আজকের পত্রিকা ডেস্ক

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৮৪ সালে প্রথমবারের মতো একটি বিলুপ্ত প্রাণী ‘কোয়াগ্গা’র (জেব্রার মতো একটি প্রাণী) জাদুঘরের নমুনা থেকে ডিএনএ উদ্ধারের মাধ্যমে শুরু হয় প্রাচীন ডিএনএ গবেষণার যাত্রা। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন বিজ্ঞানীরা আরও পুরোনো প্রাণী ও উদ্ভিদের ডিএনএ বিশ্লেষণ করতে পারছেন। বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ উদ্ধার করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছরের এক বাস্তুতন্ত্র থেকে।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—ডিএনএ কি আরও বেশি দিন ধরে টিকে থাকতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিএনএর সংরক্ষণ নির্ভর করে পরিবেশগত অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। তাই, ডিএনএ আসলে কত দিন টিকে থাকতে পারে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে নেই।
ড্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন সেন্টার ফর ইভাল্যুশনারি হোলোজেনোমিকসের পরিচালক টম গিলবার্ট বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে—ডিএনএর আয়ু ’৯০-এর দশকের শুরু দিকে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে কম। তবে ২০০০-এর দশকের শুরুতে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘’৯০-এর দশক ছিল “জুরাসিক পার্ক” যুগ।’
কারণ ১৯৯০ সালে প্রকাশিত মাইকেল ক্রিকটনের বিজ্ঞান কল্পকাহিনি উপন্যাস জুরাসিক পার্কের মাধ্যমে এক প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও পাঠক প্রাচীন ডিএনএর সঙ্গে পরিচিত হন। উপন্যাসটিতে দেখা যায়, এক ধনকুবের ও জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ডাইনোসরের রক্ত খাওয়া অ্যাম্বারে (amber) আবদ্ধ-পতঙ্গ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে বিলুপ্ত প্রাণীদের ফিরিয়ে আনেন।
গিলবার্ট বলেন, ‘তখন মানুষ ক্রিটেশিয়াস যুগের (১৪ কোটি ৫০ লাখ-৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে) জীবাশ্মে ডিএনএ খুঁজতে শুরু করেছিলেন। তবে পরে দেখা গেল, সেগুলো আসলে নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ—অর্থাৎ ততটা পুরোনো নয়।’
২০১২ সালে গিলবার্ট একটি গবেষণায় অংশ নেন, যেখানে গবেষকেরা হাড়ে ডিএনএর অর্ধায়ু নির্ণয়ে পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন। তারা নিউজিল্যান্ডের বিলুপ্ত মোয়া পাখির ১৫৮টি হাড়ের মাইটোকন্ড্রিয়ার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখেন, ৫২১ বছর পর হাড়ের অর্ধেক ডিএনএ বন্ধন ভেঙে যায়।
এই গবেষণা অনুযায়ী, আদর্শ পরিবেশে ডিএনএ সর্বোচ্চ ৬৮ লাখ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, যা ‘জুরাসিক পার্ক’ বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট নয়।
ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য আদর্শ পরিবেশ
কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব-নৃতত্ত্ববিদ জেনিফার রাফ বলেন, ‘ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী পরিবেশ হলো ঠান্ডা, অন্ধকার, শুকনো এবং নতুন বা কম পুরোনো।’ এ কারণে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ পাওয়া গেছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছর পুরোনো তুষারাবৃত স্থানে। ১২ লাখ বছর পুরোনো সাইবেরিয়ার এক ম্যামথ থেকে সবচেয়ে পুরোনো এই পূর্ণ জিনোম (genome) উদ্ধার করা গেছে।
মানব ইতিহাসে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ কত দিনের? মানুষ মূলত গরম ও আর্দ্র এলাকায় বিবর্তিত হয়েছে। এসব অঞ্চলে ডিএনএ টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। ফলে আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষদের ডিএনএ পাওয়া খুব কঠিন।
১৯৯৭ সালে ৪০ হাজার বছর আগের এক নিয়ান্ডারথাল মানবের (Neanderthal) হাড় থেকে ডিএনএ উদ্ধার করা হয়। এই হাড় ১৮৫৬ সালে জার্মানির এক গুহা থেকে আবিষ্কৃত হয়। এরপর ২০২২ সালে স্পেনের আতাপুয়েরকা পর্বতের সিমা দে লোস হুয়েসোস (Sima de los Huesos) গুহায় একটি ঊরুর হাড় খুঁজে পাওয়া যায়। এর হাড় থেকে বিজ্ঞানীরা ৪ লাখ বছর পুরোনো এক মানব প্রজাতির ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন, যাঁরা নিয়ান্ডারথাল ও ডেনিসোভানদের পূর্বপুরুষ হতে পারেন।
মানুষের বিবর্তন ঘটেছে মূলত আফ্রিকায়। সেই অঞ্চলের পরিবেশে ডিএনএ টিকে থাকা বেশ কঠিন। এ জন্য সবচেয়ে পুরোনো আফ্রিকান মানব ডিএনএ মাত্র ২০ হাজার বছরের পুরোনো এবং সেটিও আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সের।
এখানেও শেষ নয়, বিজ্ঞানীরা ৩৫ লাখ বছর আগের মানব পূর্বপুরুষদের (যেমন: ‘লুসি’ নামে পরিচিত অস্ট্রালোপিথেসিন) নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এদের কাছ থেকে ডিএনএ পাওয়া ‘প্রায় অসম্ভব’ বলে মনে করেন রাফ।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না আমরা অস্ট্রালোপিথেসিনদের ডিএনএ কখনোই পাব।’ কারণ তারা আফ্রিকার গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বাস করত, যা ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য উপযোগী নয়। তবে রাফ বলেন, ‘আমি হোমো ইরেকটাস নিয়ে আরও আশাবাদী।’
কেননা, এই মানব প্রজাতির সন্ধান জর্জিয়া ও চীনে পাওয়া গেছে। এগুলো এমন জায়গা, যেখানে ডিএনএ সংরক্ষণের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।
বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ‘অর্থবহ’ ডিএনএ পাওয়া গেছে ২৪ লাখ বছর পুরোনো গ্রিনল্যান্ড থেকে। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আরও পুরোনো ডিএনএ পাওয়া যাবে, বিশেষ করে অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচ থেকে।
গিলবার্ট বলেন, ‘২০০৩ সালে যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করত ডিএনএ কত দিন টিকে থাকতে পারে, তখনকার ‘বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান’ অনুযায়ী বলতাম ১ লাখ বছর। এখন দেখা যাচ্ছে আমরা অন্তত ২০ গুণ বেশি পুরোনো ডিএনএ খুঁজে পেয়েছি।’
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৮৪ সালে প্রথমবারের মতো একটি বিলুপ্ত প্রাণী ‘কোয়াগ্গা’র (জেব্রার মতো একটি প্রাণী) জাদুঘরের নমুনা থেকে ডিএনএ উদ্ধারের মাধ্যমে শুরু হয় প্রাচীন ডিএনএ গবেষণার যাত্রা। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন বিজ্ঞানীরা আরও পুরোনো প্রাণী ও উদ্ভিদের ডিএনএ বিশ্লেষণ করতে পারছেন। বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ উদ্ধার করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছরের এক বাস্তুতন্ত্র থেকে।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—ডিএনএ কি আরও বেশি দিন ধরে টিকে থাকতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিএনএর সংরক্ষণ নির্ভর করে পরিবেশগত অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। তাই, ডিএনএ আসলে কত দিন টিকে থাকতে পারে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে নেই।
ড্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন সেন্টার ফর ইভাল্যুশনারি হোলোজেনোমিকসের পরিচালক টম গিলবার্ট বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে—ডিএনএর আয়ু ’৯০-এর দশকের শুরু দিকে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে কম। তবে ২০০০-এর দশকের শুরুতে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘’৯০-এর দশক ছিল “জুরাসিক পার্ক” যুগ।’
কারণ ১৯৯০ সালে প্রকাশিত মাইকেল ক্রিকটনের বিজ্ঞান কল্পকাহিনি উপন্যাস জুরাসিক পার্কের মাধ্যমে এক প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও পাঠক প্রাচীন ডিএনএর সঙ্গে পরিচিত হন। উপন্যাসটিতে দেখা যায়, এক ধনকুবের ও জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ডাইনোসরের রক্ত খাওয়া অ্যাম্বারে (amber) আবদ্ধ-পতঙ্গ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে বিলুপ্ত প্রাণীদের ফিরিয়ে আনেন।
গিলবার্ট বলেন, ‘তখন মানুষ ক্রিটেশিয়াস যুগের (১৪ কোটি ৫০ লাখ-৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে) জীবাশ্মে ডিএনএ খুঁজতে শুরু করেছিলেন। তবে পরে দেখা গেল, সেগুলো আসলে নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ—অর্থাৎ ততটা পুরোনো নয়।’
২০১২ সালে গিলবার্ট একটি গবেষণায় অংশ নেন, যেখানে গবেষকেরা হাড়ে ডিএনএর অর্ধায়ু নির্ণয়ে পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন। তারা নিউজিল্যান্ডের বিলুপ্ত মোয়া পাখির ১৫৮টি হাড়ের মাইটোকন্ড্রিয়ার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখেন, ৫২১ বছর পর হাড়ের অর্ধেক ডিএনএ বন্ধন ভেঙে যায়।
এই গবেষণা অনুযায়ী, আদর্শ পরিবেশে ডিএনএ সর্বোচ্চ ৬৮ লাখ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, যা ‘জুরাসিক পার্ক’ বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট নয়।
ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য আদর্শ পরিবেশ
কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব-নৃতত্ত্ববিদ জেনিফার রাফ বলেন, ‘ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী পরিবেশ হলো ঠান্ডা, অন্ধকার, শুকনো এবং নতুন বা কম পুরোনো।’ এ কারণে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ পাওয়া গেছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছর পুরোনো তুষারাবৃত স্থানে। ১২ লাখ বছর পুরোনো সাইবেরিয়ার এক ম্যামথ থেকে সবচেয়ে পুরোনো এই পূর্ণ জিনোম (genome) উদ্ধার করা গেছে।
মানব ইতিহাসে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ কত দিনের? মানুষ মূলত গরম ও আর্দ্র এলাকায় বিবর্তিত হয়েছে। এসব অঞ্চলে ডিএনএ টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। ফলে আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষদের ডিএনএ পাওয়া খুব কঠিন।
১৯৯৭ সালে ৪০ হাজার বছর আগের এক নিয়ান্ডারথাল মানবের (Neanderthal) হাড় থেকে ডিএনএ উদ্ধার করা হয়। এই হাড় ১৮৫৬ সালে জার্মানির এক গুহা থেকে আবিষ্কৃত হয়। এরপর ২০২২ সালে স্পেনের আতাপুয়েরকা পর্বতের সিমা দে লোস হুয়েসোস (Sima de los Huesos) গুহায় একটি ঊরুর হাড় খুঁজে পাওয়া যায়। এর হাড় থেকে বিজ্ঞানীরা ৪ লাখ বছর পুরোনো এক মানব প্রজাতির ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন, যাঁরা নিয়ান্ডারথাল ও ডেনিসোভানদের পূর্বপুরুষ হতে পারেন।
মানুষের বিবর্তন ঘটেছে মূলত আফ্রিকায়। সেই অঞ্চলের পরিবেশে ডিএনএ টিকে থাকা বেশ কঠিন। এ জন্য সবচেয়ে পুরোনো আফ্রিকান মানব ডিএনএ মাত্র ২০ হাজার বছরের পুরোনো এবং সেটিও আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সের।
এখানেও শেষ নয়, বিজ্ঞানীরা ৩৫ লাখ বছর আগের মানব পূর্বপুরুষদের (যেমন: ‘লুসি’ নামে পরিচিত অস্ট্রালোপিথেসিন) নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এদের কাছ থেকে ডিএনএ পাওয়া ‘প্রায় অসম্ভব’ বলে মনে করেন রাফ।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না আমরা অস্ট্রালোপিথেসিনদের ডিএনএ কখনোই পাব।’ কারণ তারা আফ্রিকার গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বাস করত, যা ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য উপযোগী নয়। তবে রাফ বলেন, ‘আমি হোমো ইরেকটাস নিয়ে আরও আশাবাদী।’
কেননা, এই মানব প্রজাতির সন্ধান জর্জিয়া ও চীনে পাওয়া গেছে। এগুলো এমন জায়গা, যেখানে ডিএনএ সংরক্ষণের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।
বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ‘অর্থবহ’ ডিএনএ পাওয়া গেছে ২৪ লাখ বছর পুরোনো গ্রিনল্যান্ড থেকে। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আরও পুরোনো ডিএনএ পাওয়া যাবে, বিশেষ করে অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচ থেকে।
গিলবার্ট বলেন, ‘২০০৩ সালে যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করত ডিএনএ কত দিন টিকে থাকতে পারে, তখনকার ‘বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান’ অনুযায়ী বলতাম ১ লাখ বছর। এখন দেখা যাচ্ছে আমরা অন্তত ২০ গুণ বেশি পুরোনো ডিএনএ খুঁজে পেয়েছি।’
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৮৪ সালে প্রথমবারের মতো একটি বিলুপ্ত প্রাণী ‘কোয়াগ্গা’র (জেব্রার মতো একটি প্রাণী) জাদুঘরের নমুনা থেকে ডিএনএ উদ্ধারের মাধ্যমে শুরু হয় প্রাচীন ডিএনএ গবেষণার যাত্রা। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন বিজ্ঞানীরা আরও পুরোনো প্রাণী ও উদ্ভিদের ডিএনএ বিশ্লেষণ করতে পারছেন। বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ উদ্ধার করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছরের এক বাস্তুতন্ত্র থেকে।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—ডিএনএ কি আরও বেশি দিন ধরে টিকে থাকতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিএনএর সংরক্ষণ নির্ভর করে পরিবেশগত অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। তাই, ডিএনএ আসলে কত দিন টিকে থাকতে পারে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে নেই।
ড্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন সেন্টার ফর ইভাল্যুশনারি হোলোজেনোমিকসের পরিচালক টম গিলবার্ট বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে—ডিএনএর আয়ু ’৯০-এর দশকের শুরু দিকে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে কম। তবে ২০০০-এর দশকের শুরুতে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘’৯০-এর দশক ছিল “জুরাসিক পার্ক” যুগ।’
কারণ ১৯৯০ সালে প্রকাশিত মাইকেল ক্রিকটনের বিজ্ঞান কল্পকাহিনি উপন্যাস জুরাসিক পার্কের মাধ্যমে এক প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও পাঠক প্রাচীন ডিএনএর সঙ্গে পরিচিত হন। উপন্যাসটিতে দেখা যায়, এক ধনকুবের ও জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ডাইনোসরের রক্ত খাওয়া অ্যাম্বারে (amber) আবদ্ধ-পতঙ্গ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে বিলুপ্ত প্রাণীদের ফিরিয়ে আনেন।
গিলবার্ট বলেন, ‘তখন মানুষ ক্রিটেশিয়াস যুগের (১৪ কোটি ৫০ লাখ-৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে) জীবাশ্মে ডিএনএ খুঁজতে শুরু করেছিলেন। তবে পরে দেখা গেল, সেগুলো আসলে নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ—অর্থাৎ ততটা পুরোনো নয়।’
২০১২ সালে গিলবার্ট একটি গবেষণায় অংশ নেন, যেখানে গবেষকেরা হাড়ে ডিএনএর অর্ধায়ু নির্ণয়ে পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন। তারা নিউজিল্যান্ডের বিলুপ্ত মোয়া পাখির ১৫৮টি হাড়ের মাইটোকন্ড্রিয়ার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখেন, ৫২১ বছর পর হাড়ের অর্ধেক ডিএনএ বন্ধন ভেঙে যায়।
এই গবেষণা অনুযায়ী, আদর্শ পরিবেশে ডিএনএ সর্বোচ্চ ৬৮ লাখ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, যা ‘জুরাসিক পার্ক’ বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট নয়।
ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য আদর্শ পরিবেশ
কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব-নৃতত্ত্ববিদ জেনিফার রাফ বলেন, ‘ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী পরিবেশ হলো ঠান্ডা, অন্ধকার, শুকনো এবং নতুন বা কম পুরোনো।’ এ কারণে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ পাওয়া গেছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছর পুরোনো তুষারাবৃত স্থানে। ১২ লাখ বছর পুরোনো সাইবেরিয়ার এক ম্যামথ থেকে সবচেয়ে পুরোনো এই পূর্ণ জিনোম (genome) উদ্ধার করা গেছে।
মানব ইতিহাসে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ কত দিনের? মানুষ মূলত গরম ও আর্দ্র এলাকায় বিবর্তিত হয়েছে। এসব অঞ্চলে ডিএনএ টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। ফলে আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষদের ডিএনএ পাওয়া খুব কঠিন।
১৯৯৭ সালে ৪০ হাজার বছর আগের এক নিয়ান্ডারথাল মানবের (Neanderthal) হাড় থেকে ডিএনএ উদ্ধার করা হয়। এই হাড় ১৮৫৬ সালে জার্মানির এক গুহা থেকে আবিষ্কৃত হয়। এরপর ২০২২ সালে স্পেনের আতাপুয়েরকা পর্বতের সিমা দে লোস হুয়েসোস (Sima de los Huesos) গুহায় একটি ঊরুর হাড় খুঁজে পাওয়া যায়। এর হাড় থেকে বিজ্ঞানীরা ৪ লাখ বছর পুরোনো এক মানব প্রজাতির ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন, যাঁরা নিয়ান্ডারথাল ও ডেনিসোভানদের পূর্বপুরুষ হতে পারেন।
মানুষের বিবর্তন ঘটেছে মূলত আফ্রিকায়। সেই অঞ্চলের পরিবেশে ডিএনএ টিকে থাকা বেশ কঠিন। এ জন্য সবচেয়ে পুরোনো আফ্রিকান মানব ডিএনএ মাত্র ২০ হাজার বছরের পুরোনো এবং সেটিও আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সের।
এখানেও শেষ নয়, বিজ্ঞানীরা ৩৫ লাখ বছর আগের মানব পূর্বপুরুষদের (যেমন: ‘লুসি’ নামে পরিচিত অস্ট্রালোপিথেসিন) নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এদের কাছ থেকে ডিএনএ পাওয়া ‘প্রায় অসম্ভব’ বলে মনে করেন রাফ।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না আমরা অস্ট্রালোপিথেসিনদের ডিএনএ কখনোই পাব।’ কারণ তারা আফ্রিকার গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বাস করত, যা ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য উপযোগী নয়। তবে রাফ বলেন, ‘আমি হোমো ইরেকটাস নিয়ে আরও আশাবাদী।’
কেননা, এই মানব প্রজাতির সন্ধান জর্জিয়া ও চীনে পাওয়া গেছে। এগুলো এমন জায়গা, যেখানে ডিএনএ সংরক্ষণের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।
বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ‘অর্থবহ’ ডিএনএ পাওয়া গেছে ২৪ লাখ বছর পুরোনো গ্রিনল্যান্ড থেকে। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আরও পুরোনো ডিএনএ পাওয়া যাবে, বিশেষ করে অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচ থেকে।
গিলবার্ট বলেন, ‘২০০৩ সালে যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করত ডিএনএ কত দিন টিকে থাকতে পারে, তখনকার ‘বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান’ অনুযায়ী বলতাম ১ লাখ বছর। এখন দেখা যাচ্ছে আমরা অন্তত ২০ গুণ বেশি পুরোনো ডিএনএ খুঁজে পেয়েছি।’
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৮৪ সালে প্রথমবারের মতো একটি বিলুপ্ত প্রাণী ‘কোয়াগ্গা’র (জেব্রার মতো একটি প্রাণী) জাদুঘরের নমুনা থেকে ডিএনএ উদ্ধারের মাধ্যমে শুরু হয় প্রাচীন ডিএনএ গবেষণার যাত্রা। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন বিজ্ঞানীরা আরও পুরোনো প্রাণী ও উদ্ভিদের ডিএনএ বিশ্লেষণ করতে পারছেন। বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ উদ্ধার করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছরের এক বাস্তুতন্ত্র থেকে।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—ডিএনএ কি আরও বেশি দিন ধরে টিকে থাকতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিএনএর সংরক্ষণ নির্ভর করে পরিবেশগত অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। তাই, ডিএনএ আসলে কত দিন টিকে থাকতে পারে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে নেই।
ড্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন সেন্টার ফর ইভাল্যুশনারি হোলোজেনোমিকসের পরিচালক টম গিলবার্ট বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে—ডিএনএর আয়ু ’৯০-এর দশকের শুরু দিকে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে কম। তবে ২০০০-এর দশকের শুরুতে যতটা ভাবা হতো, তার চেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘’৯০-এর দশক ছিল “জুরাসিক পার্ক” যুগ।’
কারণ ১৯৯০ সালে প্রকাশিত মাইকেল ক্রিকটনের বিজ্ঞান কল্পকাহিনি উপন্যাস জুরাসিক পার্কের মাধ্যমে এক প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও পাঠক প্রাচীন ডিএনএর সঙ্গে পরিচিত হন। উপন্যাসটিতে দেখা যায়, এক ধনকুবের ও জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ডাইনোসরের রক্ত খাওয়া অ্যাম্বারে (amber) আবদ্ধ-পতঙ্গ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে বিলুপ্ত প্রাণীদের ফিরিয়ে আনেন।
গিলবার্ট বলেন, ‘তখন মানুষ ক্রিটেশিয়াস যুগের (১৪ কোটি ৫০ লাখ-৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে) জীবাশ্মে ডিএনএ খুঁজতে শুরু করেছিলেন। তবে পরে দেখা গেল, সেগুলো আসলে নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ—অর্থাৎ ততটা পুরোনো নয়।’
২০১২ সালে গিলবার্ট একটি গবেষণায় অংশ নেন, যেখানে গবেষকেরা হাড়ে ডিএনএর অর্ধায়ু নির্ণয়ে পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন। তারা নিউজিল্যান্ডের বিলুপ্ত মোয়া পাখির ১৫৮টি হাড়ের মাইটোকন্ড্রিয়ার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখেন, ৫২১ বছর পর হাড়ের অর্ধেক ডিএনএ বন্ধন ভেঙে যায়।
এই গবেষণা অনুযায়ী, আদর্শ পরিবেশে ডিএনএ সর্বোচ্চ ৬৮ লাখ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, যা ‘জুরাসিক পার্ক’ বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট নয়।
ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য আদর্শ পরিবেশ
কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব-নৃতত্ত্ববিদ জেনিফার রাফ বলেন, ‘ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী পরিবেশ হলো ঠান্ডা, অন্ধকার, শুকনো এবং নতুন বা কম পুরোনো।’ এ কারণে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ পাওয়া গেছে গ্রিনল্যান্ডের ২৪ লাখ বছর পুরোনো তুষারাবৃত স্থানে। ১২ লাখ বছর পুরোনো সাইবেরিয়ার এক ম্যামথ থেকে সবচেয়ে পুরোনো এই পূর্ণ জিনোম (genome) উদ্ধার করা গেছে।
মানব ইতিহাসে সবচেয়ে পুরোনো ডিএনএ কত দিনের? মানুষ মূলত গরম ও আর্দ্র এলাকায় বিবর্তিত হয়েছে। এসব অঞ্চলে ডিএনএ টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। ফলে আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষদের ডিএনএ পাওয়া খুব কঠিন।
১৯৯৭ সালে ৪০ হাজার বছর আগের এক নিয়ান্ডারথাল মানবের (Neanderthal) হাড় থেকে ডিএনএ উদ্ধার করা হয়। এই হাড় ১৮৫৬ সালে জার্মানির এক গুহা থেকে আবিষ্কৃত হয়। এরপর ২০২২ সালে স্পেনের আতাপুয়েরকা পর্বতের সিমা দে লোস হুয়েসোস (Sima de los Huesos) গুহায় একটি ঊরুর হাড় খুঁজে পাওয়া যায়। এর হাড় থেকে বিজ্ঞানীরা ৪ লাখ বছর পুরোনো এক মানব প্রজাতির ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন, যাঁরা নিয়ান্ডারথাল ও ডেনিসোভানদের পূর্বপুরুষ হতে পারেন।
মানুষের বিবর্তন ঘটেছে মূলত আফ্রিকায়। সেই অঞ্চলের পরিবেশে ডিএনএ টিকে থাকা বেশ কঠিন। এ জন্য সবচেয়ে পুরোনো আফ্রিকান মানব ডিএনএ মাত্র ২০ হাজার বছরের পুরোনো এবং সেটিও আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সের।
এখানেও শেষ নয়, বিজ্ঞানীরা ৩৫ লাখ বছর আগের মানব পূর্বপুরুষদের (যেমন: ‘লুসি’ নামে পরিচিত অস্ট্রালোপিথেসিন) নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এদের কাছ থেকে ডিএনএ পাওয়া ‘প্রায় অসম্ভব’ বলে মনে করেন রাফ।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না আমরা অস্ট্রালোপিথেসিনদের ডিএনএ কখনোই পাব।’ কারণ তারা আফ্রিকার গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বাস করত, যা ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য উপযোগী নয়। তবে রাফ বলেন, ‘আমি হোমো ইরেকটাস নিয়ে আরও আশাবাদী।’
কেননা, এই মানব প্রজাতির সন্ধান জর্জিয়া ও চীনে পাওয়া গেছে। এগুলো এমন জায়গা, যেখানে ডিএনএ সংরক্ষণের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।
বর্তমানে সবচেয়ে পুরোনো ‘অর্থবহ’ ডিএনএ পাওয়া গেছে ২৪ লাখ বছর পুরোনো গ্রিনল্যান্ড থেকে। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আরও পুরোনো ডিএনএ পাওয়া যাবে, বিশেষ করে অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচ থেকে।
গিলবার্ট বলেন, ‘২০০৩ সালে যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করত ডিএনএ কত দিন টিকে থাকতে পারে, তখনকার ‘বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান’ অনুযায়ী বলতাম ১ লাখ বছর। এখন দেখা যাচ্ছে আমরা অন্তত ২০ গুণ বেশি পুরোনো ডিএনএ খুঁজে পেয়েছি।’
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
১২ ঘণ্টা আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
২ দিন আগে
এত দিন ধরে বিজ্ঞানীরা মেনে এসেছেন প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে মানুষ আগুন তৈরি বা ব্যবহার করতে শিখেছিল। কিন্তু নতুন একটি আবিষ্কার সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাফোক অঞ্চলের বার্নহাম এলাকায় পাওয়া প্রমাণ বলছে, মানুষ প্রায় ৪ লাখ বছর আগে আগুন তৈরি করত—অর্থাৎ পূর্ব ধারণার তুলনায়...
৪ দিন আগে
‘স্পার্ম ডোনার’ বা শুক্রাণুদাতার ধারণাটি বিশ্বে নতুন নয়। অনেক পরিবারই শুক্রাণুদাতার সাহায্য নিয়ে বাবা-মা হয়েছেন। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে শুক্রাণু দান করে থাকেন, যাতে এর মাধ্যমে কোথাও কোনো একটি পরিবার সন্তানের মুখ দেখতে পায়।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএ–এর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
২ দিন আগে
এত দিন ধরে বিজ্ঞানীরা মেনে এসেছেন প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে মানুষ আগুন তৈরি বা ব্যবহার করতে শিখেছিল। কিন্তু নতুন একটি আবিষ্কার সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাফোক অঞ্চলের বার্নহাম এলাকায় পাওয়া প্রমাণ বলছে, মানুষ প্রায় ৪ লাখ বছর আগে আগুন তৈরি করত—অর্থাৎ পূর্ব ধারণার তুলনায়...
৪ দিন আগে
‘স্পার্ম ডোনার’ বা শুক্রাণুদাতার ধারণাটি বিশ্বে নতুন নয়। অনেক পরিবারই শুক্রাণুদাতার সাহায্য নিয়ে বাবা-মা হয়েছেন। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে শুক্রাণু দান করে থাকেন, যাতে এর মাধ্যমে কোথাও কোনো একটি পরিবার সন্তানের মুখ দেখতে পায়।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএ–এর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
১২ ঘণ্টা আগে
এত দিন ধরে বিজ্ঞানীরা মেনে এসেছেন প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে মানুষ আগুন তৈরি বা ব্যবহার করতে শিখেছিল। কিন্তু নতুন একটি আবিষ্কার সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাফোক অঞ্চলের বার্নহাম এলাকায় পাওয়া প্রমাণ বলছে, মানুষ প্রায় ৪ লাখ বছর আগে আগুন তৈরি করত—অর্থাৎ পূর্ব ধারণার তুলনায়...
৪ দিন আগে
‘স্পার্ম ডোনার’ বা শুক্রাণুদাতার ধারণাটি বিশ্বে নতুন নয়। অনেক পরিবারই শুক্রাণুদাতার সাহায্য নিয়ে বাবা-মা হয়েছেন। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে শুক্রাণু দান করে থাকেন, যাতে এর মাধ্যমে কোথাও কোনো একটি পরিবার সন্তানের মুখ দেখতে পায়।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

এত দিন ধরে বিজ্ঞানীরা মেনে এসেছেন প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে মানুষ আগুন তৈরি বা ব্যবহার করতে শিখেছিল। কিন্তু নতুন একটি আবিষ্কার সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাফোক অঞ্চলের বার্নহাম এলাকায় পাওয়া প্রমাণ বলছে, মানুষ প্রায় ৪ লাখ বছর আগে আগুন তৈরি করত—অর্থাৎ পূর্ব ধারণার তুলনায় প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার বছর আগেই মানুষ আগুন জ্বালাতে শিখেছিল।
গবেষকদের পাওয়া প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে পোড়া মাটি, আগুনে ফেটে যাওয়া হাতকুঠার এবং দুটি লৌহ সালফাইড (পাইরাইট) খণ্ড, যা ফ্লিন্টের সঙ্গে আঘাত করলে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইরাইট ওই এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ দূর অঞ্চল থেকে এটি সংগ্রহ করা হয়েছিল আগুন জ্বালানোর উদ্দেশ্যে।
ব্রিটিশ মিউজিয়ামের প্রত্নতাত্ত্বিক ড. রব ডেভিস বলেন, ‘মানব ইতিহাসে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও তৈরি করার ক্ষমতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক। এটি শুধু আমাদের বাঁচতে সাহায্য করেনি, বরং সামাজিক যোগাযোগ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিকার প্রতিরোধ এবং ভাষার বিকাশেও ভূমিকা রেখেছে।’
গবেষকদের ধারণা, এই আগুন সৃষ্টি করেছিল সম্ভবত প্রাচীন নিয়ানডারথাল প্রজাতির মানুষ। কারণ ‘হোমো সেপিয়েন্স’ তথা বর্তমান মানুষের প্রজাতি তখনো আফ্রিকার বাইরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেনি।
এই আবিষ্কারটি মানব বিবর্তনের ইতিহাসে আগুনের ভূমিকা আরও গভীর ও বিস্তৃতভাবে বিশ্লেষণের সুযোগ তৈরি করেছে। গবেষক দলটির আরেক সদস্য প্রফেসর ক্রিস স্ট্রিঙ্গার বলেন, ‘এটি শুধু একটি আগুনের চিহ্ন নয়—এটি প্রমাণ করে আগুন ছিল তাদের জীবনযাপনের কেন্দ্রবিন্দু—খাবার ভাগাভাগি, গল্প বলা, মিথ তৈরির জায়গা।’
গবেষণা প্রতিবেদনটি ‘নেচার’ বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আবিষ্কার মানব সভ্যতার শুরুর কাহিনি বদলে দিতে পারে এবং আরও পুরোনো আগুন ব্যবহারের প্রমাণ খুঁজে পাওয়ারও পথ খুলে দিয়েছে।

এত দিন ধরে বিজ্ঞানীরা মেনে এসেছেন প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে মানুষ আগুন তৈরি বা ব্যবহার করতে শিখেছিল। কিন্তু নতুন একটি আবিষ্কার সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাফোক অঞ্চলের বার্নহাম এলাকায় পাওয়া প্রমাণ বলছে, মানুষ প্রায় ৪ লাখ বছর আগে আগুন তৈরি করত—অর্থাৎ পূর্ব ধারণার তুলনায় প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার বছর আগেই মানুষ আগুন জ্বালাতে শিখেছিল।
গবেষকদের পাওয়া প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে পোড়া মাটি, আগুনে ফেটে যাওয়া হাতকুঠার এবং দুটি লৌহ সালফাইড (পাইরাইট) খণ্ড, যা ফ্লিন্টের সঙ্গে আঘাত করলে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইরাইট ওই এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ দূর অঞ্চল থেকে এটি সংগ্রহ করা হয়েছিল আগুন জ্বালানোর উদ্দেশ্যে।
ব্রিটিশ মিউজিয়ামের প্রত্নতাত্ত্বিক ড. রব ডেভিস বলেন, ‘মানব ইতিহাসে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও তৈরি করার ক্ষমতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক। এটি শুধু আমাদের বাঁচতে সাহায্য করেনি, বরং সামাজিক যোগাযোগ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিকার প্রতিরোধ এবং ভাষার বিকাশেও ভূমিকা রেখেছে।’
গবেষকদের ধারণা, এই আগুন সৃষ্টি করেছিল সম্ভবত প্রাচীন নিয়ানডারথাল প্রজাতির মানুষ। কারণ ‘হোমো সেপিয়েন্স’ তথা বর্তমান মানুষের প্রজাতি তখনো আফ্রিকার বাইরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেনি।
এই আবিষ্কারটি মানব বিবর্তনের ইতিহাসে আগুনের ভূমিকা আরও গভীর ও বিস্তৃতভাবে বিশ্লেষণের সুযোগ তৈরি করেছে। গবেষক দলটির আরেক সদস্য প্রফেসর ক্রিস স্ট্রিঙ্গার বলেন, ‘এটি শুধু একটি আগুনের চিহ্ন নয়—এটি প্রমাণ করে আগুন ছিল তাদের জীবনযাপনের কেন্দ্রবিন্দু—খাবার ভাগাভাগি, গল্প বলা, মিথ তৈরির জায়গা।’
গবেষণা প্রতিবেদনটি ‘নেচার’ বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আবিষ্কার মানব সভ্যতার শুরুর কাহিনি বদলে দিতে পারে এবং আরও পুরোনো আগুন ব্যবহারের প্রমাণ খুঁজে পাওয়ারও পথ খুলে দিয়েছে।

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএ–এর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
১২ ঘণ্টা আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
২ দিন আগে
‘স্পার্ম ডোনার’ বা শুক্রাণুদাতার ধারণাটি বিশ্বে নতুন নয়। অনেক পরিবারই শুক্রাণুদাতার সাহায্য নিয়ে বাবা-মা হয়েছেন। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে শুক্রাণু দান করে থাকেন, যাতে এর মাধ্যমে কোথাও কোনো একটি পরিবার সন্তানের মুখ দেখতে পায়।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

‘স্পার্ম ডোনার’ বা শুক্রাণুদাতার ধারণাটি বিশ্বে নতুন নয়। অনেক পরিবারই শুক্রাণুদাতার সাহায্য নিয়ে বাবা-মা হয়েছেন। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে শুক্রাণু দান করে থাকেন, যাতে এর মাধ্যমে কোথাও কোনো একটি পরিবার সন্তানের মুখ দেখতে পায়।
এমনই একজন দাতার শুক্রাণুর মাধ্যমে ইউরোপজুড়ে অন্তত ১৯৭টি শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, ওই ব্যক্তির দেহে ছিল এমন এক জিনগত মিউটেশন যার কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুক্রাণুদাতা এ বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিলেন। এক অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।

ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে বিবিসিসহ মোট ১৪টি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এই অনুসন্ধান পরিচালনা করেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই দাতার শুক্রাণু যুক্তরাজ্যের কোনো ক্লিনিকে সরবরাহ করা হয়নি। তবে ডেনমার্কে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার অংশ হিসেবে ব্রিটেনের অল্পসংখ্যক পরিবার ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। ওই পরিবারগুলোকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে।
ওই ব্যক্তির শুক্রাণু থেকে জন্ম হওয়া কিছু শিশু এরইমধ্যে মারা গিয়েছে। আর যারা উত্তরাধিকারসূত্রে এ মিউটেশন পেয়েছে, তাদের খুব কম সংখ্যকই আজীবন ক্যানসার এড়াতে সক্ষম হবে।
শুক্রাণু সরবরাহকারী ডেনমার্কের ‘ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক’ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের প্রতি তাদের গভীর সহমর্মিতা রয়েছে। কিছু দেশে একই দাতার শুক্রাণু দিয়ে অস্বাভাবিকভাবে বেশি সংখ্যক শিশুর জন্ম দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেছে স্পার্ম ব্যাংকটি।
একজন বেনামি দাতার কাছ থেকে এসেছিল এই শুক্রাণুগুলো। পড়াশোনার খরচ জোগাতে ২০০৫ সাল থেকে তিনি শুক্রাণু দান করা শুরু করেন। প্রায় ১৭ বছর ধরে তাঁর শুক্রাণুর মাধ্যমে নারীরা মা হয়েছেন।

বিবিসি জানায়, শুক্রাণু দানের জন্য প্রয়োজনীয় সব স্ক্রিনিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে শারীরিকভাবে সুস্থও ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ওই ব্যক্তি মায়ের গর্ভে থাকাকালেই তাঁর দেহের কিছু কোষের ডিএনএ-তে এই মিউটেশন ঘটে।
এই মিউটেশন তাঁর শরীরের টিপি ৫৩ (TP 53) জিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা শরীরের কোষকে ক্যানসারগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দাতার দেহের বেশির ভাগ কোষে বিপজ্জনক টিপি ৫৩ মিউটেশন নেই, তবে তাঁর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ শুক্রাণুতে এ মিউটেশন থাকতে পারে।
যেসব শুক্রাণুতে মিউটেশন আছে, সেগুলো ব্যবহার করে জন্ম নেওয়া যে কোনো সন্তানের দেহের প্রতিটি কোষেই এ জিনগত ত্রুটি থাকবে। এটি লি-ফ্রাউমেনি সিনড্রোম নামে পরিচিত।
এ অবস্থায় ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ করে শৈশব থেকেই ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে এবং পরবর্তী সময়ে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
লন্ডনের ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চের ক্যানসার জেনেটিসিস্ট অধ্যাপক ক্লেয়ার টার্নবুল বিবিসিকে বলেন, ‘এটি এক ভয়াবহ খবর। একটি পরিবারের জন্য এই খবর অত্যন্ত কষ্টকর। আজীবন এ ঝুঁকি বয়ে নিয়ে বাঁচতে হয়, এটি নিঃসন্দেহে বেশ বড় ধাক্কা।’
এই সিনড্রোমে আক্রান্তদের প্রতি বছর পুরো শরীর ও মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যানের পাশাপাশি পেটের আলট্রাসাউন্ড করাতে হয়, যাতে কোনো টিউমার থাকলে দ্রুত শনাক্ত করা যায়। ঝুঁকি কমাতে স্তন অপসারণের পথও বেছে নেন অনেক নারী।
ওই শুক্রাণুদাতা নিজে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ সংক্রান্ত কোনো সমস্যায় ভুগছেন না বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক। তারা আরও জানায়, এ ধরনের মিউটেশন জেনেটিক স্ক্রিনিংয়ে আগাম ধরা যায় না। সমস্যাটি শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই দাতাকে ‘তাৎক্ষণিকভাবে ব্লক’ করা হয়েছে।
শুক্রাণুদানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে ক্যানসার ধরা পড়া নিয়ে এ বছর ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব হিউম্যান জেনেটিকসের সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চিকিৎসকেরা। তারা জানান, ওই সম্মেলনের আগ পর্যন্ত ওই দাতার শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে ৬৭ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যাদের মধ্যে ২৩ জনের দেহে বিপজ্জনক ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১০ শিশুর এরইমধ্যে ক্যানসার নির্ণয় হয়েছিল।
বিবিসি জানায়, স্বাধীন তথ্য অধিকার আইনের আবেদনের ভিত্তিতে প্রাপ্ত নথি এবং চিকিৎসক ও রোগীদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা গেছে, ওই দাতার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তানের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
অনুসন্ধান বলছে, সংখ্যাটি কমপক্ষে ১৯৭ জন। তবে এটিই চূড়ান্ত হিসাব নয়, কারণ সব দেশের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ঠিক কতজন শিশু ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করা ওই মিউটেশনটি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছে সেটি এখনো অজানা।
ফ্রান্সের রোয়াঁ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ক্যানসার জেনেটিসিস্ট ড. এডউইগ ক্যাসপার এই অনুসন্ধানের প্রাথমিক তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন বহু শিশু রয়েছে, যাদের ইতিমধ্যেই ক্যানসার দেখা দিয়েছে। এমনকি কিছু শিশুর সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই ধরনের ক্যানসার হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন খুব অল্প বয়সেই মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন শুক্রাণুদাতার মাধ্যমে সর্বোচ্চ কতটি শিশুর জন্ম দেওয়া যাবে তার সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া দরকার। আমি বলছি না, যেসব দাতার জিনোম পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু যদি কারও কোনো ত্রুটি থাকে তাহলে জিনগত রোগ ছড়িয়ে পড়ার অস্বাভাবিক উদাহরণ তৈরি হবে। তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী হলাম আমরা। ইউরোপে প্রত্যেক পুরুষের তো ৭৫টি সন্তান থাকে না!’
১৪ বছর আগে বেলজিয়ামে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার মাধ্যমে ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ফ্রান্সের এক ‘সিংগেল মাদার’ সেলিন (ছদ্মনাম)। তাঁর সন্তানের দেহেও মিউটেশনটি পাওয়া গেছে। তিনি জানান, বেলজিয়ামের যে ফার্টিলিটি ক্লিনিকে তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন সেখান থেকে একদিন ফোন করে তাঁর মেয়েকে দ্রুত স্ক্রিনিং করতে বলা হয়।
সেলিন বলেন, ‘দাতার প্রতি আমার একটুও ক্ষোভ নেই।’ তবে এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য যে তাঁকে এমন শুক্রাণু দেওয়া হয়েছিল ঠিকমতো পরীক্ষিত ছিল না, নিরাপদ ছিল না এবং ঝুঁকি বহন করছিল।
এই ক্যানসারের চিন্তা সারাজীবনই তাড়া করে বেড়াবে বলে মনে করেন সেলিন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কখন, জানি না কোন ধরনের বা কয়টি। তবে আমি বুঝতে পারছি সম্ভাবনা খুব বেশি। আর যখনই এটা হবে, আমরা লড়ব। আর যদি বারবার লড়তে হয়, আমরা প্রতিবার লড়াই করব।’
১৪টি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ওই দাতার শুক্রাণু ১৪টি দেশের ৬৭টি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে শুক্রাণুটি যুক্তরাজ্যের কোনো ক্লিনিকে বিক্রি করা হয়নি।
তবে এই অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে ডেনমার্কের কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের হিউম্যান ফার্টিলাইজেশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি অথরিটি (এইচএফইএ)-কে জানিয়েছে, ব্রিটিশ নারীরা ডেনমার্কে গিয়ে ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে ফার্টিলিটি চিকিৎসা নিয়েছেন। আর ওই নারীদের এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
এইচএফইএ-এর প্রধান নির্বাহী পিটার থম্পসন জানিয়েছেন, ‘খুব অল্পসংখ্যক নারী এতে প্রভাবিত হয়েছেন এবং তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া ডেনমার্কের ক্লিনিক থেকে দাতার বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি না, যুক্তরাজ্যের কোনো নারী অন্য দেশে গিয়ে এ সংক্রান্ত চিকিৎসা নিয়েছিলেন কিনা, যেখানে ওই দাতার শুক্রাণু সরবরাহ করা হয়েছিল।’
ওই দাতার পরিচয় প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিবিসিসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলো। তারা বলছে, তিনি সৎ মনোভাবের সঙ্গে দান করেছিলেন এবং যুক্তরাজ্যের পরিচিত সব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক দাতার শুক্রাণু কতবার ব্যবহার করা যেতে পারে এ নিয়ে কোনো বৈশ্বিক আইন নেই। তবে পৃথক পৃথকভাবে দেশগুলো নিজেদের সীমা নির্ধারণ করে থাকে।
কিছু দেশে ‘দুর্ভাগ্যবশত’ এই সীমা লঙ্ঘন হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক। তারা জানায়, এ নিয়ে ডেনমার্ক ও বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, বেলজিয়ামে একজন শুক্রাণুদাতা সাধারণত ছয়টি পরিবারকে শুক্রাণু দিতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, ৩৮ জন ভিন্ন নারী ওই দাতার মাধ্যমে ৫৩টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
অধ্যাপক অ্যালান পেসি শেফিল্ড স্পার্ম ব্যাংক পরিচালনা করতেন। বর্তমানে তিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব বায়োলজি, মেডিসিন অ্যান্ড হেলথের ডেপুটি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, দেশগুলো বড় আন্তর্জাতিক স্পার্ম ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্যের অর্ধেক শুক্রাণু এখন আমদানি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বড় আন্তর্জাতিক স্পার্ম ব্যাংক থেকে আমদানি করতে হয়, যারা একই সঙ্গে এটি অন্যান্য দেশেও বিক্রি করে, কারণ এভাবেই তারা অর্থ উপার্জন করে। এখান থেকেই সমস্যা শুরু হয়, কারণ একজনের স্পার্ম কতবার ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক আইন নেই।’
অধ্যাপক অ্যালান পেসি শেফিল্ড জানান, শুক্রাণুতে ক্যানসারের ঝুঁকি থাকার ঘটনা সবার জন্যই ভয়ঙ্কর। শুক্রাণুকে সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘সব কিছু স্ক্রিন করা সম্ভব নয়। বর্তমান স্ক্রিনিং ব্যবস্থায় যারা শুক্রাণুদাতা হতে আবেদন করে, আমরা মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশকে গ্রহণ করি। তাই যদি আরও কঠোর করি, তবে আর কোনো শুক্রাণুদাতা বাকি থাকবে না।’
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব হিউম্যান রিপ্রোডাকশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি প্রতি দাতার জন্য সীমা ৫০টি পরিবার পর্যন্ত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তারা বলেছে, এতে বিরল জিনগত রোগ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়ার ঝুঁকি কমবে না। বরং এটি সেই শিশুদের কল্যাণের জন্য ভালো হবে, যারা জানবে তারা শত শত অর্ধ-ভাইবোনের (হাফ-সিবলিংস) মধ্যে একজন।
বন্ধ্যাত্ব ও জিনগত সমস্যায় আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা স্বতন্ত্র দাতব্য সংস্থা প্রোগ্রেস এডুকেশনাল ট্রাস্টের পরিচালক সারাহ নর্ক্রস বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী একই দাতার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া পরিবারের সংখ্যা কমানোর জন্য আরও কাজ করা প্রয়োজন। আমরা সম্পূর্ণরূপে জানি না, এই শত শত অর্ধ-ভাইবোন থাকা সামাজিক ও মানসিকভাবে কী প্রভাব ফেলবে। তবে এটি মানসিক আঘাতও সৃষ্টি করতে পারে।’
তবে ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক বলছে, এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে এটাও মনে রাখতে হবে যে দান করা শুক্রাণু ছাড়া হাজার হাজার নারী ও দম্পতির সন্তান হওয়ার সুযোগ নেই।
তারা বলছে, তবে শুক্রাণুদাতাদের চিকিৎসাগত নির্দেশিকার ভিত্তিতে স্ক্রিনিং নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে দাতার শুক্রাণুর সাহায্যে সন্তান নেওয়া তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হবে।’
সারাহ নর্ক্রস বলেন, যদি আপনি শুক্রাণুদাতার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের সংখ্যা বিবেচনা করেন, তাহলে এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত বিরল।

‘স্পার্ম ডোনার’ বা শুক্রাণুদাতার ধারণাটি বিশ্বে নতুন নয়। অনেক পরিবারই শুক্রাণুদাতার সাহায্য নিয়ে বাবা-মা হয়েছেন। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে শুক্রাণু দান করে থাকেন, যাতে এর মাধ্যমে কোথাও কোনো একটি পরিবার সন্তানের মুখ দেখতে পায়।
এমনই একজন দাতার শুক্রাণুর মাধ্যমে ইউরোপজুড়ে অন্তত ১৯৭টি শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, ওই ব্যক্তির দেহে ছিল এমন এক জিনগত মিউটেশন যার কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুক্রাণুদাতা এ বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিলেন। এক অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।

ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে বিবিসিসহ মোট ১৪টি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এই অনুসন্ধান পরিচালনা করেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই দাতার শুক্রাণু যুক্তরাজ্যের কোনো ক্লিনিকে সরবরাহ করা হয়নি। তবে ডেনমার্কে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার অংশ হিসেবে ব্রিটেনের অল্পসংখ্যক পরিবার ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। ওই পরিবারগুলোকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে।
ওই ব্যক্তির শুক্রাণু থেকে জন্ম হওয়া কিছু শিশু এরইমধ্যে মারা গিয়েছে। আর যারা উত্তরাধিকারসূত্রে এ মিউটেশন পেয়েছে, তাদের খুব কম সংখ্যকই আজীবন ক্যানসার এড়াতে সক্ষম হবে।
শুক্রাণু সরবরাহকারী ডেনমার্কের ‘ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক’ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের প্রতি তাদের গভীর সহমর্মিতা রয়েছে। কিছু দেশে একই দাতার শুক্রাণু দিয়ে অস্বাভাবিকভাবে বেশি সংখ্যক শিশুর জন্ম দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেছে স্পার্ম ব্যাংকটি।
একজন বেনামি দাতার কাছ থেকে এসেছিল এই শুক্রাণুগুলো। পড়াশোনার খরচ জোগাতে ২০০৫ সাল থেকে তিনি শুক্রাণু দান করা শুরু করেন। প্রায় ১৭ বছর ধরে তাঁর শুক্রাণুর মাধ্যমে নারীরা মা হয়েছেন।

বিবিসি জানায়, শুক্রাণু দানের জন্য প্রয়োজনীয় সব স্ক্রিনিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে শারীরিকভাবে সুস্থও ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ওই ব্যক্তি মায়ের গর্ভে থাকাকালেই তাঁর দেহের কিছু কোষের ডিএনএ-তে এই মিউটেশন ঘটে।
এই মিউটেশন তাঁর শরীরের টিপি ৫৩ (TP 53) জিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা শরীরের কোষকে ক্যানসারগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দাতার দেহের বেশির ভাগ কোষে বিপজ্জনক টিপি ৫৩ মিউটেশন নেই, তবে তাঁর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ শুক্রাণুতে এ মিউটেশন থাকতে পারে।
যেসব শুক্রাণুতে মিউটেশন আছে, সেগুলো ব্যবহার করে জন্ম নেওয়া যে কোনো সন্তানের দেহের প্রতিটি কোষেই এ জিনগত ত্রুটি থাকবে। এটি লি-ফ্রাউমেনি সিনড্রোম নামে পরিচিত।
এ অবস্থায় ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ করে শৈশব থেকেই ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে এবং পরবর্তী সময়ে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
লন্ডনের ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চের ক্যানসার জেনেটিসিস্ট অধ্যাপক ক্লেয়ার টার্নবুল বিবিসিকে বলেন, ‘এটি এক ভয়াবহ খবর। একটি পরিবারের জন্য এই খবর অত্যন্ত কষ্টকর। আজীবন এ ঝুঁকি বয়ে নিয়ে বাঁচতে হয়, এটি নিঃসন্দেহে বেশ বড় ধাক্কা।’
এই সিনড্রোমে আক্রান্তদের প্রতি বছর পুরো শরীর ও মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যানের পাশাপাশি পেটের আলট্রাসাউন্ড করাতে হয়, যাতে কোনো টিউমার থাকলে দ্রুত শনাক্ত করা যায়। ঝুঁকি কমাতে স্তন অপসারণের পথও বেছে নেন অনেক নারী।
ওই শুক্রাণুদাতা নিজে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ সংক্রান্ত কোনো সমস্যায় ভুগছেন না বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক। তারা আরও জানায়, এ ধরনের মিউটেশন জেনেটিক স্ক্রিনিংয়ে আগাম ধরা যায় না। সমস্যাটি শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই দাতাকে ‘তাৎক্ষণিকভাবে ব্লক’ করা হয়েছে।
শুক্রাণুদানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে ক্যানসার ধরা পড়া নিয়ে এ বছর ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব হিউম্যান জেনেটিকসের সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চিকিৎসকেরা। তারা জানান, ওই সম্মেলনের আগ পর্যন্ত ওই দাতার শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে ৬৭ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যাদের মধ্যে ২৩ জনের দেহে বিপজ্জনক ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১০ শিশুর এরইমধ্যে ক্যানসার নির্ণয় হয়েছিল।
বিবিসি জানায়, স্বাধীন তথ্য অধিকার আইনের আবেদনের ভিত্তিতে প্রাপ্ত নথি এবং চিকিৎসক ও রোগীদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা গেছে, ওই দাতার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তানের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
অনুসন্ধান বলছে, সংখ্যাটি কমপক্ষে ১৯৭ জন। তবে এটিই চূড়ান্ত হিসাব নয়, কারণ সব দেশের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ঠিক কতজন শিশু ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করা ওই মিউটেশনটি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছে সেটি এখনো অজানা।
ফ্রান্সের রোয়াঁ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ক্যানসার জেনেটিসিস্ট ড. এডউইগ ক্যাসপার এই অনুসন্ধানের প্রাথমিক তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন বহু শিশু রয়েছে, যাদের ইতিমধ্যেই ক্যানসার দেখা দিয়েছে। এমনকি কিছু শিশুর সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই ধরনের ক্যানসার হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন খুব অল্প বয়সেই মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন শুক্রাণুদাতার মাধ্যমে সর্বোচ্চ কতটি শিশুর জন্ম দেওয়া যাবে তার সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া দরকার। আমি বলছি না, যেসব দাতার জিনোম পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু যদি কারও কোনো ত্রুটি থাকে তাহলে জিনগত রোগ ছড়িয়ে পড়ার অস্বাভাবিক উদাহরণ তৈরি হবে। তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী হলাম আমরা। ইউরোপে প্রত্যেক পুরুষের তো ৭৫টি সন্তান থাকে না!’
১৪ বছর আগে বেলজিয়ামে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার মাধ্যমে ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ফ্রান্সের এক ‘সিংগেল মাদার’ সেলিন (ছদ্মনাম)। তাঁর সন্তানের দেহেও মিউটেশনটি পাওয়া গেছে। তিনি জানান, বেলজিয়ামের যে ফার্টিলিটি ক্লিনিকে তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন সেখান থেকে একদিন ফোন করে তাঁর মেয়েকে দ্রুত স্ক্রিনিং করতে বলা হয়।
সেলিন বলেন, ‘দাতার প্রতি আমার একটুও ক্ষোভ নেই।’ তবে এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য যে তাঁকে এমন শুক্রাণু দেওয়া হয়েছিল ঠিকমতো পরীক্ষিত ছিল না, নিরাপদ ছিল না এবং ঝুঁকি বহন করছিল।
এই ক্যানসারের চিন্তা সারাজীবনই তাড়া করে বেড়াবে বলে মনে করেন সেলিন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কখন, জানি না কোন ধরনের বা কয়টি। তবে আমি বুঝতে পারছি সম্ভাবনা খুব বেশি। আর যখনই এটা হবে, আমরা লড়ব। আর যদি বারবার লড়তে হয়, আমরা প্রতিবার লড়াই করব।’
১৪টি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ওই দাতার শুক্রাণু ১৪টি দেশের ৬৭টি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে শুক্রাণুটি যুক্তরাজ্যের কোনো ক্লিনিকে বিক্রি করা হয়নি।
তবে এই অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে ডেনমার্কের কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের হিউম্যান ফার্টিলাইজেশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি অথরিটি (এইচএফইএ)-কে জানিয়েছে, ব্রিটিশ নারীরা ডেনমার্কে গিয়ে ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে ফার্টিলিটি চিকিৎসা নিয়েছেন। আর ওই নারীদের এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
এইচএফইএ-এর প্রধান নির্বাহী পিটার থম্পসন জানিয়েছেন, ‘খুব অল্পসংখ্যক নারী এতে প্রভাবিত হয়েছেন এবং তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া ডেনমার্কের ক্লিনিক থেকে দাতার বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি না, যুক্তরাজ্যের কোনো নারী অন্য দেশে গিয়ে এ সংক্রান্ত চিকিৎসা নিয়েছিলেন কিনা, যেখানে ওই দাতার শুক্রাণু সরবরাহ করা হয়েছিল।’
ওই দাতার পরিচয় প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিবিসিসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলো। তারা বলছে, তিনি সৎ মনোভাবের সঙ্গে দান করেছিলেন এবং যুক্তরাজ্যের পরিচিত সব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক দাতার শুক্রাণু কতবার ব্যবহার করা যেতে পারে এ নিয়ে কোনো বৈশ্বিক আইন নেই। তবে পৃথক পৃথকভাবে দেশগুলো নিজেদের সীমা নির্ধারণ করে থাকে।
কিছু দেশে ‘দুর্ভাগ্যবশত’ এই সীমা লঙ্ঘন হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক। তারা জানায়, এ নিয়ে ডেনমার্ক ও বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, বেলজিয়ামে একজন শুক্রাণুদাতা সাধারণত ছয়টি পরিবারকে শুক্রাণু দিতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, ৩৮ জন ভিন্ন নারী ওই দাতার মাধ্যমে ৫৩টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
অধ্যাপক অ্যালান পেসি শেফিল্ড স্পার্ম ব্যাংক পরিচালনা করতেন। বর্তমানে তিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব বায়োলজি, মেডিসিন অ্যান্ড হেলথের ডেপুটি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, দেশগুলো বড় আন্তর্জাতিক স্পার্ম ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্যের অর্ধেক শুক্রাণু এখন আমদানি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বড় আন্তর্জাতিক স্পার্ম ব্যাংক থেকে আমদানি করতে হয়, যারা একই সঙ্গে এটি অন্যান্য দেশেও বিক্রি করে, কারণ এভাবেই তারা অর্থ উপার্জন করে। এখান থেকেই সমস্যা শুরু হয়, কারণ একজনের স্পার্ম কতবার ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক আইন নেই।’
অধ্যাপক অ্যালান পেসি শেফিল্ড জানান, শুক্রাণুতে ক্যানসারের ঝুঁকি থাকার ঘটনা সবার জন্যই ভয়ঙ্কর। শুক্রাণুকে সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘সব কিছু স্ক্রিন করা সম্ভব নয়। বর্তমান স্ক্রিনিং ব্যবস্থায় যারা শুক্রাণুদাতা হতে আবেদন করে, আমরা মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশকে গ্রহণ করি। তাই যদি আরও কঠোর করি, তবে আর কোনো শুক্রাণুদাতা বাকি থাকবে না।’
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব হিউম্যান রিপ্রোডাকশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি প্রতি দাতার জন্য সীমা ৫০টি পরিবার পর্যন্ত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তারা বলেছে, এতে বিরল জিনগত রোগ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়ার ঝুঁকি কমবে না। বরং এটি সেই শিশুদের কল্যাণের জন্য ভালো হবে, যারা জানবে তারা শত শত অর্ধ-ভাইবোনের (হাফ-সিবলিংস) মধ্যে একজন।
বন্ধ্যাত্ব ও জিনগত সমস্যায় আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা স্বতন্ত্র দাতব্য সংস্থা প্রোগ্রেস এডুকেশনাল ট্রাস্টের পরিচালক সারাহ নর্ক্রস বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী একই দাতার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া পরিবারের সংখ্যা কমানোর জন্য আরও কাজ করা প্রয়োজন। আমরা সম্পূর্ণরূপে জানি না, এই শত শত অর্ধ-ভাইবোন থাকা সামাজিক ও মানসিকভাবে কী প্রভাব ফেলবে। তবে এটি মানসিক আঘাতও সৃষ্টি করতে পারে।’
তবে ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক বলছে, এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে এটাও মনে রাখতে হবে যে দান করা শুক্রাণু ছাড়া হাজার হাজার নারী ও দম্পতির সন্তান হওয়ার সুযোগ নেই।
তারা বলছে, তবে শুক্রাণুদাতাদের চিকিৎসাগত নির্দেশিকার ভিত্তিতে স্ক্রিনিং নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে দাতার শুক্রাণুর সাহায্যে সন্তান নেওয়া তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হবে।’
সারাহ নর্ক্রস বলেন, যদি আপনি শুক্রাণুদাতার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের সংখ্যা বিবেচনা করেন, তাহলে এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত বিরল।

চার দশকের বেশি সময় ধরে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে ডিএনএ–এর আয়ু নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুদিন ধরেই খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
১২ ঘণ্টা আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
২ দিন আগে
এত দিন ধরে বিজ্ঞানীরা মেনে এসেছেন প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে মানুষ আগুন তৈরি বা ব্যবহার করতে শিখেছিল। কিন্তু নতুন একটি আবিষ্কার সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাফোক অঞ্চলের বার্নহাম এলাকায় পাওয়া প্রমাণ বলছে, মানুষ প্রায় ৪ লাখ বছর আগে আগুন তৈরি করত—অর্থাৎ পূর্ব ধারণার তুলনায়...
৪ দিন আগে