে, কিন্তু দ্বিতীয় গোলটি আমি মনে করি, ওটা পেনাল্টি ছিল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হামজা-জায়ানকে নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করলেন কোচ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লেও ভারত ম্যাচে দুশ্চিন্তা নেই হামজাকে নিয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লেও ভারত ম্যাচে দুশ্চিন্তা নেই হামজাকে নিয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জোড়া গোল করেছেন হামজা চৌধুরী। তবুও নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শেষের ভুলে ড্র করেছে ২-২ গোলে। এর চেয়ে বড় চিন্তা ছিল ১৮ নভেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলতে পারবেন তো হামজা। চোট নিয়ে তাঁকেসহ মাঠ ছাড়তে দেখা যায় জায়ান আহমেদকেও। তবে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা অচিরেই দূর করেছেন দুশ্চিন্তা।

হামজা-জায়ান কারোর চোটই গুরুতর নয়। ম্যাচশেষে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বলেন, ‘না, গুরুতর কিছু নয়। সামান্য পেশির টান। এমন কিছু হয়নি যাতে করে ভারত ম্যাচের জন্য তারা ঝুঁকিতে থাকবে।’

হামজাকে উঠিয়ে ৮০ মিনিটে কিউবা মিচেলকে মাঠে নামান কাবরেরা। বাংলাদেশের জার্সিতে এটাই কিউবার প্রথম ম্যাচ। তাঁর পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করার সময় এখনো আসেনি বলে মনে করেন কাবরেরা। বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘কিউবার জন্য অভিষেকটা কঠিন হলো। কিছু খেলোয়াড় ক্লান্ত বোধ করছিল, তাই তার জন্য আমরা ২৫-৩০ মিনিট দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পরিস্থিতির কারণে সে কম সময় পেল। এছাড়া তখন আমরা রক্ষণাত্মক অবস্থায় ছিলাম, তাই খুব বেশি মূল্যায়ন করা কঠিন। তবে ওর মনোভাব ভালো ছিল।’

শেষে গোল হজম না করলে কাবরেরার চোখে সেরা ম্যাচ হতো এই ম্যাচ। তিনি বলেন, ‘প্রথম গোলটা খাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ম্যাচে আধিপত্য করছিলাম। আমরা আরও ধারালো হতে পারতাম। সবচেয়ে ভালো অংশ ছিল দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০-১৫ মিনিট । এই বাংলাদেশই আমরা দেখতে চাই, যারা আক্রমণাত্মক ও উদ্যমী দল। এটাই আমাদের সেরা ম্যাচ হত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শতবার অনুশীলনের পরও কেন শেষ মুহূর্তে গোল হজম করছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৬
গোলের পর হামজাকে ঘিরে রাকিব-জামালের উচ্ছ্বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
গোলের পর হামজাকে ঘিরে রাকিব-জামালের উচ্ছ্বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাসখানেক আগে ঘরের মাঠে হংকংয়ের বিপক্ষে হারতে হয়েছে শেষ মুহূর্তের গোলে। সেই হারের কারণ দেখাতে গিয়ে সব ফুটবলারেরই একই ভাষ্য— ‘আমরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম।’ সেই ভুল থেকে বাংলাদেশ শিক্ষা নিতে পারেনি এবারও। ৫ বছর পর যখন নেপালের বিপক্ষে উঁকি দিচ্ছিল জয়। তখন শেষের ভুলে মাঠ ছাড়তে হয় ২-২ গোলের ড্র নিয়ে।

জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে আজ পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। হামজা চৌধুরীর অসাধারণ দুটি গোলে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে ম্যাচের। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে স্বাগতিকদের রক্ষণের ভুলে সমতা ফেরায় নেপাল।

এমন ভুল এড়াতে শতবার অনুশীলন করেছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তবুও চিত্রটা বদলাতে পারছেন না ফুটবলাররা। তাহলে কি এটি মানসিক সমস্যা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমি বলব না এটা মানসিক সমস্যা। এমন পরিস্থিতির মোকাবিলায় শতবার অনুশীলন করেছি। কিন্তু যেকোনো কারণে আজ সেটা কাটাতে পারিনি। এমনটা হতে পারে, কিন্তু এটা সত্যি যে বারবার ঘটছে। আমরা ভিডিও বিশ্লেষণ করব, ভুলগুলো সংশোধন করব, এবং এখন যে চার দিন সময় আছে, ভারতের বিপক্ষে যেন এমন না হয়, সেই প্রস্তুতি নেব। ’

কাবরেরা আরও বলেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেক সময় এসব পরিস্থিতি আমরা ভালোভাবেই সামলাই, কিন্তু ফুটবলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। প্রতিপক্ষও এসব নিয়ে কাজ করে। আমাদের কাজ হলো ভুলগুলো ঠিক করা এবং ভারতের ম্যাচে যেন এমন না হয় তা নিশ্চিত করা।’

প্রথমার্ধে একেবারেই গোছাল ফুটবল খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। এর দায় কাবরেরা নিজের কাঁধে নিচ্ছেন, ‘হ্যাঁ, আমরা প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিলাম, কিন্তু পরিষ্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারিনি। হামজার দুটা গোলই ছিল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। আমি দায় স্বীকার করছি, আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম, বিশেষ করে প্রথমার্ধে। নেপালের মতো লো ব্লোক খেলা দলের বিপক্ষে খেলা সহজ নয়।’

খেলা, ফুটবল, বাংলাদেশ, হামজা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইপিএলের নিলাম আবুধাবিতে

ক্রীড়া ডেস্ক    
২০২৬ আইপিএলের নিলাম হবে আবুধাবিতে। ছবি: ক্রিকইনফো
২০২৬ আইপিএলের নিলাম হবে আবুধাবিতে। ছবি: ক্রিকইনফো

২০২৬ আইপিএলের নিলাম যে ভারতের বাইরে হতে যাচ্ছে, সেটা আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটাই হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে হচ্ছে ১৯তম আইপিএলের নিলাম।

ভেন্যুর পাশাপাশি ঠিক হয়েছে ২০২৬ আইপিএলের নিলামের দিনক্ষণও। ক্রিকইনফোর আজকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ১৯তম আইপিএলের নিলাম হবে ১৬ ডিসেম্বর। ২০২৬ সালের ১৫ মার্চ শুরু হতে পারে নতুন আসরের আইপিএল। শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল হতে পারে ৩১ মে। এ নিয়ে টানা তিনবার দেশের বাইরে আইপিএলের নিলাম হচ্ছে এবং তিনবারই মধ্যপ্রাচ্যে। ২০২৪ আইপিএলের জন্য নিলাম হয়েছিল দুবাইয়ে। আর গত বছরের নভেম্বরে জেদ্দায় দুই দিনব্যাপী হয়েছিল ২০২৫ আইপিএলের মেগা নিলাম।

অন্যান্য মিনি নিলামের মতো ২০২৬ আইপিএলের নিলাম হবে এক দিনেই। কোন ক্রিকেটারদের ছাড়বে আর কাদের ধরে রাখবে, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে সেটার একটা তালিকা তৈরি করতে হবে ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটার মধ্যে। সেখান থেকে ক্রিকেটারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে পাঠাতে হবে। সেই তালিকা আরও ছোট করে নিলামের জন্য আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর একটা চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করতে হবে। এদিকে ২০২৫ আইপিএলের পর ‘ট্রেডিং উইন্ডো’ নামে একটা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স শার্দুল ঠাকুর ও শারফেন রাদারফোর্ডকে নিয়েছে ট্রেডিং পদ্ধতির নামে। শার্দুল ঠাকুরকে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের কাছ থেকে মুম্বাইয়ের খরচ হয়েছে ২ কোটি রুপি। আর গুজরাট টাইটান্সের কাছ থেকে রাদারফোর্ডকে ২ কোটি ৬০ লাখ রুপি খরচ করেছে মুম্বাই।

সাধারণত তিন বছর পর পর আইপিএলের মেগা নিলাম হয়ে থাকে। ২০২৫-এর আগে সবশেষ ২০২২ আইপিএল সামনে রেখে মেগা নিলাম হয়েছিল। এবার ভারতীয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সাধারণ নিলামই হবে। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটার পাওয়া গিয়েছিল সবশেষ নিলামেই। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ২৭ কোটি রুপি দিয়ে কিনেছিল ঋষভ পন্তকে। তাঁকে অধিনায়কও করেছিল লক্ষ্ণৌ। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স তিনি করতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপি দাম উঠেছিল শ্রেয়াস আইয়ার। তাঁকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কিনে অধিনায়ক করেছিল পাঞ্জাব কিংস। শ্রেয়াস ২০২৫ আইপিএলে ছিলেন ‘ক্যাপ্টেইন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’। তবে ফাইনালে পাঞ্জাবকে ৬ রানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথম শিরোপা জেতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)। কোহলিরও তাতে ফুরোল ১৮ বছরের অপেক্ষা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত