Ajker Patrika

‘৭১’-এর বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা উচিত, ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১০: ১৭
ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা। এ বৈঠকে তাঁরা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের কিছু অমীমাংসিত বিরোধ সমাধানের বিষয়ে কথা বলেছেন বলে জানান। গতকাল শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে পাকিস্তানের হাইকমিশনের আমন্ত্রণে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন—মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেব, যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রেজা, সদস্য সাগর বড়ুয়া। বৈঠক শেষে আখতার হোসেন ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

একাত্তরের বিরোধ সমাধানের বিষয়ে ইসহাক দার কী বলেছেন, জানতে চাইলে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, একাত্তরের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা উচিত। তারা বলেছে, তারা এটাতে প্রস্তুত।’

বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে আখতার হোসেন বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, সেটা তাদের কাছে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি।’

আখতার হোসেন বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, বিগত সময়ে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যকার যে শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্ক ছিল, সেখান থেকে উন্নতির সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে জনগণের যে পারসেপশন, সেটাকে আমাদের সবচেয়ে সেনসিটিভ আকারে বিবেচনায় রাখতে হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের যেকোনো ধরনের সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ’৭১ ইস্যুকে অবশ্যই ডিল করা উচিত। আমরা সে প্রসঙ্গ তাদের কাছে উত্থাপন করেছি।’

আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের শিক্ষায়, অর্থনীতিতে এবং সংস্কৃতিতে সম্পর্ক উন্নয়নের যে সুযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বড় ভাইসুলভ আচরণ যেন কাউকে প্রভাবিত না করে। দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের যেসব প্রতিবেশী দেশ রয়েছে, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের।’

ইসহাক দার কী বলেছেন, এমন প্রশ্নে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় একটা যুদ্ধ হয়েছিল। পানি নিয়ে আবার যদি কোনো যুদ্ধ আসে, যেহেতু আমাদের অনেকগুলো নদী রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের নদীগুলো কীভাবে ভালো থাকতে পারে, পাকিস্তান যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈঠকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ১৫-২০ বছরে ঔষধশিল্পে সহযোগিতা তৈরিতে তারা অনেকভাবে চেষ্টা করেছে। তাদের ওষুধ খাতের কাঁচামাল অনেক ভালো। দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ ঔষধশিল্প খাতের খরচ কমিয়ে আরও বেশি যেন রপ্তানি করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

আখতার হোসেন বলেন, ‘প্রতিরক্ষা খাতে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আলোচনায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এখানে করা যায় কি না, সেটা নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামগুলো, সেগুলো কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়েছে।’

সার্ক কার্যকর করার বিষয়েও বৈঠকে কথা হয়েছে বলে জানালেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘ভারতের কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে, দক্ষিণ এশিয়ায় সার্ককে কীভাবে আরও সক্রিয় করা যায়, সে বিষয়ে কথা বলেছি। পাকিস্তানও পরমাণু অস্ত্রের দেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানেরও অনেক প্রভাব রয়েছে। কীভাবে সার্ককে সক্রিয় করা যায়, অর্থনৈতিক জায়গায় আমরা কীভাবে সমৃদ্ধি নিয়ে আসতে পারি, সে বিষয়ে কথা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত