আজকের পত্রিকা ডেস্ক
জীববিজ্ঞান এবং প্রজননবিদ্যার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। মানুষের ত্বকের কোষ থেকে ডিএনএ নিয়ে সেটিকে শুক্রাণুর মাধ্যমে নিষিক্ত করে গবেষণাগারে মানবভ্রূণের প্রাথমিক পর্যায় তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এই অভাবনীয় প্রযুক্তি ভবিষ্যতে বার্ধক্য বা রোগের কারণে সৃষ্ট বন্ধ্যত্ব দূর করতে পারবে।
এই পদ্ধতিটি চূড়ান্ত ক্লিনিক্যাল ব্যবহারে আসতে আরও প্রায় এক দশক সময় লাগতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে ইতিমধ্যেই এটি একটি ‘অভাবনীয় সাফল্য’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মিটোমিওসিস: ডলি ভেড়ার ক্লোনিংয়ের পর নতুন মোড়
এই গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষক দল। তাঁদের এই কৌশলের মাধ্যমে প্রজননের প্রচলিত নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে।
সাধারণত, প্রজনন ঘটে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনে। পুরুষের শুক্রাণু ও নারী ডিম্বাণু মিলিত হয়ে জাইগোট গঠন করে। সেখানে থেকে তৈরি হয় ভ্রূণ। প্রায় ৯ মাস পর ভূমিষ্ঠ হয় পূর্ণাঙ্গ মানবশিশু। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে, বিজ্ঞানীরা মানুষের ত্বকের কোষ থেকে নিউক্লিয়াস (যা একটি শরীর তৈরির সম্পূর্ণ জেনেটিক কোড ধারণ করে) আলাদা করেন। এরপর সেই নিউক্লিয়াসটি একজন দাতার ডিম্বাণুর ভেতরে স্থাপন করা হয়। এই ডিম্বাণুর সব জেনেটিক নির্দেশনা আগেই অপসারণ করা হয়।
প্রাথমিক এই পর্যায়টি ১৯৯৬ সালে জন্ম নেওয়া পৃথিবীর প্রথম ক্লোন করা স্তন্যপায়ী প্রাণী ‘ডলি ভেড়া’ তৈরির পদ্ধতির মতোই। তবে এরপরই আসে প্রধান চ্যালেঞ্জ। কারণ ত্বকের কোষের নিউক্লিয়াস ধারণ করা ডিম্বাণুটি ক্রোমোজোমের পূর্ণাঙ্গ সেট বহন করছে। ফলে এটিকে শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা সম্ভব নয়।
প্রতিটি ভ্রূণ তার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে ২৩টি করে ৪৬টি ক্রোমোজোম পায়। ডিম্বাণুতে ২৩টি ক্রোমোজোম থাকে, আর শুক্রাণু থেকে ২৩টি এসে জোড় পূর্ণ করে। এই কারণে, গবেষকেরা দেহ কোষের নিউক্লিয়াস থেকে প্রাপ্ত ৪৬টি ক্রোমোজোম থেকে অর্ধেক ক্রোমোজোম ঝেড়ে ফেলার জন্য ডিম্বাণুটিকে প্ররোচিত করে। এই প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিটোমিওসিস’। এভাবেই একটি কার্যকর ডিম্বাণু তৈরি করা হয়।
নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই পদ্ধতিতে গবেষকেরা মোট ৮২টি কার্যকর ডিম্বাণু তৈরি করতে সক্ষম হন। এগুলো শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করার পর কিছু ভ্রূণ প্রাথমিক বিকাশের পর্যায়ে পৌঁছায়। তবে ছয় দিনের বেশি কোনো ভ্রূণই বিকশিত হতে পারেনি।
ওএইচএসইউ-এর এমব্রায়োনিক সেল অ্যান্ড জিন থেরাপি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক শোকরাত মিতালিপভ বলেন, ‘আমরা এমন কিছু অর্জন করেছি, যা অসম্ভব বলে মনে করা হতো।’
যদিও পদ্ধতিটি এখনো ত্রুটিমুক্ত নয়। ডিম্বাণু এ ক্ষেত্রে এলোমেলোভাবে ক্রোমোজোম ত্যাগ করে। রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিটি প্রকারের ক্রোমোজোমের একটি করে অংশ থাকা প্রয়োজন হলেও, অনেক সময় কিছু ক্রোমোজোম দুটি করেই থাকে এবং কিছু অনুপস্থিত থাকে। বর্তমানে সাফল্যের হার মাত্র ৯ শতাংশ, এবং ক্রোমোজোমগুলো তাদের ডিএনএ পুনর্বিন্যাস করার গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া ‘ক্রসিং ওভার’ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অধ্যাপক মিতালিপভ বলেন, ‘আমাদের এটি নিখুঁত করতেই হবে। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে বিজ্ঞান এই দিকেই এগোবে, কারণ সন্তান ধারণে অক্ষম রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।’
এই প্রযুক্তি ইন ভিট্রো গ্যামেটোজেনেসিস (আইভিজি) নামে পরিচিত একটি ক্রমবর্ধমান চিকিৎসা ক্ষেত্রের অংশ। এই প্রযুক্তির লক্ষ্য শরীরের বাইরে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু তৈরি করা।
এই পদ্ধতি আইভিএফ থেকে উপকৃত হতে পারেন না এমন দম্পতিদের সাহায্য করতে পারে। এমন দম্পতির কাজে লাগবে যাদের পর্যাপ্ত শুক্রাণু বা ডিম্বাণু নেই। বয়স্ক নারীরা যাদের কার্যকর ডিম্বাণু নেই, বা যারা ক্যানসার চিকিৎসার কারণে বন্ধ্যা হয়েছেন, তাঁদের জন্যও এটি আশার আলো দেখাচ্ছে।
এই কৌশলে একজন পুরুষের ত্বকের কোষ ব্যবহার করে ডিম্বাণু তৈরি করা যায়। সেটি পরে অন্য একজন পুরুষের শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা যেতে পারে। ওএইচএসইউ-এর অধ্যাপক পাওলা আমাটো বলেন, ‘এই পদ্ধতি লাখ লাখ মানুষের বন্ধ্যত্বের সমস্যা মেটানোর পাশাপাশি সমলিঙ্গের দম্পতিদের জন্য জিনগতভাবে উভয় সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কিত সন্তানের জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।’
ইউনিভার্সিটি অব হলের প্রজনন মেডিসিনের অধ্যাপক রজার স্টারমি এই বিজ্ঞানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ‘চিত্তাকর্ষক’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এই ধরনের গবেষণা প্রজনন গবেষণার নতুন অগ্রগতি সম্পর্কে জনসাধারণের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।’
জীববিজ্ঞান এবং প্রজননবিদ্যার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। মানুষের ত্বকের কোষ থেকে ডিএনএ নিয়ে সেটিকে শুক্রাণুর মাধ্যমে নিষিক্ত করে গবেষণাগারে মানবভ্রূণের প্রাথমিক পর্যায় তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এই অভাবনীয় প্রযুক্তি ভবিষ্যতে বার্ধক্য বা রোগের কারণে সৃষ্ট বন্ধ্যত্ব দূর করতে পারবে।
এই পদ্ধতিটি চূড়ান্ত ক্লিনিক্যাল ব্যবহারে আসতে আরও প্রায় এক দশক সময় লাগতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে ইতিমধ্যেই এটি একটি ‘অভাবনীয় সাফল্য’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মিটোমিওসিস: ডলি ভেড়ার ক্লোনিংয়ের পর নতুন মোড়
এই গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষক দল। তাঁদের এই কৌশলের মাধ্যমে প্রজননের প্রচলিত নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে।
সাধারণত, প্রজনন ঘটে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনে। পুরুষের শুক্রাণু ও নারী ডিম্বাণু মিলিত হয়ে জাইগোট গঠন করে। সেখানে থেকে তৈরি হয় ভ্রূণ। প্রায় ৯ মাস পর ভূমিষ্ঠ হয় পূর্ণাঙ্গ মানবশিশু। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে, বিজ্ঞানীরা মানুষের ত্বকের কোষ থেকে নিউক্লিয়াস (যা একটি শরীর তৈরির সম্পূর্ণ জেনেটিক কোড ধারণ করে) আলাদা করেন। এরপর সেই নিউক্লিয়াসটি একজন দাতার ডিম্বাণুর ভেতরে স্থাপন করা হয়। এই ডিম্বাণুর সব জেনেটিক নির্দেশনা আগেই অপসারণ করা হয়।
প্রাথমিক এই পর্যায়টি ১৯৯৬ সালে জন্ম নেওয়া পৃথিবীর প্রথম ক্লোন করা স্তন্যপায়ী প্রাণী ‘ডলি ভেড়া’ তৈরির পদ্ধতির মতোই। তবে এরপরই আসে প্রধান চ্যালেঞ্জ। কারণ ত্বকের কোষের নিউক্লিয়াস ধারণ করা ডিম্বাণুটি ক্রোমোজোমের পূর্ণাঙ্গ সেট বহন করছে। ফলে এটিকে শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা সম্ভব নয়।
প্রতিটি ভ্রূণ তার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে ২৩টি করে ৪৬টি ক্রোমোজোম পায়। ডিম্বাণুতে ২৩টি ক্রোমোজোম থাকে, আর শুক্রাণু থেকে ২৩টি এসে জোড় পূর্ণ করে। এই কারণে, গবেষকেরা দেহ কোষের নিউক্লিয়াস থেকে প্রাপ্ত ৪৬টি ক্রোমোজোম থেকে অর্ধেক ক্রোমোজোম ঝেড়ে ফেলার জন্য ডিম্বাণুটিকে প্ররোচিত করে। এই প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিটোমিওসিস’। এভাবেই একটি কার্যকর ডিম্বাণু তৈরি করা হয়।
নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই পদ্ধতিতে গবেষকেরা মোট ৮২টি কার্যকর ডিম্বাণু তৈরি করতে সক্ষম হন। এগুলো শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করার পর কিছু ভ্রূণ প্রাথমিক বিকাশের পর্যায়ে পৌঁছায়। তবে ছয় দিনের বেশি কোনো ভ্রূণই বিকশিত হতে পারেনি।
ওএইচএসইউ-এর এমব্রায়োনিক সেল অ্যান্ড জিন থেরাপি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক শোকরাত মিতালিপভ বলেন, ‘আমরা এমন কিছু অর্জন করেছি, যা অসম্ভব বলে মনে করা হতো।’
যদিও পদ্ধতিটি এখনো ত্রুটিমুক্ত নয়। ডিম্বাণু এ ক্ষেত্রে এলোমেলোভাবে ক্রোমোজোম ত্যাগ করে। রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিটি প্রকারের ক্রোমোজোমের একটি করে অংশ থাকা প্রয়োজন হলেও, অনেক সময় কিছু ক্রোমোজোম দুটি করেই থাকে এবং কিছু অনুপস্থিত থাকে। বর্তমানে সাফল্যের হার মাত্র ৯ শতাংশ, এবং ক্রোমোজোমগুলো তাদের ডিএনএ পুনর্বিন্যাস করার গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া ‘ক্রসিং ওভার’ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অধ্যাপক মিতালিপভ বলেন, ‘আমাদের এটি নিখুঁত করতেই হবে। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে বিজ্ঞান এই দিকেই এগোবে, কারণ সন্তান ধারণে অক্ষম রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।’
এই প্রযুক্তি ইন ভিট্রো গ্যামেটোজেনেসিস (আইভিজি) নামে পরিচিত একটি ক্রমবর্ধমান চিকিৎসা ক্ষেত্রের অংশ। এই প্রযুক্তির লক্ষ্য শরীরের বাইরে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু তৈরি করা।
এই পদ্ধতি আইভিএফ থেকে উপকৃত হতে পারেন না এমন দম্পতিদের সাহায্য করতে পারে। এমন দম্পতির কাজে লাগবে যাদের পর্যাপ্ত শুক্রাণু বা ডিম্বাণু নেই। বয়স্ক নারীরা যাদের কার্যকর ডিম্বাণু নেই, বা যারা ক্যানসার চিকিৎসার কারণে বন্ধ্যা হয়েছেন, তাঁদের জন্যও এটি আশার আলো দেখাচ্ছে।
এই কৌশলে একজন পুরুষের ত্বকের কোষ ব্যবহার করে ডিম্বাণু তৈরি করা যায়। সেটি পরে অন্য একজন পুরুষের শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা যেতে পারে। ওএইচএসইউ-এর অধ্যাপক পাওলা আমাটো বলেন, ‘এই পদ্ধতি লাখ লাখ মানুষের বন্ধ্যত্বের সমস্যা মেটানোর পাশাপাশি সমলিঙ্গের দম্পতিদের জন্য জিনগতভাবে উভয় সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কিত সন্তানের জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।’
ইউনিভার্সিটি অব হলের প্রজনন মেডিসিনের অধ্যাপক রজার স্টারমি এই বিজ্ঞানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ‘চিত্তাকর্ষক’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এই ধরনের গবেষণা প্রজনন গবেষণার নতুন অগ্রগতি সম্পর্কে জনসাধারণের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।’
প্রাচীনকাল থেকেই একটি বিষয় স্পষ্ট—পুরুষেরা নারীর তুলনায় কম দিন বাঁচেন। প্রাচীন গ্রিসের পুরুষেরা সাধারণত যুদ্ধে অকালমৃত্যু বরণ করতেন। ভিক্টোরিয়ান যুগের সমাধিফলকে দেখা যায়—বিধবারা তাঁদের স্বামীকে টপকে অনেক বছর বেঁচে থেকেছেন।
৮ ঘণ্টা আগেশুক্রের সঙ্গে একই কক্ষপথে ঘুরে বেড়ানো একদল প্রায় অদৃশ্য গ্রহাণু পৃথিবীর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে এগুলো আমাদের নজরের বাইরে রয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে এদের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পৃথিবীর জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি হতে পারে।
১৯ ঘণ্টা আগেমঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানো বিলিনিয়ার ইলন মাস্কের অন্যতম ইচ্ছে। আর এই স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করবে তাঁর কোম্পানি স্পেসএক্সের তৈরি স্টারশিপ। ২০২৯ সালেই মঙ্গলে স্টারশিপ পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি।
৩ দিন আগেচার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএ–এর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
৩ দিন আগে