Ajker Patrika

প্লাস্টিক বর্জ্যকে ব্যথানাশক উপাদানে রূপান্তর করবে ব্যাকটেরিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

প্লাস্টিক বর্জ্যকে নতুনভাবে ব্যবহার করার এক বিস্ময়কর উপায় সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। বিজ্ঞানীরা ‘ইশেরিশিয়া কোলাই’ বা ‘ই. কোলি’ নামে একধরনের সাধারণ ব্যাকটেরিয়াকে জিনগত পরিবর্তন করে এমনভাবে তৈরি করেছেন, যাতে এটি প্লাস্টিকজাত অণু খেয়ে তা হজম করে ব্যথানাশক ওষুধ প্যারাসিটামল উৎপাদন করতে পারে।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্বে আছেন স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল বায়োটেকনোলজির অধ্যাপক স্টিফেন ওয়ালেস। তিনি জানান, ই. কোলি জীববিজ্ঞানের পরীক্ষাগারে বহুল ব্যবহৃত একটি জীবাণু। যদিও এর কিছু প্রজাতি রোগ সৃষ্টি করতে পারে, তবে পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত নিরীহ জাতগুলো দীর্ঘদিন ধরেই নানা জৈবপ্রযুক্তি গবেষণায় ‘কর্মযন্ত্র’ হিসেবে কাজ করছে।

এর আগে ওয়ালেসের দল এই ব্যাকটেরিয়াকে ব্যবহার করে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে ভ্যানিলা স্বাদ এবং নর্দমার ‘ফ্যাটবার্গ’ থেকে সুগন্ধি উৎপাদন করেছিলেন। তাঁর ভাষায়, ‘জীববিজ্ঞানে কিছু প্রমাণ করতে চাইলে ই. কোলি সবচেয়ে স্বাভাবিক প্রথম ধাপ।’

প্রকৃতপক্ষে, শিল্পক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই জীবাণু। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে তৈরি ই. কোলি ব্যাচগুলো এখন যেন জীবন্ত কারখানা—যা থেকে তৈরি হচ্ছে ইনসুলিনের মতো জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং বিভিন্ন রাসায়নিক, জ্বালানি ও দ্রাবক।

ই. কোলি কেন এত কার্যকর? এই প্রশ্নের জবাবে বিজ্ঞানীরা জানান, এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়, সহজে জিনগত পরিবর্তন করা যায়, বিদেশি ডিএনএ ধারণে সক্ষম, এমনকি জমিয়ে রেখে আবার সচল করাও সম্ভব। এ কারণেই ১৯৭৮ সালে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম মানব ইনসুলিন উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়েছিল এই জীবাণু। পরে ১৯৯৭ সালে এটি ছিল প্রথম জীবগুলোর একটি, যার পুরো জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়।

তবে বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ই. কোলির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা সম্ভাবনাময় অন্য জীবাণুগুলোকে আড়াল করে রাখছে। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পল জেনসেন বলেন, প্রকৃতিতে আরও অনেক ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যেগুলো স্বাভাবিকভাবে প্লাস্টিক বা অন্যান্য বর্জ্য খেয়ে তা ভিন্ন কাজে রূপান্তর করতে পারে। এগুলো কাজে লাগালে হয়তো নতুন শিল্পবিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসছে ‘ভাইব্রিও ন্যাট্রিজেনস’ নামের এক ব্যাকটেরিয়া। ১৯৬০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় জলাভূমি থেকে সংগৃহীত এই জীবাণু ই. কোলির চেয়েও দ্বিগুণ দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায় এবং জিন গ্রহণে আরও কার্যকর। গবেষকেরা মনে করেন, ভবিষ্যতে টেকসই জ্বালানি উৎপাদন, কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে জেট ফুয়েল বানানো কিংবা দুর্লভ ধাতু আহরণের মতো বড় চ্যালেঞ্জে এই জীবাণু কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত জেনেটিক সরঞ্জাম ও শিল্পমান প্রমাণের দিক থেকে ই. কোলিকেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী মানছেন বিজ্ঞানীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোদিজি—বিহারে কোনো বাংলাদেশি নেই, তবে দিল্লিতে আপনার বোন বসে আছেন: ওয়াইসি

বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, বৃষ্টি কবে— জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

পাঁচ দিন পর উদ্ধার বৈষম্যবিরোধী নেতা মামুন, হাসপাতালে ভর্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হবে তুরস্ক, চুক্তি স্বাক্ষর

জাতিসংঘে ইসরায়েলকে তুলোধুনো করলেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট, মাথায় চুমু দিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত