Ajker Patrika

সব দিকে ব্যর্থ হয়ে সরকার দিশেহারা: খন্দকার মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৩, ২০: ২১
সব দিকে ব্যর্থ হয়ে সরকার দিশেহারা: খন্দকার মোশাররফ

বর্তমান সরকার অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। অন্যদিকে সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা দুর্নীতি-লুটপাট করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। তারা বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছে। গণতন্ত্র হত্যা করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। কোনো কিছুই এখন আর সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই সব দিকেই ব্যর্থ হয়ে এখন সরকার দিশেহারা। 

আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনকে হত্যা ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত ‘বিনা বিচারে হত্যা-গুম ও নির্যাতন, আর কত কাল সইবে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার সব দিক থেকে ব্যর্থ হয়ে তারা আজ দিশেহারা। এ জন্য বুঝতে পারছে না কখন কী করতে হবে। এ সময় তিনি জানান, সরকারের অধীনস্থ কর্মকর্তারা অত্যন্ত হতাশ ও দিশেহারা। তিনি বলেন, অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারের হুকুমে তারা যে অন্যায়গুলো করেছে, ভবিষ্যতে তাদের তো জবাবদিহি করতে হবে। এ জন্য তারা নার্ভাস।

নওগাঁয় সরকারি কর্মকর্তা সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সরকার স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচার। স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচারী আচরণ সব পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটা না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। এ সময় তিনি শামসুজ্জামানের মুক্তি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান। 

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গ তুলে ধরে মোশাররফ বলেন, ‘আজকে ১০০ বারের ওপর তারিখ চলে গেছে, কিন্তু রিপোর্ট দিতে পারে না। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তিন দিনের মধ্যে চার্জশিট হয়ে যায়। সাগর-রুনির রিপোর্ট দিতে পারে না; কারণ, এই সরকারের এমন কিছু তথ্য তাদের কাছে ছিল, যেটা প্রকাশিত হলে সরকারের প্রকৃত চেহারা উন্মোচিত হয়ে যেত।’ 

এই সরকারকে যত দ্রুত ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়, দেশ ও জাতির জন্য ততই মঙ্গল জানিয়ে মোশাররফ বলেন, তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারা আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ছাড়া শৃঙ্খলা-শান্তি ফিরে আসবে না। তারা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও মেরামত করতে পারবে না। 

বাংলাদেশেই ধনী-গরিবে সবচেয়ে বেশি বৈষম্য জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছি। প্রত্যাশা ছিল স্বাধীনভাবে বসবাস করা, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সাম্যের প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। কিন্তু আজকের বাংলাদেশ এমন অবস্থা, পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্য। ধনী সবচেয়ে ধনী আর গরিব সবচেয়ে গরিব। 

ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে বিদায় করার সময় এসেছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সহ্যেরও একটা সীমা আছে। সহ্যের সীমা এই সরকার অতিক্রম করে ফেলেছে। গণ-অভ্যুত্থান ছাড়া কোনো স্বৈরাচারী সরকার নিজের ইচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়ে না। 

সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার আশপাশের লোকজন এবং আওয়ামী লীগের লোকজন ব্যাংক ডাকাতি করেছে, টাকা পাচার করেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। তাদের কারও কিছু হয়নি। অথচ জেসমিনের মতো একজন কর্মচারীকে র‍্যাব নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। 

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে আজ সরকার নতুন করে নির্যাতন শুরু করেছে। জনগণ যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সমস্ত আন্দোলনে তারা শরিক হচ্ছে, তখন এই সরকার আবারও প্রশাসনের মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে মানুষকে চুপ করিয়ে রাখতে চাইছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত