Ajker Patrika

চীনের ‘ঘোস্ট পার্টিকল’ যন্ত্রে উন্মোচিত হতে পারে মহাবিশ্বের রহস্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চীনের সেই গবেষণা কেন্দ্র। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
চীনের সেই গবেষণা কেন্দ্র। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

চীনের পাহাড়ি অঞ্চলের গভীরে নির্মিত একটি গবেষণা কেন্দ্র হয়তো উন্মোচন করতে চলেছে মহাবিশ্বের অজানা রহস্য। বহু বছর ধরে পদার্থবিদেরা রহস্যময় ‘ঘোস্ট পার্টিকল’ বা নিউট্রিনো নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন। এই কণাগুলো বৈদ্যুতিকভাবে নিরপেক্ষ উপ-পারমাণবিক কণা এবং এগুলোকে বিদ্যুৎ বা চৌম্বক বল দিয়ে ধরা যায় না। তারা সহজেই যে কোনো পদার্থ ভেদ করে চলে যেতে পারে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই দুর্বোধ্য কণাগুলোকে বোঝার জন্যই চীনের নতুন আন্ডারগ্রাউন্ড অবজারভেটরিতে তৈরি হয়েছে বিশাল এক তরল-ভর্তি গম্বুজ। এই গম্বুজে রাখা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টন ‘লিকুইড সিনটিলেটর’। আর এই তরলেই কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রবাহিত হচ্ছে নিউট্রিনো। পুরো কাঠামোটি অ্যাক্রিলিকের পাতলা স্তরে মোড়ানো এবং বাইরে রয়েছে ৪৫ হাজার টন বিশুদ্ধ পানিতে ভরা সুরক্ষিত সিলিন্ডার।

এখানে নিউট্রিনো প্রোটনের সঙ্গে সংঘর্ষ করলে ক্ষুদ্র অথচ রেকর্ডযোগ্য (প্রতিদিন প্রায় ৫০ টি) আলোক ঝলক তৈরি করে। এসব সংকেত দূর থেকে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সের গবেষক ওয়াং ইয়িফাং জানান, এই পরীক্ষার মাধ্যমে নিউট্রিনোর ভর-ক্রম জানা গেলে কণা পদার্থবিদ্যা ও মহাবিশ্বতত্ত্বে নতুন মডেল তৈরি করা সম্ভব হবে।

নিউট্রিনো মহাবিশ্বে সবচেয়ে প্রাচুর্যপূর্ণ কণা, যেগুলো নক্ষত্র বিস্ফোরণ বা সুপারনোভা থেকে উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই গবেষণা মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধিকে আমূল বদলে দিতে পারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিদিন ৫০টি করে ছয় বছরে এক লাখ আলোক ঝলক সংগ্রহ করা যাবে, যা যথেষ্ট পরিসংখ্যানগত তথ্য সরবরাহ করবে।

অস্ট্রিয়ান পদার্থবিদ উলফগ্যাং পাওলি প্রথমবার ১৯৩০ সালে নিউট্রিনোর ধারণা দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ভয়ংকর কাজ করেছি। এমন এক কণার কথা বলেছি, যাকে ধরা যাবে না।’ এমনকি তিনি বাজি ধরেছিলেন যে, কেউ কোনো দিন নিউট্রিনো শনাক্ত করতে পারবে না। তবে কয়েক দশক পরই সেই বাজি হেরে যান বিজ্ঞানী।

এখন জানা গেছে, নিউট্রিনোর তিনটি ধরন আছে—ইলেকট্রন, মিউন ও টাউ। এগুলো এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হতে পারে। গবেষকদের বিশ্বাস, এই বিশ্লেষণ হয়তো বিজ্ঞান জগতের সবচেয়ে বড় রহস্য অর্থাৎ কেন মহাবিশ্বে পদার্থ বেশি, অথচ প্রতিপদার্থ তার ভারসাম্য রাখতে পারেনি—এর সমাধান দিতে পারে। মহাবিশ্বে প্রতিপদার্থ ও পদার্থ সমান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খুব সামান্য পদার্থের আধিক্যই আমাদেরকে সৃষ্টি করেছে। কেন এমন হলো—এটাই বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে বড় অনুসন্ধানের বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার পতনের আগের দিন ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা হয়: নাহিদ

ডিএমপি কমিশনারের বার্তা: ঝটিকা মিছিল হলে ওসি ও পরিদর্শক প্রত্যাহার

শেষ ওভারে নবির ছক্কাবৃষ্টি, বাংলাদেশের সমীকরণ কী দাঁড়াল

কুমিল্লায় ৪ মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, পুলিশ-সেনাবাহিনী মোতায়েন

দিয়াবাড়ির কাশবনে নারীর অর্ধগলিত লাশ, মৃত্যু ১০-১২ দিন আগে: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত